“ তোমার অপেক্ষায় হে সফল চাষী ”

১৩ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:২০

প্রায় দেড় লক্ষ বর্গমাইল জমির
চাষাবাদের দায়িত্ব প্রায় আমার উপর।
যে দায়িত্ব আমি আমার বাবার কাছে পাই,
তিনি পেয়েছিলেন তার বাবার কাছে।
যে জমিতে বীজ রোপন করেই আমার পিতামহ্
পাড়ি জমান স্বর্গ পানে।
তারপর-
বাবা নিজের কাঁধে তুলে নেন সমস্ত দায়িত্ব।
চলে বাবার সর্ব প্রকার পরিচর্যা।

একদা স্বপ্ন ছিল বাবার,
সোনার ফসল ফলার।
কিন্তু সর্বনাশা বন্যা গ্রাসে নিল বাবার সমস্ত ফসল।
তারপর সাহ,ধৈর্য্য নিয়ে আবার পথ চলা
আগের বারের চেয়ে এবার অনেক বেশী যত্নবান বাবা,
যা স্পষ্ট হয় ফসলের চেহারার দিকে তাকালে
জমির দিকে চেয়ে বাবার বুকটা ভরে উঠতো গর্বে।
মনে করতো সুদিন এরো বুঝি।
এবার বুঝি আমার বিশাল পরিবারেব সকলের
চাহিদা মেটাতে পারবো আমি।
অন্যের কাছে এবার আর হাত পাতা লাগবে না।
লাগেও নি;

বাবার ফসল ঘরে আসার পূর্বে বাবা ঘর ছেড়েই
চলে গেলেন, পাড়ি জমালেন পরপারে!
আর আমার উপর অর্পিত হইল জামি চাষাবাদের
সমস্ত দায়িত্ব; আমি চাষাবাদ শুরু করলাম।

কিন্তু কোন ফলাফল পাই না! প্রতিবৎসরই
বন্যা, খরা, বৃষ্টি সর্বোপরি কুয়াশ আমার ফলনকে ব্যহত করে,
প্রকৃতি মেতে উঠে নিষ্ঠুর খেলায়।

৫২ তে আমার পিতামহ্
১৯৭১ এ আমার বাবা চলে গেলেন!
গত ৪৫ বৎসর চাষাবাদ করে আমিও আজ যাচ্ছি যাচ্ছি,
কই সোনার ফসল তো এল না একটি বার ও?
তবে কি সোনা ফলাতে আমরা সত্যি ব্যার্থ?
হয়তো বা তাই।

ব্যার্থতার বোঝা মাথায় নিয়ে আজ আমার একটাই জিজ্ঞাসা
নতুন প্রজম্মের কাছে,
কে এই জমিতে ফসল ফলাবে?
কে আমাদের তিন পুরুষের মনেবাঞ্জা পূর্ণ করবে?
কে আমার বাংলা মাকে সোনায় সোনায় ভরিয়ে দেবে?
কে হবে আগামী দিনের পাঞ্জেরী,কান্ডারী?

তোমার অপেক্ষায় হে সফল চাষী-
তোমার অপেক্ষায়।


ছবিস্বত্ত্বঃ খান সাহেব।
ডিভাইসঃ ক্যানন ইওএস ৬০ডি।
স্থানঃ দাশিয়াছড়া, ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম।

০ টি +০/-০