নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্যাডো ডেভিল

পেশায় চিকিৎসক, মতান্তরে কসাই মনের ইচ্ছায় লিখি, যা মনে আসে তাই । ইচ্ছা- কেউ যেনো না ফেরে মোর দ্বার হতে উপকার চেয়ে, মরিতে চাই আমি শত মানুষের ভালোবাসা পেয়ে ।

শ্যাডো ডেভিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিবর্তন

১৩ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:৪৫

লোকটির মাথায় ছোট করে ছাটা কাচা-পাকা চুল, চোখে কালো মোটা ফ্রেমের চশমা সাথে হালকার উপর ঝাপসা একটা ডেভেলপিং ভুড়ি ।কৈশর পেরিয়ে নব্য তরুণ নিউরনে লোকটির যে ছবি আজও অম্লান র‌্য়ে গেছে,সেই ছবির সাথে আজকের দেখা লোকটির দুরত্ব যেন যোজন যোজন। সময়ে মানুষ বদলা্য়,চিরন্তন এই সত্যটাকে আমার চোখ দুটো যেন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না। মনে হয়, এইতো সেদিন-উজ্জল,প্রানচঞ্চল, ছিপছিপে নুতন জয়েন করা এক তরুন আমাদের ফিজিক্সের ক্লাস নিতেন(আমাদের ক্লাস টিচারও ছিলেন)...আর আজ স্যার কতোটাই না বদলে গেছেন। আমার ব্রেইনের নিউরনগুলোর অনুভুতি - কি দেখেছিলাম, আর এখন কি দেখতেছি টাইপ অবস্থা।

স্যারের কাছে গিয়ে সালাম দিয়ে নিজের পরিচয় দিলাম। পড়াশোনা শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশের কথা বলতেই স্যারও যেন কিঞ্চিৎ অবাক হলেন(আমাকে ডাক্তার ভাবতে অবশ্য সবারই একটু কষ্ট হয়, অনেককে বিশ্বাস করাতেই নাভি:শ্বাস হয়)....মেঘে মেঘে যে বেলা অনেকদূর গড়িয়েছে, আমার মতো স্যারেরও মনে হয় বিশ্বাস করতে একটু কষ্টই হয়েছে। হয়ত মনে হয়েছে- এইতো সেদিন না ওকে পড়া না পারার জন্য বকা দিয়েছিলাম কিংবা ওদের প্র্যাকটিকাল ক্লাসে প্রিজম,লেন্স,নিক্তি-এগুলো বুঝিয়ে দিয়েছি।



কিছুদিন আগে সর্টিফিকেট তোলার জন্য কলেজে যাই(আমার স্কুল এবং কলেজ দুটোই এক,সুতরাং সুদীর্ঘ ১০ বছরে প্রতিষ্ঠানটির সাথে যে আত্মার বন্ধন রচিত হয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা)..কলেজ বিল্ডিং থেকে বের হওয়ার সময় আমাদের ইংরেজি ম্যাডামের সাথে দেখা। কুশলাদি জিজ্ঞাসা করার পর উনি জানতে চাইলেন- আমি এখন কিসে পড়ছি। যখন বললাম ম্যাডাম,আমিতো অমুক হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসাবে আছি,তাও প্রায় ১বছর হয়ে গেল। ম্যাডাম অসম্ভব আনন্দ এবং অবিশ্বাস নিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন-'এই সেদিন না তুমি পাশ করলা,এতো তাড়াতাড়ি ডাক্তার হয়ে গেলা ??' তখন-ই পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন আমাদের বাংলা স্যার। ম্যাডাম তখন স্যারকে ডেকে বললেন- 'স্যার দেখেছেন,বাচ্চা ছেলেটা নাকি ডাক্তার হয়ে গেছে,একটা হাসপাতালে নাকি মেডিকেল অফিসারও।' সেদিন ম্যাডামের নিউরনগুলো ভালোই ধাক্কা খাইছিলো সময়ের প্রবাহমনতার কাছে।

সময়ের কারনে পরিবর্তনগুলো আমাদের মেনে নিতে মাঝেমধ্যেই একটু কষ্ট হয়, হতবাক হই,মেনে নিতে ইচ্ছে হয়না আসলে কখনো কখনো,তবু মেনে নিতে হয়। প্রতিনিয়ত শেষের পথে আমরা এক পা এক পা করে এগিয়ে যাচ্ছি। স্যার/ম্যাডামদের বলতে ইচ্ছা করে- 'ঐদিন গুলা আমি খুব মিস করি, আপনাদেরকে, আপনাদের ক্লাসগুলা প্রচন্ডভাবে মিস করি। কোন পরশ পাথরের ছোয়ায় যদি আবার সেইসব দিন গুলোতে ফেরত যেতে পারতাম,তবে সময়টাকে এবার আমি ঐখানেই আটকে রাখতাম,বড় হয়ে আপনাদের ছেড়ে যাওয়ার কোন চেষ্টা করতাম না।' :(

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.