নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন শুদ্ধচারী হতে চাই।টুকটাক লিখি আর বিজ্ঞানের ভক্ত।তাই আমি মানুষের আবেগ ও অনুভূতি সম্পর্কিত পোস্ট দিতে বেশি পছন্দ করি।আমি বিশ্বাস করি কোন লেখাই দুনিয়া পরিবর্তন করতে পারে না যদি না আপনি সেটার মূলমন্ত্র ধরতে ও নিজের উপর এপ্লাই করতে না পারেন।

নিসঃঙ্গ গ্রহচারী

আপনার অন্তিম পরিণতি আপনার কাজ দ্বারাই নির্ধারিত হয়, তাই এমন কিছু করবেন না যার জন্য ভবিষ্যতে পস্তাতে হয়।আত্মঅনুশোচনা একজনকে ভেতর থেকে শেষ করে দেয়। আর দিনশেষে লোকের কাছে নয় নিজের কাছে ভাল থাকাটাই ফ্যাক্ট।

নিসঃঙ্গ গ্রহচারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জলবায়ু পরিবর্তন : নতুন এক দূর্যোগ

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:০৬

পরিবর্তনশীল বিশ্বে জীবাশ্ম জ্বালানী ব্যাবহার, গ্রীনহাউজ ইফেক্ট, গাছ কাটা ইত্যাদির প্রভাবে বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়েই চলছে। ফলে নতুন যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিয়েছে তার নাম জলবায়ু পরিবর্তন । প্রকৃতির উপরে মানুষের যথেচ্ছ কাটাছেড়ার আউটপুট হিসেবে এই নতুন দূর্যোগ দেখা দিয়েছে।
চলুন দেখে নেই এর ফলাফল সমূহ :
.
১। বৃষ্টির প্যাটার্ন চেন্জ : বিগত কয়েক দশকে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে । খরা, হারিকেন, ঘূর্ণিঝড় বেশি বেশি হচ্ছে । আবার এমন হচ্ছে কোন কোন এলাকায় বেশি বৃষ্টি হচ্ছে , আর কোন এলাকায় একেবারেই হচ্ছে না।
.
এসব যে ঋতু পরিবর্তন করে দিচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । গরমের সময় প্রচন্ড গরম, আবার বর্ষাকাল অত্যাধিক দীর্ঘায়িত হওয়া , শীত দেরিতে আসা, এসব জলবায়ু পরিবর্তনেরই ফল। এমনকি এখন তো শরৎ,হেমন্ত, বসন্ত নামক ঋতু বিলুপ্তির খাতায় চলে গেছে।
.
২। বরফ গলে যাওয়া : এর ফলে সমুদ্র উচ্চতা বেড়ে গিয়ে নিম্নভূমির দেশগুলো ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
.
৩। বনের আগুন : এশীয় দেশগুলোতে কম, আমেরিকান দেশগুলোতে বেশি হয় । বিগত কয়েক সপ্তাহ আগেই তো ক্যালিফোর্নিয়ায় যে আগুন লেগেছিল, একটি শহরের প্রায় সবটাই খালি করতে হয়েছিল।
.
৪। বন্যপ্রাণীর বিলুপ্তি : তাপমাত্রার ক্রমাগত অস্বাভাবিক পরিবর্তনের ফলে অনেক প্রজাতি বিলুপ্তির খাতায় নাম লেখাচ্ছে ।
.
৫। খরা, সাইক্লোন, হারিক্যান বারবার হওয়া এবং শক্তিশালী হওয়া।
.
এসব তো গেল , বইয়ের কথা , এখন একটু আর্থ-সামাজিক ক্ষতির দিকে নজর দেই । গত বছর শুধু আমেরিকায় ২৪৪ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। (সূত্র : ডেইলি নিউইয়র্ক নিউজ) । জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে হন্ডুরাস । বাংলাদেশ ৬ নাম্বারে রয়েছে । (বাংলাদেশের আর্থিক ক্ষতির সমীক্ষাটা পাইনি) । আমি শুধু কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ক্ষতি দেখাই, যেগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হয়েছে।
১। বছরের শুরুতেই(২০১৭) ঘূর্ণিঝড়।
২।তারপর বর্ষা মৌসুমের অতিদীর্ঘায়তিকরণ।
৩। বন্যা : এই এক বন্যা আমাদের জিডিপি ধসিয়ে দিয়েছে । আমাদের ইতিহাসে সবজি চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির এত চড়ামূল্য এর আগে কখনো হয় নি ।
৪। শীত যথাসময়ে না আসায় শীতের সবজির আশানুরূপ ফলন হয় নি।
.
এখন চলুন দেখি এই দূর্যোগের পেছনে মূল হোতা কারা ।
নিঃসন্দেহে শিল্পোন্নত দেশগুলো এই জলবায়ু নামক দূর্যোগ সৃষ্টি করেছে।
শিল্পোন্নত দেশগুলোরকথা বললে জি-৭ এর কথা আসে
১। আমেরিকা
২ ব্রিটেন
৩ । ফ্রান্স
৪।জার্মান
৫।ইতালি
৬। জাপান
জি-৭ ছাড়াও রাশিয়া ও চীন এই দূর্যোগ তৈরির পেছনে ভালই দায়ী ।
এই দেশগুলোই সর্বাধিক জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যাবহার করে ।
.
জাতিসংঘ এই দূর্যোগ মোকাবেলায় একটি চুক্তি তৈরি করেছে : প্যারিস জলবায়ু চুক্তি । যার মূল লক্ষ হল ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বের তাপামাত্রা ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর নিচে রাখা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য একটি ফান্ড তৈরি করা, যা যোগান দেবে শিল্পোন্নত দেশগুলো। ২০১৫ সালে বিশ্বের তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস( ১৯৮০ এর পর সবচেয়ে উষ্ণ বছর)। তাপমাত্রা যদি আর ০.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস ও বাড়ে, কি দূর্যোগ দেখা দিবে তা আলোচনা করেছি উপরে।
.
গত নভেম্বারে জার্মানির বনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ জলবায়ু সম্বেলনে এই চুক্তির উপরেই আলোকপাত করা হয়েছে । ইউরোপের প্রায় সবগুলো দেশই এই চুক্তি বাস্তবায়নে রাজি হয়েছে । এমনকি ওবামার আমলে রাজি হওয়া আমেরিকা, ব্যাবসায়ী ট্রাম্পের আমলে এসে বাগড়া মারে । ট্রাম্পের বগড়ার কারণ এতে নাকি তার দেশের ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হবে !!
অথচ এই মাথামোটার দেশেই আমেরিকায় ২৪৪ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে !!
.
এখন কথা হল, আমেরিকার মত শিল্পোন্নত দেশের এই ক্ষতি সামাল দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে, কিন্তু আমাদের মত গরীব দেশের কি হবে ??
.
ইকোনমিস্ট পত্রিকা একটি প্রতিবেদন বের করেছিল : বিশ্বের অর্থনীতির উপরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ।
ঐ প্রতিবেদনে কোন দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সামাল দেওয়ার ক্ষমতা কেমন তার একটি চার্ট দিয়েছিল । ছবিটি আমি দিলাম।
ছবি অনুযায়ী আফ্রিকান এবং এশিয়ান দেশের সামাল দেওয়ার সামর্থ্য সবচেয়ে কম ।
.
.
আমরা এমনিতে স্ট্রাগলিং অর্থনীতির দেশ , অথচ আমরাই এমন এক প্রাকৃতিক দূর্যোগ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি যার স্রষ্টা আমরা নই (শিল্পোন্নত দেশগুলো) । ব্যাপারটা অনেকটা উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে'র মত হয়ে গেছে ।
.
অথচ এই বিষয়টি থামাবার ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই । এক্ষেত্রে আমাদের , প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়নে জোর দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।।
তথ্যসূত্র : বিভিন্ন ওয়েবসাইট

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২৪

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
জলবায়ু পরিবর্তন একটি মানবসৃষ্ট অভিশাপ। এই বিষয়ে আর সতর্কতা বা সচেতনতা নয় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সকলের দ্বায়িত্ব!

২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:


চীন ও ভারত মিলে বিশ্বকে নরকে পরিণত করছে; অন্যেরা আগে ক্ষতি করেছে, এখন কমানোর চেষ্টা করছে।

৩| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: মানূষ নিজেদের ক্ষতি নিজেইরাই করছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.