![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবেগপ্রবন, ভয়ডরহীন, লড়ে যেতে প্রস্তুত শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে।
বাংলাদেশ সম্পর্কে হুমায়ন আজাদ বলেছিলেন- "তার ধানক্ষেত এখনো সবুজ, নারীরা এখনো রমনীয়, গাভীরা এখনো দুগ্ধবতী কিন্তু প্রিয়তমা বাঙ্গলাদেশকে আমি এক মুহূর্তও সহ্য করতে পারি না, তার অনেক কারন রয়েছে"।
আমি জানি না, সে অসহ্য কারনগুলো কি কি? তবে মাঝে মাঝে প্রিয়তমা বাংলাদেশ আমার কাছেও অসহ্য হয়ে ওঠে....!
বাংলাদেশের বহুল ব্যবহৃত দুটি গান- "জয় বাংলার বাংলার জয়..." এবং "প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ..."। প্রথমটি আওয়ামীলীগের আর পরেরটি বিএনপির!! আমি অবাক হয়ে ভাবি- গানের আবার দল কি? গানকে কেন দলীয়করন করা হবে?
বাংলাদেশের বহুল ব্যবহৃত শ্লোগান গুলো হলো- 'জয় বাংলা', 'বাংলাদেশ জিন্দাবাদ', 'বাংলাদেশ দীর্ঘজীবি হোক'। এগুলোও কি দলীয়করনের উর্ধে?
মুক্তিযুদ্ধে যে 'জয় বাংলা' শ্লোগানে সারাদেশ উত্তাল হয়ে উঠতো, সে জয় বালা বলতে আমাদের তো দ্বিধা থাকার কথা নয়? অনেক রক্তে, অনেক ত্যাগে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি, 'বাংলাদেশ জিন্দাবাদ' এড়িয়ে চলতে আমরা এতো পারঙ্গম কেনো?
সত্যি, বাংলাদেশ আমি তোমার ওপর বিরক্ত!
একুশের প্রভাত ফেরীতে আর রফিক-শফিক-বরকত কে মনে পড়ে না!
মনে পড়ে মুজিবকে! মনে পড়ে জিয়াকে!
আমার লজ্জা লাগে, যেসব সৈনিকেরা রাজপথে নেমেছিলো ভাষাকে রক্ষার জন্য, যাদের রক্তের ওপর দাড়িয়ে, যাদের রক্তে গড়া একুশে ফেব্রুয়ারীতে, যাদের রক্তের হরফে লেখা বাংলা ভাষার শ্লোগানে, আমার তাদের স্বরন নয় বরং অভয় দান করি হাসিনা-খালেদাকে! "শেখ হাসিনা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই" "খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই"!
হায়রে রাজপথ! যেখানে কান পাতলে আজো শোনা যাবে- "রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, বাংলা চাই"। যে পথের কালো পিচ, ইট, বালু সুরকির মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে ভাষা শহিদের রক্ত, সে পথ আজ শুধুই হাসিনা-খালেদার দখলে! এ পথ আজ শুধুই মুজিব-জিয়াকে স্বরন করে! ভাষা শহিদদের স্বরন করার সময় কৈ?
সত্যি, বাংলাদেশ আমি তোমার ওপর বিরক্ত!
২১শে ফেব্রুয়ারী'১৪। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মুখি এক রাস্তা ধরে মিছিল সহযোগে যাচ্ছিলো আওয়ামীলীগ কিংবা তার কোন অঙ্গসংগঠন, শ্লোগানগুলো ছিলো- 'শেখ হাসিনা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই' 'জয় বাংলা' 'জয় বঙ্গবন্ধু'।
অনেকক্ষন পরে মিছিল নিয়ে গেলো বিএনপি কিংবা তার অঙ্গসংগঠন, শ্লোগানগুলো ছিলো- 'একুশের এই দিনে, জিয়া তোমায় পড়ে মনে', 'খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই'....
আমি ভাবছিলাম, ২১শে ফেব্রুয়ারী কি কোন জাতীয় দিবস নাকি হাসিনা-খালেদার রাজপথ দখল করার মহড়া? একুশে ফেব্রুয়ারী কেন জিয়াকে মনে পড়বে? কেনো বঙ্গবন্ধুর জয় হবে?
তাদের মতো বড়মাপের নেতাদের বছরে প্রতিদিন মনে করা যেতে পারে। কিন্তু মনে করার এ ধারাবাহিকতা যদি ভাষা শহীদদের বাদ দিয়ে হয় কিংবা তাদের তুলনায় ভাষা শহীদদের স্বরন ক্ষীন হয়, সেটা কি লজ্জার নয়?
বাংলাদেশ, আমি আর তোমার ওপর বিরক্ত নই!!!
সন্তান যখন কৃতি হয়, মা তখন রত্নগর্ভা হয় কিন্তু সন্তান যখন কুলাঙ্গার হয় তার দায় নিশ্চই মায়ের নয়।
বাংলাদেশ তো আমাদের মা, জননী-জন্মভূমি। আমরা সন্তানেরা যখন ভালো কিছু করি, সে গর্ব বাংলাদেশের। আমাদের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সে তো বাংলাদেশেরই গর্ব। তেমনি আমরা যদি খারাপ কিছু করি, সে দায় আমাদের, বাংলাদেশের নয়।
আমার কান্না পায়, নিজেদের অপরাধবোধের কান্না। আমার কান্না পায়, জাতীয় সংগীতের ভাষায়- "মা তোর বদন খানি মলিন হলে, আমি নয়ন জলে ভাসি..."
আজ বাংলাদেশের বদনখানি বড্ড বেশী মলিন, অথচ কান্নার লোকের বড় অভাব!
সত্যি, হাসিনা-খালেদাদের কোন ভয় নাই! দেশের জন্য কান্না করার লোকের অভাব হলেও রাজপথ দখল করার লোকের অভাব নিশ্চই হবে না, হয়ও না......
২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৫৯
অচেনামন বলেছেন: valo likhechis
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৪৬
পাঠক১৯৭১ বলেছেন:
"মুক্তিযুদ্ধে যে 'জয় বাংলা' শ্লোগানে সারাদেশ উত্তাল হয়ে উঠতো, সে জয় বালা বলতে আমাদের তো দ্বিধা থাকার কথা নয়? অনেক রক্তে, অনেক ত্যাগে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি, 'বাংলাদেশ জিন্দাবাদ' এড়িয়ে চলতে আমরা এতো পারঙ্গম কেনো?
"
বাংলাদেশ সবাই পায়নি, সমস্যা সেখানে।