নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ashumon79

ashumon79 › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিরপুরের নামসর্বস্ব স্কুল এবং কোচিং বানিজ্য। দেখার যেন কেউ নেই।

১১ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১২



ঢাকা শহর এর অন্যতম বৃহত্তম এলাকা মিরপুর। জনসংখ্যা ও এখানকার নেহায়েত কম নয়। শহরের অন্যতম ঘনবসতি পূর্ন এলাকা এটি। প্রায় কয়েক লাখ লোকের বসবাস। যার বেশীরভাগই গার্মেন্টস শ্রমিক।



আর এরই সুযোগ নিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো যত্রতত্র গড়ে উঠেছে সাইনবোর্ড সর্বস্ব স্কুল এবং কোচিং ব্যবসা। বাহারি নাম আর চটকদার অফার নিয়ে এরা এদের ব্যবসায়িক ফাদে ফেলছে এখানকার মানুষদের।



প্রতিষ্ঠান গুলোর একটু ভেতরে প্রবেশ করলেই দেখা যাবে এদের কোয়ালিটি। অবশ্য কোয়ালিটির ধার এরা ধারে ও না। কারন, এক্ষেত্রে সরকারি কোন বিধি নিষেধ বা কোন সুপরিকল্পিত নিয়মনীতির বালাই নেই। আর নেই বলেই সম্ভবত গানিতিক হারে দিনকে দিন গজিয়ে চলছে এ ধরনের স্কুল ও তাদেরই পরিচালনায় পরিচালিত কোচিংগুলোর ব্যবসা।



প্রায় ৯০ ভাগের ও বেশী স্কুল বাড়ী ভাড়া করে চালানো হচ্ছে। নিজস্ব ভবনের বালাই নেই একটারও। বেশীরভাগ স্কুলের পরিবেশ অতিমাত্রায় ঘিঞ্জি ও অপরিচ্ছন্ন। গাদাগাদি করে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাশ করছে। ক্লাশে নেই পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা। কোন কোন স্কুল ঘুরে দেখা গেছে আরো করুন দশা। সামান্য পানি পানের মতো ব্যবস্থা সেখানে নেই। বিশুদ্ধ পানি তো আকাশ কুসুম।



অদ্ভুদ হলেও সত্য যে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় এদের বিরুদ্ধে সম্ভবত এখন পর্যন্ত কোন প্রকার ব্যবস্থা ও গ্রহন করেনি। যদিও মাঝে মাঝে কয়েকটি মিডিয়াতে কিছুদিন পূর্বে স্কুল শিক্ষক কর্তৃক কোচিং সেন্টার চালানোর ওপর কিছু প্রতিবেদন দেখানো হয়েছিল। কিন্তু ফলাফল যা সেই তাই। বন্ধ হয়নি এসব ব্যবসা। আর এভাবেই এক শ্রেনীর মানুষ বলতে গেলে প্রায় বিনা পূজিতে ব্যবসা করে লালে লাল হয়ে যাচ্ছেন।



সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে প্রায় ৯৮ ভাগ স্কুলে যেসব শিক্ষকেরা শিক্ষা প্রদান করছেন তাদের বেশীরভাগই সর্বোচ্চ এইচ, এস, সি থেকে অনার্স/ডিগ্রী পড়ছে। কেউ কেউ আবার এস, এস, সির গন্ডিও পেরোয়নি!! একইসাথে এরাই আবার কোচিং ও চালাচ্ছে। অর্থাৎ তারা বেশীর ভাগই নিজেরাই ছাত্র। এই যখন অবস্থা তখন ঠিক কি ধরনের শিক্ষা এরা প্রদান করছে তা সহজেই অনুমেয়।



এলাকার বেশীরভাগ স্কুল ঘুরে দেখা গেছে ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্যতামূলক নিজ নিজ স্কুলের কোচিং এ পড়তে হয়। এসব ছাত্র-ছাত্রীদের বাবা মাকে পরীক্ষায় বেশী নাম্বার পাবার মূলা দেখানো হয়। যার ফলে তারা আগ্রহ ভরেই তাদের শিক্ষার্থীদের এসব নামসর্বস্ব স্কুলের নাম সর্বস্ব কোচিং এ পড়াচ্ছেন। মূলত: এসব অভিভাবকদের অসচেতনতাই এদের ব্যবসার মূলধন।



এ অবস্থার জন্য অত্র এলাকা ঘুরে যা বোঝা যায়/অনুমান করা যায় তা হলো উল্লেখিত এলাকাটি ঢাকা শহরের উন্নয়নের সাথে পাল্লা দিয়ে তেমন ভাবে এগোতে পারেনি। অনেক এলাকার অভ্যন্তরে ঘুরে দেখা গেছে রাস্তাঘাট, নালা প্রভৃতির করুন দশা। বেশীরভাগ গলিগুলোতেই ল্যাস্পপোষ্ট থাকলেও বছরে ঠিক কয়দিন বাতি জ্বলে তা হিসাব করার বিষয়।



একটা উদাহরন টানা যাক। এলাকার জনগনের সাথে কথা বলে জানা গেছে শেষ কবে সিটি কর্পোরেশনের লোক এখানে মশার ঔষধ দিয়েছে তা তারা ঠিক মনে ও করতে পারবে না। বর্ষাকালে এখানকার বেশীরভাগ রাস্তাঘাট গুলো হাটাচলার একেবারে অযোগ্য হয়ে ওঠে।



আরো ঘুরে দেখা গেছে এখানে শিশুদের খেলাধুলা করার মতো তেমন কোন মাঠের বা পার্কের ব্যবস্থা নেই। খাতায় কলমে কিছু মাঠের পরিকল্পনা থাকলেও তা ভূমি দস্যুদের দখলে চলে গেছে সেই কবেই। হাতে গোনা দু’একটি পার্ক যা ও আছে তার বেশীরভাগই সন্ধ্যার পর নেশাখোর আর ছিনতাইকারীদের দখলে চলে যায়।



যেহেতু জীবনমানের তেমন একটা উন্নয়ন এখানে ঘটেনি। ফলশ্রুতিতে এখানকার মানুষের মাঝে সচেতনতা ও তেমনভাবে গড়ে ও ওঠেনি। আর এরই সুযোগ নিয়ে গড়ে ওঠা এসব নামসর্বস্ব স্কুলগুলো চুটিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে।



শিক্ষাকে বলা হয় জাতির মেরুদন্ড। অথচ কিছু অর্থলোভী আর অযোগ্য লোকদের হাত ধরে তৈরি হচ্ছে মেরুদন্ডহীন ছাত্রসমাজ। যাদের হাতে জাতীর ভবিষৎ, তারাই এগোচ্ছে ভূলে ভরা রাস্তায়। এর ফলাফল কখনোই শুভ হবার নয়।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭

শাশ্বত সিয়াম বলেছেন: ভালো বলেছেন! :|

২| ১১ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪০

ashumon79 বলেছেন: আরে সিয়াম ভাই। আপনি!!

যা হোক ধন্যবাদ।

৩| ১১ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:১৪

ঢাকাবাসী বলেছেন: খেয়াল করার জন্য সাধুবাদ। আসলে দেশটাকে দেখার কেউ নেই!

৪| ১২ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:০৩

ashumon79 বলেছেন: আসলেই বোধহয় কেউ নেই ঢাকাবাসী

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.