নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

দিনলিপি: স্বপনবাবু আমাকে ‘মুক্তধারা’র চিত্তবাবুর কাছেও যেতে দেননি

০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬


5 জ্যৈষ্ঠ 1400 বঙ্গাব্দ, ঢাকা।
=================
চিত্রকর্ম: জসীম অসীম

1991 সালে ঢাকার সোনারগাঁ রোডের ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কম্বিনেশন’ নামের একটি কোম্পানীতে সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ পদের জন্য ইন্টারভিউ দিতে ঢাকায় গিয়েছিলাম। কিন্তু জামানতের টাকা দিতে না পারার জন্য আর আমার সেই চাকুরি হয়নি।

প্রথম আমি ঢাকায় গিয়েছিলাম 1989 সালে। ঢাকার ফরাশগঞ্জের ‘মুক্তধারা লাইব্রেরী’তে একটি কাজের খোঁজে। ‘স্বপন’ নামের একজন প্রকাশনা কর্মকর্তা, কেউ একজন বলেছিলেন তিনি ছিলেন ‘মুক্তধারা’র প্রকাশক চিত্তরঞ্জন সাহার প্রাইভেট সেক্রেটারী। কিন্তু তিনি আমাকে প্রকাশক চিত্তবাবুর (চিত্তরঞ্জন সাহা) কাছেও যেতে দেননি। দেখা করে কথা বলার সুযোগ তো আরও অনেক পরের কথা।
1991 সালে ঢাকায় গিয়ে প্রথম যার ওখানে ছিলাম, তার নাম ছিল আবু তাহের। আমার বড় ভাই আলী আশ্রাফের অফিস বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী ‘বার্ড’ কুমিল্লা অফিসের ঢাকার গেষ্ট হাউস শাখায় কর্মরত ছিলেন তিনি। ওই অফিসটাকে সবাই বলতো ‘গেষ্ট হাউস’। ওখানে পরিচিত আরেকজন লোক ছিলেন। এনাম ভাই।

তাহের ভাইয়ের ওখান থেকে একদিন গেলাম বড় আপা আমেনা বেগমের স্বামী রফিকুল ইসলাম বাচ্চু দুলাভাইয়ের কাছে। তিনি ঢাকায় সরকারী চাকুরি করতেন এবং ম্যাস করে থাকতেন পলাশীর 42/1 নং রুমে। ততদিনে কুমিল্লায় থাকা অবস্থায় পাওয়া টিউশনির টাকায় কেনা আমার নতুন স্যান্ডেলও ঢাকা শহরে লজিং খুঁজতে খুঁজতেই ক্ষয় হয়ে গেছে। তারপর আমার টিউশনির বাকি টাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার ফরমও কিনে আনি।...। আরও কতো কথা আজ মনে পড়ে।
1991 সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রায় 15 দিন ঢাকায় ছিলাম আমি। লজিংয়ের খোঁজে অনেক কষ্টই করেছিলাম। বাংলা সনের ফাল্গুন মাস যাচ্ছিল তখন। আমাকে কেবল শহীদ মিনার, বাংলা একাডেমী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হাতছানি দিয়ে ঢাকার দিকেই ডাকছিল। তাই আবারও ঢাকায় এসেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে। হায়! তখন কুমিল্লায় ফিরে গিয়ে অনেক বকাই খেয়েছিলাম ‘ঢাকার নেশা’র কারণে।
একদিকে আমার টাকা পয়সাও নষ্ট হচ্ছিল, অন্যদিকে ঢাকায় থাকারও কোনো ব্যবস্থাই হচ্ছিল না।

তাছাড়া ঢাকায় এভাবে দৌড়াদৌড়ির কারণে ততদিনে কুমিল্লার টিউশনিগুলোও হাতছাড়া হয়েছিল আমার। ততদিনে আবার রমজান মাসও চলে আসছিলো। উপায় না দেখে আমাদের গ্রামের দোনারবাড়ির মোস্তফা কামাল ভাইকে চিঠি লিখলাম। বললাম, আপনার প্রতিষ্ঠিত ‘ইউসেস্কো কোচিং সেন্টারে’ শিক্ষক হিসেবে এবার আবারো আসছি আমি।
এই কোচিং সেন্টার চালু হয়েছিল 1989 সালে। তখন এই কোচিং সেন্টারের ছাত্র পাওয়ার জন্য আমাদের গ্রামেরই নিমারবাড়ির জাহাঙ্গীর আলম কাকাও অনেক কষ্ট করেছিলেন। সেই থেকে আমিও ছিলাম এই কোচিং সেন্টারের সর্বকনিষ্ঠ একজন শিক্ষক ।
1990 সালেও আমাকে শিক্ষকতা করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু আমার ইন্টারমিডিয়েট ফাইনাল পরীক্ষার জন্য আর কোচিং সেন্টারে মাষ্টারী করতে যাইনি আমি। তারপর 1991 সালেই আবার গেলাম সেই কোচিং সেন্টারে।
শিক্ষকগণ আমাকে খুবই স্নেহ করলেন। এলাকার মেধাবী ছাত্ররাই ছিলেন কোচিং সেন্টারের শিক্ষক। তখনও মোস্তফা কামাল ভাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন অর্থনীতিতে। তার ছোট ভাই কামরুজ্জামান জামাল পড়তেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে।

কুমিল্লার দেবিদ্বারের পশ্চিমসিংহের নজরুল এবং বুয়েটের ছাত্র অলুয়ার মশিউরও এলাকায় মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আর কালিকাপুরের মাসুম এবং আরও কেউ কেউ। তবে তারা সবাই আমার চেয়ে অনেক ভালো পড়াতেন। তারপরও মোস্তফা কামাল ভাই ছাত্রদের কাছ থেকে পাওয়া সমস্ত টাকা তুলে সবাইকে সমানভাগে ভাগ করে দেন।
1991 সালের রোজার ঈদের আগে আমার ভাগেও 700 টাকা বরাদ্ধ করে হাতে তুলে দিয়েছিলেন মোস্তফা কামাল ভাই।
সেইবার সবগুলো রোজাই রাখতে পেরেছিলাম আমি। 1990 সালে অসুখের কারণে রেখেছিলাম 15টি। আর 1992 সাল থেকে তো আমি পুরোপুরিই নাস্তিকই হয়ে গেলাম।

1992 সালের রমজানে সেই কোচিং সেন্টারে আবারও যাওয়ার জন্য চিঠি লিখলেন মোস্তফা কামাল ভাই। কিন্তু আমি আর পরে যাইনি ওই কোচিং সেন্টারে।
স্কুল জীবনে নামাজের সময় যে কতো হাসির ঘটনা ঘটাতাম আমি। জাফরগঞ্জ হাইস্কুলের বারেক (বারী) স্যার এই অপরাধের কারণে প্রায়ই জাম্বুরা গাছের অনেক ডালপালা আমার পিঠে ভেঙেছেন।
আমাদের সেই স্কুল মসজিদের পাকা ঘাটের পাশেই ছিল কিছু গাঢ় সবুজ জ্যাম্বুরা গাছ। মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় তো আর স্যার বেত নিয়ে যেতেন না! কিন্তু যেই আমি জামাতে জোহরের নামাজ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন হাসির ঘটনা ঘটাতাম, সেই নামাজ শেষ হলে পর স্যার সেই জাম্বুরার ডাল পিঠে ভাঙ্গতেন আমার । জাম্বুরার ডাল যে এতো শক্ত হয়, তখনই বুঝেছিলাম আমি।
এসব কথা লিখে রাখার বিষয় না হলেও আমি লিখে রাখছি। তবে মা-বাবা বলেন, আমি নাকি ভবিষ্যতে পাঁচ ওয়াক্ত করেই নামাজ পড়বো। ফিরে আসবো পুরোপুরিই ধর্মের পথে। আমার এমন অবস্থা নাকি স্থায়ী হবে না। কিন্তু এটা আমার বিশ্বাসই হয় না।
এবার 25 বৈশাখ রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীতে আমি কুমিল্লায় ছিলাম এবং খুবই অসুস্থ ছিলাম। কিন্তু বাবা এ বয়সেও শরীর খারাপ নিয়ে চাকুরি করেন বলে স্বস্থিতে ছিলাম না কোনোভাবে। এমন অসুস্থ থাকা অবস্থায়ও আব্বা আমার জন্য শুটকি, আম, কাঁঠাল কতো কিছু নিয়ে আসতেন বাসায়।
কুমিল্লায় আমাদের বাসায় কোনো টেলিভিশন না থাকায় সময় খুব বাজেভাবেই কাটে। একটি সাদাকালো টেলিভিশন কেনার মতো সামর্থ্যও নেই আমাদের, কতো মর্মান্তিক ব্যাপার এটা।
ছোট ভাই পিয়াস খুবই নদী পাগল। সে দিন বাসার কাউকে না বলে নদীর উত্তরে অনেকদূর চলে গিয়েছিল বলে বাবা ও বড় ভাই খুবই বকেছে ওকে।
মাকে কাছে পেয়ে কয়েকটা দিন কতো ভালোভাবেই না কেটেছিলো কুমিল্লায়। বলে শেষ হবে না। 3 জ্যৈষ্ঠে চলে এলাম ঢাকায়। আসার সময় মা গোপনে 60টি টাকা দেন। দামাল দেয় 5 টাকা। আমাদের অভাবের সংসারের বরাদ্ধ টাকায় ভাগ বসাই জানলে বাবা রাগ করবেন। তাই মা গোপনে টাকা দিলেন।
ঢাকায় এসে দুপুরে ভাত না খেয়েই পলাশী-আজিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকার কাগজের দোকান থেকে পুরনো বই কিনে পুরান ঢাকার বাংলাবাজারের পুরানো বইয়ের দোকানে বিক্রি করি। এই কাজটি আমি আরও কয়েকদিন করেছি। ঠিক এভাবে আমার কোনো স্বাধীন পেশা হতে পারে কী না, ভাবছি।
কিন্তু প্রথম দিনের বই সংগ্রহ করা এবং বই বিক্রির হয়রানি এবং খুব সামান্যই লাভ হতে দেখে হতাশই হয়েছি আমি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৬

জনাব মাহাবুব বলেছেন: লেখাটি অসমাপ্ত রয়ে গেল। কাহিনীতে আপনার ঢাকা আগমন পূণরায় গ্রামের বাড়ীতে প্রত্যাগমন আবার ঢাকা আগমন। পুরো ঘটনাটিতে আপনার ব্যর্থতা বা সফলতার কোন ইঙ্গিত নেই।

তখনকার ঘটনার সাথে বর্তমানে আপনার অবস্থান তুলে ধরলে পুরো হিস্টোরিটা ভালো লাগতো এবং সুখপাঠ্য হতো। :)

০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৫

জসীম অসীম বলেছেন: এটা আমার তখনকার একদিনের দিনলিপি। তাইতো ১৪০০ বঙ্গাব্দের পরের কিছু নেই। লেখাটি তুচ্ছ মানের। ভালো থাকবেন। মতামত ভালো লাগলো।

২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৩

নেয়ামুল নাহিদ বলেছেন: আরও লেখা চাই, লিখবেন আর জানাবেন আপনার কথা। ভালো লাগা রইলো।

৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫১

জসীম অসীম বলেছেন: আরও লেখা চাই, লিখবেন আর জানাবেন আপনার কথা। ভালো লাগা রইলো.....ভালো থাকবেন-মতামত ভালো লাগলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.