নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/asadali.ht

মোহাম্মদ আসাদ আলী

সাংবাদিক

মোহাম্মদ আসাদ আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি জাতির ধ্বংস অনিবার্য হয় কখন?

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:১০

সৃষ্টির আদীকাল থেকেই এই বিশাল বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড মৌলিক কিছু শাশ্বত নীতির ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে। এ সত্য নীতিগুলো অক্ষুণœ আছে বলেই ইতিহাসের বহু চড়াই-উতরাই অতিক্রম করে আজও পৃথিবী নামক গ্রহটি টিকে আছে, মানুষ নামের প্রাণীটি তার বিস্তৃত বক্ষে পদচারণ করছে। পৃথিবীর এমনই এক শাশ্বত বিধান হলো- কোনো কিছুর প্রাচুর্যতা (abundance) ও অভাবের (scarcity) পারস্পরিক সম্পর্ক। সৃষ্টির এই অখণ্ডনীয় বিধান অনাদীকাল থেকে চলে আসছে যে, কোনো বস্তুর প্রাচুর্যতা চূড়ান্ত পর্যায়ে (Final Stage) পৌঁছানোর অর্থ হলো অতি স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়ে ওই বস্তুর অভাব বা ঘাটতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছবে। এ কথার সত্যতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সমস্ত প্রকৃতিতে। প্রাচুর্যতা যে কোনো জিনিসেরই হোক তার একটি নির্ধারিত সীমা (Limitation) থাকে, এই সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া অর্থ হচ্ছে তার ঘাটতি শুরু হওয়া। আকাশে ছোঁড়া তীর তার সর্বোচ্চ সীমা অবধি পৌঁছার পর সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ভূমিতে পতিত হয়, কেউ তাকে চূড়ান্ত সীমায় থামিয়ে রাখতে পারে না। একইভাবে নদীতে আসা জোয়ার অনাগত ভাটার সংবাদ বহন করে। আবার গাছে গাছে, গৃহে গৃহে সুমিষ্ট পাকা আমের ছড়াছড়ি, এমনকি রাস্তাঘাট, দোকানপাট, যানবাহন সর্বত্র বিরাজিত পাকা আমের প্রাচুর্যতা আমাদের সতর্ক করে দেয় যে, কিছুদিনের মধ্যে এমন সময় আসছে যখন সারা দেশ খুঁজেও একটি পাকা আম পাওয়া যাবে না। নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর, ডোবা, হাওর-বাওড়, ক্ষেত-খামার মাছে মাছে টৈটুম্বুর হয়ে গেলে তা এই সংকেতই বহন করে যে, নিশ্চিতভাবে এমন সময় আসছে যখন খুব সন্ধান করেও আপনি মাছের দেখা পাবেন না। প্রখর সূর্যের আলোয় ঝলমলে দিন সাক্ষ্য দেয় অত্যাসন্ন রাতের গূঢ় অন্ধকারের। অর্থাৎ বস্তুর প্রাচুর্যতাই তার আসন্ন দীনতার সংকেত (symbol) বহন করে। আবার এই নেতিবাচক সত্যকে ইতিবাচকভাবে দেখলে এটাও ঠিক যে, বস্তুর দীনতাও তার আসন্ন প্রাচুর্যতার সংকেত বহন করে।
যে সত্য প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে সেই একই সত্য মানবজীবনেরও নিয়ন্ত্রক তাতে সন্দেহ নেই। আজ মানবজাতির আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ও চারিত্রিক অবস্থা কী? কাউকে বলে দিতে হবে না মানুষ নামের এই প্রাণীটি অন্যায়, অবিচার, অনৈক্য, হানাহানি, সন্ত্রাস, সহিংসতা, যুদ্ধ, সংঘাত, রক্তপাত এক কথায় অশান্তির সূচকে মানব ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্থানে উপনীত হয়েছে। অন্যদিকে ন্যায়, সত্য, শান্তি আশ্রয় নিয়েছে সর্বনিু স্থানে। পৃথিবী পরিণত হয়েছে জাহান্নামের অগ্নিকুণ্ডে। প্রতিটি মানুষ সেখানে কেবল স্বার্থের পূজারী। বনের জন্তু-জানোয়ারের মধ্যে যেটুকু সহমর্মিতা রয়েছে, উদারতা রয়েছে, মানুষ নামের এই প্রাণীর মধ্যে যেন তাও নেই। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সর্বত্র কেবল মিথ্যার জয়জয়কার। সর্বত্র সত্য নির্বাসিত, ন্যায় পরাজিত, মনুষ্যত্ব অধঃপতিত, ধর্ম অবহেলিত এবং নীতি উপেক্ষিত। মানব ইতিহাসে আজকের মতো এত অন্যায়, অবিচার, অপরাধ আর কখনও হয় নি। অসত্য ও অশান্তির এই প্রাচুর্যতা এবং সত্য ও শান্তির এই হীনতা কীসের আলামত? আমরা মনে করি এ পরিস্থিতি অত্যাসন্ন অসত্যের ধ্বংস এবং সত্য প্রতিষ্ঠার সংকেত বহন করছে।
যে তীর একবার ধনুক থেকে আকাশ অভিমুখে নিক্ষিপ্ত হয়েছে তাকে পুনরায় ভূমিতে ফিরে আসতে হবে এটাই চিরসত্য। ওই তীর কেবল ততক্ষণ ঊর্ধ্বাভিমুখে গতি ধরে রাখতে পারবে যতক্ষণ তার চূড়ান্ত বিন্দুতে না পৌঁছে। একবার চূড়ান্ত বিন্দুতে পৌঁছে গেলেই শুরু হবে তার পতনের পালা। কোনো শক্তিই তার পতন ঠেকাতে পারবে না। পৃথিবীর অশান্তি নামক তীর বছরের পর বছর ঊর্ধ্বাভিমুখে ছুটে আজ চূড়ান্ত বিন্দুতে (The final point) পৌঁছেছে, কাজেই পতন তার আবশ্যক। অধর্মের বিষ পান করে কোটি কোটি মানুষের শরীর বিষাক্ত হয়ে গেছে। এই বিষাক্ত মানবগোষ্ঠী থেকে স্স্থু-সুন্দর প্রজন্ম আশা করা যায় না। হয় তাদের বিষমুক্ত হতে হবে, নয়তো মৃত্যুবরণ করতে হবে। তাদের রচিত সমাধিতে উড়বে নব সভ্যতার বিজয়কেতন। এটা এমন এক মহাসত্য যার কোনো ব্যত্যয় নেই, বিকল্প নেই। এটা আমাদেরই দু’হাতের কামাই।
আজ পৃথিবীতে মানুষ গিজগিজ করছে, মানুষের আধিক্যে বড় বড় শহরে পা ফেলার জায়গা নেই। আমাদের দেশে আমরা দেখি শহরের রাস্তাঘাটে যানবাহনের মতো মানুষের জ্যাম বাঁধে। কিন্তু যখন প্রকাশ্য দিবালোকে একজন মানুষকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে এত মানুষের মধ্যে কেউ তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে না, যখন সন্ত্রাসীরা চলন্ত বাসে পেট্রল বোমা মেরে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারে, জনাকীর্ণ স্থানে প্রকাশ্যে ককটেল বোমা মেরে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এই হাজার হাজার মানুষ তখন সন্ত্রাসীদের ভয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে পালায়। যখন বখাটে সন্ত্রাসীরা পহেলা বৈশাখের মতো জাতীয় উৎসবে প্রকাশ্যে একজন একজন করে ১৬ জন নারীর শ্লীলতাহানি করে, বিবস্ত্র করে উল্লাস করে তখন এই হাজার হাজার জনতা তাকিয়ে থেকে দেখেই দায়িত্বের ইতি টানে। অসহায়ের আর্তচিৎকার শুনে মাথা নিচু করে পাশ কাটিয়ে যায়। মানুষের প্রধান গুণ যদি হয় মনুষ্যত্ব, তাহলে এই গিজগিজ করা মানুষকে মানুষ বলা সত্যের অপলাপ হবে। মনুষ্যত্বহীন, সহযোগিতা ও সহমর্মিতাহীন স্বার্থের পুজারী এই জনসংখ্যা তাদের নিজ কর্মফল হিসেবে ধ্বংসের প্রহর গুনবে এই তো স্বাভাবিক। মনুষ্যত্বের এই বিপর্যয় কেবল আমাদের দেশেই নয়, সমগ্র পৃথিবীতেই আরও ভয়াবহরূপে বিদ্যমান। মানুষ ট্যাগ ধারণ করে অমানুষের মতো কর্মকাণ্ড চলছে সমস্ত পৃথিবীময়। সাতশ’ কোটি মানুষের কর্মফল হিসেবে সমগ্র পৃথিবী এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত। পৃথিবী নামের এই গ্রহকে দুমড়ে-মুচড়ে নিঃশেষ করে দেওয়ার মতো অস্ত্র শোভা পাচ্ছে মানুষেরই হাতে। তাদের একটিমাত্র ভুল সিদ্ধান্ত চোখের পলকে সমগ্র পৃথিবীতে ধ্বংযজ্ঞ ডেকে আনতে পারে। পৃথিবী থেকে প্রাণের অস্তিত্ব মুছে যেতে পারে চিরতরে। হতে পারে আজই, এই মুহূর্তেই।
এখন প্রশ্ন হলো- আসন্ন ধ্বংসযজ্ঞের হাত থেকে রেহাই পাবার কোনো উপায় আছে কি?
হ্যাঁ, উপায় আছে। পৃথিবীর ইতিহাস দেখুন। যুগে যুগে মানবজাতি যখন সীমালঙ্ঘন করে অন্যায়ের চূড়ান্ত বিন্দুতে পৌঁছেছে তখন আল্লাহ জরাজীর্ণ, রোগাগ্রস্ত সভ্যতার ধ্বংস করে সত্যের ভিত্তিতে নতুন সভ্যতার সূচনা করেছেন। তিনি তাঁর নিজ মহীমায় তাঁর প্রিয় সৃষ্টি মানুষের মধ্যে থেকে তাঁর প্রেরিত সত্য ধারণকারী মানুষগুলোকে রক্ষা করেছেন। তাদের মাধ্যমে সূচিত হয়েছে নতুন সভ্যতা। আজ মানবজাতির ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সেই নতুন সভ্যতারই আহ্বান জানাচ্ছে আল্লাহর মনোনীত এমাম, এমামুয্যামান (The leader of the time) জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী প্রতিষ্ঠিত আন্দোলন হেযবুত তওহীদ। পৃথিবীর এই ক্রান্তিলগ্নে একমাত্র হেযবুত তওহীদের প্রচারিত সত্যই হতে পারে আপনার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। আপনিও হতে পারেন নতুন সভ্যতার অগ্রনায়ক। আল কোর’আনে আল্লাহ তাঁর প্রেরিত রসুলকে বলছেন- আমি তোমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি (সুরা সাবা ২৮)। তুমি তো একজন সতর্ককারী বৈ আর কিছুই নও (সুরা ফাতের ২৩)। রসুলাল্লাহর উম্মত হিসেবে আমরাও কেবল সতর্ক করতে পারি। এই সতর্কবাণী যারা শুনবেন, হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করবেন তাদের জন্য হেযবুত তওহীদ সত্যের দুয়ার উন্মুক্ত করে রেখেছে। এখন কে সৌভাগ্য অর্জন করবেন আর কে সতর্কবাণীকে অগ্রাহ্য করে প্রকৃতির প্রতিশোধে ধ্বংস হয়ে যাবেন সেটা আল্লাহই ভালো জানেন। আল কোর’আনের ভাষায়- একজন চক্ষুস্মান ব্যক্তি ও অন্ধ ব্যক্তি কখনও সমান হতে পারে না। না (কখনো) আঁধার ও আলো (সমান হতে পারে)। ছায়া এবং রোদও তো (সমান নয়)। (একইভাবে) একজন জীবিত মানুষ এবং একজন মৃত মানুষও সমান নয়। আল্লাহ তা’আলা যাকে ইচ্ছা শোনান, তুমি কখনো এমন মানুষদের কিছু শোনাতে পারবে না যারা কবরের অধিবাসী (হওয়ার মতো ভান করে) (সুরা ফাতের ১৯-২২)।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.