নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তার জন্য অপেক্ষায় থাকা একশো বছরের পুরাতন যুবক

আসিফ্লী

দেয়ার মত অনেক কিছুই ছিল, নিলে না

আসিফ্লী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেন্টার ফ্রুট

২৯ শে জুলাই, ২০১৫ ভোর ৬:৫৭

অনেকদিন পর আজকে বৃষ্টিতে ভিজলাম। লাস্ট কবে ভিজেছি মনে নেই। তবে এতটুকু মনে আছে বৃষ্টিস্নান হয়েছিল মুনিয়ার সাথেই। ওদিন ওর বার্থডে ছিল। অনেক প্লান ছিল। এ করব তা করব। কিন্তু অফিস শেষে যখন ওর সাথে মিট করার জন্য রওনা দিলাম রাস্তার মাঝ পথেই বৃষ্টির সাথে সাক্ষাৎ

পনেরো মিনিটের জায়গায় আধাঘন্টা পর গিয়ে পৌছালাম। সিএনজি থেকে নেমেই দেখা। একটা পিঙ্ক কালারের ছাতা নিয়ে দাড়িয়ে আছে। আমি কিছু বলে উঠার আগেই ওর আওয়াজ

'চল'
'কোথায়?'
'আমাদের বাসায়'
'তোমাদের বাসায় কেন?'
'আম্মু ফোন দিয়েছিল। আজকে নাকি খালামনিদের বাসায় যাবে। আমাকেও নাকি যেতে হবে'
'এটা আগে বললেই পারতে। আমাকে আর কষ্ট করে আসতে হত না'
'আম্মু যখন ফোন দিয়েছিল তখনই আমি চলে যেতাম। শুধু তোমার আসার কথা ছিল তাই যাইনি'
---

তখনও বৃষ্টি হচ্ছিল। ওকে বাসায় দিয়ে আসার জন্য সিএনজি ডাক দেয়ার মুহুর্তে আমাকে থামিয়ে দিল

'তোমার পায়ে আজকে কি ব্যথা আছে'
'নাহ! কেন'
'তাহলে চল'
'কোথায়'
'আরে বুদ্ধু আমাদের বাসায়'
'সিএনজি নিবা না'
'না। আজকে তোমার সাথে হেটে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে যাব'
'তুমি পাগল নাকি। এত রাস্তা হেটে যাবা'
'হুম। আমি তোমার সাথে বৃষ্টি তে ভিজবো। আর তুমি যদি চাও তাহলে আমি সিএনজি দিয়েও যেতে পারি। তবে সিএনজির উপরের পর্দাটা থাকা যাবে না। বৃষ্টির ফোটা আমার শরীরে পরা চাই ই চাই'
---

এই বলে ও ছাতাটা গুটিয়ে হাটা শুরু করল। শেষপর্যন্ত বাধ্য ইয়ে যেতেই হল। রওনা দেয়ার দশ মিনিট পর ওর সাথে কথা স্টার্ট হয়। অনেক কথা। তখনও অনেক বৃষ্টি হচ্ছিল। তুলনামূলকভাবে অনেক বেশী

'তোমার হাতটা একটু ধরি'
'রাস্তায় মানুষ'
'তাতে কি'
'এইগুলা ছেলেরা বলে। আর তুমি বলতেছো'
'তোমার তো মুখই ফোটে না। তাই তো আমিই বললাম'
'আচ্ছা ধরো'
'হাতে কি'
'অহ সরি। তোমার জন্য নিয়ে আসছিলাম'
'কি এটা'
'সেন্টার ফ্রুট'
'একটা'
'হ্যাঁ, শুধু তোমার জন্য'
'দাও'
'এখন না'
'কখন'
'ওই টাইমে'
'কোন টাইমে'
'ওইযে ওই টাইমে'
'প্যাঁচাও কেন। বল'
'আরে কিস টিস হলে তখন এটা তোমার মুখে দিয়ে তারপর'
'শুধু আমি কেন। তোমার টা কই'
'আমার লাগে না। আমার মুখে গন্ধ নাই'
'তার মানে আমার মুখে গন্ধ'
'জ্ঞানী মানুষের ইশারাই যথেষ্ট'
'হারামি তোর একদিন আর আমার যতদিন লাগে'
'সরি সরি। দেখো আমার মুখেও একটা আছে '
'তোর সাথে কথা নাই। তুই যা'
'সত্যি'
'তোকে খুন করবো আমি'
'কর'
'চুপ থাক'
'সরি'

হাতে হাত রেখে অনেকক্ষণ হাঁটলাম । অনেক কাছাকাছি
---

প্রায় একঘন্টা হাঁটার পর গন্তব্যে পৌছালাম।

বিদায়ের সময়। তখনও ওর মুখে হাসি। আমার দিকে তাকিয়ে হাসতেছিল। অনেক বেশী

'ওকে! তাহলে বাসায় যাও'
'না! থাকো আর কিছুক্ষণ'
'তুমি না খালামনিদের বাসায় যাবা'
'আসিফ তোমার সাথে আমি একটু মিথ্যা বলছি'
'যেমন'
'আজকে খালামনি আমাদের বাসায় আসবে আমরা যাব না'
'তাহলে আসলা কেন'
'প্লিজ লাগে। রাগ কর না। আমি এই বৃষ্টিটা তোমার সাথে কাটাতে চেয়েছিলাম। তাই এই মিথ্যা বলা'
'আমাকে বললেই পারতে। মিথ্যা বলার কি দরকার ছিল'
'আমি তোমাকে আগেও বলছি বৃষ্টিতে ভেজার কথা। তুমি প্রত্যেকবারই বলতে তোমার এই সমস্যা সেই সমস্যা। এইজন্যই এভাবে করা। আর আমরা তো আর প্রতিদিন এবাবে বৃষ্টি পাব না। তাই। সরি'
'যাক। তুমি হ্যাপি তো'
'হুম। অন্নেক হ্যাপি'
'তাহলে এই হ্যাপি ফেস টা নিয়ে বাসায় যাও'
---

আমার লাইফে কাটানো সবচেয়ে সুন্দর একটা মুহুর্ত কে মনের ফ্রেমে বেধেঁ সেন্টার ফ্রুট টা হাতে করেই বাসার দিকে রওনা দিলাম

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.