নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশু কিশোরদের নির্বাচনী ভাবনা

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৫


চারদিকে এখন জাতীয় নির্বাচনী হাওয়া। এ হাওয়ার তরঙ্গ লেগেছে শিশু-কিশোরদের মনেও। যদিও শিশুরা নির্বাচনে ভোটার হিসেবে অংশগ্রহণ করতে পারে না। তারপরও নির্বাচন নিয়ে তাদেরও উৎসাহের কোনো কমতি নেই।
নির্বাচন বলতে শিশুরা কী বুঝে? আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তারা কী ভাবছে এবং বড় হয়ে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কী-না ইত্যাদি প্রশ্নের জবাবে জানা যায়, শিশুরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্বাচন বলতে বুঝে-‘ক্ষমতায় যাওয়ার ভোট ভোট খেলা।’
কোনো কোনো শিশু-কিশোর অবশ্য বলেছে, নির্বাচনে তাদেরও ভোট দানের সুযোগ থাকা উচিৎ। বিশেষ করে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রদের থেকে শুরু করেই ভোট দানের অধিকার থাকা উচিৎ বলে কোনো কোনো সচেতন কিশোর মনে করেন।
নির্বাচন বলতে কি বুঝো? এ প্রশ্নের উত্তরে কুমিল্লা জিলা স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আসিফ ওয়াহিদ বলে, রাষ্ট্র পরিচালনা ও জনগণের কল্যাণের জন্য প্রতিনিধি নির্ধারন করার প্রক্রিয়াই হলো নির্বাচন। অষ্টম শ্রেণির ফাহিম রিসাল হক এর মতে, ভোটারদের সন্তুষ্ট করে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে প্রক্রিয়া, তাকেই নির্বাচন বলে।
কুমিল্লা ফয়জুন্নেসা সরকারি হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তার শেলী’র মতে, নির্বাচন বলতে দেশ পরিচালনার জন্য প্রতিনিধি নির্ধারনের প্রক্রিয়াকেই বুঝায়। তবে শেলী আরও জানায়, বর্তমানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভোটদান প্রক্রিয়া যেভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করছে, সে ভোট দানের প্রক্রিয়াকে সে নির্বাচন বলতে ইচ্ছুক নয়।
সপ্তম শ্রেণির প্রিয়াঙ্কা মজুমদার এর মতে, যে নির্বাচনে পাশ করে প্রার্থী কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখে, সেই নির্বাচনকে আমি আমি নির্বাচন বলি না। আমি নির্বাচন বলতে বুঝি ভোটারদের টাকা চাওয়ার বা প্রার্থীকর্তৃক টাকা দেওয়ার নেশাবিহীন এক প্রতিনিধি নির্বাচন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছো? এ প্রশ্নের উত্তরে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র সাদ মাহমুদ জানায়, বর্তমানে নির্বাচন নিয়ে পরস্পর বিরোধী মনোভাব ও বক্তব্যকে আমি খুব অপছন্দ করি। এ বিষয়টি বাদ দিলে নির্বাচনের বাকি বিষয়ে আমার উৎসাহ রয়েছে।
শৈলরানী হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী তানিয়ার মতে, নির্বাচন মানে হলো ঢাকঢোল বাজিয়ে, গানবাজনা করে, ফুল দিয়ে ভোটারদের মন জয় করে ভোট চাওয়া। কিন্তু এমন নির্বাচনে আমাদের তেমন কোনো লাভ নেই। কেন না এ নির্বাচনে আমাদের তো ভোট দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ আমরা ভোটার নই।
বড় হয়ে নির্বাচন করার কোনো ইচ্ছা রয়েছে কী না জানতে চাইলে কুমিল্লা শৈলরানী হাইস্কুলের ছাত্রী পলাশী রাণী জানায়, এখন অনেকেই বলে রাজনীতি নষ্ট হয়ে গেছে। আগের রাজনীতি অনেক ভালো ছিল। এ অবস্থায় আমরা বড় হয়ে রাজনীতি করবো কোন দুঃখে? আর রাজনীতি না করলে তো নির্বাচনেরও প্রশ্ন আসে না।
কুমিল্লা হাইস্কুলের ছাত্রী সুলতানা জানায়, বড় হয়ে আমি রাজনীতি করবো না। কারণ রাজনীতির বাতাস এখন সব সময়ই তপ্ত থাকে। শান্তির সম্ভাবনা একেবারেই কমে গেছে। এ অবস্থায় বড় হয়ে রাজনীতি এবং নির্বাচন করার কথা আমি কখনোই ভাবি না।
তুমি ভোটার নও। নির্বাচনের দিন তোমার স্কুলও বন্ধ। সেদিন তুমি কী করবে জানতে চাইলে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী উপমা নাসরীন হক জানায়, সেদিন নির্বাচন নিয়ে আমাদের তেমন কিছু করার নেই ঠিকই। তবে ওদিন আমাদের খেলায় খেলায় এবং টিভি দেখেই সময় কেটে যাবে।
নবম শ্রেণির সুবর্ণা আক্তার জানায়, নির্বাচনের দিন অপেক্ষায় থাকি কে পাশ করবে আর কে ফেল করবে, তা জানতে। নারীদের ভোটদানের বিষয়ে আমি খুবই আগ্রহী। এবার নারীদের ভোটদানের বিষয়টি আমি বুঝতে চেষ্টা করবো। কেননা বড় হলে তো আমাদেরও একদিন ভোট দিতে হবে।
বিজয়ী নেতার কাছে তোমার প্রত্যাশা কী? এ প্রশ্নের উত্তরে কুমিল্লা জিলা স্কুল, ফয়জুন্নেসা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও ফরিদা বিদ্যায়তনের অনেক ছাত্রছাত্রী নির্বাচন বিষয়ে জানায়, সবার জন্য শিক্ষা শ্লোগানকে বাস্তবে পরিণত করতে বিজয়ী নেতারা যেন অব্যাহতভাবে কাজ করে যায়, আমরা এটাই কামনা করি।
কুমিল্লা জিলা স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মোস্তফা গোলাম মহিউদ্দিন জানায়, বিজয়ী নেতাদের কাছে আমার প্রত্যাশা, তারা যেন দল মতের উর্ধ্বে উঠে সব সময় মানুষের জন্য কাজ করেন।
৫ম শ্রেণির নুসরাত জাহান মুনমুন, ৮ম শ্রেণির জাকিয়া-তুজ-সাদিয়া, ৫ম শ্রেণির মারুফুজ্জামান, ১০ম শ্রেণির ঝিনুক রাণী দাশ, নিগার সুলতানা মৌসুমী এবং ৮ম শ্রেণির ফারহানা আলী মিথিলা: ওদের প্রত্যেকেই বিজয়ী নেতাদের কাছে সন্ত্রাস ও ঘুষমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে। তারা আরও বলেছে, বাংলাদেশ থেকে দারিদ্র দূর করতে হবে। সমাজ ব্যবস্থায় নারীদের এগিয়ে আসার সুযোগ করে দিতে হবে। দেশে দল-মতের উর্ধ্বে সরকার প্রতিষ্ঠিত করে যথাযথ উন্নয়ন করতে হবে। সারাদেশের শিশুদের জন্য চিত্তবিনোদনের রুচি সম্মত ব্যবস্থা করতে হবে। শিশুতোষ নতুন নতুন চলচ্চিত্র তৈরি করে প্রদর্শণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং গড়ে তুলতে হবে দেশের প্রত্যেকটি জেলায় জেলায় অত্যাধুনিক চিড়িয়াখানা আর পার্ক।


প্রথম প্রকাশ: দৈনিক শিরোনাম
বিভাগ: ফুলকলি
২৬ সেপ্টেম্বর ২০০১।
কুমিল্লা।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: যে যাই'ই বলেন- বিটিভির খবর দেখতেই আমার বেশি ভালো লাগে। শান্তি... শান্তি লাগে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.