![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উপজাতি সম্প্রদায়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
নৃ-তাত্ত্বিক ভাবে এই অঞ্চল আলাদা। কারন, এটি উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি উপদ্রুত অঞ্চল। একটি সাম্প্রতিক জরিপ হতে দেখা যায়,এখানে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৭%-৪৯% বাঙালি,বাকি ৫৩%-৫১% উপজাতি। উপজাতিদের মধ্যে ‘চাকমা’ গোষ্ঠিই সংখ্যাগরিষ্ঠ। মোট জনসংখ্যার ৩৩% (প্রায়) হচ্ছে চাকমা জনগোষ্ঠি। এছাড়া অন্যান্য উপজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে মারমা, ত্রিপুরা, তংচংগ্যা, পাংখো, মুরং, বোম, কুকি, গারো, খিয়াং, চাক, লুসাই, খুমি ইত্যাদি উল্ল্যেখযোগ্য। নৃ-তাত্বিকদের মতে পার্বত্য চট্টগ্রামের মূল উপজাতি কুকিরা। মায়ানমারের আরাকানি চাকমাদের আগ্রাসনে বিতাড়িত হয় কুকিরা।
আবার ব্রহ্মযুদ্ধের সময় চাকমাদের আরাকান থেকে বিতাড়িত করে মগরা। আসামের নৃতাত্ত্বিক তথ্যের পরিচালক মি.জে পি মিলস-এর মতে চাকমারা সেখান থেকে আশ্রয় নেয় কক্সবাজার এলাকায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে আসে ১৮ শতাব্দীতে। উপজাতীয় রাজাদের বংশক্রম থেকে দেখা যায়, চাকমাদের মধ্যে অনেক রাজাই মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত হন। তাঁরা মুসলিম নাম ও পদবি গ্রহন করতেন। এছাড়া তাঁদের সাথে মুসলিম বিবাহ-রীতির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া গেছে অপর একটি গবেষনায়। চাকমাদের ধর্ম বৌদ্ধ হলেও, ধর্মগত আচারে বৌদ্ধত্বের বিশেষ প্রমান পাওয়া যায় না। ১৮ শতকে বহু চাকমার মুসলিম হবার প্রমান রয়েছে। পরে আবার হিন্দুত্বের অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলে। সর্বপ্রথম ব্রিটিশ আমলেই কালিন্দি রানী নামের তাঁদের এক রানী সকলকে বৌদ্ধ হবার নির্দেশ দেন। ১৮ শতাব্দীতে তাঁদের মধ্যে এতটাই বাঙালিয়ানা ভর করে যে, জে পি মিলস বলেন, 'এরা আচারে-ব্যাবহারে ও সংস্কৃতিগত বিষয়ে খুবই বাঙালি হয়ে গেছে (Most Bangalaised tribes)'। আরেকটি গবেষনায় দেখা গেছে, চাকমা ভাষা বাংলা ভাষার একটি উপভাষা।
ড.হুমায়ুন আজাদের মতে চাকমা রাজা মোআন তসনি ব্রহ্মদেশ হতে তাড়া খেয়ে ১৪১৮ সালে কক্সবাজারের টেকনাফ ও রামুতে এসে আদিবাসী কুকিদের বিতাড়ন করে বসতি স্থাপন শুরু করে। তারপর, পালাক্রমে মারমারা আসতে শুরু করে এবং একটা সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যাপী বসতি ছড়িয়ে পড়ে (১৯৯৭ :৪৫)। জে পি মিলসের মতে, এই ‘একটা সময়’ হচ্ছে ১৮ শতাব্দী (সুবোধ ঘোষ)। সুতরাং, পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমা সহ অধিকাংশ উপজাতিদের বসবাসের ইতিহাস বড়জোর ২০০-৩০০ বছর। বাঙালি ও মুসলিম সংস্কৃতির প্রভাব ও বসবাসের ইতিহাসের দিক থেকে বলা যায়, উপজাতিরা আদিবাসী নয়। কিন্তু কেন ইদানিং আদিবাসী বনে যাবার জন্য তাঁদের এত দৌড়ঝাঁপ? কেন এখন ‘উপজাতি’ শব্দটায় তাঁদের এত এলার্জি, কেন তাঁরা এই শব্দটির দরুন 'অপমানিত' বোধ করেন, যেখানে তাঁরা এমনকি ‘৯৭ সালে করা শান্তিচুক্তিতেও নিজেদের উপজাতি হিসেবে মেনে নিতে দ্বিধা বোধ করেননি?
♦♦চলবে>>
©somewhere in net ltd.