নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সব সময় ভালো থাকার চেষ্টা করি.....
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি দিনকে দিন ক্রমাবনতি হচ্ছে এবং উন্নতির কোনা লেশ চিহ্ন মাত্র দেখা যাচ্ছে না। এই অস্থিতিশীলতা দেশে এবং বিদেশে অবস্থিত সকল শান্তিপ্রিয় মানুষের মারাত্মক উদ্বেগের বিষয়। সহিংসতা, ধ্বংসযজ্ঞ ও হরতালের কারণে দেশ বর্তমানে প্রায় অচল অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, এখন আমাদের লাইফ-লাইন তথা রসদ সরবরাহের পথ বিচ্ছিন্ন; জঙ্গিরা ঢাকার সাথে বাইরের অন্যান্য জেলার গুরুত্বপূর্ণ রেল যোগাযোগ বাধাগ্রস্থ করেছে। এই সংকট নিরসনে জাতীয় নেতৃত্বের অভাব উৎকণ্ঠার বিষয়। আমাদের খাদ্য সরবরাহ হুমকির মুখে। রেল বা অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমের ধ্বংসযজ্ঞ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় আরবে জেনারেল উইলগ্রেট-এর উসমানিয় তুর্কি বিরোধী রণকৌশলের কথা। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি অনুরূপ এবং একে হালকাভাবে নেয়া উচিত হবে না। মধ্যপ্রাচ্যের তেল যেমন বেশকিছু শিল্পোন্নত দেশের জন্যে বাড-লাইন, তেমনি সুষ্ঠু খাদ্য সরবরাহ আমাদের জন্যে লাইফ-লাইন। পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো সবসময়ই তেলের সুষ্ঠু সরবরাহ নিশ্চিত করা। আমাদের ভবিষ্যতে বিনিয়োগ হুমকির মুখে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, দেশের অভ্যন্তরে অব্যাহত গোলযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞ শুধু বিদেশি, বিশেষ করে উপসাগরীয় দেশগুলোতে বাংলাদেশীদের চাকরির বাজারের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। সাধারণ মানুষ খাদ্য, শান্তি ও নিরাপত্তা চায়। যেহেতু এ বিষয়গুলো অর্থনীতি ও রাজনীতি-নির্ভর, তাই এগুলো সরকারি পর্যায়ে কূটনীতি ও প্রজ্ঞা দ্বারা সমাধান করা উচিত। আমরা ইতোমধ্যে জানি, সংকটকালে ক্ষমতা ও ভোটের জন্যে রাজনৈতিক চাল কারো উপকারে আসে না। এ ধরনের কাজ স্বাভাবিক অবস্থা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে বাধাস্বরূপ। সংখ্যালঘুদের আক্রমণ, তাদের মন্দির বা উপাসনালয় ধ্বংস করে মুল সমস্যাকে এভাবে আরো জটিল করে তোলায় শুধু পরিস্থিতিরই অবনতি ঘটবে।
বাংলাদেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠানের পক্ষে ওকালতি করা একেবারেই সময় ও শক্তির অপচয়মাত্র। মহামান্য রাষ্ট্রপতির উচিত এগিয়ে এসে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া। এ দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় এমন একটি সভা তিনি আহবান করতে পারেন। এই সভায় অন্তর্ভুক্ত থাকবেন সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিবৃন্দ, অভিজ্ঞ রাষ্ট্রবিদ, অর্থনীতিবিদ, আইনজ্ঞ, শিল্পপতি, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ, শান্তিকর্মী, শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ ও অন্যান্যরা। আমাদের রাষ্ট্রপতি বা তার মনোনীত প্রতিনিধির নেতৃত্বে কোনো নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি উম্মুক্ত আলোচনা সভা বর্তমান সংকট নিরসন করতে পারে। আফগানিস্তানের রাজা জহির শাহ এবং মিশরের রাজা ফারুক জাতীয় সংকটে সকল পক্ষের অংশগ্রহণে এ ধরনের সভা আহবান করতেন। এ রকম আলোচনায় রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশের তাৎক্ষণিক মতামত পাওয়া যায়, যার ভিত্তিতে নেতৃবৃন্দ দ্রুত অথচ সুচিন্তিত ও জ্ঞাননির্ভর তথা জেনেশুনে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তদুপরি, এ প্রক্রিয়ায় কোনো সার্বিক জাতীয় সমস্যা আলোচনার ভিত্তিতে সমাধানে দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষকে একতাবদ্ধ করে।
ড. হাবিবুর রহমান : স্ট্রাটেজিস্ট, ইতিহাসবিদ।
Original Link
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:৪২
হিমরাজ ব্লগ বলেছেন: http://www.somewhereinblog.net/blog/Himraz