নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে বেসরকারীভাবেই উন্মুক্ত টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন দেয়া হোক

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৪




বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)এর অভিনয় বিভাগে তালিকাভুক্ত নাট্যশিল্পী হবো, এমন স্বপ্ন একদা অনেকদিনই লালন করেছিলাম। বিগত বিশ শতকের নব্বই দশকের প্রথম দিকের স্বপ্ন আমার এমনই ছিলো।
বাংলাদেশের প্রকৃত সংস্কৃতি উপস্থাপনে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) চ্যানেলটি একদা বিশাল ভূমিকাই পালন করেছিলো। তখন একমাত্র ‘সংবাদ’ অনুষ্ঠান ব্যতিত অন্য অনেক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন হয়েও বাংলাদেশ টেলিভিশন ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। আর তার মধ্যে উল্লেখযোগ্যই ছিলো নাট্যানুষ্ঠান।
বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভি বাংলাদেশ সরকারের প্রথম টেলিভিশন। এটি তার প্রথম অনুষ্ঠান সম্প্রচার করেছিলো 1964 সালে।

ঢাকার রামপুরাতেই বিটিভি ভবনের একটু দক্ষিণে 1991 সালে বেসরকারীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো ‘ইনষ্টিটিউট অব ব্রডকাস্টিং আর্ট (বিবা)’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আমি ওখানে 1991 সালে ‘অভিনয়’ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলাম।
অভিনয় বিভাগে ওখানকার প্রশিক্ষণের কিছু কাগজপত্র এতোদিনে আমি হারিয়েও ফেলেছি।ওই ‘ব্রডকাস্টিং আর্ট’ সেন্টারের পরিচালক ছিলেন বিটিভি-রই তখনকার সুরকার লোকমান হাকিম।
এছাড়াও আমাদের অভিনয় বিভাগের ক্লাস নিতেন তখন বিটিভি-র প্রযোজক সালেক খান, প্রযোজক কাজী আবু জাফর সিদ্দিকী, অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ, অভিনেতা মোহন খান, আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
এই বাংলাদেশ টেলিভিশনের উন্মুক্ত ট্যারিস্টরিয়াল নেটওয়ার্ক এর ঢাকার রামপুরার টাওয়ার তখন দেখা যেতো শহরের পূর্বাঞ্চল মাতুয়াইল থেকেও। আমার তখনকার বাসাও ছিলো সেই মাতুয়াইলে।

বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমেই চলে যেতাম গুলিস্তানে। তারপরে সরাসরিই রামপুরায়।
সে সময়ে বিটিভি-র যেই অবস্থান ছিলো, সেই অবস্থান আর বাংলাদেশে কোনো টেলিভিশনই বিভিন্ন কারণে করে নিতে পারেনি। যদিও বিটিভি এখন আর অনেক কারণে অনেকেই তেমন একটা দেখে না।
অন্যদিকে বর্তমানে বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলা, এটিএন নিউজ, চ্যানেল আই, এনটিভি, আরটিভি, বাংলাভিশন, বৈশাখী টিভি, দেশ টিভি, মোহনা টেলিভিশন, চ্যানেল নাইন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, সময় টিভি, বিজয় টিভি, মাই টিভি, মাছরাঙ্গা টিভি, জিটিভি, একাত্তর টিভি, চ্যানেল টুয়েন্টিফোর, এশিয়ান টিভি, চ্যানেল সিক্সটিন, যমুনা টেলিভিশন, দীপ্ত টিভি, নিউজ টুয়েন্টিফোর…ইত্যাদি সব টেলিভিশনের আকর্ষনীয় ও বাজারী অনুষ্ঠানের চাপে বিটিভি-র আর সেইদিন নেই। প্রতিযোগিতায় হেরে গেছে বিটিভি। কিন্তু উন্মুক্ত টেরিস্ট্যারিয়াল সিস্টেমের অভাবে বেসরকারী টেলিভিশনগুলোরও অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) বাংলাদেশের সরকারি টেলিভিশন সংস্থা। এটি 25 ডিসেম্বর 1964 সাল থেকে সাদা-কালো সম্প্রচার শুরু করে। সে সময় অবশ্য এটি পাকিস্তান টেলিভিশন নামেই পরিচিত ছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর এর নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) নাম রাখা হয়। 1980 থেকে এটি তার রঙিন সম্প্রচার শুরু করে।
তখন শিল্পী এবং কলাকুশলীদের দক্ষতাও ছিল অসামান্য। কারণে সেসময়ে টেলিভিশনে আধুনিক অনেক প্রযুক্তিরই অভাব ছিল। আর সেই কারণে তখনকার প্রায় সব অনুষ্ঠানই লাইভ বা সরাসরি সম্প্রচার করা হতো। এটি কোনো সহজসাধ্য বিষয় ছিলো না।
বাংলাদেশ টেলিভিশন এখনো তার অনেক ভালো মানের অনুষ্ঠান ধরে রেখেছে। তারপরও যুগের প্রতিযোগিতায় চ্যানেলটি পেছনেও পড়েছে অনেক। দেশে আরও অনেক উন্মুক্ত টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন বেসরকারীভাবে চালু না হলে বিটিভি-র অনুষ্ঠানের মান বাড়বে না বলেও অনেকে অনেক সময় অভিমত প্রকাশ করেন।
1992 সালে বিটিভি-তে আমি যখন ‘অভিনয়’ বিভাগে প্রথম অডিশন দেই, কী যে প্রতিযোগিতা ছিলো তখন, আসলে ওই প্রতিযোগিতার ভিতর দিয়েই তখন বের হয়ে আসতো প্রকৃত প্রতিভা। আর এখন সেই চর্চা কোথায়? চর্চার জায়গা তেমন তৈরি হয়নি, যেভাবে চ্যানেলের সংখ্যা বেড়েছে।এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় অনেক বিধিবিধান ও চাপকেও অনেকে আবার দায়ী করেন।যেমন বাংলাদেশ সরকার দিগন্ত টেলিভিশন, ইসলামিক টেলিভিশন, সিএসবি নিউজ, চ্যানেল ওয়ানসহ কয়েকটি টেলিভিশনকে বিভিন্ন কারণে বন্ধ করে দিয়েছে। এমন চাপেও নাকি অনেক সময় ভালো কাজ দেয়া যায় না, এমন কথাও কেউ কেউ বলেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভিও এখন তার অনুষ্ঠানের মান আর ধরে রাখতে পারেনি। এই উন্মুক্ত টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশনটির একমাত্র ‘সংবাদ’ ব্যতিত প্রায় সকল অনুষ্ঠানই একদা অনেক জনপ্রিয় ছিলো।অনুষ্ঠানগুলো ছিলো খুব মানসম্পন্নও। কিন্তু আজ আর বিটিভি-র সেই দিন নেই। বাংলাদেশের বেসরকারী কেবল টেলিভিশনগুলোর চাপে এই উন্মুক্ত টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন চ্যানেলটি এখন যেন বড়ই অসহায়। এখন আর পারতপক্ষেই কেউ দেখে না এই চ্যানেলটি। প্রতিযোগিতার দিক থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনকে এই প্রথম ধাক্কা মেরেছিলেন সাইমন ড্রিং।
ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী এই ইংরেজ সাংবাদিক সাইমন ড্রিংএকজন আন্তর্জাতিক পুরস্কার বিজয়ী বৈদেশিক সংবাদদাতা, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং প্রতিবেদন নির্মাতা। তিনি পৃথিবীবিখ্যাত সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে কাজ করে বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববাসীর নজর কাড়েন। বিবিসি টেলিভিশনেও তার পারফরম্যান্স অবিস্মরণীয়।
বাংলাদেশের সঙ্গে সাইমন ড্রিং এর সম্পর্ক প্রায় রক্তের। কারণ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি তাঁর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার খবর বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছিলেন। অনেক সংবাদপত্রেই তিনি ‘প্রুফ রিডার’ বা সম্পাদনা সহকারী হিসেবেও কাজ করেছেন। তবে ভিয়েতনাম যুদ্ধের এক লগ্নে তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের যুদ্ধবিষয়ক সংবাদ প্রতিনিধি হিসেবেও নিযুক্ত ছিলেন।
1971 সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাঁকে জোরপূর্বক দেশ থেকে বের করে দেয়। সাইমন ড্রিং বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন চ্যানেল ‘একুশে টেলিভিশন’ এর নেপথ্য কারিগর ছিলেন। আজ যে বাংলাদেশের বেসরকারী টেলিভিশনের যাবতীয় আধুনিকতা, তার অন্যতম নেপথ্য রূপকার এই সাইমন ড্রিং। তার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী উন্মুক্ত টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন চ্যানেল ‘একুশে টেলিভিশন’ প্রথম রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিভিশন ‘বিটিভি’কে ধাক্কা দেয়। সেই উন্মুক্ত টেরেস্ট্রিয়াল ‘একুশে টেলিভিশন’ এর ‘সংবাদ অনুষ্ঠান’টি যখন সারা বাংলাদেশে প্রায় বিপ্লব সৃষ্টি করতে যাচ্ছিল, ঠিক সেই সময়েই 2002 সালে এই ‘একুশে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ’ সম্প্রচার আইন লঙ্ঘনজনিত কারণে তাদের সম্প্রচার কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তখন সায়মন ড্রিংয়ের ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করে তাঁকে অবিলম্বে বাংলাদেশ ত্যাগের আদেশ দেয়া হয়েছিলো। ঠিক তেমনিভাবেই 1971 সালে পাকিস্তান সরকারও তাকে পূর্ব-পাকিস্তান ছাড়তে বাধ্য করেছিলো। ওই ঘটনার পর বিটিভি আর তার কোনো ট্যারিস্টরিয়াল টেলিভিশন ফ্রিকোয়েন্সি ভাড়া দিতে রাজি হয় না। দেশে এখন অনেক বেসরকারী কেবল টেলিভিশন চ্যানেল চালু হলেও বেসরকারী উন্মুক্ত ট্যারিস্টরিয়াল টেলিভিশন আর চালু হয়নি। সরকার আর উন্মুক্ত ট্যারিস্টরিয়াল একুশে টেলিভিশনটির মতো সেই ঝুঁকি নিতে আর প্রস্তুত নয়।
কিন্তু আমরা চাই রাষ্ট্রীয় মালিকানায় থেকেও যেহেতু উন্মুক্ত টেরেস্ট্রিয়াল টিভি চ্যানেল ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভি’ ভালো করতে পারছে না, সেহেতু বেসরকারীভাবেই উন্মুক্ত ট্যারিস্টরিয়াল টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদনও দেয়া হোক। কারণ আমাদের বিশ্বাস: শিল্পনৈপুণ্যের প্রতিযোগিতা দেশে তীব্রতর হলে অবশ্যই এখানকার মেধাবীরাও বের হয়ে আসবেন।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৫

জসীম অসীম বলেছেন: বুঝলুম।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ একটি পোস্ট।

০১ লা অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:০১

জসীম অসীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। শুভেচ্ছা নিরন্তর।

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বাংলাদেশে বেসরকারীভাবেই উন্মুক্ত টেরেস্ট্রিয়াল
টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন দেয়া হলে বিটিভি
মাঠে মারা যাবে। একমাত্র ইটিভির ঠেলা সামলাতে
পারেনাই সে ক্ষেত্রে সবাইকে টেরেস্ট্রিয়ালের সুযোগ
দিলে বিটিভির ত্রাহি অবস্থা শুরু হবে।

০১ লা অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:০৪

জসীম অসীম বলেছেন: নূরু ভাই, আমাকে ক্ষমা করবেন। এত ভালো মতামত লিখে রেখেছেন, অথচ সময়মত জবাব লিখতে পারিনি। অশেষ ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.