নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

দিনলিপি: ‘পাবলিশিং সুন। ‘‘লাভ ফর গ্যাম্বলিং: এ কালেকশন অব স্কেচেস বাই জসীম অসীম।’’

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৪:৩৯


27 জুন 2012, বুধবার
কুমিল্লা।


ব্যক্তিগতভাবে আমি কোনোদিনও মূর্ত ছবি আঁকিনি তেমন। যার কারণে আমার পারিপার্শ্বিক অনেকজন আমার ছবিকে কখনোই গুরুত্ব দেয়নি। অন্যদিকে আমার খাদ্য ও বাসস্থানের প্রয়োজনে আমি বরাবরই অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে সময় কাটিয়েছি। এই অস্থিরতা জীবনের অগ্রযাত্রায় আরও বেশি মাত্রায় বেগবান হয়েছে।
আমার বাসায় 1990 সাল থেকেই আমি ছবি এঁকে টানিয়ে রাখতাম। 1996 সালের দিকে একটি ছবি আঁকলাম আমি। 20 বাই 30 সাইজের একটি আর্ট পেপারে আঁকা। ছবির নাম দিয়েছিলাম ‘মুক্তিযুদ্ধ’। ওয়ার-1971 কিন্তু চিত্রকলায় আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিলো না বলে এই আঁকা কারোর কাছেই গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
কুমিল্লার সাপ্তাহিক ‘সময়ের পথ’ সম্পাদক বাচ্চু বকাউল 2004 সালে ‘পথ’ নামে একটি সাহিত্য সংকলন করেন। সেটির প্রচ্ছদ করেছিলেন আমার আঁকায়। ছবিটি ছিলো আমার মার্কার পেন-এ করা একটি ছবি। কুমিল্লার চান্দিনার সাংবাদিক তাহমিদুর রহমান দিদার কিছুদিন ‘দীপিকা’ নামে একটি সাহিত্য সংকলন বের করেন। 2004 সালের দিকেই। আমার একটি আঁকা ছবি তিনি ওই পত্রিকার প্রচ্ছদ করেছিলেন। আরও অনেক সংকলনের প্রচ্ছদেও আমার অাঁকা ছবি ব্যবহৃত হয়েছিলো। এখন সব মনে নেই। সময়ের গহবরে সেসব হারিয়ে গিয়েছে।
ছবি আঁকতে এসে ছবি আঁকা না হলেও পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত ছবি ও তার চিত্রকরের সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছি। রুশ চিত্রশিল্পী ভ. প্রাগুয়ের-এর আঁকা কাজান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ভ. ই. লেনিনের ছবিটার কথা এখনো মনে পড়ে। কতো চমৎকার ছবি ছিলো সেটা। প্রথম দেখেছিলাম ওই ছবিটা ‘উদয়ন’ পত্রিকায়।
চিত্র চর্চা করতে এসে আমার কাছে একটি বিষয় পরিষ্কার হয় যে, কোনো শিল্পমাধ্যমই বাস্তবের হুবহু অনুকরণ কিংবা অনুসরন নয়। যখন আমাদের পাঠ্য ছিলো অ্যারিষ্টটল, তখনও দেখেছি যে, অ্যারিষ্টটল কাব্য বা ট্র্যাজেডিকে যে সংজ্ঞা দিয়েছেন, তাতে বাস্তব থেকে দূরত্ব রাখার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে লেখাপড়া করতে গিয়েই দেখলাম, সৌন্দর্যতত্ত্বের নান্দনিক দিক-নির্দেশনাগুলো। রূপকলা বা চিত্রকলার দেহগত সৌন্দর্যই শেষ কথা নয়। ভাবগত সৌন্দর্যই একমাত্র কথা নয়, আরও তাৎপর্য রয়েছে। সেখানে শিল্পীর শক্তিমত্তার বিষয়টিও উল্লেখযোগ্য।
লেখার শক্তিতেই রবীন্দ্রনাথ জাতীয়তার সীমা থেকে আন্তর্জাতিক সীমানায় আত্মপ্রকাশ করেন। কিন্তু এ নিয়ে অনেক শিল্প সমালোচকের সঙ্গে আমার মতান্তর রয়েছে। অনেক সমালোচক বলেছেন, চিত্রকলার মূল বৈশিষ্ট্য হলো, বাস্তব প্রয়োজন মেটানোর সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। স্বার্থসিদ্ধির দুনিয়ায় শিল্পের স্থান নেই। কিন্তু মার্কসবাদী শিল্প সমালোচকগণ এর তীব্র বিরোধীতা করেছেন। তাদেরকে অনেকে তাই জড়বাদী সমালোচকও আখ্যা দিয়েছেন। অনেক সমালোচক শিল্পের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে ‘আনন্দ দান’ এর প্রসঙ্গ এনেছেন। আবার কেউ কেউ আনন্দ দানের শ্রেণি বিভাগও করেছেন। যেমন: এডলফ হিটলার ইহুদি নিধন করে এবং পররাজ্য গ্রাস করে আনন্দ পেয়েছেন। একজন বিজ্ঞানী নতুন নতুন আবিষ্কারেও আনন্দ পান। কিন্তু এ আনন্দ লাভের সঙ্গে ছবি আঁকার, ছবি দেখার কিংবা কাব্য পাঠের আনন্দের পার্থক্য কোথায়!
একবার আমাদের অভিনয়ের এক ক্লাসে অভিনেতা আবুল হায়াৎ বলেছিলেন, বাঙ্গালি জাতি নাট্য-অন্তপ্রাণ জাতি নয়। তার স্বভাবে নাটকীয়তা কোথায়! সুতরাং কোনো উদাসীন জাতির পক্ষে নাটকীয়তার আনন্দের স্বাদ পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি 1992 সালে আমাদের একটি ওয়ার্কশপে এসে এসব কথা বলেন। আমি নোট রেখেছিলাম বলেই এর উদাহরণ দেওয়া গেল। মূল কথা হলো, শিল্পের যে কোনো শাখাতেই কাজ করতে গেলে এর মৌলিক বিষয়গুলো আগে জেনে নিতে হবে। কোনো কোনো শিল্পী শিল্পের প্রচলিত অনেক ব্যাকরণই ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে ব্যাকরণ গড়েছেন।
রঙের বিভিন্ন অর্থ থাকে। উজ্জ্বল লালে অগ্নিশিখা কিংবা অস্তগামী সূর্য বুঝালেও কেউ এর বিপরীত ব্যবহার করেছেন। কমলা রঙে অনেক শিল্পীই হৃদয়াবেগের বদলে বিষাদও বুঝিয়েছেন অথবা অন্যকিছু। নির্মেঘ আকাশকে অনেকে নীলের বদলে নীলের সঙ্গে আরও অন্য রঙ মিশিয়ে শীতলভাবে এঁকেছেন। প্রশান্তিকে অনেক শিল্পীই নীলে প্রকাশ করেননি। বেগুনি রঙের মর্যাদা অনেকে সনাতন নিয়মে রক্ষা করেননি। আমি নিজেও একবার একটি ধানক্ষেত এবং সর্ষেক্ষেতে উজ্জ্বল হলুদের বদলে ধূসর রঙ ব্যবহার করেছিলাম। সবুজ, নীল, পিঙ্গল, সোনালি হলুদ রঙগুলো বিদেশি অনেক ছবিতেই যথাযথভাবে ব্যবহার হতে দেখিনি। 1992 সালে ঢাকা পাবলিক লাইব্রেরিতে আমি ভবেশ রায়ের ‘মোনালিসার প্রেম’ গ্রন্থটি পাঠ করি। এ গ্রন্থ পাঠ করে তো আমি অবাক হয়ে গেলাম। ভোরেশিওর ষ্টুডিওতে 12 বছর কাটিয়েছেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি! আমি তো বারো মাসও স্থির থাকতেই পারতাম না। গণিত, ভূ-তত্ত্ব, চিকিৎসা শাস্ত্র, যন্ত্র প্রকৌশলসহ অনেক বিষয়েই ভিঞ্চি লেখাপড়া করেন। একে তো তিনি ছবি আঁকতেন কম, তার পরও এমন অনেক ছবিই তিনি অসমাপ্ত রেখে গিয়েছেন। তার সবচেয়ে জনপ্রিয় ছবি ‘মোনালিসা’ও একটি অসমাপ্ত ছবি। এতো অল্প ছবি এঁকেও কেন কোনো কোনো শিল্পী এতো বিখ্যাত হলেন! আমার মনে হয়, এটা এ জন্য যে, তারা প্রকৃতই শিল্পসৃষ্টির পক্ষেই ছিলেন। আজকাল শিল্পীরা তো অধিকাংশই ছবি উৎপাদন করেন। আমিও সময়ে সময়ে এমন অনেক বাজে ছবিও এঁকেছি। আবার বিভিন্ন পত্রিকায় ওসব ছবি ছাপাও হয়েছে। কিন্তু আমি নিশ্চিত, ওসবের তেমন কোনো শিল্পমূল্যই নেই।
‘কুমিল্লার কাগজ’ পত্রিকায় চাকুরি করা অবস্থায় একবার কুমিল্লার গল্পকার কাজী মোহাম্মদ আলমগীর একটি প্রবন্ধ নিয়ে এলেন। শিরোনাম: ‘মল্লিকা বাহার’-বাংলা ছোটগল্পে শরীর প্রসঙ্গে’। 23-29 ডিসেম্বর 2004 সালের এ পত্রিকার সাহিত্য পাতায় প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়। প্রবন্ধটির সঙ্গে প্রকাশ হওয়ার জন্য তাৎক্ষনিকভাবে আমি একটি ছবি এঁকে দেই। কম্পিউটারের পেইন্ট প্রোগ্রামের টুলস ব্যবহার করেই। ছাপাও হলো সেই ছবি।
স্নিগ্ধাদের প্রদর্শনী দেখেছিলাম একবার। শারমিন জামান স্নিগ্ধা। শান্তনু মজুমদার, কিউ এইচ. এম ওয়াহিদুজ্জামান ও শারমিন জামান স্নিগ্ধাদের একটি প্রদর্শনী আমি কুমিল্লা টাউন হলে দেখি। তারা সবাই তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের যথাক্রমে গ্রাফিক ডিজাইন, সিরামিক এবং ড্রয়িং এন্ড পেইন্টিং সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রী ছিলো। 2005 সালে কুমিল্লা টাউন হলের এক যৌথ শিল্প প্রদর্শনীতে শারমিন জামান স্নিগ্ধার কাজ প্রথম দেখি আমি। দেখে আমার ভীষণ ভালোও লাগে। তারপর পত্রিকায় আমি লিখি: ‘স্নিগ্ধা যদি পারো, তো একটু দালালি শিখে নিয়ো।’ লেখাটি ছিলো এ রকম: ‘‘...ময়মনসিংহের এই মেয়ের মোবাইল নম্বর ছিলো: 01718-514040 কিন্তু আমি কোনোদিনও মোবাইলে কথা বলিনি চিত্রকর স্নিগ্ধার সঙ্গে।

আমার শখের আঁকা ছবিগুলোর অনেকাংশই হারিয়ে গিয়েছে। এসব নিয়ে আর এখন কোনো দুঃখবোধও নেই। কারণ সারা পৃথিবীর সেরা শিল্পীদের অনেক কাজই হারিয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে বিবিসি-র একটি সংবাদ থেকে উদাহরণ দেই। একবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের সময়ের কিছু ছবি ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হয়েছিল। মিত্র বাহিনী জার্মানীতে বোমা হামলা শুরু করলে হিটলার এসব চিত্রকর্মের ছবি তুলে রাখার নির্দেশ দেন। যাতে এগুলো ধ্বংস করা হলেও এগুলোর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে না যায়।
তৎকালীন শিল্পবোদ্ধারা জার্মানি, অস্ট্রিয়া, পোলান্ড, রাশিয়া এবং চেকোস্লোভাকিয়ার বিখ্যাত শিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্ম থেকে এসব ছবি বাছাই করে রাখেন। বাছাই করার পর ছবিগুলোকে বিভিন্ন চার্চ, প্রাসাদসহ অন্যান্য জায়গায় স্থানান্তর করা হয়। 1943 থেকে 1945 সালের মধ্যে আঁকা এসব চিত্রকর্মের ছবি তোলা হয় প্রায় 60 হাজার। ছবিগুলো পরবর্তীতে মিউনিখের ‘সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট ফর আর্ট হিস্ট্রি এবং মারবার্গ ফটোগ্রাফিক আর্কাইভে স্থানান্তর করা হয়। 2002 সালে আরকাইভ বিশেষজ্ঞরা এসব ছবির ডিজিটাল চিত্র ধারণ করা শুরু করেন।
তবে চার্চের 60 শতাংশ ছবির কোনো সন্ধান পরে পাওয়া যায়নি। এভাবে পৃথিবীর অসংখ্য চিত্রকর্মই যুগে যুগে হারিয়েছে। সেখানে একজন অখ্যাত ব্যক্তির কিছু শখের আঁকা ছবি হারানোর ঘটনা তেমন কোনো উদাহরণেই পড়ে না।
ঢাকায় যখন ছিলাম, তখন প্রায়ই অভিনেত্রী বিপাশা হায়াতের সঙ্গে দেখা হতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে। কখনো কখনো একটু আধটু কথা হয়েছে তার সঙ্গে। তবে তা তার চিত্রকলার চর্চা নিয়ে নয়। তার অভিনয় নিয়ে।
কার্টুন আঁকার চেষ্টা করেছিলাম একসময়। হয়নি আমার দ্বারা। অধিকাংশই মৌলবাদ বিরোধী। হারানো গিয়েছে সব।
বাংলাদেশের কার্টুন চর্চার ইতিহাস অত্যন্ত সমৃদ্ধ। রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠার দাবি স্তব্ধ করে দেওয়ার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসাবে 1953 সালের ‘সৈনিক’ পত্রিকায় আঁকা হয়েছিলো একটি কার্টুন। কার্টুনটি এঁকেছিলেন কাজী আবুল কাশেম। ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে’ শীর্ষক আইয়ুব খানকে নিয়ে করা কামরুল হাসানের সেই কার্টুনটি 1971 সালে বাঙ্গালি জাতিকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলো।
এক সময় আমি গল্প লেখার আগে গল্পটির এক ধরনের ছবিও কাগজে এঁকে নিতাম। সেটা 1993 সালের দিকে। আমার অনেক গল্পই আগে খাতায় এঁকেছি। পরে লিখেছি গল্প। এতদিন পর এর অধিকাংশ গল্প রয়েছে, কিন্তু আঁকা সেই ছবিগুলো আর নেই। এটার অনুপ্রেরণা আমি মূলত পেয়েছিলাম সত্যজিৎ রায়ের চিত্রনাট্যের খাতায় অাঁকা ছবিগুলো দেখে।
1989 সালে আব্বার সঙ্গে কুমিল্লা শহরের অশোকতলার একটি বাসায় ছিলাম কিছুদিন। আব্বা ও বড় ভাই তখন কয়েকটি ক্যালেন্ডার এনেছিলেন বাংলাদেশের চমৎকার রূপ নিয়ে। আমি এসব ছবির প্রেমে পড়ে যাই। আমাদের দেশের কতো অখ্যাত শিল্পীদের আঁকা, অথচ কতো চমৎকার সব ছবি। আরেকটি ক্যালেন্ডারে এমন একটি ছবি ছিলো যে, মা ছেলেকে পড়াচ্ছে ‘ট-দিয়ে টিয়ে। ছেলেটির বইয়েও একটি টিয়ের ছবি দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে ঘরের কোনের একটি খাঁচাতেও একটি টিয়ে পাখি রয়েছে। শৈশবে আমিও টিয়ে পোষতাম বিধায় এবং টিয়ে আমার প্রিয় পাখি বলে ক্যালেন্ডারের এ ছবিটির কথা আমি আজও ভুলতে পারিনি।
যখন থেকে আমি নবম শ্রেণিতে পড়ি, তখন থেকে বিভিন্ন বন্ধুর বিজ্ঞানের ব্যবহারিক খাতার আঁকাও এঁকে দিতাম। এতেও তখন আমার হাত আঁকার দিকে অনেকটা ঝুঁকে যায়।
কিছু ছবির কথা আমি কখনোই ভুলে যেতে পারবো না। যেমন-মেক্সিকোর রোজালিন্ডা আলুবর্নির ‘মৌজানা’। ওই হিসেবে শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ওই মুখ ওই হাসি’ চিত্রকর্মটি তেমন ভালো লাগেনি। 14 এপ্রিল 1990 তারিখে প্রকাশিত কলকাতার বাংলা সাহিত্যের কাগজ ‘দেশ’ কিনেছিলাম ঢাকার পুরানা পল্টন থেকে মাত্র 2 টাকায়। এর মুদ্রিত মূল্য ছিলো 7 টাকা। ওই পত্রিকায় শকুন্তলা-র এতো চমৎকার ছবি প্রচ্ছদে আঁকা হয়েছিলো! এক কথায় অসাধারণ। আমাদের কুমিল্লার চিত্রশিল্পী উত্তম গুহের চিত্রকর্ম দেখে তো আমি অবাক। 60/এ-1, পুরানা পল্টন ঢাকায় ‘সিলেকশন’ নামে একটি অ্যাডভার্টাইজিং-প্রিন্টিং-ডিজাইন এন্ড মডেলিং এজেন্সির ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। তখন মোবাইলের যুগ ছিলো না। সেই অফিসের ফোন নম্বর ছিলো: 243289। ’
কাজী আবুল কাশেমের কতো ছবি দেখেছি একসময়। বিভিন্ন বইপত্রে, লাইব্রেরিতে। জীবন যে বর্তমান সময়ে এসে এমন থমকে যাবে, কে আগে ভাবতে পেরেছিলো! সর্বত্রই যে চোরচোট্টার হাতে সব ক্ষমতা আর অর্থ চলে যাবে, কোনোদিনও ভাবতে পারিনি।
কাজী আবুল কাশেমের একটি চিত্রকর্মের কথা খুবই মনে পড়ে। ল্যাংড়া আমের ছবি।
আমাদের গ্রামের মুন্সীবাড়ির কাদের নামে একজন লোকের একটি চা-বিস্কুটের দোকান ছিলো। তার দোকান ছিলো আমার শৈশবের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছেই।
ওই কাদের সাহেব তার পায়ের সমস্যার কারণে খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটতেন। এলাকার লোকজন সর্বদাই তাকে ‘ ল্যাংড়া কাদিরা’ বলে সম্বোধন করতো। সারা শৈশব জুড়ে আমি তাই ‘ল্যাংড়া’ বলতে ওই কাদের সাহেবকেই চিনতাম। পরে দেখলাম আমের নামও ল্যাংড়া আম’। তারও অনেক দিন পরে ল্যাংড়া আম নিয়ে এক কার্টুন দেখলাম কাজী আবুল কাশেমের।
যতদূর মনে পড়ে ছবিটি ছিলো এমন: একটি আমের দুটি পা। একটি পা ভাঙ্গা। সেটিতে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। ক্রাচে ভর করে হাঁটছে সেই আমটি। এই হলো কাজী আবুল কাশেমের কার্টুন: ল্যাংড়া আম।
মূলত আমি একজন নন্দনতাত্ত্বিক কিংবা চিত্র সমালোচক বা চিত্রকর্ম বিষয়ক বোদ্ধা হতে পারতাম। শেষে তাও হতে পারিনি। কিন্তু কখনোই আমার চিত্রকর হওয়ার কোনো কারণ ছিলো না। কারণ যতটুকু পড়েছি চিত্রকলা বিষয়ে, সেই তুলনায় আমার চিত্রকর হওয়ার চিন্তা মাথায় থাকার কোনো কারণই ছিলো না। কেননা আমি তো অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (1871-1951) চিত্রাঙ্কন রীতি বিষয়েও ধারনা নিয়েছিলাম। পাশ্চাত্য চিত্রাঙ্কন রীতি এবং জাপানী চিত্রাঙ্কন রীতি বিষয়ে এতোটাই দক্ষতা অর্জন করেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তা আমার ধারণাতীত বিষয়। 1898-এ কলকাতা আর্ট কলেজের সহ-অধ্যক্ষের পদে চাকুরি করেছেন তিনি।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাগেশ্বরী অধ্যাপকরূপে যোগ দেন 1921-এ। 1942 এ রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতীর আচার্যের পদ গ্রহণ করেন। পাশ্চাত্য রীতিতে সুদক্ষ হয়েও ভারতীয় চিত্রাঙ্কন রীতি পুনরুদ্বারের সাধনা শুরু করেন। ভারতীয় রীতিতে তার প্রথম প্রয়াস কৃষ্ণলীলা বিষয়ক চিত্রাবলী। অবশ্য এগুলো আমি এখনও সব দেখিনি। জাপানী রীতি ছিলো তার অন্যতম প্রিয় রীতি। এ রীতিতে আঁকা ‘ওমর খৈয়াম’ তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিত্রকর্ম বলে শিল্পবোদ্ধারা মত দিয়েছেন। 1907 সালে এই অবনীন্দ্রনাথের শিল্পাদর্শ জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে ভগিনী নিবেদিতা আত্মনিয়োগ করেন। 1913-তে তার চিত্র প্রদর্শনী হয় লন্ডন ও প্যারিসে এবং 1919-এ জাপানে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাগেশ্বরী অধ্যাপকরূপে (1922-1927) চিত্রকলার উপর যেসব প্রবন্ধ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর পাঠ করেন, সেগুলো পরে ‘বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী’ নামে সংকলিত হয়ে প্রকাশিত হয়। এই ‘বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী’ আমি এ পর্যন্ত মোট পাঁচবার পড়েছি। তারপরও মনে হয় এটা শিল্পরসিক, শিল্পী, শিল্পসমালোচক এবং যারা শিল্প চর্চা করেন, তাদের বারবারই পড়া উচিৎ। আর অন্নদাশঙ্কর রায়ের ‘আর্ট’ গ্রন্থটিতেও এতো সহজ ভাষায় এতো জটিল বিষয়ের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, যে সেই গ্রন্থ পাঠ না করেছে, তার তা বোধগম্য হবে না কোনোদিনও।
কুমিল্লার উত্তম গুহের অনেক কাজই দেখেছি। তিনি এখন আন্তর্জাতিকমানের শিল্পী। কুমিল্লা আর্ট স্কুলে তার প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রে কুমিল্লা টাউনহলের সামনে কুমিল্লারই কৃতি সন্তানদের ‘স্মৃতিফলক’-যা থেকে বর্তমান প্রজন্ম স্মরণ করতে পারবে পূর্বসূরীদের কথা। এ জন্য সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলেন কুমিল্লারই এক সময়ের জনপ্রিয় জেলা প্রশাসক মরহুম সৈয়দ আমিনুর রহমান। 1992 সালে এই উত্তম গুহ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাস্কর্য ‘চেতনায় নজরুল’ কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির সামনে নির্মাণ করেন। এটি উন্মোচন করেছিলেন বাংলাদেশের তখনকার প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
উত্তম গুহের সহধর্মিনী অভিনেত্রী চিত্রলেখা গুহ। তার বড় ভাই সুজিত চাঁন গুহ দীর্ঘদিন কুমিল্লায় ‘উদীচী’ করেছেন। পরে এক সময় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেন।
আমার ছবি আঁকার কখনোই কোনো কারণে স্বীকৃতি ছিলো না। একসময় আমি অনেক ছবিই এঁকেছি। বিশেষ করে পশ্চিম ইউরোপের চিত্রকলা নিয়ে তখন অনেক পড়েছিও। এ প্রসঙ্গে অশোকমিত্রের ‘পশ্চিম ইউরোপের চিত্রকলা’ গ্রন্থটির কথাই বেশি মনে পড়ছে। আরও গ্রন্থ পড়েছি। কিন্তু এখন নাম মনে পড়ছে না।
আজকাল আমার প্রায়ই মনে হয়, আমার কোনো বড় অসুখ হয়েছে। কারণ আমার স্মৃতি ক্রমশই লোপ পাচ্ছে। অর্থাভাবে ডাক্তারের কাছে যেতে পারছি না। আর তা ছাড়া আমার শরীরের অসুখ হয়েছে জানলে আমার মনের আরও বেশি মনোবল ভেঙ্গে যাবে।
কবি পূর্ণেন্দু পত্রীর ছবির কথা মনে পড়ছে। তার কবিতার চেয়েও তাঁর আঁকা আমার কাছে প্রিয়। বাংলাদেশের চিত্রশিল্পী কনকচাঁপা চাকমা’র কাজগুলো পত্রিকাতেই দেখেছি। আজও সরাসরি দেখিনি। তিনি একবার আমেরিকায় শ্রেষ্ঠ মহিলা চিত্রশিল্পীর পুরস্কার পেয়েছিলেন। এক্রেলিক মাধ্যম তার প্রিয় একটি মাধ্যম।
আমি সারা জীবনে কমপক্ষে 50টি ভালো ছবি আঁকতে পারতাম। কিন্তু এক্ষেত্রে আমার অ-কাজ হয়েছে বেশি। প্রথমত: এটা আমার কাজের কোনো ক্ষেত্রই ছিলো না। দ্বিতীয়ত: আমার যদিও ইচ্ছে ছিলো আমি চিত্রকর হবো। কিন্তু এক্ষেত্রে আমার কোনো গুরু কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই ছিলো না।
আর তাছাড়া যে যখন বলেছে, এঁকেছি। এবার সেটা হোক, বা না হোক। যেমন: একবার ‘সাপ্তাহিক কুমিল্লার কাগজ’ পত্রিকায় কাজ করছিলাম। কুমিল্লার অধ্যাপক ও সাহিত্যিক শান্তিরঞ্জন ভৌমিক এলেন একটি লেখা নিয়ে। সম্ভবত গল্প। শিরোনাম: ‘চিকিৎসা’। এ গল্পের সঙ্গে ছাপা হওয়ার জন্য তাৎক্ষনিকভাবে একটি ছবি এঁকে দিলাম কম্পিউটারের পেইন্ট প্রোগ্রামে। মুদ্রিতও হলো।
2004 সালের 1 জুন প্রকাশিত হয় কুমিল্লার প্রভাষক বাচ্চু বকাউল সম্পাদিত সাহিত্য সংকলন ‘পথ’-এর 1ম সংখ্যা। এটি কুমিল্লার কবি বিজন দাসকে উৎসর্গ করা হয়।
আমি অনেক আগে মার্কার পেন-এ করা আমার একটি ছবির প্রতিলিপি দিলাম এর প্রচ্ছদ করার জন্য।
আমার সব ছবির নামই ছিলো ইংরেজিতে। একটি ছবির নাম ছিলো: ‘‘ডমেস্টিক ওইমেন’’। সেটি আমার কুমিল্লার চান্দিনার বন্ধু তাহমিদুর রহমান দিদার পছন্দ করলেন না। 2004 সালের জুনেই প্রকাশিত হয় তৃণমূল সাংবাদিক তাহমিদুর রহমান দিদার সম্পাদিত সাহিত্য সংকলন ‘দীপিকা’-এর 1ম সংখ্যা। তার সহযোগী সম্পাদক ছিলেন তখন বর্তমানে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট ইস্পাহানি পাবলিক স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক মোহাম্মদ আলী, চান্দিনার সাহিত্যিক প্রদীপ দাস ও চান্দিনার কবি আশরাফ মাহমুদ। তখন চান্দিনায় একটি সাহিত্য সংগঠন গড়ে ওঠেছিলো ‘দীপিকা সাহিত্য পরিবার’ নামে। আমি প্রায়ই তখন চান্দিনায় নিমন্ত্রিত হতাম।
সেই সংগঠনে ছিলেন আবৃত্তিকার সালাহউদ্দিন সুমন, রণবীর ঘোষ কিঙ্কর, মাসুমুর রহমান মাসুদ, পাখি সরকার, নীপা, রত্মা গোস্বামীসহ আরও অনেকে। চান্দিনা হাইস্কুল মার্কেটের তাহমিদুর রহমান দিদার ভাইয়ের ‘চিকিৎসা নিকেতন’ ওষুধের দোকানে, চান্দিনা পশ্চিম বাজারের মাসুম অফসেট প্রেসে, বারী কম্পিউটার সিস্টেম-এ বসে আমাদের আড্ডা হতো। সেই ‘দীপিকা’-র 1ম সংখ্যার প্রচ্ছদ করা হয়েছিলো আমার 1992 সালে আঁকা একটি ছবির প্রতিচ্ছবি দিয়েই। সংকলনে আমার আর মোহাম্মদ আলীর ইংরেজি কবিতাও ছাপা হয়। তখন আমি প্রায়ই চান্দিনায় চলে যেতাম। কখনো মোহাম্মদ আলীর বাসাতেও থেকেছি। চলে যেতাম বেলাশ্বরের কবি প্রদীপ দাসের বাসাতেও। কখনো কখনো কাদুটি এলাকার ইলাশপুরের নারায়ণ সরকারের মেয়ে পাখি সরকারদের বাড়িতেও। অথবা চান্দিনার রামমোহনের প্রবীণ শিক্ষক যতীন্দ্র গোস্বামীর মেয়ে রত্না গোস্বামীদের বাড়িতে।
একসময় ইলাশপুরের পাখি সরকারের বাড়িতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বেলাশ্বরের কবি প্রদীপ দাসের সঙ্গে আমার সম্পর্কের অবনতি হয়। তারপর থেকে আর চান্দিনায় যাওয়া হয় না আমার। আমার বন্ধু রাঙ্গামাটির ঝিমি বড়ুয়ার সঙ্গেও তখন আর আমার কোনো যোগাযোগ নেই। ঝিমি এক সময়ে প্রতি সপ্তাহে একটি চিঠি লিখতো আমাকে। ঝিমি পাহাড়ি আর বাঙালির সহাবস্থান মেনে নিতো না। বলতো পাহাড় হলো আমাদের নিজস্ব বাসভূমি।
একসময় আরেকটি মেয়ে আমার খুব সন্নিকটে এলো। তারপর আর ঝিমির সাথে আমার আর কোনো যোগাযোগই নেই। আমি তখন ‘কুমিল্লার কাগজে’ চাকুরি করি। ‘কুমিল্লার কাগজে’র উদ্বোধনী সংখ্যায় অনেক ছবি ছাপা হয়। ছবিগুলো ছিলো রেবেকা সুলতানা মলি-র আঁকা।
তেল রঙ ও এক্রেলিক মাধ্যমে আঁকা এসব ছবি আরেকটি মেয়েকে মুগ্ধ করে। তার নাম ছিলো ইফফাত জাহান লুনা। সেই মেয়ে তখন পড়তো কলেজে। থাকতো কুমিল্লা শহরেরই ঝাউতলা খ্রিস্টানপাড়ায়। ‘কুমিল্লার কাগজে’র তখনকার স্টাফ রিপোর্টার কাজী উম্মে সালমা সাঞ্জুদের বাসার বিপরীত দিকে। আমি প্রায়ই সাঞ্জুদের বাসায় যেতাম। একদিন গেলাম লুনাদের বাসায়। লুনা তখন নেই। কথা বলা আর হলো না। বাসার পরিবেশ তার খুব বেশি কড়াকড়ি রকমের। তারপর একদিন ‘কুমিল্লার কাগজ’ অফিসে এলেন লুনা। আমি বললাম, এতো কড়া পরিবেশে থেকে কি চিত্রচর্চা হবে! লুনা যেন আমার কথায় খুবই লজ্জা পেলো। আমি লুনাকে বললাম, উল্টো করে লিখতে পারেন? আমি পারি। উল্টো করে লিখতে পারা একটি আর্ট। উল্টো করে লেখা পড়তে হলে আয়নার মধ্য দিয়ে পড়তে হবে। আমি তখন তাকে আমার আঁকা ‘লাভ ফর গ্যাম্বলিং, বার্ড, লাভ ফর বার্ড...ইত্যাদি ছবির ক্ষুদ্র সংস্করণ দেখালাম। আরও বললাম: 1998 সালে আমি কমপক্ষে 20 রাত জেগে একটি নারীর মুখ এঁকেছিলাম: ‘চাঁদ সুন্দর মুখ’। সেটি হারিয়েছি।
লুনা তখনই বললেন, তিনি ছবি আঁকা শেখেন ‘আঁকন আর্ট স্কুলে’ মিজানুর রহমান আঁকন স্যারের কাছে। অতীন্দ্র মোহন রায় সড়ক, বাদুরতলায়। তার অনেকদিন পর সেই আঁকন স্যারের সাথেও আমার দেখা হয়। আমি তাঁর প্রদর্শনীও দেখি। তাকে আমি বললাম, কুমিল্লায় ছবি প্রদর্শনীর একটি গ্যালারী নেই। কুমিল্লায় আমি আলোকচিত্র প্রদর্শনী করতে গিয়ে এই গ্যালারীর অভাব অনুভব করি। আমার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন আঁকন স্যার। আমি তার ছাত্রী লুনার প্রসঙ্গেও আলাপ করলাম। সেই সময়ে আমি লুনাকে ছবি আঁকার অনেক কৌশলের কথাও জানালাম। বিশেষ করে এপিডায়োস্কোপের কথা বললাম। এপিডায়োস্কোপে ছোট ছবিকে এনলার্জ করে ক্যানভাসে ফেলে তার ওপর তুলি চালানো হয়। যে কোনো আনাড়ি ব্যক্তিও এটি করতে পারে। আর চারুকলায় দক্ষ হলে সে তো অনেকই এগিয়ে যেতে পারে। আমার মুখে এসব শুনে লুনা অবাকই হয়। একদিন তাকে নিয়ে গেলাম পত্রিকাটির সম্পাদক আবুল কাশেম হৃদয়ের কাছে। হৃদয় তাকে ‘কুমিল্লায় চিত্রশিল্প’ শিরোনামে একটি লেখা তৈরির অ্যাসাইনমেন্ট দেন। মেয়েটি দুইদিন পরেই নিয়ে আসেন সেই লেখা। তারপর আর দেখা নেই সেই ইফফাত জাহান লুনার সঙ্গে।
আমি তখন ভেবেছিলাম আমার কিছু আঁকা ছবি দিয়ে একটি গ্রন্থও প্রকাশ করবো। প্রায়ই বিভিন্ন প্রকাশনায় একটি বিজ্ঞাপন দিতাম আমি। ওখানে লেখা থাকতো: ‘পাবলিশিং সুন। লাভ ফর গ্যাম্বলিং: এ কালেকশন অব স্কেচেস বাই জসীম উদ্দিন অসীম।’ কিন্তু সেই গ্রন্থ প্রকাশের অর্থ আমার আর কোনোভাবেই যোগাড় হতো না। আমার বর্তমান স্ত্রী সাদিয়া অসীম পলি বিয়ের পর আমার চেহারার অনেক ছবি এঁকেছিল। সেগুলো এখন সংরক্ষণে নেই। রেখা আর রঙের তাৎপর্যপূর্ণ সমন্বয় যে চিত্রকলা, তা অনেককেই আকর্ষণ করে। আমি যখন হাইস্কুলে পড়ি, তখন আমাদের গেম টিচার ছিলেন রশিদ স্যার। রশিদ স্যার আমাদের স্কাউট অনুসরক চিহ্ন এঁকে আমাদের আঁকা শেখাতেন। সেই চিহ্ন অনেকেই বুঝবেন না। গাছের ডাল, চুন, কালি...ইত্যাদি দিয়ে এসব চিহ্ন দেয়া হয়
অলংকরণ: জসীম অসীম

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: প্রথম পাতায় তিনটা পোষ্ট কোন হুসেবে করলেন?
এটা ঠিক না।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৯

জসীম অসীম বলেছেন: বুঝিনি ভাই। আজই জানলাম এবং দেখলাম বিষয়টি। আর এমন হবে না। অত্যন্ত গর্হিত হয়েছে। আগামীতে স্মরণ থাকবে অতি যত্নের সঙ্গে। অশেষ কৃতজ্ঞতা।

২| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৫

সনেট কবি বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৪

জসীম অসীম বলেছেন: আমার লেখার বিচ্যুতি বিষয়ে আলোকপাত করলে আরও অধিক খুশি হবো। আপনার সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.