![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।
আলোকচিত্র: জসীম অসীম।
সব কিছুই কেমন যেন হারিয়ে যায়। কোথায় যেন হারিয়ে গেলো লিটলম্যাগ আন্দোলনের বন্ধু মাসুদ আশরাফও। শুনেছি শান্তিনিকেতনের শান্তিও নাকি ক্রমাগত হারাচ্ছে।
মাসুদ ছিলো একজন কবি। তারপর প্রথমে ‘শঙ্খ’ এবং পরে ‘কফিনটেক্সট’ নামে লিটলম্যাগ সম্পাদনা ও প্রকাশনার সঙ্গে জড়িত ছিলো।
চলার পথে প্রায়ই তার হাতে থাকতো কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় কিংবা সুবিমল মিশ্রদের মতো শক্তিমান লেখকদের একাধিক গ্রন্থ। একসময় ‘শামীম কবীর’ সমগ্র নিয়ে উন্মাতাল হয়ে গেলো মাসুদ আশরাফ। আর জীবনানন্দ দাশ তো তাকে পাগলই বানিয়ে দিলো।
সর্বশেষ তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছিলো 2003 সালে। আমি তখন কুমিল্লার ‘দৈনিক শিরোনাম’ পত্রিকার চাকুরি ছেড়ে বেকার। কান্দিরপাড়ের ‘মাতৃভবন’ বাসার তৃতীয় তলায় থাকি। মাসুদ তখনও আমার শখে লেখা ইংরেজি কবিতা পড়তো। আর বলতো, আপনার বাংলা কবিতা আমার একেবারেই ভালো লাগে না। কিন্তু ইংরেজিগুলো দারুন মোচড় দেয়। আপনি বরং ইংরেজিতেই লিখুন।
আমি বলতাম: যদি বেঁচে থাকি, তাহলে অবশ্যই লেখা ছেড়ে দেবো। এখনও একেবারে লেখা ছাড়তে পারিনি আমি। যদিও চলার পথে অনেক কিছুই আবার ছেড়ে দিয়ে এসেছি। যেমন করে ছেড়ে দিয়ে এসেছি প্রিয় ঢাকা শহর, অনেক ধর্মের পছন্দের অনেক নারী, থিয়েটার...নাটকের দিনগুলো আমার, প্রিয় ফটোগ্রাফি চর্চা, পত্রিকার চাকুরি...ইত্যাদি। আবার অনেক কিছু হারিয়েও ফেলেছি। তেমনি যেন একদিন কোথায় হারিয়ে গেলো সেই মাসুদ। মাসুদ আশরাফ। আর দেখা নেই।
পৃথিবীর কতো বিষয় নিয়ে যে আমরা আড্ডা দিতাম। রামকিঙ্কর বেইজ ঠিক কেমন ভাস্কর ছিলেন? এ নিয়ে আমি আর মাসুদ কতোদিন যে আলাপ করেছি। বিশেষ করে এস.এম সুলতানের চিত্রকর্ম এবং হাফিজ রশিদ খানের লেখা আদিবাসী কাব্য এবং আরো কতো বিষয়...।
মাসুদ আশরাফ কুমিল্লা শহরের পশ্চিম চান্দপুরের আমাদের ভাড়া বাসায় আসতো নিয়মিত। এটা ১৯৯৬ সালের দিকের কথা। তখন প্রায় দিনই আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা ভাস্কর্য, চিত্রকলা, সাহিত্য, চলচ্চিত্র...ইত্যাদি নিয়ে আলাপ করে অনেক সময় ব্যয় করেছি। সেই আলোচনায় রামকিঙ্কর বেইজের প্রসঙ্গও আসতো। সেই প্রসঙ্গ অধিকাংশ সময়ে উত্থাপনও করতো মাসুদ আশরাফই।
রামকিঙ্কর বেইজ একদা শান্তিনিকেতনে পড়তেন। কিন্তু শান্তিনিকেতন মাসুদকে না ভাবালেও রামকিঙ্কর তাকে ভাবিয়েছে অনেক অনেক দিন। রামকিঙ্কর তার জীবনের কোনো একটা সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বভারতী বিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্র ছিলেন। তিনি আচার্য নন্দলাল বসুকেও পেয়েছিলেন তাঁর শিক্ষক হিসেবে। এ যে তার জীবনে কতো বড় আর্শীবাদ হয়ে আসে, তার প্রমাণ আমরা পাই তার পরবর্তী জীবনে। কারণ এই রামকিঙ্করই পরে বিশ্বভারতীর ভাস্কর্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন।
মাসুদ আশরাফ প্রায়ই রামকিঙ্করের ভাস্কর্য বিষয়ক প্রকাশনা নিয়ে আমার বাসায় উপস্থিত হতো। নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার অনেক বছর পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন, তখনকার অনেক ফটোগ্রাফ একবার আমার দেখার সুযোগ হয়। সেটা ১৯৮৮ সালে। ঢাকা কলেজের একটি প্রকাশনায়। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখলাম সেসব ছবি। বিশেষ করে উইলিয়াম পিয়রসনের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কিছু ছবিও। বিশ্বভারতীর তখনকার আবহ সত্যিই অন্যরকম ছিলো।
১৯৫১ সালে বিশ্বভারতী যদিও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মযার্দা লাভ করে এবং কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরপুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর হোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য, কিন্তু অনেকেই বললেন, রবীন্দ্রনাথ প্রাচীন ভারতের ‘তপোবন বিদ্যালয়’ থেকে এই বিদ্যালয়ের যে আদর্শটি গ্রহণ করেছিলেন, তা শান্তিনিকেতন বা বিশ্বভারতী থেকে ক্রমাগতই ক্ষয় হতে যাচ্ছে।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, অস্কারবিজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী প্রমুখ ব্যক্তিগণ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন। এসব ইতিবৃত্ত যেমন অনেক গৌরবের, তেমনি অনেকেই শান্তিনিকেতন ঘুরে এসে বলেন, প্রাচীন ভারতের ‘তপোবন বিদ্যালয়’ থেকে এই বিদ্যালয়ের যে আদর্শটি রবীন্দ্রনাথ গ্রহণ করেছিলেন, অতি আধুনিকতার স্পর্শে আজকাল সেই আদর্শ ক্রমে ক্রমেই হারিয়েও যাচ্ছে। কিন্তু আমি নিজে যেহেতু আজ অবধি শান্তিনিকেতনে কিংবা বিশ্বভারতীতে যাইনি, তাই এ বিষয়ে আমি এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না যে, শান্তি নিকেতন থেকে আসলে শান্তি উড়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যাচ্ছে কী না।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২০
জসীম অসীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। সত্যি মধুর স্মৃতিচারণ। কবি বন্ধু মাসুদ আশরাফের কথা বলতে গিয়েই এত বাঁক ঘুরে এলাম।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৮
সনেট কবি বলেছেন: বেশ
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৪
জসীম অসীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। মাসুদ আশরাফ নামে আমার এক কবি বন্ধু ছিল একদা। তাঁকে নিয়েই এ কথন। ভালো থাকুন। সময় বড় অস্থির আমার। এর মধ্যেই সময় করে আসবো আপনার ব্লগে। ক্ষমা করবেন এতদিনও আসতে না পারার জন্য। পাঠবিমুখ নই। সময়ই আমাকে বিভিন্নভাবে ব্যস্ত রাখছে এবং বাধ্য করছে। শ্রদ্ধা অশেষ।
৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: নিজের লেখাকে ভালোবাসতে শিখুন।
তা না হলে অন্যের লেখাকেও ভালোবাসতে পারবেন না।
০৭ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:৪৯
জসীম অসীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। শুভ কামনা নিরন্তর।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮
সাইন বোর্ড বলেছেন: মধুর স্মৃতিচারণ, সময়ের মাঝে ডুবে যাওয়া, পাঠকও ঘুরে অাসতে পারে অনায়াসে ।