নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

দিনলিপি: আমি বেশি এঁকেছি পাখির ছবি

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৩২


20 এপ্রিল 2014, রোববার
কুমিল্লা।

ছোটবেলায় সবাই কম বেশি ছবি আঁকে। হয়তো তেমনি আমিও এঁকেছিলাম। কিন্তু এক সময় আমার চিত্রকর হওয়ারও নেশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ বছর পর সারা পৃথিবীর সেরা চিত্রকরদের সেরা ছবিগুলো দেখে যখন বুঝতে পারলাম ছবি আঁকার প্রতিভা, ধ্যান, দক্ষতা...এর কিছুই আমার নেই, ঠিক তখন থেকেই আমি সেই পথ ছেড়ে দিলাম।
হোর্হে লুই বোর্হেসের মতো শক্তিধর কবিদের কবিতা পড়ে ভাবলাম আমার কবিতা লেখাও ঠিক নয়। তা হলে আমি কী করবো! জে.কে রাউলিং এর হ্যারি পটার পড়ে ও এ কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত ছবি দেখে আমার মনে হলো আসলে আমার সারা জীবনভর পড়া আর দেখাই উচিত। লেখালেখি, আঁকাআঁকি আর হবে না আমার দ্বারা।
এক যুগ আমি ফটোগ্রাফির সঙ্গেও জড়িত ছিলাম বিভিন্ন ও বিচ্ছিন্নভাবে। কিন্তু যেই প্রেস ফটোগ্রাফি আমার পেশায় পরিণত হচ্ছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে আমি একেবারেই ছেড়ে দিলাম সেই ফটোগ্রাফিও। ফটোগ্রাফির বিনিময়ে আমার হাতে মাত্র তখন কাঁচা টাকা আসা শুরু হয়েছিল। আমি ছবি তোলাটা ধরে রাখলে এই কুমিল্লা শহরেও লাখ লাখ টাকা কামাই করতে পারতাম। অথচ খাওয়ার কষ্ট ভোগ করেও আমি আর সে পথে ফিরে যেতে পারলাম না।
ঠিক তেমনিভাবে আমি একদা ঢাকায় নিয়মিত থাকাটাও ছেড়ে দিলাম, ঢাকায় যে ফারজানা ইসলাম রূপালি আমার তীব্র প্রেমে পড়েছিল, তার সঙ্গেও সারাজীবনের জন্য যোগাযোগ ছেড়ে দিলাম, নাট্যচর্চা ছেড়ে দিলাম, প্রথম প্রেমের সংসার ছেড়ে দিলাম...এমনি আরও অনেক কিছুই ছেড়ে দিলাম আমি।
আমার প্রথম স্ত্রী ফারজানা কবির ঈশিতাকে বলে একদিন যে আমি নিজের বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম, আর ফিরে গেলাম না। ঈশিতাকে বলেছিলাম, আর ফিরে আসবো না। সে মনে করেছিলো, আমি তার সাথে মজা করছি। কিন্তু এ যে আমার ঠান্ডা মাথার চিন্তা ছিলো, সে ভাবতেও পারেনি। বারবার এসেও সে আর আমাকে ফেরৎ নিতে পারেনি।
ঠিক তেমনিভাবে আরও অনেক কিছুই আমি ছেড়ে দিয়েছি। যেমন ডান কিংবা বাম রাজনীতি চর্চা এবং...এবং...এবং ছেড়ে দিয়েছি এই ছবি আঁকার চর্চাও। এক সময়ে আমি এই কুমিল্লা শহরে গান শেখানো এবং ছবি আঁকার বিষয়েও টিউশনি করিয়েছি। আমার প্রথম স্ত্রী ফারজানা কবির ঈশিতার ছোটবোন পিয়েলকেও আজ থেকে প্রায় ১৮-২০ বছর আগে ছবি আঁকা শিখিয়ে মাসের পর মাস টাকা নিতাম। আমি ছিলাম পিয়েলের ছবি আঁকার শিক্ষক। পরে দেখলাম এটাও আমার পথ নয়। ছেড়ে দিলাম ওই পথ।
এখন আমার 5 বছরের ছেলে কফিল মোহাম্মদ অপূর্ব অনেক ছবিই আঁকে। এ পর্যন্ত সে প্রায় হাজারখানেক ছবি এঁকেছে। কেউ বিশ্বাস করবে না। অবিশ্বাস্য। আমরা সংরক্ষণে রেখেছি। তাঁর মতো করেই অাঁকা শিশুতোষ অসংখ্য বা সহস্র ছবি।
তাকে আমি আঁকা শেখাই না। বলি, পারি না বাবা কিংবা ভুলে গিয়েছি এবং আসলেই ভুলে গিয়েছি। তার আঁকার শিক্ষক তার মা সাদিয়া অসীম পলি। তবু অপূর্ব আমার এবং আমার ছোট ভাই পিয়াসের অাঁকা অনেক ছবির প্রশংসা করে।
আমার আঁকা কিছু ছবি এখনো আমার সংগ্রহে রয়েছে। ভালো হওয়া ছবিগুলো একসময় বিক্রি করে দিয়েছি। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে। এমনকি আমার ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলোও।
একবার আমার কাছে কোনো টাকাই ছিলো না। কয়েকদিন ধরে খাওয়ার কষ্টও পেলাম। পত্রিকার চাকুরি ছেড়ে বেকার। পথে পথে ঘুরি। জীবনের কোনো হিসাবই কারো সঙ্গে আর মেলাতে পারছি না। দুই-তিনটি বাইন্ডিং করা ছবি নিয়ে গেলাম কুমিল্লার সাপ্তাহিক ‘মুক্তকাগজ’ পত্রিকার সম্পাদক নিজাম মোল্লা ভাইয়ের কাছে। তিনি আমাকে ছবিগুলো না নিয়েই তাৎক্ষনিকভাবে 1000/-(এক হাজার) টাকা দিলেন। তবু আমি তাকে জোরপূর্বক ছবিগুলো দিয়েই টাকা নিয়ে এসে প্রাণ বাঁচাই। সেটা আজ থেকে প্রায় 11 বছর আগের কথা।
এমনভাবে অনেক আঁকা ছবিও আর আমার সংগ্রহে নেই। বিক্রি করেছি যেসব ছবি, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো: সেপারেশান-1992, এস ডিয়ার এস লাইফ-1993, ... ইত্যাদি।
অনেকে ক্যামেরায় ছবি তোলাকে বা ছবি অাঁকাকেও ইসলাম ধর্ম বিরোধী কর্ম বলেন বা প্রচার করেন। আমার কাছে তা মনে হয় না। কোরআনে ছবি আঁকা নিষিদ্ধ নয়। এ কথা জোর দিয়েই একবার প্রমাণও করেছেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ছেলে চিত্রকর মূর্তজা বশীর।
বিবি আয়েশার একটি ছবি দেখিয়ে ফেরেশতা জিব্রাইল আমাদের নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) কে বলেছেন, এর সঙ্গেই তোমার বিয়ে হবে। তবে চিত্রকলায় নীতির বিষয়ে ইসলামধর্মে বিধান রয়েছে। কিন্তু শুধু নীতিপ্রচারই ছবির একমাত্র লক্ষ্য নয়। নীতিপ্রচারের জন্য যদি কেউ কবিতা লিখেন, তা হলে তা হবে শুধুমাত্র ছন্দবদ্ধ নীতিবচনই।
আমি বেশি এঁকেছি পাখির ছবি। পাখিরা মানুষের অতিথি নয়, বন্ধু। পানকৌড়ি পাখির পেছনে গোটা শৈশব কেটেছে আমার। পানকৌড়ি ডিম দেয় দফায় দফায়। বাচ্চা ফুটাতে না ফুটাতেই আবার ডিম দেয়। এ নিয়ে আমার লেখা গল্প রয়েছে।
কিন্তু আমি স্বভাবে ভীষণ অস্থির। এক অজানা লক্ষ্যে আমি প্রতিনিয়তই ছুটে চলি। যেন কবির ভাষায়: ‘সব ঠাঁই মোর ঘর আছে, আমি সেই ঘর মরি খুঁজিয়া। দেশে দেশে মোর দেশ আছে, আমি সেই দেশ লব যুঝিয়া।’

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:০০

রাজীব নুর বলেছেন: প্রথম পাতায় চারটা লেখা পোষ্ট করেছেন। এটা ঠিক না।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৭

জসীম অসীম বলেছেন: তাৎক্ষণিকভাবে যদি আপনার মতামতটি পড়ি, তাহলেও আমার শিক্ষা হয় আর এমন ঘটনা ঘটে না। কী হয়ে গেল। আর হবে না এমন। কথা দিচ্ছি। বুঝতেই পারিনি। সত্যি জানি না।

২| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৫

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: হে আপনি ভালো আকেন ভালো লিখেন।


তবে রাজিব নূর ভাই যা বললেন। আমিও সেই কথায় এক মত। একদিনে এতো পোস্ট।।। তাও প্রথম পাতায় এক সাথে। না

এটা ঠিক নয়

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫০

জসীম অসীম বলেছেন: না বুঝেই ঘটেছে ঘটনাটি। পোস্ট কি ‘ডিলেট’ দেওয়া ঠিক হবে? আর হবে না এমন। অনেক ধন্যবাদ।

৩| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৭

সনেট কবি বলেছেন: কিছুটা পড়লাম।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩

জসীম অসীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। এত বড় লেখা সবটা পড়া অসহ্যকরও, যেখানে কী না আবার ব্যক্তিগত ডায়েরি। কিন্তু ডায়েরি বা দিনলিপি লেখা আমার প্রিয়তর শখ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.