নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মায়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:২৯



ভূমিকা:
আজ থেকে প্রায় অনেক বছর আগে কুমিল্লার ‘সাপ্তাহিক আমোদ’ পত্রিকায় আমার এ লেখাটি ছাপা হয়েছিলো। অনেক লেখা আমি ছদ্মনামে লিখলেও এ লেখাটি আমি নিজের নামেই লিখেছিলাম।
তখন ওই পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মোহাম্মদ ফজলে রাব্বীর সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিলো। ওই সময়েও মায়ানমারে চলছিলো ভয়াবহ রোহিঙ্গা নির্যাতন। ফজলে রাব্বী ব্যথিতচিত্তে এ বিষয়ে লেখা চাইলেন আমার কাছে। প্রায় তাৎক্ষণিকভাবেই দিয়েছিলাম এ লেখাটি। তিনি লেখার জন্য লেখকদের পুরস্কৃত করতেন। লেখাটি প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালের ৩০ এপ্রিল তারিখে । এক সময় আমি মূলত প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখার দিকেই বেশি ঝুঁকে পড়েছিলাম। ওই সময়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় আমার অনেক কবিতাও প্রকাশিত হয়। কিন্তু কালের স্রোতে এবং আমার যাযাবর জীবনের উদাসীনতায় ও প্রথম সংসার ভাঙ্গনের লগ্নে লেখালেখির অধিকাংশই হারিয়েছে। প্রথম সংসার ভাঙ্গনের পর একসময় কুমিল্লা শহরে বছর বছর ধরেও কোনো বাসা ছিলো না আমার। তারপর অনেকবারই পত্রিকার চাকুরি ছেড়ে দিয়ে স্বেচ্ছায় বেকার হয়েছি বারবার। সেসব লগ্নেও হারিয়েছি আরও অনেক লেখা, বিভিন্ন সময়ে তোলা ফটো এবং আমার আঁকা ছবিগুলো।
আমার একসময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু স্বপ্না দেবনাথ এবং স্নিগ্ধা রায়ও বিভিন্নভাবে অনেক লেখা সংগ্রহ করে দিয়েছেন। আর আমার বর্তমান স্ত্রী সাদিয়া অসীম পলি এগুলো কম্পোজ করে করে এতো পান্ডুলিপি তৈরি করেছে যে, মনে হয় সব মিলিয়ে অর্ধশত গ্রন্থ হবে। কিন্তু গ্রন্থ প্রকাশের আর্থিক অবস্থা এখনও আমার নেই। আমার লেখালেখির হাতেখড়ি ১৯৯০ সাল থেকে কুমিল্লার ‘সাপ্তাহিক আমোদ’ পত্রিকায় ।
১৯৯৩-১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সময়ে আমি কুমিল্লার সাপ্তাহিক এই পত্রিকাটিতেই দুটি কলাম নিয়মিত লিখেছি। [১] অন্তর মম বিকশিত করো [২] বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি। ‘অন্তর মম বিকশিত করো’ কলামের প্রথম ৪ পর্ব লেখা ১৯৯৩ সালের যেদিন পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মোহাম্মদ ফজলে রাব্বীর হাতে তুলে দিয়েছিলাম, সেদিন তিনি আমাকে এ কাজের গভীর প্রেরণা দিতে মিষ্টি খাইয়েছিলেন। উপহারও দিয়েছিলেন কিছু। আজও সেই স্মৃতি আমার মাথায় জীবন্ত হয়ে রয়েছে।
----------------------------------------
মায়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন
জসীম উদ্দিন অসীম
৩০ এপ্রিল ১৯৯২, সাপ্তাহিক আমোদ, কুমিল্লা।

আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব দিকে কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন জেলার সীমান্ত সংলগ্ন রাষ্ট্রটির নাম বার্মা।
বার্মার আয়তন ৬,৭৮০০০ বর্গ কি: মি: আর লোকসংখ্যা ৩৭১,৫৫০০০ জন প্রায়। এই বার্মারই বর্তমান নাম হলো মায়ানমার।
মায়ানমার বিস্তীর্ণ এলাকার উত্তর দক্ষিণে প্রসারিত পর্বত ও উচ্চভূমি রয়েছে সর্ব পশ্চিমে আরাকান ইয়োমা, এর পূর্বে পেগুইয়োমা আর সবচেয়ে পূর্বে শান মালভূমির দক্ষিণে টেনাসেরিম নামক পর্বতমালা অবস্থিত।
মায়ানমারের বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে বর্মী বা মায়ানমাররা শতকরা ৪০ জন বাকী জাতিগোষ্ঠির মধ্যে কোচিন, শান, কারেন, কারা ও রোহিংগা অন্যতম।
মায়ানমারের সাতটি প্রদেশের মধ্যে যে প্রদেশটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব সীমান্ত ছায়া তার নাম “ আরাকান” প্রদেশ। মায়ানমারের অন্যান্য প্রদেশে আবাদী জমির পরিমাণ কম হলেও আরাকানদের নৈসর্গিক ও সাংস্কৃতিক রূপ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের। তাই আরাকান প্রদেশের প্রতি বর্মী বা মায়ানমারদের লোভ ছিল যুগ যুগ ধরে। আরাকান প্রদেশের ৪২/৪৩ লক্ষ লোকের মধ্যে ৭০/৭২ শতাংশ মুসলমান। বাকী সবদের মধ্যে মগদের আসন অন্যতম আরাকানে যে মুসলমানেরা বাস করে তারাই রোহিংগা মুসলমান নামে পরিচিত। আর এ রোহিংগারা মুসলমানদের মধ্যে সুন্নী শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। এ রোহিংগা মুসলমানেরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নকালে বার্মার মানবতা বিরোধী শাসকদের অসর্ভ্যা আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে। সেসব ইতিহাস ভাষাতীত, বর্ণনাতীত। ১৫৩১ খ্রীস্টাব্দে পারস্য স¤্রাটের আদেশে একদল মুসলমান আরাকানে আসেন তারা ওখানে এসে সংখ্যাতীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মসজিদ নির্মাণ করেন। তারা ভবন ইসলাম প্রচারেও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখিতে সমর্থন হোন। আর এরই ফলশ্রুতিতে আরাকানের তদানীন্তন হাজার হাজার বৌদ্ধ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নিজেদের ধন্য করেন। আর সে কারণে হাজার হাজার বৌদ্ধ, তখন হতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লাগতে থাকে সুযোগের সন্ধান করে। সেই যে নির্যাতন শুরু হল তা আর বন্ধ হচ্ছে না বরং নির্যাতনের পরিধি দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে কিন্তু কেন? সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়কে নাশ করার অসভ্য নেশায় তৎপর হয়ে ওঠে বার বার, তবে সভ্যতা বা মানবতা বলতে বিশ্বে কি আর থাকল? অথচ রোহিঙ্গারা বার্মার অধিবাসী হিসেবে আদিবাসী। অতীতে বিভিন্ন দেশ প্রেমিকতায় কিংবা বার্মার স্বাধীনতা আন্দোলনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে রোহিঙ্গারা। তবু আজ অবহেলিত, পদদলিত, আক্রান্ত, নির্যাতিত রোহিঙ্গারাই। কিন্তু কেন? রোহিঙ্গারা অতীতে মুসলমান তাদের ধর্ম ইসলাম। আর ইসলাম শব্দের অর্থ আনুগত্য অর্থাৎ ইসলাম মানে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য স্বীকার করা। যদিও জাতি হিসেবে বার্মায় তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়। কিন্তু মানুষ সামনে মানুষ শির নত করবে না বলে কি এরা দুরাত্মার দৌরাত্মকে বরণ করে নেবে? জাতি হিসেবে রোহিঙ্গাদের কি কোন অধিকার নেই? বার্মার সরকার কেন তার সকল সেনাবাহিনীকে জুলুম নির্যাতনের জন্যে ব্যবহার করবেন? আর কেন বা রোহিঙ্গাদের তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক বা অতিথি নাগরিক হিসেবে আখ্যায়িত করবেন? রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক গণহত্যা, লুটতরাজ, জায়গা সম্পত্তি ক্রোক, মহিলাদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে কিন্তু কট্টর সেন্সরশীপ আরোপের কারণে পুনরায় প্রচার মাধ্যমে যায় না সঠিক খবর।
১৯৭০ সালে “নাগামিন অপারেশন” এ লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। তেমনি শুরু হয়েছে এ ধরনের ঘৃণ্য আচরণ। কিন্তু যথার্থ সমাধান হচ্ছে না। জাতিসংঘ থেকে এ ধরনের কর্মের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপিত হয় কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে কার্যকর হয় না কোন কিছুই। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে যদি যথার্থ বিচার না হয়, তবে নামেমাত্র জাতিসংঘের অটল ভিত্তি পৃথিবীর মাটিতে প্রোথিত থেকে পৃথিবীতে কল্যাণের ধারা প্রবাহিত করবে কেমন করে?




মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:১৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মন ছুঁয়ে গেল লেখা।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:২৭

জসীম অসীম বলেছেন: আসলে লেখা তো 1992 সালের। এতোদিন পর আবারও পোস্ট করলাম। যেহেতু পত্রিকায় প্রকাশিত লেখা, তাই আর পরিবর্তনও করিনি। ভালো থাকুন। শুভ কামনা।

২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: বহুদিন পর সামুতে আপনার পোষ্ট দেখলাম।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:১৭

জসীম অসীম বলেছেন: আমি তো ভাই এতোদিন ব্লগ সাইটই ওপেন করতে পারছিলাম না। এখনো সব কম্পিউটারে সামু ব্লগ ওপেন হয় না। কিছু সমস্যার কথা তো আমরা সবাই জানি। শুভেচ্ছা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.