নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

এমনই দুর্দান্ত সাংবাদিক ছিলেন কুমিল্লার নাসির উদ্দিন

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৭



তখন ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার কুমিল্লা প্রতিনিধি ছিলেন নওশাদ কবীর। নওশাদ কবীরসহ কুমিল্লার অনেক সিনিয়র সাংবাদিকই আমাকে খুবই স্নেহ করতেন। তাই আজ অনেক অপ্রিয় কথাও আর বলা যাবে না।
2002 সালের 21 ফ্রেব্রুয়ারী রাতে কুমিল্লা শহরের টমছমব্রীজের কাছে একজন ট্রাফিক পুলিশ খুন হোন। আমি কোতয়ালী থানায় গিয়ে সেই নিহত ট্রাফিক পুলিশের ছবি তুলি। রীতিমতো জবাই করে খুন।
এরই কিছুদিন পর নওশাদ কবীর পুলিশী রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে সেই খুনকে ‘সড়ক দুর্ঘটনা’ হিসেবে তাঁর সেই ‘যুগান্তর’ পত্রিকায় রিপোর্ট করেন। কিন্তু কুমিল্লার অনেক পেশাদার সাংবাদিকই এই সংবাদের এমন প্রচারণাকে মেনে নিতে পারেননি।
এ রকম আরও অনেক খুনের ঘটনা ও অন্যান্য আরও সংবাদ প্রকাশের বিষয়কে কেন্দ্র করে নওশাদ কবীরের সঙ্গে তখন কুমিল্লার আরেক সাংবাদিক মাসুক আলতাফ চৌধুরীর বিরোধও চরমে উঠে। অনেকেই উভয়ের এই উত্তপ্ত সম্পর্ককে অত্যন্ত দুঃখজনক বলেই অভিহিত করেন।
সর্বশেষ: 2003 সালের 21 ফেব্রুয়ারীর আগেই: 9 ফেব্রুয়ারী চান্দিনায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সাংবাদিক নওশাদ কবীর মারা যান...। এটি কি সড়ক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড, এ নিয়ে সেসময়ে কুমিল্লার আরেক সাংবাদিক সাইয়িদ মাহমুদ পারভেজ একটি সংবাদ ‘দৈনিক শিরোনাম’ পত্রিকায় প্রকাশ করেন। তখন আমিও ওই পত্রিকায় চাকুরি করছিলাম।
নওশাদ কবীরের মৃত্যুর কয়েকমাস আগে একবার ‘দৈনিক ইত্তেফাকে’র কুমিল্লা প্রতিনিধি খায়রুল আহসান মানিকের ভাতিজি কুমিল্লার গাইনী ডাক্তার মলিনা রানী কুন্ডুর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে রিপোর্ট করেন সাংবাদিক মানিক ভাই। আর সেই সংবাদের প্রতিবাদ করতে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন ডাক্তার মলিনা রানী কুন্ডু। আর সেই সাংবাদিক সম্মেলনে গিয়ে সাংবাদিক নাসির উদ্দিন মলিনা রানী কুন্ডুকে ভয়াবহ ‘জেরা’ করেন। নাসির উদ্দিন তখন ‘দৈনিক প্রথম আলো’ পত্রিকার কুমিল্লা প্রতিনিধি।
সাংবাদিক নাসির উদ্দিন সেদিন মলিনা রানীর আয়োজন করা চা-নাস্তাও উপেক্ষা করে এসেছিলেন। এদিকে পরে অভিযোগ উঠলো গাইনি ডাক্তার মলিনা রানী কুন্ডুর পক্ষ নিয়ে কুন্ডুকে অব্যাহত পরামর্শ দিয়ে চলেছেন সাংবাদিক নওশাদ কবীর।
যে নওশাদ কবীরের বাসায় বসে একদিন নিউজ না লিখলে দৈনিক ইত্তেফাকের কুমিল্লা প্রতিনিধি খায়রুল আহসান মানিক ভাইয়ের পেটের ভাত হজম হতো না, বাস্তবে নওশাদ কবীরের মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এই মানিকের সম্পর্ক খুবই ভালো ছিল।
যে নওশাদ কবীর ‘প্রথম আলো’র তখনকার কুমিল্লা প্রতিনিধি নাসির উদ্দিনকে কুমিল্লা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকতার কৃতিত্বের জন্য একটি সংবর্ধনা দিতে এতো প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন, কেউ কেউ প্রশ্ন উথ্থাপন করলেন, তিনি কি সত্যি সত্যি সাংবাদিক নাসির উদ্দিনের মিত্র ?
‘দৈনিক প্রথম আলো’ কর্তৃপক্ষ 2002 সালে সাংবাদিকতায় ভালো কাজের জন্য তাদের সেরা 10 জন সাংবাদিক নির্বাচন করে। কুমিল্লার নাসির উদ্দিন ছিলেন তাদের অন্যতম। এ নিয়েই নওশাদ কবীরদের এ সংবর্ধনার আয়োজন হয়েছিলো। পরে অবশ্য এ অনুষ্ঠানটি ভন্ডুল হয়ে যায় কুমিল্লার কিছু সাংবাদিকের কূটনৈতিক চাল চালাচালির কারণে।
2002 সালের এপ্রিল মাসে ঢাকা থেকে আমার দুই বন্ধু আসে কুমিল্লায়। ওদের দুইজনই ছিল টেলিভিশন সাংবাদিক। একজন ছিল বিটিভির রিপোর্টার। আমরা 3 বন্ধু মিলে তখন দূরে এক জায়গায় বেড়াতে গেলাম। কিন্তু এরই মধ্যে একদিন সকালবেলা ‘দৈনিক প্রথম আলো’র কুমিল্লার একটি খবর পড়ে তো আমি অবাক। সে এক রোমাঞ্চকর খবর বা রিপোর্ট।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের কাশিনগরের অলিপুর গ্রামের শাহীন নামের এক ধর্ষকের নদীরপাড়ের গুহায় নিয়ে এক যুবতী মেয়েকে ধর্ষণের বিবরণ। এ রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর চতুর্দিকে হৈ চৈ পড়ে যায়। জেলা পুলিশ প্রশাসনও প্রচন্ড প্রশ্নের মুখে পড়ে।
সে সময়ে একদিন নওশাদ কবীরের সঙ্গে আমিও গেলাম সেই সংবাদে উল্লেখিত গুহা দেখতে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের কাশিনগরের অলিপুর গ্রামে।
গিয়ে এলাকার মানুষের কাছে শুনেছি, ‘দৈনিক প্রথম আলো’তে এই রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর ধর্ষক শাহিনের বোন ও ভগ্নিপতি এবং চাচা আবদুর রহিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে ধর্ষক শাহিন ও তার বাবা চৌদ্দগ্রামের সীমান্তপথে ভারতের ত্রিপুরায় পালিয়ে গেছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে...ইত্যাদি।
যেই গুহায় ধর্ষক শাহিন নারী ধর্ষণ করেছিলো, আমরা সেখানে গিয়ে দেখি সেই গুহার অর্ধেকেরও বেশি কারা যেন ভরাট করে ফেলেছে। কেউ কেউ অভিযোগ করলো, পুলিশই বদনাম থেকে কিছুটা বাঁচতে এলাকার লোক দিয়ে সেই গুহা ভরাট করে ফেলেছে। গুহা ভরাটের পরও যতোটা গর্ত ছিল, তাতেও ভিতরে ৩/৪ জন লোক অনায়াসে লুকিয়ে থাকতে পারবে। আমাদের সঙ্গে থাকা সাংবাদিক সাইয়িদ মাহমুদ পারভেজও সেই গুহায় নেমে দেখলেন। আমিও নামলাম গুহার অর্ধেক পর্যন্ত। সেই গুহা দেখতে ঐ এলাকার হাজার হাজার মানুষের ঢল আমি নিজ চোখে দেখে আসি। আর আমাদের সেই সাংবাদিক টিমে তখন দলনেতা ছিলেন নওশাদ কবীর।
কিন্তু সেই ঘটনা নিজ চোখে দেখে আসার পরও ফিরে এসে নওশাদ কবীর দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় রিপোর্ট লিখলেন ‘চৌদ্দগ্রামের কাশিনগরের গুহা নিয়ে বিভ্রান্তি’ শীর্ষক নিউজ। কেন? এ রকম প্রশ্ন ছিল অনেকেরই সাংবাদিকদেরই অনেকের মনে? অথচ সাংবাদিক নাসির উদ্দিন ও সাংবাদিক নওশাদ কবীরের প্রকাশ্য কোনো বিরোধ কখনোই আমরা দেখিনি। এমনকি তাঁদের উভয়েরই গ্রামের বাড়িও ছিল খুবই কাছাকাছি। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি এলাকায়। তাহলে কেন হতো তাঁদের মধ্যে নেপথ্য সেই বিরোধীতা? কী ছিল তার কারণ...?
সাংবাদিক নাসির উদ্দিনকে আবার অনেকেই অনুসরণ করতেন। কোনো সাংবাদিক তাঁর করা সংবাদের এক দুইবার হয়তো বিরোধীতা করেছে, কিন্তু অধিকাংশ ঘটনাই হলো নাসির উদ্দিনকে অনুসরণই করতেন কুমিল্লার অনেক সাংবাদিক। সেটা যে কেবল সংবাদের ক্ষেত্রেই, তা নয়, অনেক সময় তাঁর বিভিন্ন কর্মসূচিকেও অনুকরণ করতেন। যেমন একবার দেখা গেল সাংবাদিক নাসির উদ্দিনের
‘দৈনিক প্রথম আলো’র কুমিল্লা অফিস পুলিশ লাইন থেকে চলে এলো কান্দিরপাড় অহিদুজ্জামান ম্যানশনের ‘কস্তুরি রেস্টুরেন্টে’র সঙ্গে। তারপর এখানে অফিস পেতে অন্য অনেক সাংবাদিকও প্রচেষ্টা চালালেন। আর সেই সূত্র ধরেই কস্তুরি মার্কেটে এলো ‘দৈনিক সমকালে’র কুমিল্লা অফিস। তারও আরও পরে ‘দৈনিক কুমিল্লার কাগজ’ অফিস এবং একসময়ে এলো ‘দৈনিক যুগান্তরে’র কুমিল্লা অফিসও। সবশেষে এসেছিলো কুমিল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়। তারপর ‘কস্তুরি রেস্টুরেন্টে’র আশপাশে যে সাংবাদিকদের সর্বদাই আড্ডা হতে দেখা গেল, তারও এক ধরনের উদ্বোধকও ছিলেন সাংবাদিক নাসির উদ্দিন। ওই সময়ে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের চেয়ে আরও অধিকমাত্রায় এই কস্তুরি মার্কেট এলাকা সাংবাদিকদের পদচারণায় মুখরিত ছিল।
সাংবাদিক নাসির উদ্দিনের সঙ্গে আমার দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার কোনোদিনও সুযোগ হয়নি। একবার একটি ফটোগ্রাফিক কালার ল্যাবে কুমিল্লার সাংবাদিক নাসির উদ্দিনের সঙ্গে দেখা হলে আমি তাঁকে বলি, সাংবাদিকতা বিষয়ে লেখাপড়া না করেও কিভাবে আপনি সাংবাদিকতা বিষয়ে রিপোর্টিং সম্পর্কে ঠিক এতোটা সিরিয়াস?
তিনি বললেন, আমি সিরিয়াস কী না জানি না, তবে ভালো রিপোর্টার হওয়ার জন্য সাংবাদিকতায় পড়তেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। নিজের সিদ্ধান্ত, ইচ্ছা, মনোবলও এখানে বিশাল ভূমিকা পালন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল বিষয়ে এম.এ পাশ করে শাইখ সিরাজ ‘মাটি আর মানুষে’র জন্য যা করতে পেরেছেন, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি বিষয়ে এম.এ পাশ করেও তো অনেকে তা পারেন না।

কুমিল্লার একজন সাংবাদিক একসময় নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাসে কমপক্ষে একবার হলেও বিরুদ্ধ-চিঠি পাঠাতেন তাঁর “দৈনিক ‘প্রথম আলো’র ঢাকা অফিসে। সেই সাংবাদিকের সঙ্গে নাসির উদ্দিনের প্রকাশ্য সম্পর্ক কিন্তু ভালোই ছিল।
নাসির উদ্দিনের বিপক্ষে কাজ করার জন্য একবার একটি অফিসে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড কাউন্টার এসোসিয়েশন’ গঠন বিষয়ে একটি মিটিং হয়। ঘটনাচক্রে সেখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম। আমি প্রভাবশালী কোনো রিপোর্টার ছিলাম না বলে আমাকে তখন এতোটা গণনা করা হয়নি। তবে ওই মিটিং-এ উপস্থিত সাংবাদিকদের মতান্তরে সর্বশেষ সেই কাউন্টার এসোসিয়েশন গঠন করা যায়নি।
আরেকবার নাসির উদ্দিন বিরোধী আন্ডারগ্রাউন্ড মিটিং বসে একটি রেস্টুরেন্টে। এবার সাংবাদিক উপস্থিত হলেন 6 জন। আমি যদিও নাসির উদ্দিনের পক্ষে-বিপক্ষে কোনো অবস্থানেই ছিলাম না, তারপরও সেখানে বিষয়টি ফাঁস না করার শর্তে উপস্থিত থাকতে পেরেছিলাম। এই ঘটনা ফাঁস করিওনি কোনোদিন।
এ মিটিংয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রবীণ একজন সাংবাদিক। তিনি নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ‘কী কী করণীয়’, তার একটি নীল নকশাও দাঁড় করালেন। প্রস্তাবগুলো শুনে সবাই খুশি। প্রবীণ সেই সাংবাদিক এবার ওই বিষয়ে লিখিত সিদ্ধান্তের নিচে সবাইকে তাঁদের নাম দস্তখত করতে বললে কেউ আর রাজি হলেন না। প্রবীণ সাংবাদিক গেলেন ক্ষেপে। বললেন, নাসির উদ্দিনকে আমরা দুর্নীতিবাজ ও দুর্বৃত্ত বলছি ঠিকই, কিন্তু আমরা নিজেরাও দুর্বৃত্ত। তা না হলে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না কেন? পরে তিনি বললেন, ঠিক আছে আমরা লিখিত না দেই, কমপক্ষে কুমিল্লার এসপি মকবুল হোসেনকে গিয়ে গোপনভাবে নাসিরের বিরুদ্ধে এসব কথা বলি।
মিটিংয়ে উপস্থিত একজন সাংবাদিক তখন বললেন, এসপি মকবুল হোসেন ভূইয়া আমাদের মতো একডজন সাংবাদিকের মুখের কথার চেয়ে একজন নাসির উদ্দিনের কথারই অধিক মূল্য দেবেন এবং সেটা নিঃসন্দেহেই। সুতরাং এসব বিষয় নিয়ে এস.পি-র কাছে আর গিয়ে বা কী লাভ? এ কথা শুনে সেই প্রবীণ সাংবাদিক রেগেমেগে তাঁর বাসাতেই চলে গেলেন।
নাসির উদ্দিনের করা অন্যান্য রিপোর্ট নিয়ে পাঠকের মনে তেমন কোনো সংশয় না থাকলেও কুমিল্লার সাংবাদিকদের কেউ কেউ অপপ্রচারে নামতেন এই বলে যে, রিপোর্টটি বাড়িয়ে বলা, বানিয়ে বলা, অনিরপেক্ষ রিপোর্ট। একদিন কুমিল্লার একটি আঞ্চলিক পত্রিকার সম্পাদক শহরের অনেক গণ্যমান্য লোকের সামনে বললেন, রিপোর্টার নাসির উদ্দিন আফজল খানের বিরুদ্ধে লিখেন, বাহারের বিরুদ্ধে লিখেন না...ইত্যাদি। নাসির উদ্দিনের রিপোর্ট নিয়ে অনেক সাংবাদিকই পেছনে পেছনে এভাবে কথা বলতেন প্রকাশ্যেই। আবার নাসির উদ্দিনের সঙ্গে শ্রদ্ধায় কাতর ভঙ্গিতে তারাই আবার হাত মেলাতেন, সালাম দিতেন...ইত্যাদি।
অথচ ‘দৈনিক দিনকাল’-এর তখনকার কুমিল্লা প্রতিনিধি শাহজাদা এমরান একবার পেছনে বিরোধীতা না করে দৈনিক প্রথম আলো-তে করা সাংবাদিক নাসির উদ্দিনের একটি রিপোর্টের কাউন্টার রিপোর্ট করেন তাঁর পত্রিকা দৈনিক দিনকাল-এ। শাহাজাদার ওই কাউন্টার সংবাদটি ‘অথেনটিক’ নয় মর্মে সাংবাদিক নাসির উদ্দিন খুবই ক্ষুব্ধ হোন। অথচ যারা পেছনে পেছনে নাসির উদ্দিনের বিরোধীতা করেছেন, প্রকাশ্যে সম্পর্ক রাখেন মধুর, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই শাহাজাদা কাউন্টার নিউজটি করেন।
শাহাজাদা সেই কাউন্টার নিউজ করার আগে কুমিল্লার কমপক্ষে 3 জন পেশাদার সাংবাদিকের মতামত নেন এই বলে যে, নিউজটি তাঁর করা ঠিক হবে কী না। কিন্তু সেই সাংবাদিকদের সবাই শাহাজাদাকে কাউন্টার নিউজ করে দেওয়ার জন্য অতি উৎসাহ দেন। যে 3 জন সাংবাদিক কাউন্টার নিউজ করার জন্য শাহাজাদাকে সাপোর্ট করেন, তারাও আবার প্রকাশ্যে নাসির উদ্দিনেরই প্রিয়ভাজনই ছিলেন। আঞ্চলিক গণমাধ্যম কর্মীদের এ এক অত্যন্ত জটিল রাজনীতি ও কূটনীতি।
কাউন্টার নিউজ করার সময় শাহাজাদা অন্য সাংবাদিকদের পরামর্শ কিংবা মতামত নিলেও সাংবাদিক নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো আলাপই করেননি। সংবাদের এ বিষয়টি নিয়ে নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা না করার জন্যই শাহাজাদা এমরানের প্রতি তখন তিনি চড়াও হয়েছিলেন। এমন বিরোধীতা অনেকই ছিল সাংবাদিক নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে। কিন্তু নাসির উদ্দিন এসব পরোয়া করতেন না। তিনি ছিলেন তখন এই অঞ্চলের সর্বোচ্চ সাহসী এবং সর্বোচ্চ পেশাদার একজন সাংবাদিক। একা নিজেই হয়ে উঠেছিলেন যেন একটি শক্তিশালী সাংবাদিক সংগঠন। যতদিন তিনি সাংবাদিকতা করেছিলেন, ততদিন তাঁর কোনো প্রাণের মায়া রয়েছে, এটা কোনোভাবেই অনুধাবন করা যায়নি। আমরা বারবারই মনে করেছি যে, কোনো একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে হঠাৎই জানবো যে, সন্ত্রাসীর গুলিতে সাংবাদিক নাসির উদ্দিন নিহত হয়েছেন। এমনই দুর্দান্ত সাংবাদিক ছিলেন কুমিল্লার নাসির উদ্দিন।
============================================================================
ছবির ক্যাপশন: 1997 সালে কুমিল্লা ‘বার্ডে’ একটি প্রশিক্ষণ কোর্সে কুমিল্লার পেশাদার সাংবাদিকবৃন্দ। তখন নাসির উদ্দিন ছিলেন দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার কুমিল্লা প্রতিনিধি। ওই অনুষ্ঠানেই আমার নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বিশেষ পরিচয় ঘটে। ওই সময়ে কুমিল্লা বার্ডের মহাপরিচালক ছিলেন আক্তার হোসেন খান।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.