নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নকশীকাব্য

আসিফ আবরার

আসিফআবরার

আসিফ আবরার। কবি।লেখক। সংগীতশিল্পী। চলচ্চিত্রকার। পেশায় ছাত্র। ১৯৯১ সালে জন্ম। জন্ম থেকে বেড়ে উঠেছেন ঢাকার তেজকুনিপাড়া এলাকায়। এখনও সেখানেই বাস। সবসময়ই কিছুটা একাকীত্ব ভালবাসেন। থাকেন নিজস্ব নির্জনতায়। হেসে বলেন, এ আমার স্বেচ্ছা নির্বাসন! যুক্ত আছেন ব্ল্যাক মেটাল ধারার ব্যান্ড ইটারনাল আরমাগেডনে; কন্ঠদানের পাশাপাশি সঙ্গীত রচনাতেও। তরুণ এই সাহিত্যিকের সম্পাদনায় বেরিয়েছে বেশ কিছু লিটিল ম্যাগ ও সাহিত্য পত্রিকা। শূণ্য দশকোত্তরকালের গুরুত্বপূর্ণ এই কবি বর্তমানে নিয়োজিত আছেন শর্টফিল্ম বানানোতে। সেই সাথে চলছে প্রথম কাব্যগ্রন্থের কাজ।

আসিফআবরার › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্টেশান

০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:০৯

স্টেশানের এই বেঞ্চটার জ্যামিতিক জ্ঞান বেশ ভালো। বেশ গা এলিয়ে আকাশ দেখা যায়। আজ আকাশটাকে অদ্ভুত লাগছে। সমুদ্রের মতো। তাতে মাছের মতো আচমকা ঘাঁই মেরে বালিকা মেঘদের চমকে দিচ্ছে একটি ঘুড়ি।

আচ্ছা, আকাশ দেখাটা কি বিলাসিতার পর্যায়ে পড়ে? না কি এটি একধরণের নির্মমতা? যখন বেঞ্চের ঠিক পাশেই ভীষণ অবহেলায় একাকী গোলাপের মতো পড়ে থাকে আরও অনেক আকাশ? না, আমি অতোটা নির্মম নই। তাই আমি ঘাড় ফেরালাম। দেখতে দেখতে আমার চোখ ছেয়ে যায় গোলাপী ছত্রাকে।

আসলে ভাবনা বিষয়টির কোনো শুরু নেই। শেষ নেই। নেই কোনো নিয়মতান্ত্রিক সুর। ভীষণ স্বেচ্ছাচারী বেসুরো ওরা। বেজে ওঠে যখন তখন। বেলায়। অবেলায়। পালে লাগে উত্তুরে হাওয়া। কখন যেন সেই নাম না জানা নদীটির স্বচ্ছ জলে ঢেউ তুলে সরে যেতে থাকে আমার এতোকালের পরিচিত নৌকার ছইটি। নদীটি একলা পড়ে থাকে। নিস্তরঙ্গ। ছায়াশূণ্য।

উত্তুরে বাতাসে কখোনো কখোনো প্রশ্ন থাকে না। স্বপ্নের বাঁ পাশ জুড়ে কেবল উত্তরের ছড়াছড়ি। যার দৃষ্টি কেবল উত্তরমুখী, বলাই বাহুল্য, দক্ষিণের সাথে তার নিদারুণ শত্রুতা। তাই আমার ভাবনাটিরও কোনো দক্ষিণ ছিলো না। তবে দক্ষিণায়ন ছিলো।

মেঘগুলোকে আজ এতো রহস্যময় লাগছে কেন? কেন মনে হচ্ছে এই রহস্যের সমাধান আমার বের করতেই হবে? আমি তো কখোনোই আকাশপ্রেমী ছিলাম না। তবে কেন মনে হচ্ছে আজ এই নিরপরাধ গোলাপ হাতে আমার কিছুটা আকাশ চাই-ই চাই? চাই চাই স্বভাবটি তো আমার কখোনোই ছিলো না। পশ্চিমের প্রতি কখোনোই তেমন আকর্ষণ বোধ করিনি আমি। কিছুটা অন্দর ও কিছুটা অন্ধকারমুখী বলে পূর্বের সাথে আমার আজন্মের বৈরীতা। তবে কি আসলেই ভাবনার কোনো শুরু থাকে না? এই চরম অসত্যকে কি আমার নির্বিবাদে মেনে নিতে হবে?

স্টেশানের দেয়ালে পানের পিক, রেললাইনের দু’ধারে বর্জ্যের বিশ্রী বিন্যাস। দু’ধারে ঘর বেঁধেছে ভাগ্যের রেলে কাটা পড়া, চামেলী হাতে কিছু নিম্নমানের মানুষ। কিন্তু এর কোনো কিছুকেই আমার তেমন অসামঞ্জস্যপূর্ণ লাগছে না। কেবলই মনে হচ্ছে আসন্ন আন্তঃনগরেই হতে পারে আমাদের বাসর। তার আঁচলে রচিত হবে আরও অনেক আকাশ। এক জনম কাটিয়ে দেয়ার মতো অজস্র স্বপ্ন...

ট্রেন এসে গ্যাছে। মেয়েটি আমার পাশ ছেড়ে উঠে গেলো অবলীলায়। আমার শুরুবিহীন ভাবনার সুরটিও যেন কেটে গ্যাছে কখন। ঘুড়িটিও যে কখন সুতো কেটে বেরিয়ে গ্যাছে স্টেশান ছেড়ে, আমি টেরও পেলাম না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.