![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।
কবি নজরুল ও নার্গিসের বাসরঘর।
=====================
10 ফেব্রুয়ারি 1992,
আলাউদ্দিন ভিলা,
প্রযত্নে: আবদুর রাজ্জাক,
মাতুয়াইল, ডেমরা, ঢাকা।
================
আমার গ্রামের বাড়ির কবি জ্যাঠা সাবেরুল ইসলামের (ডা. মাহাম্মদ আলী) কাছে কৈশোরে শুনেছি কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনেক গল্প।
এই জ্যাঠা একসময় কলকাতায় ছিলেন। সময়টা ছিলো বৃটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্যের কাল। তখন কবি কাজী নজরুল ইসলামের সান্নিধ্য পেয়েছেন তিনি।
তাঁর কাছেই শুনেছি কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম পত্নী নার্গিস ও দ্বিতীয় পত্নী প্রমীলার নানা গল্প। শৈশবে এবং কৈশোরেই।
নার্গিসের দুঃখের জন্য জ্যাঠার বুকেও হাহাকার ছিলো।
এই জ্যাঠাই আমাকে প্রথম বলেন, 1962 সালে সে সময়ের কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ কবি কাজী নজরুল ইসলামের কুমিল্লার মহান স্মৃতিকে অমর করার জন্য শহরের গার্লস হাইস্কুল ‘ফরিদা বিদ্যায়তনে’র দক্ষিণ দিকের সামনের রাস্তাটিকে ‘নজরুল এভিনিউ’ নামকরণ করেন। আর ওখানেই ছিলো নজরুলের দ্বিতীয় স্ত্রী প্রমীলাদের বাড়ি।
ঢাকায় আব্বাও কবি নজরুলকে খুব কাছে থেকেই একাধিকবার দেখেছেন। কিন্তু ওই কবি তো তখন নির্বাক। সবাক কবি নজরুলকে সাবেরুল জ্যাঠাই দেখেছেন।
জ্যাঠা পেশায় হোমিও ডাক্তার। একসময় প্রায়ই কুমিল্লা শহরের এম. ভট্টাচার্য এন্ড কোং এ এসে তিনি গ্রামের রোগীদের জন্য হোমিও ওষুধ নিয়ে যেতেন। এম ভট্টাচার্যের (মহেশ ভট্টাচার্য) ছবিও আমি তাঁর চেম্বারেই প্রথম দেখেছিলাম। সেটি দেখেছিলাম একটি দেয়াল ক্যালেন্ডারের পাতায়। তখন আমি তো প্রথম এই ‘এম ভট্টাচার্য’কে কবিই ভেবেছিলাম। ...।
এই সাবেরুল জ্যাঠার বিয়ে কিন্তু করার কথা ছিলো কবি খান মুহম্মদ মঈনুদ্দিনের ভাতিজিকেই। কিন্তু জ্যাঠার বাবা-মা নাকি সে বিয়েতে কোনোভাবেই সম্মত হননি।
সাবেরুল জ্যাঠা এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় নাকি পাল্কিতে করে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই পরীক্ষায় তিনি অবশ্য পাশ করতে পারেননি। এ কথা আমাকে আব্বাই বলেছেন।
তারপরও ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলতে পারেন সাবেরুল জ্যাঠা। কিন্তু তাঁর দুঃখ, তাঁর কোনো সন্তানই জ্ঞানচর্চায় নেই।
এই জ্যাঠার কাছেই আমি প্রথম কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থটি পাঠ করতে পাই। তারপর সেই ‘অগ্নিবীণা’র অনুকরণে আমি লিখেছিলাম ‘বজ্রবীণা’। জ্যাঠা দেখে তো অনেকই হাসলেন। তারপরও লিখে যেতে বললেন। সেটা অবশ্যই 1988 সালের আগের একটি ঘটনা।
আমি যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থটি প্রায় মুখস্থই করে ফেলি, তখনই তাঁকে সেই কাব্যের অনেক গান ‘আবৃত্তি’ করে শুনিয়েছি। তিনি মুগ্ধ হয়েছেন এবং আল্লাহর কাছে হাত তুলে আমার জন্য বিশেষভাবেই দোয়া করেছেন।
আমার কাছে সংরক্ষিত অনেক বছর আগে মুদ্রিত ঢাকা কলেজের একটি সাহিত্য সাময়িকীতে এক লেখার সঙ্গে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথ ও উইলিয়াম পিয়ারসনের ছবিটা দেখলেই জ্যাঠা আবেগে আপ্লুত হন এবং আমিও হই। হায় আমার আবেগ!
আজ কয়েকদিন হলো, একটি দেয়াল পত্রিকার জন্য মাতুয়াইল এলাকার বিভিন্ন স্কুলে লেখা আহবান করেছি। মাতুয়াইল হাইস্কুলের বাংলা বিভাগের শিক্ষক লিয়াকত স্যারের কাছেও লেখা চেয়েছি। সম্ভবত এই লিয়াকত স্যারের বাড়ি মানিকগঞ্জে। এই লিয়াকত স্যারেরই একজন ছোট ভাই আছেন শর্টফিল্ম মেকার। আমার চলচ্চিত্রপ্রীতির কথা শুনেই স্যার আমাকে এই কথা বললেন।
এদিকে প্রায়ই বিভিন্ন স্কুলে যাচ্ছি লেখা সংগ্রহের জন্য। দেয়াল পত্রিকার নাম দিয়েছি ‘সৈকত’। ২০ ফেব্রুয়ারিই লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ: 21 ফেব্রুয়ারিতেই প্রকাশিত হবে আমাদের সেই আনন্দ-অনুভূতির ফসল ‘সৈকত’। লেখা পাঠানোর বিষয়ে কিশোর-কিশোরীদের উৎসাহ দেখে দারুণ আনন্দ পেয়েছি।
এক সময় আমি ‘দৈনিক ইনকিলাব’ পত্রিকার খুব ভক্ত হলেও এখন আর তেমন নই। তখন ‘দৈনিক জনতা’ পত্রিকারও পাঠক ছিলাম আমি। অবশ্য সেটা ওই পত্রিকার সাহিত্য সাময়িকীর জন্যই। ‘দৈনিক জনতা’র 11 জ্যৈষ্ঠ নজরুল জয়ন্তি সংখ্যা কুমিল্লা স্টেডিয়ামের পশ্চিম গ্যালারীতে বসে সেদিন বিকেলেই পড়া শেষ করেছিলাম। ওখানে মুদ্রিত নজরুল গবেষক বুলবুল ইসলামের ‘নজরুলের অমর প্রেম’ শীর্ষক লেখাটিও ছিল চমৎকার। কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী কুমিল্লার মুরাদনগরের নার্গিসের ছবিসহ সেই লেখা পত্রিকায় ছাপা হয়। নার্গিসের ছবি তার আগে আমি আর কোথাওই দেখিনি। এমনকি সাবেরুল জ্যাঠার কাছেও না। ওই সাহিত্য পাতায় আরও ছিলো আবদুল মান্নান সৈয়দের লেখা। সেই মান্নান সৈয়দ এখন আমার সাহিত্যের ক্লাসের সরাসরিই শিক্ষক।
এই দেশেরই যাদের লেখা একদা বইয়ে অথবা পত্রিকায় পড়েছি, তাদের কেউ কেউ এখন আমার অতি আপন শিক্ষক। যেমন আমাদের বাংলা বিভাগের শিক্ষক নাট্যকার ও অভিনেতা মমতাজ উদদীন আহমদ স্যার। তাহলে? এটা কি কম গৌরবের কথা ?
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৩:৫৮
জসীম অসীম বলেছেন: ভাই, এ মুহূর্তে নার্গিসের ছবি আমার সংগ্রহেও নেই। পরে শেয়ার করবো। ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:৪০
কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: দৈনিক ‘জনতা’র ১১ জ্যৈষ্ঠ নজরুল জয়ন্তি সংখ্যা কুমিল্লা স্টেডিয়ামের পশ্চিম গ্যালারীতে বসে সেদিন বিকেলেই পড়া শেষ করেছিলাম। ওখানে বুলবুল ইসলামের ‘নজরুলের অমর প্রেম’ লেখাটি ছিল চমৎকার। তার প্রথম স্ত্রী মুরাদনগরের নার্গিসের ছবিসহ সেই লেখা ছাপা হয়।
( নার্গিসের ছবি আমিও দেখিনি।------------যদি সম্ভব হয় শেয়ার করবেন প্লিজ। ) ধন্যবাদ।