নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নামের মহিমা জানাও গো সাঁই......

পূজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! মূর্খরা সব শোনো, মনুষ এনেছে গ্রন্থ! 'গ্রন্থ' আনেনি মানুষ কোনো!

মরহুম আসমান ফকির

আত্নতত্ত্ব যে জেনেছে দিব্যজ্ঞানী সেই হয়েছে কুবৃক্ষে সুফল পেয়েছে আমার মনের ঘোর গেল না

মরহুম আসমান ফকির › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিয়াল বিজয় সরকার

১০ ই মে, ২০১১ রাত ১২:৪০







উপমহাদেশের প্রখ্যাত কবিয়াল মরমী গানের গীতিকার, সুরকার, গায়ক, চারণ কবি বিজয় সরকার ১৩০৯ বঙ্গাব্দের ৭ ফাল্গুন ১৯০৩ সালের ১৯ ফেব্রয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার পল্লী ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।



পিতার নাম নবকৃষ্ণ আধিকারী, মা হিমালয় দেবী। কৈশোরে তিনি কবি পুলিন বিহারী ও পঞ্চানন মজুমদারের সহচর্যে আসেন ও পাচালী গানের দীক্ষা পান এবং পরবর্তিতে পাচালী গানে খ্যতি অর্জন করেন।



বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ধারা কবি গানের উৎকর্ষ সাধনে বিজয় সরকারের অবদান অসামান্য।



“এ পৃথিবী যেমন আছে তেমনই ঠিক রবে,

সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে”



“তুমি জানোনারে প্রিয় তুমি মোর জীবনের সাধনা”



সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের রচয়িতা কবিয়াল বিজয় সরকার।



স্থানীয় স্কুলে দশমশ্রেনী অবধি পড়েছেন। তারপর ঐ স্কুলেই পড়ান কিছুকাল। পরে স্থানীয় জমিদারীর কাচারিতে নায়েবের চাকরি নেন। অবসর সময়ে গান করতেন। ১৯২৯ সালে তিনি কবিগানের দল গঠন করেন। ১৯৩৫ সালে কলকাতার অ্যালবার্ট হলে বিজয় সরকারের গানের আসরে উপস্থিত ছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, পল্লী কবি জসীমউদদীন, কবি গোলাম মোস্তফা, শিল্পী আব্বাস উদ্দিন, সাহিত্যিক হাবিবুল্লাহ বাহার, ধীরেন সেন প্রমুখ। তারা তার গান শুনে মুগ্ধ হন। ১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রয়ারি কলকাতার ‘ভারতীয় ভাষা পরিষদ’ তাকে সংবর্ধিত করে।কবিগানের উৎকর্ষ সাধনে তার অবদান অসামান্য। ফকির লালন শাহ্‌ এর “বাড়ির কাছে আরশি নগর” এবং জসীমউদ্দিনের “নকশী কাঁথার মাঠ” নিয়ে ও তিনি গান লিখেছেন।







প্রচারবিমুখ ও নিভৃতচারী এই সঙ্গীতসাধক মানুষের হৃদয়ের আকুতিকে চমৎকার সুরব্যঞ্জনায় ফুটিয়ে সবার অন্তরে ঠাঁই নিয়েছিলেন। তাঁর সমসাময়িক ছিলেন নড়াইলে প্রখ্যাত জারী গায়ক মোসলেম উদ্দিন বয়াতী। বিজয় ছিলেন আধ্যত্নিক চিন্তা-চেতনার প্রাণপুরুষ। যেকোনো ধর্মের প্রতিও সহনশীল। ১৯৮৫ সালের ২ ডিসেম্বর চারন কবিয়াল বিজয় সরকার কলকাতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরলোক গমন করেন।। জীবদ্দশার শেষ দিকে এসে তিনি খুলনা বেতারের নিয়মিত গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী ছিলেন।



জাতি ধর্ম বর্ণের উর্দ্ধে থেকে এই চারণ কবি প্রায় দুই হাজার বিজয়গীতি রচনা করেন। যার মধ্যে রয়েছে বিচ্ছেদিগান, শোকগীতি, আধ্যাতিক গান, দেশের গান, কীর্তন, ধর্মভক্তি, মরমী গান। বিশ্ববরেন্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের সঙ্গেও তার গভীর বন্ধুত্ব ছিল। সুলতান বার বার ছুটে যেতেন বিজয় সরকারের বাড়িতে ।











বিজয় সরকারের তিনটি গান, ডাউনলোড লিঙ্ক সহঃ







আমি জানিতে চাই দয়াল



জানিতে চাই দয়াল তোমার আসল নামটা কি

আমরা বহুনামে ধরাধামে কত রকমে ডাকি

কেউ তোমায় বলে ভগবান আর গড কেউ করে আহ্বান

কেউ খোদা কেউ জিহুদা কেউ কয় পাপীয়ান

গাইলাম জনম ভরে মুখস্থ গান মুখ বুলা টিয়াপাখী

সর্বশাস্ত্রে শুনিতে যে পাই তোমার নাকি পিতামাতা নাই

তবে তোমার নামকরন কে করলে সাঁই বসে ভাবি তাই

তুমি নামি কি অনামি হে সাঁই আমরা তার বুঝি বা কি

কেহ পিতা কেহ পুত্র কয় আবার বন্ধু বলে কেউ দেয় পরিচয়

তুমি সকলেরই সকল আবার কারো কেহ নয়

তোমার যে আসল পরিচয় কে জানে তা কি না কি

বিজয় বলে মনের কথা কই আমি খাঁটি ভাবের পাগল নই

আমার গোল বেঁধেছে মনের মাঝে কাজেই পাগল হই

আমার বুকে যা নাই মুখে তা কই কাঁটা কান চুলে ঢাকি।







তুমি জানো নারে প্রিয় তুমি মোর জীবনের সাধনা



তুমি জানো নারে প্রিয় তুমি মোর জীবনের সাধনা

তোমায় প্রথম যেদিন দেখেছি মনে আপন মেনেছি

তুমি বন্ধু আমার বেদন বুঝো না

ফাল্গুন দোল পূর্ণিমায় মধুর মৃদু বায়ু বয়

ফুলবনে পুলকের আল্পনা

মাধুয়া মাধুবী রাতে বঁধুয়া তোমারি সাথে

করেছিনু সে যামিনী যাপনা

চলে গেলে আমায় ফেলে কি আগুন মোর বুকে জ্বেলে

একদিনও ফিরে এসে দেখলে না

যদি পেতাম দুঃখিনীর কুটিরে দেখাইতাম বক্ষ চিঁড়ে

বুকের ব্যথা মুখে বলা চলে না

কাষ্ঠ-নলে দাবানল পোড়ায় কত বন জঙ্গল

মন পোড়ানোর আগুন বন্ধু তাহা নয়

কত বিরহীনির অন্তর তলে

বিনা কাষ্ঠে আগুন জ্বলে

জলে গেলে জ্বলে দ্বিগুণ

নিভে না– না নিভে না

জনমে জনমে ক্ষিতি অপ তেজ মরুৎ ব্যোমে

খুঁজে ফিরি তোমারই ঠিকানা

পাগল বিজয় বলে চিত্ত চোর

আসবে কি জীবনে মোর

বুকে রইলো ব্যথা ভরা বাসনা।













এই পৃথিবী যেমন আছে তেমনি ঠিক রবে







এই পৃথিবী যেমন আছে তেমনি ঠিক রবে

সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে

তোমার নগদ তলব তাগিদ পত্র এসে পরবে যবে

মোহ ঘুমে যে দিন আমার মুদিরে দুই চোখ

পাড়াপড়শী প্রতিবেশী পাবে কিছু শোক

তখন আমি যে এই পৃথিবীর লোক ভুলে যাবে সবে

যত বড় হউকনা কেন রাজা জমিদার

পাকা বাড়ি জুড়ি গাড়ি ট্রানজিস্টার

তখন থাকবে না কোন অধিকার বিষয় ও বৈভবে

চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা আকাশ বাতাস জল

যেমন আছে তেমনি ঠিক রইবে অবিকল

মাত্র আমি আর থাকবোনা কেবল জনপূর্ণ ভবে

শব্দ স্পর্শ রূপ রস গন্ধ বন্ধ হলো যেন

এই পৃথিবীর অস্বস্তি বোধ থাকবেনা আর হেন

পাগল বিজয় বলে সেই দিন যেন এসে পড়ে কবে।









মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০১১ রাত ১:২৮

নক্ষত্রের কান্না বলেছেন: এমন চমৎকার পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

১০ ই মে, ২০১১ রাত ১:৪৩

মরহুম আসমান ফকির বলেছেন: আপনাকে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। :)

২| ১০ ই মে, ২০১১ ভোর ৬:২১

স্বাধীকার বলেছেন:
অসাধারণ পোস্ট। বাণী চক্রবর্তীর কণ্ঠে তার নকশী কাথাঁর মাঠ’’ গানটি শুনে খুবই আনন্দ পেয়েছিলাম।গাণটি আমার কাছে সংগ্রহে আছে।

লেখককে ধন্যবাদ।।

১০ ই মে, ২০১১ দুপুর ২:৫৮

মরহুম আসমান ফকির বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। :)

৩| ১০ ই মে, ২০১১ ভোর ৬:২৪

স্বাধীকার বলেছেন:
‘‘নকশী কাঁথার মাঠের লোকে আজো শুনতে পায়,
সাজুর ব্যাথায় রূপাই মিয়া বাশঁরী বাজায়।’’

১০ ই মে, ২০১১ বিকাল ৩:০১

মরহুম আসমান ফকির বলেছেন: :)

৪| ১০ ই মে, ২০১১ বিকাল ৩:৩০

ম.শরীফ বলেছেন: খুবই ভাল তথ্য্

১০ ই মে, ২০১১ বিকাল ৩:৫৫

মরহুম আসমান ফকির বলেছেন: ধন্যবাদ! :)

৫| ১০ ই মে, ২০১১ বিকাল ৩:৩৪

বিশেষনহীন বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট। অনেক অনেক ধন্যবাদ জানবেন।

৬| ১০ ই মে, ২০১১ বিকাল ৩:৩৬

বিশেষনহীন বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট। অনেক অনেক ধন্যবাদ জানবেন।

১০ ই মে, ২০১১ বিকাল ৩:৫৭

মরহুম আসমান ফকির বলেছেন: আপনি ও ধন্যবাদ জানবেন! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.