নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মৌন পাঠক

মৌন পাঠক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাস্তিকের মূলোৎপাটনঃ মিশন সফল (শেষ পর্ব)

১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১১


চিত্রঃ এ আই

সহকর্মী ও সিনিয়র ভাইদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় মেহেদী সাহেব শো কজের জবাব দিলেন।

উল্লেখিত জবাবের মূল পয়েন্ট “ধর্মাবমাননা”; যার জবাবের মূল লেখাটুকুন হুবহু নিম্নে তুলে ধরা হলঃ

“মহোদয়, আলোর দিশারী মহানবী (সঃ) এরশাদ করেছেন, {হযরত আবুজর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত} রাসুলুল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, “তোমাদের কেউ যদি কাউকে ফাসেক বলে, কিংবা কাফের বলে অথচ লোকটি এমন নয়, তাহলে তা যিনি বলেছেন তারদিকে ফিরে আসবে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৬৯৮}। আমি বরং আমার লেখায় দেশবিরোধী ও ভন্ড-লেবাসধারী ধর্মের নামে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মের আলোকে প্রতিবাদ করি, যা নবীজির নির্দেশমত জিহাদ এর আওতায় পড়ে। ফলস্বরুপ, তারা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার করছে, যা আমার হৃদয়কে প্রতিক্ষণে রক্তাক্ত করছে। তথাপি, আমার কোনও লেখা যদি আমার অজ্ঞানে কোনও মুমিন ব্যক্তিকে (যারা ইসলামকে প্রতিনিয়ত আলোকিত করছে) কষ্ট দিয়ে থাকি, তার অনভূতি আহত করে (যদি ও সেটা কখনোই আমার অভিপ্রায় নয়), সে জন্য আমি তার/তাদের নিকট নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থী ও আমি তাদেরকে কথা দিচ্ছি ভবিষ্যতে আমি লেখার ক্ষেত্রে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করে মহান আল্লাহপাকের নির্দেশমত ও রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর দেখানো পথ অনুসারে আমার কলম ব্যবহার করব। এর ব্যত্যয় হলে সুযোগ্য অভিবাবক হিসেবে আপনার যে কোন শাস্তি মাথা পেতে নিব এবং শেষ বিচারের দিনে আমি আমার কৃতকর্মের জন্য মহান ও একমাত্র বিচারক আল্লাহ পাকের নিকট দায়বদ্ধ থাকব।“

লক্ষ্য করে দেখুন মেহেদী সাহেব তার জবাবের শেষ লাইনে “শেষ বিচারের দিনে আমি আমার কৃতকর্মের জন্য মহান ও একমাত্র বিচারক আল্লাহ পাকের নিকট দায়বদ্ধ থাকব।“ এই বক্তব্যটুকুন দিয়েছে।

পয়েন্ট হচ্ছে, ডিজিএম সাহেব ধার্মিক ব্যক্তি, স্বভাবতই সে শিরক এড়িয়ে চলবে; এই লাইনটুকুন এ বলা আছে একমাত্র বিচারক “মহান আল্লাহপাক” বিচার করবেন, এখন সে যদি বিচার করে, এটা তার শিরক করা হবে, সুতরাং সে চাইলে ও মেহেদী সাহেবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারবে না, এবং সে এই ব্যাখ্যা তলবের জেরে কোন ও পদক্ষেপ নিতে না পেরে ফাইল বন্দী করে রেখেছে, ও হ্যা, সে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি ও দেয় নি।

এই ঘটনার মাস ছয়েক পরে, উক্ত ডিজিএম মেহেদী সাহেবের অফিস পরিদর্শনে আসেন, সারাদিন অফিসিয়াল কাজের শেষে লাঞ্চ করলেন।

লাঞ্চ করার পরে রুমে শুধুমাত্র মেহেদী সাহেব ও ডিজিএম সাহেব বসা, মেহেদী সাহেব কাজ করছেন, ডিজিএম সাহেব খানিক উসখুস করছেন, কিছু একটা বলতে চাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।

ডিজিএম: মেহেদী সাহেব, আপনি কি এখন নামাজ পড়েন?

ঢেকি স্বর্গে গেলেও….

এত কিছুর পরেও ডিজিইএম মহোদয়, মেহেদী সাহেবকে এখন নামায পড়েন কিনা, জানতে চান। মেহেদী সাহেবের কি করা উচিৎ?

তার কি হ্যা বলা উচিৎ, নাকি সত্যটা ই বলা উচিৎ, যে সে নামায পড়ে না।

অফিসার: স্যার গত শুক্রবার আমি জুমআর নামাজ পড়েছি, এই নামাজ পড়তে যেতে আমাকে কেউ বলেনি, আমার স্ত্রী বা বাবা, কেউই বলেনি, ইচ্ছে হয়েছে গিয়েছি। নামাজ আদায় করে চলে আসছি।

আজ (মংগলবার) আপনি আসার পূর্বে আমাকে কল করেছিলেন; তখন ভাবলাম, আপনার সাথে নামায পড়ব।

কিন্তু, না, আমি পড়িনি, আপনার সাথে নামাজ পড়লে দুইটা সমস্যা ছিল।

মানুষ নামায পড়বে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য, বাট আমি যদি আপনার সাথে নামাজ পড়ি, সেটা হবে আপনাকে সন্তুষ্ট করার জন্য, যা মূলত আপনাকে ভয় পেয়ে।

মানে দাড়াচ্ছে, আমি আল্লাহর থেকে আপনাকে বেশী ভয় পাই বা সমীহ করি, যেটা শিরক।

ডিজিএম: হ্যা এটা শিরক ই হবে।

অফিসার: ২য় সমস্যা হচ্ছে, এইটা প্রতারণা করা হবে।

ডিজিএম: হ্যা, আপনার পয়েন্ট ঠিক আছে।

অফিসার: স্যার, আমরা নামায পড়ি কি জন্য?
বা আমরা নামাজ পড়ি মূলত দুইটি কারণে:
১) লোভে আর
২) ভয়ে।

ভয় মূলত জাহান্নামের আর লোভ জান্নাত প্রাপ্তির।

অফিসার: স্যার, মহানবী (স:) আল্লাহর প্রার্থনা করেছেন মূলত তার প্রেমে বা ভালোবেসে, মক্কায় থাকাকালীন তাকে লোভ দেখানো হয়েছে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে, তবু তিনি আল্লাহর প্রেমে বা আল্লাহকে ভালোবেসেই প্রার্থনা করেছেন, ভয়ে না।

আমাদের ও তো সেভাবেই আল্লাহর প্রার্থনা করা উচিৎ, তার দেখানো পথেই চলা উচিৎ।

আমরা যে আল্লাহর ভয়ে তার প্রার্থনা করি, সেতো কোনও হিংস্র জন্তু না, বা পাড়ার মাস্তান না।

ডিজিএমঃ ভয় আর লোভ করা যাবে তো, আল্লাহই তো ভয় করতে বলেছেন।
অফিসারঃ স্যার, এই ভয়টা সেই ভয় না, ভয়টা মূলত প্রিয়জনকে হারানোর ভয়, তার অসন্তোষের ভয়, শাস্তির ভয় না।

আল্লাহইপাক ই তো বলেছেন, মানুষ তার সর্বাধিক প্রিয় সৃষ্টি, তিনি তার সেই প্রিয় সৃষ্টিকে কি ভালোবাসেন না, অবশ্যই বাসেন।

ডিজিএম: আপনি তো বলেন আপনি কোরান পড়েন।
অফিসার: হ্যা স্যার পড়ি।
ডিজিএম: কোরানে তো সম্ভবত ৮০ বার এর মত নামায পড়ার কথা বলা আছে।
অফিসার: জ্বী স্যার, নামায কায়েম করার কথা বলা আছে।
ডিজিএমঃ হ্যা, নামায কায়েম করার কথা বলা আছে।

ডিজিএম: আপনি কি কুরানে বিশ্বাস করেন?
অফিসার: আমি সুফিবাদের প্রতি খানিক ঝুকে পড়েছি, এটা নিয়ে পড়াশোনা করছি।
ডিজিএম: ওরা তো মাজার পূজারী।
অফিসার: স্যার, আমার কোনও গুরু নাই, সেল্ফ লার্নড ও সেল্ফ মেড। এদের ফলো করি না।
ডিজিএম: সুফিবাদে কি নামাজ পড়ায় বারণ আছে?
অফিসার: না, তা নেই স্যার।
স্যার, এর পূর্বে যে অফিসে ছিলাম, সেখানেও দেখেছি, যেসকল লোক আদৌ নামাজই পড়ে না, তারা আপনার পিছু পিছু নামাজে যাচ্ছে, তারা মূলত আপনাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে ই নামাযে যাচ্ছে।
আর আমরা যেভাবে আল্লাহকে ভয় পেয়ে ও লোভে নামাজ পড়ি, সেটা ভূল।

এই পাঁচ মিনিটের কথোপকথনে ডিজিএম সাহেবের আজীবনের লালিত বিশ্বাস ও দর্শনকে নাড়া দেয়, সে আজীবন মূলত লোভ ও ভয়ের উদ্দেশ্যে ই নামাজ, রোজা বা প্রার্থনা যা ই বলি না কেন, সেটা করে আসছে; হঠাৎ করে সে আজ জানতে পারল, প্রার্থনা আল্লাহকে ভালোবেসে, লোভে বা ভয়ে না; তার আজীবনের বিশ্বাস ভেংগে গেল।

মেহেদী এখন ও অনিয়মিতভাবে নিয়মিত “কারণ দর্শানোর নোটিশ” পায়, কারনে অকারনে।

মেহেদী সাহেব নিজেকে কখনো নাস্তিক বলে দাবি করেন নাই।
সে নিজেকে এগনস্টিক বলে পরিচয় দেন, এখানে সুফি ধারার বলে নিজের পিঠ বাচিয়েছেন, সে নিজে জানে এইটা ভন্ডামী।

এই ঘটনার বছরখানেক পরে ডিজিএম মহদয়, মেহেদী সাহেবের চাচাত ভাই ও চাচার নিকট বলেন, "আপ্নারা তো সব দেখি হুজুর ও হাজী সাহেব, মেহেদী সাহেব এমন হইল কিভাবে?"

ব্যাপারটা মেহেদী সাহেবকে পারিবারিকভাবে খুব চাপে ফেলে, সে সমাজের ই অংশ।
উপরন্তু তার কিছু ব্যক্তিগত ভুল সিদ্ধান্তের জন্য সে স্ট্রং ভাবে বুক চিতিয়ে দাড়াতে পারছে না, তাকে সার্ভাইব করার জন্য অনেক কিছুই ছাড় দিতে হচ্ছে, আপোষ করতে হচ্ছে, যদি ও সে অনেক কিছুই ফাইট করেছে, সফল ও হয়েছে।

আজ তার নিকট সবই মিছে হয়, ভুল মনে হয়।

মেহেদী সাহেবের বাবা তার বাসায় এসে রীতিমত হাত পা ধরে অনুরোধ করে স্রোতের অনুকূলে চলার জন্য।

বর্তমানে সে অনিয়মিতভাবে নামাজ পড়ে, ধর্মকর্ম করে।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৪

কামাল১৮ বলেছেন: কাফেরের সংজ্ঞা কি?

১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৫

মৌন পাঠক বলেছেন: মেহেদী সাহেব জানতে পারেন!
আমার জানা নেই।
এই মহূর্তে জানার ইচ্ছে ও নেই।

২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৭

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: যাক অবশেষে নাস্তিকদের মূলোৎপাটন মিশন সফল হলো, অভিনন্দন।

নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

১৪ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৫

মৌন পাঠক বলেছেন: শুভ নববর্ষ।

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৯:৩৬

রানার ব্লগ বলেছেন: এহ! শেষ!!?? আমিতো ভাবলাম অতি জলদি দেখবো সামুর ব্যানার পরিবর্তন হয়ে ওখানে লেখা থাকবে আহ লান ওয়াস সাহলান। অথবা জাজাকল্লাখয়রান।

১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৯:৫৬

মৌন পাঠক বলেছেন: ভাই আরবী বুঝি না।

৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১০:৫৪

বিটপি বলেছেন: ডিজিএম ব্যাটা তো নির্লজ্জের শেষ সীমায় পৌঁছেছে। আনিস সাহেবের জায়গায় আমি হলে এসব প্রশ্ন করার পর জুতা খুলে গালে দুইটা মারতাম, তারপর জবাব দিতাম।

বাই দ্য ওয়ে, অফিসের মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য এবং অন্যের পেছনে লেগে থাকার জন্য ডিজিএমের কোন শাস্তি হলনা কেন?

১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:০০

মৌন পাঠক বলেছেন: গতকাল এক জজ সাহেবকে প্রত্যাহার করা হইছে,
সময় বড়ই অসময়।

৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: নাস্তিকদের গলা টিপে ধরবেন না। ওরা মানুষ। গলা যদি টিপে ধরতেই হয়, সমাজের দুষ্টলোকদের গলা টিপে ধরুন।

১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:০০

মৌন পাঠক বলেছেন: নাস্তিক মুক্ত দেশ ও জাতি গঠনের বিকল্প নাই।

৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩২

নতুন বলেছেন: মেহেদি সাহেবের যেহেতু টাকা পয়শা কম এবং সমাজে ক্ষমতা কম তাই তার এই সব সহ্য করতে হচ্ছে।

অনেক সময় মুরুব্বী আত্নীয়রাও এমনটা করে, তাদের কে সরাসরি বলা যায় না যে আপনার জ্ঞানের পরিধী আরো বাড়াতে হবে এই বিষয়গুলি বুঝতে।

১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:০১

মৌন পাঠক বলেছেন: তারা হয়তোবা আপনাদের থেকে অনেক বেশী চাল ভক্ষণ করিয়াছে।

৭| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১০:৪৫

বিটপি বলেছেন: জজ সাহেবকে প্রত্যাহার করা হইছে, বরখাস্ত করা হয়নাই। তবে আমি মনে করি এইটা করা ঠিক হয়নাই। একজন মানুষ তার নিজের কথা যদি সোশ্যাল মিডিয়াতে বলতে না পারে - কই বলবে?

১৮ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৮:৪৬

মৌন পাঠক বলেছেন: ওহ , হ্যা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.