![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সারাজীবনের অভ্যাস। পরিক্ষার আগের রাতে জেগে থাকা। পড়ার নামে তো কিছুই হয় না। জাস্ট টেনশন করা। এই আর কি
এইচএসসি পরিক্ষার আগের রাতেও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। সারারাত জেগে ছিলাম। ইংরেজী ফার্স্ট পেপার এর প্রশ্নের জন্য। আমান এর বাসায় আলম, সুজন, আমি অনেকেই ভিড় জমিয়ে ছিলাম শুধুমাত্র একটি ফোন কলের উছিলায়
'দোস্ত প্রশ্ন তো পাইয়া ফেলছি, হান্ড্রেড পার্সেন্ট কমন, কামান (আদর করে কামান ডাকতাম আমান কে) এর বাসায় আয়'
সুজনের কল ছিল। রাত একটা। ধুর (!) তাতে কি? ঠেকায় কে আর। গেট খুলে দে দৌড়। সময় কম। প্রশ্ন পাওয়ার পর ভালো করে দেখতে হবে। গেলাম আমান এর বাসায়। হাঁপাতে হাঁপাতে
সবাই ই আছে। কারো হাতে ফোন। কারো কানে। আদানপ্রদান ভালোই চলছে। একদল আছে বই ঘাটার দায়িত্বে। তাদের কাজ প্রশ্ন পাওয়ার পর পরই বই ঘেটে বের করা বইয়ের কোন প্রান্তে আছে প্রশ্নোত্তর। টেলেন্ট দোস্ত ছিল বটে
আমিই বা বাদ থাকবো কেন (!) আমার ও পরিচিত বড় ভাই আছে। আমি ও দিলাম ফোন। কিছু সাজেসন পেলাম। ভাই বলল কমন পাইতে পারি। বই ঘাটা গ্রুপ হুড়াহুড়ি করে বই ঘেটে বের করল। বাহ (!) ভেরি ফাস্ট। পৃষ্ঠা নাম্বার নিয়ে মার্ক করে রাখলাম নিজের বইয়ে। পরিক্ষার হলে ঢোকার আগে একবার হলেও তো দেখা চাই
---
ভোর চারটা
বইয়ের প্রায় পুরাটাই মার্ক করে ফিরলাম বাসায়। বাপরে (!) অনেক সাজেসন। শেষ করা মনে হয় আদৌ সম্ভব না। তখন মনে হচ্ছিল কেন যে আগে ভাগে পড়া শুরু করলাম না? তবুও মনের জোরে শুরু করলাম মার্ক করা প্রশ্ন থেকে বাছাই পর্ব। ছেঁটে পেলাম হাতে গোনা কয়েকটি প্রশ্ন। প্রশ্নের পাশে লিখে রাখলাম ভিভিআই (ভ্যারি ভ্যারি ইম্পর্টেন্ট)
দেখা শুরু করলাম। কয়েকটি প্রশ্ন দেখার পর বুঝতে পারলাম এভাবে সম্ভব না। শেষ করা হয়ে উঠবে না। আবার দিলাম আরেকবার ছাঁটাই। বাহ (!) প্রশ্ন দশটায় এসে ঠেকেছে। বহুত কষ্টে একবার শেষ করলাম কোনরকম সাতটার আগে। তারাতারিই শেষ করলাম। একটু ফিটফাটের ও দরকার আছে। তাই না (!)
শ্যাম্পু, ফেসওয়াশ, সাবান,হারপিক কিছুই বাদ রাখলাম না আজকে। ইচ্ছা মতো ঘসলাম। দাত ব্রাশ করলাম দুই বার। কারণ একটাই। শুনেছি আমাদের সাথে নাকি কোন একটা মহিলা কলেজের সিট পরতে পারে। হাতের তালুতে দুই তিনবার হা হা করে দেখলাম গন্ধ করে কিনা। নাহ (!) পাস করলাম
---
সকাল আটটা
আম্মু অনেক জোরাজুরি করল কিছু খাওয়ার জন্য। নাহ (!) পাগল নাকি আম্মু (!) এখন কিছু খাওয়া যায় (!) খাওয়ার পরে যদি মুখে গন্ধ করে (!) কে নিবে এই দায়ভার (?) খেলাম না। বাইরে থেকে সুজনের ডাক। বাঁচলাম। আম্মুকে সালাম করে দুজন মিলে গেলাম আমান এর কাছে। রাস্তায় আলম আছে
চার বন্ধু মিলে রিক্সায় করে গেলাম নাভারন ডিগ্রী কলেজে। অনেক মানুষ। হাজার খানিক তো হবেই। উফ্ (!) মানুষ এত্তো চিল্লায় কেন (!) তখন মনে হচ্ছিল একটা চিৎকার দিয়ে বলি 'আরে সালারা (!) তোগোর চিল্লানী তে তো আমি সব ভুইল্লা যাইতাছিগা'। পারলাম না
ভিড় ঠেলেঠুলে গেলাম এক্সাম রুমে। বড় রুম। সিট পেলাম। সবার পিছনের আগের টা। বাহ (!) পাশের সিটে মেয়ে। কিন্তু সিটে বসতে পারছিলাম না একটু জটলার কারণে। মেয়ের সাথে আসা কয়েকজনের জন্য। মনে হচ্ছিলো রিলেটিভ। অনেক ভাবে বুজাচ্ছিল। অসহ্য হয়ে বললাম
'ক্যান ইউ প্লিজ মেইক সাইড ফ মি?'
বলার দেরী নাই চৌদ্দ গুষ্টি তাকানো ও সারা। বাপরে (!) সবাই কেমন কপাল কুঁচকিয়ে তাকিয়ে। কিছুটা লজ্জা পাচ্ছিলাম। একজন বলল
'পরে আসেন, দেখছেন না কথা বলছি'
সাহস পেলাম না কিচ্ছু বলার। চুপ মেরে চলে গেলাম ফ্রেন্ডদের কাছে। প্রেস্টিজ পাংচারের ভয়ে ওদের কিছুই বললাম না। কিছুক্ষণ পর আবার গেলাম। আবার অপমান। আবার গেলাম
'প্লিজ আপনারা এমন করলে কিভাবে হবে, আমারও তো একটু প্রিপারেশনের দরকার আছে'
কথাটা শুনে একজন বলল
'তুমি কোন কলেজের'
'আকিজ কলেজিয়েট'
কলেজের নাম শুনে তারা সবাই নড়েচড়ে বসলো। এইবার আমার কি যে খাতির। বলে বুঝাতে পারবো না। মনে হচ্ছিল তারা আকাশের চাঁদ দুই তলার উপরে পেয়েছে। মেয়েটির সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। কাকুতি মিনতি করে বলল
'তোমরা তো দুজন সেইম এজ, হিংসামী করো না, তোমার বন্ধু ভেবেই ওকে একটু সাহায্য করো, দুজন মিলেমিশে দেখাদেখি করে লিখো'
মাথা নেড়েচেড়ে সম্মতি জানালাম। না জানিয়ে উপায় নাই। মেয়ে দেখতে হেব্বী। রেড ফ্রেমের চশমায় মারাত্মক লাগতেছিল
মনে হচ্ছিলো দুইবার দাত ব্রাশ করাটা আজ সার্থক
৩১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৭:৪৯
আসিফ্লী বলেছেন: ডিম দিয়ে আগাছা পরিস্কারের চেষ্টা ব্যার্থ ... মলম লাগিয়ে খেলে ভাল লাগে আর মাথাও ঠান্ডা থাকে
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৭:৪৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
আগাছায় ভরে যাচ্ছে দেশ