নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

শরীর কি শরীর ছাড়া আর কিচ্ছু বুঝে?

০১ লা আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৬

বিয়ের নাম মৃত্যু হতে পারে, বিয়ের আগে এটা আসলে কতোজনই বা বুঝতে পারে ? অবশ্য সবার বিয়ে তো আর এমন মৃত্যু হয়ে আসে না। আমিও খুব বেশি বিয়েপাগল ছিলাম। এখন মনে হয় ফ্রানৎস কাফকা কেন এত এত নিবিড় প্রেম করেও বিয়ে করতে চাননি কিংবা করেননি। আসলে এ বিষয়ে আমি আমার প্রেম করে বিয়ে করা বউকে একটুও দোষ দিতে চাইনা। চাই না। কারণ আমি চিন্তা করেছি তার শরীর পাবো কী না কিংবা সে সুন্দরী কী না। এসবতো ঠিকই আছে। কিন্তু চিন্তার যদি এত পার্থক্য থাকে , তাহলে কি এমন সংসারকে কবর বলা যায় না ? রক্তে আমার ঢুকে গেছে কবিতার ঘ্রাণ। আর এ জন্য সংসারে ঝড় উঠতে পারে, এ আমার জানা ছিলো না তেমন। অবশ্য এটা জানতাম, শুধুমাত্র কবিতায় অশ্লীলতার অভিযোগে কবি জীবনানন্দ দাশের কলেজের অধ্যাপনার চাকুরি চলে গিয়েছিল। কিন্তু তার দাম্পত্য জীবনও কি খুব বেশি সুখের ছিল ? প্রেম করেই বিয়ে করেছি আমি। সময়মত বিয়ে করতে আমার কোনো আপত্তি ছিল না। মা আমার বিয়ের বিষয়ে খুব অনুরোধই করতো। কিন্তু তার বেঁচে থাকা অবস্থায় বিয়ে করা হয়নি আমার। বিয়ের উপযুক্ত বোনকে তো বিয়ে দিতে হবে। সে রকমই হলো। তারপরও ঝামেলা কিন্তু বাঁধলোই। আমার স্ত্রী একাকিত্ব বোধ করে সন্তান কামনা শুরু করলো। তার ভাবনা সন্তান হলে তার নিঃসঙ্গতা ঘুচবে। কিন্তু আমি ভাবি, যেভাবে সহসা পত্রিকার চাকুরি ছেড়ে দেই আমি, আর যত বেশি চিন্তার পার্থক্য বাড়ছে আমার স্ত্রীর সাথে এবং ইদানিং সেই স্ত্রী যেভাবে তার বেপরোয়া মায়ের কথায় ‘লেফট-রাইট’ করছে, আমার সন্তান কি তাতে সুন্দর পৃথিবী খুঁজে পাবে ? কিন্তু ঝড় তো বেড়েই চললো। গোয়ালের গরু হলে অবশ্য তেমন সমস্যা হতো না। কিন্তু আমিও কি কম গোঁয়ার মানুষ! তবু সংসার করতে চায় মন। কারণ যৌবন তো দুর্দমনীয়। শরীর কি শরীর ছাড়া আর কিচ্ছু বুঝে? কিন্তু শরীরের জন্য কি আমি আমার বোধবুদ্ধি মত-পথ সব বলি দেবো ? আমি যদি গোয়ালের গরু হতাম কিংবা ভেড়া, তাহলে কি এত সমস্যা হয় ? যদি এমন হতো মিল হচ্ছে না বউয়ের সঙ্গে, তাহলে তো একটা বিষয় ছিল। কিন্তু আমার তো পত্রিকার মালিক কিংবা সম্পাদকদের সাথেও মিল হচ্ছে না। এই কুমিল্লা শহরের স্থানীয় পত্রিকায় বারবার চাকুরি করতে গিয়ে আমি পাগলে রূপান্তরিত হয়েছি। অন্যদিকে ঢাকায়ও যেতে ইচ্ছে করছে না। এ জন্য আমার বন্ধুরাও আমার প্রতি ্যাপা। এখন আমার কখনো কখনো মনে হয় বিয়ে কি কখনো কাউকে খুন করেও দিতে পারে ? কেন মানুষের নিজস্ব মত-পথ চিন্তাকে বিশ্বাসকে এমন বাঁচিয়ে রাখাই বড় একটা দায় হয়ে গেল! ফ্রানৎস্ কাফকা কি এই কারণেই এতবার প্রেমে পড়েও, এত শত প্রেমের চিঠি লিখেও বিয়ে করতে পারলেন না ? কিন্তু তিনি তো বিয়ে না করেও খুনই হয়ে গেলেন। জীবনানন্দ দাশ বিয়ে করেও, সংসার করেও, ঝাঁপ দিলেন কিংবা পড়ে গেলেন কলকাতার ট্রামের নিচে। কিন্তু তাদের তো মেধা ছিলো। এই আমি মেধাশূণ্য এক যুবক, কী করবো ভেবে পাচ্ছি না। শরীর কি শরীর ছাড়া আর কিচ্ছু বুঝে? কিন্তু শরীরের জন্য কি আমি রক্তে রক্তে গড়ে তোলা মূল্যবোধ বলি দিয়ে জীবনের প্রতি, সময়ের প্রতি প্রতিশোধ নেবো ? জীবনানন্দ দাশ, আমি কি হয়ে গেলাম এই সময়ের নারকীয় যন্ত্রণার দাস ? জানুয়ারি ২০০২, কুমিল্লা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.