নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেরারী

পাহাড়ের ছেলে

বাংলা চলচিত্র শিল্পকে বাচাতে এগিয়ে আসুন।

পাহাড়ের ছেলে › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা সিনেমায় আমার অভিজ্ঞতা-৪র্থ কিস্তি

০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০১

(৩য় কিস্তির পর)

আগের অংশগুলো এখান থেকে পড়ুন
২০০২ থেকে ২০০৫ এর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সহকারী পরিচালকের কাজ করেছি,কালাম ভাইয়ের সাথে।তখন হটাত করেই চলচিত্রে এসে আমার এমন অবস্থা হয়েছিল,যেন মিঠা পানির মাছ লবনাক্ত পানিতে এসে পড়েছে।প্রথম প্রথম মানিয়ে নিতে খুব কষ্ট হত।বিভিন্ন ছবির চিত্রধারনের সময় নায়িকারা সবার সামনেই প্রায় অর্ধনগ্ন হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করত।আমি এই ব্যাপারগুলার সাথে প্রথমে ম্যাচ করতে পারিনি।পরে অবশ্য ঠিক হয়ে গিয়েছিল।এই ড্রেস চেঞ্জ এর ব্যাপারটা যে শুধু বি গ্রেডের নায়িকাদের ক্ষেত্রে ছিল সেরকম নয়,তখন দেশের প্রথম সারির নায়িকাদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা ছিল।কোন একটা প্রসংগে কথায় কথায় কোন এক সিনিয়র পরিচালক বলেছিলেন,"শাবানা ম্যাডাম যেভাবে আমাদের সবার সামনেই কাপড় চেঞ্জ করত,তাতে আমরা নিজেরাই লজ্জায় পরে যেতাম।"তাহলে দেখুন,শাবানাকে আমরা কত পরদানশীন হিসেবে জানি।আসলে চলচিত্রের এটাই নিয়ম।নাচতে নেমে ঘুমটা দেয়ার কোন মানেই হয়না।

তখন আরো একটা বিষয় খুব খারাপ লাগত,বিভিন্ন নতুন মেয়েরা নায়িকা হওয়ার জন্য প্রযোজক,পরিচালক দের কাছে ধরনা দিত।আর এই সুযোগ টাই লুফে নিত নারীলোভী কিছু প্রযোজক পরিচালক।এই মেয়েদের মধ্যে বেশিরভাগ ছিল বিভিন্ন প্রাইভেট ভার্সিটির মেয়ে,পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরাও আসত,তবে সেটা সংখ্যার দিক দিয়ে কম ছিল।এসব নবাগত মেয়েদের যে শুধু প্রযোজক আর পরিচালক রা ভোগ করতেন তা নয়,অনেক সময় তাদেরকে প্রযোজক দের বন্ধু বান্ধব দেরো খুশি করতে হত।বিনিময়ে তারা পেত সাইড নায়িকা বা তার চেয়েও ছোট কোন চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ।এই বিষয় টিকেই ফিল্মি ভাষায় গিভ এন্ড টেক বলা হয়।

এই সময়ে দেখেছি বিভিন্ন মেয়েরা আসত,তারাই গিভ এন্ড টেক এ বেশি আগ্রহী ছিল।এমনও দেখেছি,স্বামী-স্ত্রী একসাথে আসত ধরনা দিতে।স্বামী বাইরে বসে অপেক্ষা করত স্ত্রীর জন্য।আর স্ত্রী ভেতরে প্রযোজকের সাথে টাইম পাস করছে ঘন্টার পর ঘন্টা।একই ভাবে মাকে কে মেয়ের জন্য,বোনকে বোনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখেছি।তাদের মধ্যে ভাবখানা এমন,যেন যে কোন কিছুর বিনিময়েই হোক,চলচিত্রে তাদের অভিনয় করতেই হবে।ইজ্জতের কোন মূল্যই তাদের কাছে নেই।তাদের প্রধান উদ্দেশ্য টাকা কামানো।এভাবে টাকার কাছে ইজ্জত শুধুমাত্র ফিল্মি জগতেই বিক্রি হয়।পতিতালয়ের পতিতারা কোন উচ্চবিলাসের নেশায় পতিতাবৃত্তি তে নামে না।তারা একপ্রকার বাধ্য হয়েই এই কাজ করে।অনেকে ব্ল্যাক মেইলের শিকার হয়েও আসে।কিন্তু চলচিত্রে কাজ করার জন্য সবকিছু বিলিয়ে দেয়ার পেছনে কোন বাধ্য করা বা ব্ল্যাকমেইল করা না,এর পেছনে কাজ করে উচ্চবিলাস,টাকা কামানোর ধান্ধা।

আরেকটি বিষয়, যেটা না বললেই নয়,এটা তখনো ছিল,এখন আরো বেশি দেখা যায়।এই বিষয় কে ফিল্মি ভাষায় বলা হয় ট্রাই ডে।মনে করুন কোন একটি ছবির একটি,বা দুটি বা তার অধিক গানের চিত্রায়ন হবে থাইল্যান্ডে,কিংবা পাতায়াতে,কিংবা আমাদের দেশের কক্সবাজার,রাঙামাটিতে।সেই ক্ষেত্রে সেই ছবির নায়িকাকে কে নিয়ে প্রযোজক দুই দিন আগেই চলে যাবেন সেই জায়গায়।অনেক ক্ষেত্রে প্রযোজকের সাথে তার দুই একজন বন্ধু বান্ধব ও থাকে।বাকি শুটিং ইউনিট দুইদিন বা তিনদিন পরে সেখানে এসে শুটিং করে।আর এই তিন দিন নায়িকা শুধুমাত্র ওই প্রযোজক আর তার বন্ধুদের কেই সময় দেয়।এসব বিষয় আমার নাকের ডগা দিয়ে ঘটেছে।বর্তমান সময়ে এগুলো আরো বেশি ঘটছে,এটা এখন ওপেন সিক্রেট ম্যাটার।

বাংলা চলচিত্রের,না,শুধু বাংলা চলচিত্রের না,বিশ্বের সব দেশের চলচিত্র শিল্পেই "গিভ এন্ড টেক পদ্ধতি প্রচলিত,বাংলা ফিল্মে এই প্রবনতা একটু বেশি বলেই মনে হয়েছে।কোন একটা ছবির সাইনিং,মহরত,রিলিজ উপলক্ষে সেই ছবির নায়িকাদের, সেই ছবির প্রযোজক পরিচালক কে "খুশি" করতে হয়।তাই আমাদের বাংলা চলচিত্রের সিনিয়র এবং জনপ্রিয় এক নায়িকা বলেছিলেন,"ফিল্মে কাজ করলে কোন মেয়েই তার ভার্জিনিটি ধরে রাখতে পারে না।ফিল্মে কাজ করার পর যদি কোন মেয়ে বলে সে ভার্জিন, তাহলে মিথ্যা কথা বলছে।" উনার এই মন্তব্য যে যথার্থই ছিল,২০০৫ এ সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রথম ছবি বানানোর সময়েই বুজেছিলাম।

(চলবে)

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুমমম!!

এগুলোতো ওপেন সিক্রেটই অনেকটা। সবাই জানে কেউ জানেনা! ;)

২| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৭

জনাব মাহাবুব বলেছেন: টেক এন্ড গিফ্ট এর মাধ্যমেই মেয়েদের সর্বনাশ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।

আপনি যে বর্ণনা দিলেন, তাতে দেশবাসী যদি সকল ঘটনা অবগত হয়, তাহলে এই ইন্ডাষ্ট্রিজের প্রতি ঘৃনা আরও বহুগুনে বেড়ে যাবে। :-&

৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অাপনি তো দেখছি "ঘরের শত্রু বিভীষণ" (মাইন্ড খাইয়েন না)। চলচিত্র শিল্পে এমন যে হবেই, এটা সহজেই অনুমেয় । "নাচতে নেমে ঘুমটা দেয়ার কোন মানেই হয়না ।"

৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩৭

কিরমানী লিটন বলেছেন: গোপন নয় -অথচ গোপন...

শুভকামনা ...

৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৯

শহুরে আগন্তুক বলেছেন: এক সিনিয়র পরিচালক বলেছিলেন,"শাবানা ম্যাডাম যেভাবে আমাদের সবার সামনেই কাপড় চেঞ্জ করত,তাতে আমরা নিজেরাই লজ্জায় পরে যেতাম।" .... হুদাই একটা ডায়লগ । পরিচালক আর লুইচ্চা তো যতদূর জানি সমার্থক শব্দ ... এদের আবার লজ্জা - শরম আছে নাকি??

৬| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮

পাহাড়ের ছেলে বলেছেন: মাইন্ড খাওয়ার কিছু নাই

৭| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৮

অগ্নিপাখি বলেছেন: ্পঞ্চম পর্বের অপেক্ষায় .।.।.।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.