![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তোমার ভিতরের শক্তি কে জাগতে এসেছি বন্ধু। একবার চোখ মেলে দেখো নতুন এক সূর্য উদয় হয়েছে বাংলার আকাশে। কোনো মৃত্যু, কোনো বাধা, কোনো প্রতিকুলতা এই হৃয়য়ের পরম শক্তি ও সত্য সুন্দরকে বিনষ্ট করতে পারবে না। আমি যুগে যুগে আসি আজও এসেছি শুধু তোমাদের ভিতরের শক্তিকে জাগাতে। আমার এই পথ চলা থামবে না। তোমাদের বাঁচার মাঝে আমি বেঁচে আছি। বেঁচে থাকবো তা যদি কোনো করুন মৃত্যুর মধ্য দিয়েও হয়। আমার বাংলাদেশে নতুন এক গণতন্ত্র এসেছে। যা এই পরিবারতন্ত্রকে ভেঙে সত্যের ভিতরের সত্যকে তুলে এনেছে। আজ আমরা বিশ্বের বড় শক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছি। তোমাদের ভালোবাসাই আমাকে তোমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখবে।
{বিনয় ভরে অনুরোধ করছি, আমার এই লেখাটিকে কেউ ভারতের প্রতি অসম্মান বা অধীকার বহির্ভুত বলে ভাববেন না। আমাদের পূর্বপুরুষরা একসময় ভারতবর্ষের একতা ও সংহতি নিয়ে কাজ করেছেন। আজ না হয় আমরা রাষ্ট্র পরিচয়ের খাতিরে আলাদা তারপরও আমাদের হাজার হাজার বছরের স্বর্ণালী অতীত ইতিহাস ঐতিহ্য একই সুরে গাঁথা, এই সুর থেকে নেপাল, ভুটান, চায়নার বৃহৎ অংশও আলাদা নয়। আপনাদের হয়তো মনে পড়ছে, বাঙলা ভাষার অতিতের অনেক রচনা (চর্চাপদ ও বুদ্ধিষ্ট কিছু ঐতিহ্য) নেপালে গিয়ে রক্ষা পেয়েছিলো। আমরা এই অঞ্চলের সবাই সবার আত্নিয়। আমি একজন বিশ্ব নাগরিক হিসেবে ভারতের ব্যাপারে নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করছি মাত্র।}
বাংলাদেশের মানুষের ভারত ভিতি প্রবল। ভারতের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অযথাই এই ভীতি রোগ সৃষ্টি হয়েছে মূলত মিডিয়া আর পলিটিশিয়ানদের দ্বারা অহেতুক ভারতভিতি ধরিয়ে দেবার কারণে। আরও কিছু সেনসিটিভ কারণ আছে যা বলতে ম্যালা সময় লাগবে। তারপরও আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি বাংলাদেশের মানুষের ভারত ভিতির পিছনে দু’দেশের জনগনের তেমন কোনো দোষ নেই যা দোষ আমাদের এই দুই দেশের উপর কিছু বাজে ভূতের প্রভাব। যার ফল আজ দু’পক্ষই (দুই বোন) হারে হারে টের পাচ্ছি।
মূল আলোচনায় আসি, ইন্ডিয়ার সব থেকে দুর্বল দিক কোনটি? উত্তর সহজ, শাসন ব্যবস্থা। অনেকে হয়তো চোখ রাঙিয়ে বলে উঠবেন, “এ কি বলছো গো! ভারত পৃথিবীর সবথেকে বড়, টেকশই ও স্টং ডেমোক্রেসির দেশ! কতো স্বচ্ছ ভোট ব্যবস্থাপনা! আরো কতো কতো রাজনীতিক উদাহরন দেয়া যায়!” এখানেই সমস্যা, ধরুন একজন মোটা সোটা ভদ্রলোকের গলায় ফুলের মালা পড়িয়ে স্টেডে বসিয়ে – অন্য সব বক্তা আর আশেপাশের মানুষ গলা ফাটিয়ে বলতে লাগলো, “এ গলায় মালা পড়া মানুষটি অনেক শক্তিশালি! অনেক বড় উদাহরন এই মোটা মানুষটি!” ইত্যাদি ইত্যাদি বহুরকম গুনগান। এতে করে ঐ গলায় মালা পড়া ভদ্রলোক খুশিই হবে আর আশে পাশের মানুষগুলোর উপরও তার একরকম ভক্তি শ্রদ্ধা জন্মাবে। এতো তোড়জোড় আর ফুলের মালার মাঝে হয়তো নিজে যে কতবড় পালোয়ান তা নিজে থেকে জাষ্টিফাই করার সময় তো পাচ্ছেই না, আর সেই সাথে অন্যের কথায় নিজের পালোয়ানী গোঁফে তা দিয়ে বেড়াচ্ছে। ইন্ডিয়ার ডেমোক্রেসিকে ঐ স্টেডের জেন্টেলম্যান করেই রাখা হয়েছে। একদম শুরু থেকেই ভারতের এই অবস্থা। শুরু থেকে বলতে ১৯৪৭ থেকে যখন ইন্ডিয়া স্বাধীন হলো- সেই থেকেই।
আজ অনেক পরিসংখ্যান, ইকোনোমিক্স ও বাহারি স্টাইল ও বাহারি কালারের পেপারে ইন্ডিয়ার জঁয়গাথা লেখা হচ্ছে। আমরা এই সব দেখে ইন্ডিয়াকে অনেক বড় ওয়ার্ল্ড পাওয়ার হিসেবে কল্পনা করে নিচ্ছি। বাস্তবে কি তাই?
আমি মনে করি, শুধু সাউথ এশিয়ায়ই না, পুরো এশিয়াই নয়, পুরো পৃথিবীর মধ্যে আগামি অল্পকালের মধ্যেই ইন্ডিয়ায় রাষ্ট্রিয় বিভাজন, দাঙ্গা, হাঙ্গামা ও অভ্যন্তরিন সমস্যার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি। এর মূল কারন এই অদক্ষ ও অযুক্তিক শাসন ব্যবস্থা। এই শাসন ব্যবস্থার জন্য ইন্ডিয়ার পলিটিশিয়ানরা মোটেও দায়ি নয়, এমনকি সাধারন জনগনও নয়। যদি কাউকে দায়ি করতেই হয় আর তা হলো ধার করা একটি শাসন ব্যবস্থার চর্চা অথবা জোড় করে কৌশলে এরকম একটি শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া।
এই ফাঁকে একটু বলে নিচ্ছি, বর্তমান বাংলাদেশ ও বর্তমান শ্রীলঙ্কা দক্ষিন এশিয়ার সুদৃঢ় শাসন ব্যবস্থার মডেল হয়ে থাকতে পারে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার শুধুমাত্র আমলাতান্ত্রীক ব্যপারগুলো গুছিয়ে – একটি সুন্দর ক্যাডার ম্যানেজমেন্ট করার মতো পরিস্থিতি নিয়ে আসতে পারলেই হলো। একটি দেশ যখন, একটি স্থিতিশিল পরিবেশের মধ্য থেকে, স্থিতিশিল সরকার দ্বারা পরিচালিত হয় এবং যার মধ্যে বেশিরভাগ পলিটিক্যাল লিডারগন তাদের সবটুকু দিয়ে দেশ সেবায় ব্রতি হয়ে ওঠে- তখন পরবর্তি একটি অটো পলিটিক্যাল লিডারশিপ জন্ম নেয়। আর একই রেশে দেশ তো দ্রুত উন্নতি হয়ই সেই সাথে দূর্নীতি কমতে থাকে- আর এসবের মধ্য থেকেই জন্ম নেয় জনগনের প্রবল আত্মবিশ্বাস। একটি দেশের উন্নতির জন্য ইউনিটি জনগনের আত্মবিশ্বাসই যথেষ্ঠ- যে আত্মবিশ্বাস তাদের নিজস্ব উন্নয়ন ও নিজ মেধার যুক্তি দ্বারা ধরা পড়ে। এমন অবস্থা হলে সেই জাতি আর সহযে নিচের দিকে নামে না। বাংলাদেশ আজ এমন একটি সুষম ও সুন্দর অর্জনের দিকে দ্রুত নৃত্য ভঙ্গিমায় এগিয়ে যাচ্ছে।
বন্ধু! ইন্ডিয়া অনেক ভুল করেছে তাদের ফরেন পলিসিতে। ইন্ডিয়ার যদি আজ এ্যাটোমিক পাওয়ার না থাকতো তাহলেও কোনো অসুবিধা ছিলো না। একটি দেশের শক্তিবির্য, উন্নতি ও ভবিষ্যত মঙ্গলের জন্য এ্যাটোমিক এ্যানার্জি কোনো নিয়ামক না। ইন্ডিয়ার এই পরমানু শক্তি অর্জন আর সেই সাথে পাকিস্তান ও আফগানিস্থানের করুন দশা – একই সুতা দিয়ে গাঁথা একটি সুন্দর ফাঁদের জাল মাত্র। এতে ইন্ডিয়ার যতোখানি লাভ হয়েছে তার থেকে ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি বা ক্ষতির আশংকা রয়েছে অনেক বেশি। আজ সেই সত্য অবশ্যই আপনাদের চোখে স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ছে।
দেখুন দক্ষিন করিয়া একমাত্র দেশ যারা পারমানবিক শক্তি অর্জন করেও সেই শক্তি ধ্বংশ করে দিয়েছে। এখানে দঃ করিয়া যতখানি মানবিক কথা ভেবেছে তারথেকে বহুগুন ভেবেছিলো তাদের স্বজাতি ও দেশের উন্নয়নের কথা। আমি এখনও উত্তর করিয়াকে নিয়ে অনেক আশাবাদি। এমনকি পুরো করিয়ান জাতি নিয়ে আশাবাদি তারা অবশ্যই দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবার যোগ্যতা রাখে। আবার আফগানিস্থান ঠিকই একসময় আপন গতি ফিরে পাবে। আফগান আর তুর্কি (টার্কিস) এই দুটি জাতির অতিত ইতিহাস ঘেটে দেখলে বুঝবেন- এরা কারা? তারপরও আফগানিস্থানের উপর থেকে যে ঝড় বয়ে গেছে তা সত্যিই হৃদয় বিদারক ও এই যখম সেরে উঠতে সময় লাগবে। যুদ্ধ পরবর্তি যে কোনো দেশের পক্ষেই ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন তার প্রধান কারণ শুধু অর্থনীতি না বরং মানবিক বিপর্যয়। বাংলাদেশ তার জলন্ত উদাহরন। আজও বাংলাদেশের মানুষের স্বজন হারানোর জ্বালা বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। ভিয়েতনামও একই আঘাতে জর্জরিত একটি সহজ সুন্দর মায়াভরা জাতি।
সিরিয়া, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, ইরাক নিয়েও আমি আশাবাদি।
তাহলে ইন্ডিয়া নিয়ে তো আশাহত হবার কারণ থাকার কথা না? ইন্ডিয়ায় তো ভয়াভয় যুদ্ধ চলছে না? ইন্ডিয়া তো অর্থনীতিক ভাবে তলানিতে যাচ্ছে না? তাহলে ইন্ডিয়াকে নিয়ে ভয় কিসের? এটা ভয় না এটা সহয কিছু বিশ্লেষন ও অতিত থেকে শিক্ষা এবং কিছু সহজ সিন্টম। যা স্পষ্ট করে দিচ্ছে আজও যদি ইন্ডিয়া তাদের শাসন ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতে না পারে তাহলে ইন্ডিয়া শুধু নিজেদের দুঃখই ডেকে আনবে না, সেই সাথে প্রতিবেশিদের জন্যও আতঙ্ক ও নিরাপত্তার হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
আজ আমাদের ভারতবর্ষকে এরকম অবস্থায় পড়তে হতো না, যদি আমরা আমাদের জাতভাই চায়নাকে অনেক আগে থেকেই বিশ্বাস করতে পারতাম। চায়না এমন একটি দুঃখি জাতি তাঁরা সব বুঝেও আমাদের জন্য বড় কিছু করতে পারে নি শুধুমাত্র চায়নার কিছু দুর্বলতার (দুর্বলতা বলতে দারিদ্র মোকাবেলায় নিজেদের গাইডলাইন নিজেদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়াকে বুঝানো হয়েছে) কারনে। আর আমরা এমন পাঠার বলি হয়ে উঠেছিলাম যে, আমাদের পরম আপন চায়নাকে আমরা শুধু বার বার ভুলই বুঝেছিলাম।
যাই হোক, আমি এখন ইন্ডিয়ার সমস্যার কথা না বলে, সমস্যা থেকে উত্তোরনের কথা বলতে চাইঃ
১। ইন্ডিয়ার রাজ্যগুলোতে যে গনতন্ত্র আমরা দেখি এবং যে আঞ্চলিক শাসন ব্যবস্থার প্রধান একজন সি.এম. (মুখ্যমন্ত্রী) তার ক্ষমতা আসলে কতটুকু? মুখ্যমন্ত্রী আসলে সেই মোঘল যুগের বা ইংরেজ যুগের সুবেদারের নবসংস্করন মাত্র। তাহলে এই ক্যাবিনেট গুলোর মূল্য কতটুকু?
২। ইন্ডিয়ার কিংডম গুলোর মধ্যে অনেক বেশি বৈষম্য এবং এটা সর্বক্ষেত্রে। আর্থিক, ভাবধারা, সাস্কৃতি, ভাষা সহ আরো কত কি। একটি রাস্ট্রের গনতন্ত্রের নাম করেই এই অসামাঞ্জস্যতা দূর করা কোনো ভাবেই সম্ভব না। আমায় দিয়ে যারা আমায় জানেন তারা বুঝবেন আমি কিন্তু কোনো সমাজতান্ত্র, গনতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র সহ কোনো শাসন ব্যবস্থারই পুরোপুরি বিরোধি নই আবার সমর্থকও নই। আমি সাম্যবাদ সাম্যবাদ বলে চিৎকার করি ঠিকই কিন্তু সেই সাম্যবাদ কোন শাসন ব্যবস্থা দ্বারা পরিপূর্ন সার্থক হবে তা আজও বলিনি এবং বলার প্রশ্নও এই মুহুর্তে আসে না। কারন সাম্যবাদ প্রতিটা শাসন ব্যবস্থা দিয়েই প্রতিষ্ঠা করা যায়, যদি না সেই শাসন ব্যবস্থার মধ্যে বড় কোনো দুর্বলতা বা ফাকফোকর না থাকে।
৩। আমি মনে করি এশিয়ায় একমাত্র ইন্ডিয়াই একটি পরিপূর্ন ইউ.এস. (ইউনাইটেড স্টেট বা যুক্তরাষ্ট্র) হবার যোগ্য। ইন্ডিয়ার শাসন ব্যবস্থাকে যদি যুক্তরাষ্ট্রিক করা না যায় তাহলে এই গনতন্ত্র দিয়ে ইন্ডিয়া ইউনাইটেড থাকতে পারবে না। আমি বলতে চাচ্ছি ইন্ডিয়ার প্রতিটা রাজ্যকে রাষ্ট্রে পরিবর্তিত করে স্বাধীন সার্বভৌম ক্ষমতা দিয়ে দিতে হবে। তারপরও ইন্ডিয়ার ইউনিটি থাকবে ইউনাইটেড স্টেটের ভিত্তিত্বে। এতে ইন্ডিয়া যেমন আরো দ্রুত উন্নত হবে সেই সাথে বড় আকারের দুর্ঘটনার ভয় থাকবে না। আর জনগনের ব্যাক্তি স্বাধিনতার ক্ষেত্রে যুগান্তকারি উন্নতি আসবে।
২৬-০৪-২০১৪
৪। ইউনাইটেড স্টেট অব ইন্ডিয়া/ভারত গঠিত হলে এর একতা থাকবে কিসের ভিত্তিতে? বা আলাদা স্টেটগুলো কেনো একতা থাকবে? যেখানে একটি স্টেট ইচ্ছে করলেই আলাদা হবার মতো অধীকার ব্যবস্থা চালু থাকবে, সেখানে একতার মধ্যে থাকবে কেনো?
এরকম প্রশ্নগুলো খুব স্বাভাবিক ভাবেই আপনার মনে আসতে পারে।
আমাদের বুঝতে হবে, ইন্ডিয়া যুক্তরাষ্ট্রের একতার মূল স্তম্ভ হতে পারে হিন্দুত্ববাদ। ভাষা ও কারচার একক ভাবে ইন্ডয়াকে একটি জায়গায় নিয়ে আসতে পারে না। কারণ ইন্ডিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষা ও সাংস্কৃতিকে একসাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করাটাই ছিলো ভুল।
“ধর্মনিরাপক্ষতা” কথাটা ইন্ডয়ান পলিটিক্সে সব সময়ই একটি ফ্যাশনের মতো করে ছিলো। সাংবিধানিক ভাবে হাজার বার ধর্মনিরাপক্ষ কথা উল্লেখ থাকলেও আমরা কেউ অস্বীকার করতে পারবো না ইন্ডিয়া হিন্দু ধর্ম প্রধান দেশ। হিন্দুত্ববাদ বা মৌলবাদ কখনই সন্ত্রাসবাদের সমর্থক শব্দ না। হিন্দুত্ববাদের মধ্য থেকেও সব ধর্ম রীতি বিশ্বাসী মানুষের জন্য সমান সেবা করা যায়। আর ইন্ডিয়ার সংবিধানে যদি ইন্ডয়াকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষনা দেয়া হয় তাতে মোটেও ইন্ডয়ার জাত মানের ক্ষতি হবে না বরং উপকারই হবে।
ধর্ম কখনই খুব ঠুমকু মচমচে জিনিস না যে হুট করে ভেঙে যাবে। ধর্ম সহনসীন ও যারা ধর্মের মর্ম জানেন তার একই সাথে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবার জন্যই আপন বন্ধু ও ডিফেন্সিভ মেজাজের। ধর্মের নাম করে যখন অধর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠে তখনই যত বিপত্তির জন্ম হয়। অনেক বছর ধরে, একটি বড় ইস্যু বাবরি মসজিদ নাকি রামমন্দির স্থায়ী ভাবে থাকবে। এইসব ইস্যু কখনও জিইয়ে রেখে রাজনীতি করতে হয় না। এই নির্মান প্রসংগে কোর্ট যে রায় দিয়েছে তা এক কথায় যুগান্তকারি। আমি এই রায়কে প্রাণ ভরে শ্রদ্ধা জানাই। একই স্থানে পাশাপাশি বা ঈষৎ দুরত্বে বাবরি মসজিদ আর রাম মন্দির থাকলে দোষ কোথায়? রায় যখন এই ন্যায্য কথা বলছে তাহলে আমাদের এই কথার সাথে একমত হতে দোষ কোথায়। এটা তো খুব ভালো একটি ব্যাপার। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, টোটাল ওয়র্ল্ড এর সব রাম মন্দির যদি ভেঙেও ফেলা হয় তারপরও রামের প্রয়োজন ফুরাবে না। রাম একজন শক্তিশালি অবতার। রাম মূর্তির মধ্যে থাকেন না। রাম ঐ পোড়া মাটির মধ্যে থাকেন না। রাম থাকেন আপনার আমার অন্তরে এবং তা অনন্তর পর অনন্ত যুগ ধরে। তাই বলে কি আমরা রামের মন্দির ভেঙে ফেলবো? অবশ্যই না। রাম কেনো সব অবতার, মহামানব, মহামানবী, দেব, দেবী, মহাপুরুষ, মহান রাস্ট্রনেতা, বা অন্য যে কোনো প্রকার প্রকৃত সম্মান পাওয়ার যোগ্য মানুষদের মুরতী তৈরি করা দোষের কিছু না বরং এটা মানবতারই জয়গান।
মন্দির নির্মান ও মন্দিরে পুজা অনুষ্ঠান করা হিন্দুদের ধর্মীয় রেওয়াজ। এটা ধর্মিয় কালচার। আমরা তাকে কোনো ভাবেই খাটো করে দেখতে পারি না। আজ আপনি যদি সত্যিকারের সনাতন ধর্মের মর্মকথার গভীর স্পর্শ পেয়ে থাকেন তাহলে নিজের মনের রামকে জিজ্ঞেস করে দেখুন, “রাম কি কোনোদিন সহিংসতার পথ বেছে নেবার জন্য আপনাকে আদেশ করতে পারেন? রাম এর কাজ রক্ষা করা। রাম শুধু সীতাকে রক্ষা করার জন্যই আবির্ভুত হন নি বরং রামদের মতো শক্তিধর অবতারদের আবির্ভুত হতে হয় মানবতাকে রক্ষা করে, স্রষ্ট্রাকে পাবার পথকে সহজ নিজের জীবন থেকেই দেখিয়ে দেবার জন্য”। রাম কখনও মারা যান না। রাম অমর। আপনিও রামের গুনাগুন অর্জন করতে পারেন যদি আপনিও রামের মতো সহিঞ্চু মনোভাবের হন এবং সর্বদা সৃষ্ট্রিকর্তাকে খুশি করে চলতে পারেন। ভেঙ্গেফেলা রাম মন্দির হতেই হবে তবে তা বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে নয় বরং বাবরি মসজিদ রক্ষা করেই। এখানেই রাম ভক্ত হনুমান দেব হবার যোগ্যতার পরিচয়ের পরীক্ষা আপনার সামনে উপস্থিত হয়ে আছে।
আমাদের বুঝতে হবে আজকের ইন্ডিয়ার হিন্দু ধর্মদশা এমন কেনো হলো? এতো কেনো জাতভেদ, বিদ্দেষ, অন্যকে সহ্য করতে না পারা ইত্যাদি ইত্যাদি। কেনো হলো এমন? সনাতন ধর্মের শিক্ষা কি এতো ঠুমকো? এত ছোট সনাতন ধর্মের মনমানুষিকতা? মোটেও না। সনাতন বা হিন্দু ধর্মের উপর এই যে ছোটমন মার্কা মুখোশ লাগিয়ে দেয়া হয়েছে তার পিছনে ছিলো বহুকালের বহু ছোট মনের ভন্ড মানুষ। সনাতন ধর্ম মানুষকে উদার হতে শিখায়। সনাতন ধর্ম নিরাকার একক স্রষ্ট্রাকে বিশ্বাস করতে বলে সবার আগে এবং সেই সাথে আছে বিভিন্ন গুনের পরিচয় দাতা বহু বহু অবতার। সেই ধর্ম আজ এতো ছোট মানষিকতার হয়ে যায় কি করে?
কিছু কিছু বলছি শুনুন, সনাতন ধর্মের আদি ইতিহাস, অবতারদের জীবনি, লিলা, ধর্মগ্রন্থ, বেদান্ত, উপনিষদ গুলোকে যাচাই করে পড়তে পারলে ও বুঝতে পারলে দেখবেন সনাতন ধর্ম একেশ্বরবাদ ও মানবতার কথাই বলে। (যাচাই করার কথা কেনো বলছি তা আপনার খুব ভালো করেই জানা আছে এবং আপনি আরো জানেন এই ধর্মিয় গ্রহ্নগুলোর উপর অপারেশন হতে হতে আজ সঠিক-বেঠিক এক হয়ে গুলিয়ে আছে। যতদিন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ ভাবে যাচাই করে মিথ্যেকে নষ্ট করে বিলুপ্ত করা না যাবে ততদিন যাচাই করেই পড়তে ও বুঝতে হবে। মিথ্যেকে নষ্ট করে বিলুপ্ত করা কিন্তু মোটেও কঠিন কাজ না যদি সবাই সবাইকে সহযোগীতার মনভাবে এগিয়ে আসে। এখনও এমন অনেক অনেক ধর্মগুরু আছেন যারা নিজেরা এই কাজের জন্য শ্রম দিতে প্রস্তুত)।
বিষ্ণ, ব্রক্ষ্মা, শিব এরা তিনজন ঈশ্বর না। বরং এই তিনটি অস্তিত্ব একই ঈশ্বরের সৃষ্টি। আর এই বিষ্ণ, ব্রক্ষ্মা, শিব মানুষের অন্তরে ধারন করা সম্ভব। সষ্ট্রার এই গুনগুলো মানুষ অর্জন করতে পারে বলেই মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ জীব। এছাড়াও বহু গুনের উল্লেখ আপনারা পাবেন, শ্রী কৃষ্ণের গুনবাচক নাম, মা-কালির গুনবাচক নাম সহ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে। যারা নিজের মধ্যে স্রষ্টার গুনগুলো ধারন করতে পারেন তাদের বলাহয় জাতঈশ্বর। এই মানুষগুলোই ভিন্নরকম এবং এই মানুষদের কোনো ধর্মই অস্বীকার করেন না। শুধু মাত্র বাজে কালে বাজে কিছু মানুষদের জন্য এই সব অতিমানবদের চরিত্র হরন করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে আজ এতো দিদ্ধা দন্দের মুখোমুখি হতে হয়েছে। মুসলিম ধর্মে এই সব জাতঈশ্বর কে বলে “সৃষ্ট্রিকর্তার নফসের গুন ধারন করা মানুষ” আবার “মাওলা” বলেও ডাকা হয়। খ্রিস্ট্রান ধর্মেও জাতঈশ্বর বা ঈশ্বরজাতের অনেকগুলো নাম আছে তার মধ্যে বেশি উল্লেখযোগ্য ওভারলর্ড, বুদ্ধিষ্টরা বলেন সীদ্ধার্থ। তবে যারা স্রষ্টা কর্তৃক মাসুম রূপে প্রেরিত হয়ে, ইতিহাসের স্পেশাল ক্যারেক্টার হিসেবে আবির্ভুত হয় শুধু তাদের ক্ষেত্রেই এই সব নাম ব্যবহার করা উচিত এবং কোনো ভাবেই জাতঈশ্বরদেরকে অবজ্ঞা করা উচিত না। এরা কখনও মিথ্যে বলতে বা প্রচার করতে আসেন না। এরা শুধু একেশ্বরের স্রষ্ট্রার ম্যাসেজগুলো পৌছে দেয় এবং নিজেদের জীবন থেকেই আদর্শের পথ দেখিয়ে দেন।
বন্ধু! ভারতের সনাতন ধর্মের সম্পৃতির ইতিহাস বহুদিনের। তারপরও এই সম্পৃতির মধ্যে অনেক বড় বড় সমস্যা ইচ্ছে করে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিলো এবং তা কিছু কিছু বর্বর মানুষের স্বার্থসিদ্ধির জন্য যার খেসারত আজ পুরো বিশ্ববাসীকেই কম বেশি দিতে হয়েছে। সকল কিছুর যিনি একমাত্র সৃষ্ট্রিকর্তা তিনি কখনও নতুন বা পুরাতন হন না- এর কোনো প্রশ্নই আসে না এবং তিনি কখনও তার ডিসিসন পরিবর্তন করেন না এবং তিনি ন্যায়বিচারক। মানুষ সময়ের সাথে সভ্যতার উৎকর্ষ গায়ে মেখে এগিয়ে যায় তাই সব কালেই ধর্ম সংস্কারকদের প্রয়োজন হয়। এটা একটি সিস্টেম। এই সিস্টেমের বাইড়ে আমি, আপনি ও স্রষ্টা জগতের কোনো কিছুই নয়। ধর্মের ভাব চিরন্তন কিন্তু শাস্ত্র ভাঙে ও গড়ে নেবার জন্যই সংস্কারকের দরকার হয়। যখন ধর্মের মধ্যে অনেক বেশি মিথ্যে চলে এসে সত্যকে প্রায় গ্রাস করে ফেলে তখনই মহাশক্তি নিয়ে কোনো মহাআগতকের মহাআবির্ভাব ঘটাতে হন এবং তিনি অবশ্যই ঈশ্বর জাত। এবং এরা জন্ম থেকেই নিষ্পাপ ও অমর। তারা দেহহিন হন ঠিকই কিন্ত কখনও হারিয়ে যান না। আপনি যদি কোনো অবতারকে মন থেকে ডাকতে জানেন এবং শুভ কর্ম করেন তাহলে বুঝতে পারবেন- এই চিরঞ্জিবদের মহিমা। হাজার হাজার বছর পরে একজন মহাশক্তিধর আসেন শুধু মাত্র এই মানুষের সেবা ও চিরমুক্তির পথ দেখাবার জন্যই। এই মহাশক্তিধর অবতার সৃষ্ট্রিকর্তার ইচ্ছায় আসেন এবং তাদের দায়িত্ব তাঁরা পালন করে যান এবং যাচ্ছেন। মানুষের মধ্যে সর্বশ্রষ্ঠ জাত হলেন জাতঈশ্বর। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহের অবকাশ নাই।
বন্ধু! এই তো সেদিনের কথা। রাজা রামমোহন রায় সতিদাহ প্রথা বিলুপ্ত করানোর জন্য উঠে পড়ে লাগলেন আর ইংরেজরাও আইন করে সতিদাহ প্রথা বিলুপ্ত করে দিলেন। আমাদের ইতিহাস বই বা এই উপমহাদেশের ইতিহাস গুলোতে এই ব্যপারটিকে অত্যান্ত বড় করে দেখানো হয়। এখানে আপনাদের বুঝতে হবে তার আগেও সনাতন সমাজ মাথাউঁচু করে ছিলো। রাজা রামমোহন রায়ের আগে কি সনাতন ধর্মের মধ্যে এই সতিদাহ প্রথা কি সবসময়ই ছিলো? আবার রামমোহন রায় যখন এই সতিদাহ প্রথার বিলুপ্তি ঘটালেন তখনও কি পুরো হিন্দু সমাজেই এই সতিদাহ প্রথা ছিলো? আপনাদের মধ্যে যারা মোটামুটি হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে জানেন তারা উত্তরটি জানেন তারপরও বলছি ঐ সময়ে পুরো হিন্দু সমাজের মধ্যে কিন্তু সতিদাহ প্রথা চালু ছিলো না। কিছু কিছু অঞ্চলে সতিদাহ প্রথা চালু ছিলো। রামমোহন রায়ের আন্তরিকতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলবো না কিন্তু এর জন্য ক্রেডিট কি ইংরেজরা নেয় নি? ইংরেজদের স্বার্থ ছিলো বলেই ইংরেজরা ধর্ম নিয়ে উপনিবেশ কায়েমের পথকে সুগম ও মজবুত করে ছিলো। এখানে আজ আমাদের বেশিরভাগ মানুষের বুঝতে হচ্ছে যে, সনাতন সমাজ একদম রসাতলে গিয়েছিলো আর তা থেকে ইংরেজরা আমাদের রক্ষা করেছে। তাহলে কি দাঁড়ায়, ইংরেজরা শাসন করতে আসার আগের হাজার হাজার বছর আমাদের সনাতন সমাজ কি এতো বেশি বর্বর ছিলো? এমনটি ভাবার কোনো কারণ নাই আপনারা যদি ঐ সময়ের একটু সামান্য পিছনের দিকেও তাকান। এমনকি মোঘল আমলেও হিন্দুরা অনেক শান্তিপ্রিয় ছিলো। আমাদেরকে কৌশলে হিন্দুদের বড় একটি সময়ের ইতিহাস থেকে দুরে রাখা হয়েছিলো এবং আজও তা অস্পষ্টর মতো ফুটে ওঠে। রামমোহন রায় মূলত ব্রহ্ম ধর্মের একজন অন্ধভক্ত ছিলেন, তিনি হিন্দুদের পুজাকে অনেক ক্ষেত্রে বেশ ভৎসনাও করেছেন। রামমোহনের উপর ইসলামের একটি বিকৃত রূপের খুব প্রভাব ছিলো। এজন্য আজ দেখুন রামমোহন কে হিন্দুরা কতখানি গ্রহন করেছে? তিনি সতিদাহ প্রথাকে বিলুপ্ত করার জন্য অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে ঠিকই আর সতিদাহ প্রথা কোনোভাবেই সনাতন বা হিন্দু ধর্মের কোনো পার্ট হতে পারে না। মনে রাখবেন, ধর্মের মধ্যে কখনও অমানবিক কিছু থাকতে পারে না। কিন্তু বিশেষ একটি অংশের ভ্রান্তনীতিকে বিনাশ করে তার দোষ বিশাল বড় একটি ধর্মের অনুসারিদের উপর দিয়ে উপনেশিয় শাসন সুসংহত করার নাম পলিটিক্স এবং তা কোনো ভাবেই তা ধর্ম রক্ষা হতে পারে না। সর্ব জগতের যিনি স্রষ্ট্রা তিনিই সকল ধর্মের মালিক এবং তিনিই তার সৃষ্ট্রি জগতকে রক্ষা করার জন্য সব সময় জ্ঞাত থাকেন এবং তার বিধানকে অস্বীকার করা কোনোভাবেই মানুষের জন্য কল্যানকর হতে পারে না। আর সেখানে যদি স্রষ্ট্রার বিধান নিয়ে ভন্ড মানুষরা তাদের ব্যাক্তিস্বার্থ হাসিল করার অবিরত চেষ্টা করে, সেখানে তার পরিনাম কিভাবে ভালো হয় বলুন?
২৭-০৪-২০১৪
রাজা রামমোহনের পর পর বঙ্কিম চন্দ্র চট্টপাধ্যায় একজন বড় মাপের ভাষা ও সাহিত্য বিশারদ হিসেবে নিজগুনে প্রতিষ্ঠিত হলেন। বঙ্কিম চন্দ্র বাংলা (মূলত ভারত বর্ষের সাস্কৃত কবিদের সাহিত্য) মধ্যযুগিয় সাহিত্য ও ইংরেজী মধ্যযুগিয় বা সমসাময়িক সাহিত্যের তুলতামুলক যে বিশ্লেষনগুলো আমাদের সামনে পরিবেশিত করে গেছেন- তা এক কথায় অমূল্য। যার মধ্য আমাদের ও ইংরেজদের মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক রিতিনিতির একটি তুলনামূলক প্রভেদ চোখে পড়ার মতো। আবার তিনি জাতিগত কালচারের তুলতা থেকে অনেক মিলও তুলে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। সেই একই বঙ্কিম কে পরবর্তিতে আমাদের কাছে অনেক পথভ্রষ্ট বলে মনে হয়েছে যখন তিনি হিন্দুত্ববাদকে ব্রহ্মন শ্রেণীর জন্য এমন করে রেখে গেলেন যার মধ্যে প্রচন্ড গোড়ামি ধরা পরে। সাধারন হিন্দু ও ভিনধর্মীদের প্রতি বঙ্কিমের এমন মনোভাব কেনো হলো তা আসলেই বোঝা দ্বায়। বঙ্কিম কিন্তু ধর্ম সংস্কারক হিসেবে মোটেই সফল না। এমনকি সমাজ সংস্কারক হিসেবেও বঙ্কিম মোটেও সফল না কারণ কোনো ধর্মের মূলেই হিংসা বিদ্দেশের স্থান হয় না। হিংসা সবসময় ধর্ম বিরোধী যা সময় আপন বেগেই লাথি মেরে তাড়িয়ে দেয়। বিদ্যাসাগর একজন সফল মানুষ। আসলে হয়েছে কি, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রচুর প্রতিকুলতা দিয়েই জীবন পাড় করে গেছেন। যারা ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের সময়কালের ঝামেলা গুলো বুঝবেন তারা এমনিতেই বুঝতে পারবেন। ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের অনেক পন্ডিত শত্রু ছিলেন যাদের কারনে অনেক কিছুই থমকে গেছে। তারপরও ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর একটি মধ্যপন্থি ভাবে নিজেকে রাখতে পেরেছিলেন। তিনি আমাদের গোড়ামি দুর করার জন্য নিরলস কাজ করে গেছেন ঠিকই তাই বলে তাকে প্রকৃত বড় মাপের ধর্ম সংস্কারক অথবা সমাজ সংস্কারক মনে করা অনেক বেশি যুক্তিযুক্ত না। এদের ব্রহ্মবাদের ভাবধারা দ্বারা প্রবল ভাবে আকৃষ্ট হন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রিন্স দারাকান্দ্রনাথ ঠাকুরের সন্তান ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেক বেশি ব্রহ্ম ভাবধারা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এখানে তার উপর ও গোটা ঠাকুর পরিবারের উপর বঙ্কিম, বার্টনের একটি প্রভাব পড়েছিলো।
এই পরিবর্তনের ছোয়ায় তৎকালিন কিছু কিছু জ্ঞানি গুণী (স্বঘোষিত পন্ডিত) হিন্দু ধর্মের নামে ব্রাহ্ম ভাবধারাকে বিকৃত করে এমন ভাবে বলে বেড়াচ্ছিলেন যা মূলত একেশ্বরের বিরোধী পর্যায়ই উপনিত বলে ধরা যায় আবার মুর্তি পুজার বিপরীতেও চলে যায়। যা খুবই অদ্ভুত। এখানে ঐ সব ব্যক্তিবর্গকে উপনিবেসিক শাসকদের দালাল, চাটুকার, তোষামোদকারী বললে ভুল হবে না। আর এক দৃষ্ট্রিকোন থেকে বিচার করলে ঐ সব মানুষদের জ্ঞানপাপি, অবিচক্ষন কিংবা অল্প জ্ঞান ভয়ংকরীও বলা যায়। এদের প্রচার করা একটি যুক্তির বানি এমনঃ
এবাদাত+পরিশ্রম=ফসল/শস্য
পরিশ্রম=ফসল/শস্য
এবাদাত=০
আমরা কিন্তু জানি যে, সৎকর্ম করাই এবাদাত। সৎকর্ম করা যে এবাদত তা সব ধর্মেই উল্লেখ আছে। কৃষক যখন নিজ পরিশ্রম দিয়ে ফসল ফলান তখন তা অবশ্যই সৎকর্ম। যারা স্রষ্ট্রাকে অন্তর থেকে বিশ্বাস করেন এবং সত্য বুঝতে পারেন তাদের মন থেকে এমনিতেই এবাদাত চলে আসবে। এই ধরনের কথাগুলো তৎকালিন যেসব বিদ্যান সমাজ নামক কলঙ্ক প্রচার করেছেন তাদের আমি নাম উল্লেখ করতে চাই না এবং এরা অবশ্যই চিরকাল ধিক্কার পাবার যোগ্য।
ফাঁকে বলে রাখি, বার্টন সাহেব কে আমি শ্রদ্ধা করি এজন্য যে তিনি ধর্ম নিয়ে অনেক খাঁটা খাঁটনি করেছেন এবং তিনি একজন সত্য অনুসন্ধানি মানুষ ছিলেন। বার্টন সাহেবের ধর্ম সংক্রান্ত গবেষনায় কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিলো বলে আমি দেখতে পাই না।
এ সব গোলকধাঁধা মার্কা অসম সমাজ পরিবেশের মধ্য থেকেই, হিন্দু সমাজের দারুন এক দুঃসময় তিব্র খরার পরে বৃষ্ট্রির মতো প্রকাশ ঘটালেন শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। ইষৎ সমসাময়িক যুগে যারা নিজেদের সমাজ সংস্কারক, ধর্ম সস্কারন, পন্ডিত আরও বড় ভাবে নিজদের তুলে ধরার চেষ্টা করতেন তাদের সামনে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে প্রথমে অসহায়ের মতোই ঠেকছিলো। কিন্তু যারা ভগবানের নির্দেশ অন্তরে অনুধাবন করে প্রকাশিত হন তাদের আধ্যাত্বিক শক্তি নিয়ে ভাবতে হয় না। রামকৃষ্ণ বললেন, “যত মত, ততো পথ”। সহজ সরল বানি। তিনি জাত কালের তোয়াক্কা করতেন না। রামকৃষ্ণ যদি গাছের শিকর হন তাহলে দৃশ্যমান শক্ত সবল গাছ হলেন শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ। বিবেকানন্দ বড় মাপের একজন অবতার। স্বামিজি অনেক কম বয়সে প্রস্থান না করলে আরো বড় একটি পরিবর্তন আমরা দেখতে পেতাম। মাত্র ৩৯ বছর বয়সের জীবনে তিনি যখন উত্তপ্ত সুর্যের তেজ থেকে বেড়িয়ে অস্তপারের ঠান্ডা কোমল সুর্যের ন্যায় আচরনের দিকে যাচ্ছিলেন তখনই তাকে বিদায় নিতে হলো। আসলে বিবেকানন্দের ভাষাটা এতো বেশি তিব্র ছিলো যে, অনেকেই তাঁকে বুঝতে পারে নি। আর ঐ সময়ে ঐ তিব্রতার তেজ ছাড়া দিপ্ত ছড়ানোও কঠিন কাজ ছিলো। আসলে এরকম উচুমাপের মহাপুরুষদের অল্প বয়সে চলে যাবার পিছনে সমাজের অবহেলা বিশাল বড় একটি কারণ। যারা মানুষকে চিরমুক্তির পথ দেখাতে আসেন আর তাদের যদি সেই মানুষ দ্বারাই বার বার বিভিন্নভাবে আঘাত পেতে হয় তহলে সেই দোষ আপনারা ভগবান কে দিতে পারেন না? মহাপুরুষরা যে কতো বেশি পরিশ্রমি ও চিন্তাশিল জীবন যাপন করেন তা সাধারণ মানুষদের কবে যে বোধগম্য হবে আমি আজও তা বুঝতে পারছি না। স্বামিজি কখনও আপন শরীরের কথা ভাবেন নি শুধু এই বিপথে যাওয়া অন্ধকারে হাতরে বেড়ানো মানুষকে আলো দিতে চেয়েছিলেন বা সত্যিকারের পথ কে দেখাতে চেয়েছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দের কথা একাত্ববাদেরই সত্যতা নির্দেশ করে। আমি আসলে ইতিহাস বর্ণনা করার জন্য এতো কথা বলছি না শুধু একটি পরিস্থিতির দিকে আঙ্গুল তুলে দেখালাম মাত্র। তারপরও বলে রাখছি নানক কবির এমন একটি সময় আমাদের উপমহাদেশে নিজেদের আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছিলেন যা না হলে ভারত বর্ষের হিন্দু মুসলিম আরো বেশি বিপথে যেতে পারতো। তাদের দর্শন এমন ভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিলো যার মধ্য থেকে মুসলিমরাও নিজেদের ব্যাপারে ভাবার সুযোগ পায় আবার হিন্দুদের মধ্যেও একেশ্বরবাদটি আরো বেশি গুরুত্বের সংগে উঠে আসে। এভাবেই ভারতবর্ষের দিনকাল চলছিলো এবং আজও ধর্মের নামে অনেক বেশি বিভক্তি স্পষ্ট প্রতিয়মান। বর্তমান হিন্দু সমাজকে আসল হিন্দুত্বের মর্মবানী উপলব্ধি করতে হবে। হিন্দু ধর্মের মুল ভিত্তি একেশ্বরবাদ যাতে বিন্দু মাত্র সন্দেহ রাখা যাবে না। এরপর আসবে শাস্ত্রের সংস্কার।
বন্ধু! আমি এখানে বোঝাতে চাচ্ছি হিন্দুত্ববাদের বাঁধন ছাড়া ইন্ডিয়াকে ইউনাইটেড রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াটা বোকামি ও ভবিষ্যতের বিপদ ডেকে নিয়ে আসা ছাড়া অন্য কিছু না।
৫। সমস্ত হিন্দু ও ইন্ডিয়ার জন্য একজ ধর্মগুরু থাকবেন। যিনি থাকবেন অল ইন্ডিয়ার তাজ স্বরূপ সম্মানিত। ধর্মগুরুর কিছু কিছু মৌখিক আইন করার ক্ষমতা থাকবে। কিন্তু তিনি কোনোভাবেই রাষ্ট্রিয় শাসনব্যবস্থার (জনগনের দ্বারা নির্বাচিত, জনগনের সরকার) এক্সিকিউটর থাকবেন না। যেমন ধরুন খুব বড় একটি অপরাধ ঘটে গেলো যা সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় দৃষ্টিতে খুবই মারাত্মক। আমি একটি উদাহরন বাংলাদেশ দিয়ে দিচ্ছি। যেমন ধরুন বাংলাদেশের একটি ভবন দূর্ঘটনায় হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং এটি বিশ্বের তৃতিয় বৃহৎ শ্রমিক মৃত্যুও বটে। এখন সংবিধান দিয়ে ঐ বিল্ডিংয়ের মালিককে খুব বড় ভাবে আটকানো সমস্যার ব্যাপার। এখানে যদি বাংলাদেশ সরকারে এমন কেউ থাকতেন যিনি একক ভাবে মৌখিক কোনো শাস্তির আদেশ দেবার ক্ষমতা প্রাপ্ত হতেন, এবং ঐ ব্যাক্তি বিতর্কের উর্দ্ধে তাহলে ঐ অপরাধীকে যত বড় সাজাই যত তাড়াতাড়ি দেয়া হতো না কেনো তা কিন্তু জনগনের কাছে গ্রহনযোগ্য হতো। আবার স্বজন হারা মানুষদের জন্য সান্তনার কারন হতে পারতো। বাংলাদেশ কেনো পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই এমন ব্যবস্থা নাই। ইন্ডিয়ার মতো একটি বৃহত আয়তনের রাস্ট্র(ভবিষ্যৎ যুক্তরাস্ট্রে) এমন একজন ধর্মনেতা থাকা অবশ্যক এবং তিনি সত্যিকারের একজন ভালো মানুষ হতে হবে। আবার একই ভাবে পুরো খৃষ্টান বিশ্বের জন্য সব খৃষ্ট্রান প্রধান রাস্ট্রের সংবিধানে পোপকে এমন ভাবে ডিকলায়ার করা উচিত যাতে এই পোপের কিছু কিছু অলিখিত আইন বা আদেশ দেবার ক্ষমতা থাকে। তাহলে খ্রিষ্ট্রান দেশগুলোর মধ্যে বা খ্রিষ্ট্রান জাতির মধ্যে কোনো সমস্যা ঘটলে তিনি খুব দ্রুত একটি ডিসিসন দিয়ে পুরো জাতির অসম্মান হবার সম্ভাবনা দ্রুত কন্ট্রোলে নিয়ে আসতে পারবেন। যেমন ডেনমার্কের মিডিয়া ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মুহাম্মদ (স) কে নিয়ে যে বাজে আচরন করলো তার জন্য মুসলিম বিশ্বের ডেনমার্কের সাথে এতো বাক বিতন্ডায় না জড়িয়ে বরং পোপ (পুরো পৃথিবীর জন্য একজন খ্রিষ্টান গুরু) উচিত ডিসিসন দিয়ে এক্সিকিউট করাতে বাধ্য করতে পারতেন। যারা ধর্মের মর্ম বোঝে তারা কখনও অন্য ধর্মের অপমান সইতে পারে না। সব ধর্মের মৌলিক ভিত্ত্বি একাত্ববাদ অর্থাৎ একজন সৃষ্ট্রিকর্তা সব কিছু সৃষ্ট্রি করেছেন এবং তিনি নিরাকার বা মানুষের কোনো ইন্দ্রিয় সিমা ও অনুভুতি সিমাদ্বারা স্রষ্টাকে দেখা যায় না। তবে তিনি যে এক তার প্রমাণ আমি আপনাদের সামনে বহুভাবে তুলে ধরেছি। এবং একাত্ববাদের ব্যাপারে কোনো ধর্মই দ্বিমত পোষন করতে পারে না।
এরকম একজন হিন্দু ধর্মগুরু ইন্ডিয়ার মুকুট হিসেবে অলংকিত হবেন। ঐ ধর্মগুরু উত্তরাধিকার সূত্রে কাউকে নিয়োগ করতে পারবেন না। যেমন স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ইত্যাদি। তিনি যাকে নিয়োগ করবেন তিনি অবশ্যই একজন উপযুক্ত ধর্মগুরু হবেন। ধর্মগুরুর মেয়াদকাল হবে আমৃত্যু তবে কনো কারনে তার মানুষিক বিকৃতি ও শারিরিক ভাবে অক্ষম হলে তখন অন্য কাউকে নিয়োগ দেয়া যাবে। বা আগেই বর্তমান ধর্মগুরু কর্তৃক কিছু উপযুক্ত উত্তরসরীর নাম গোপন ভাবে সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে এমন মুকুট না পড়ে নিলে সমস্যার দলা আরো বেশি পাকাতে থাকবে। আমাদের এই কঠিন সত্য উপলব্ধি করতে হবে। আমরা আমাদের দ্বায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি এবং যাবো আপনারা আপনাদের নেতা নির্বাচন করে নিন।
[২৯-০৪-২০১৪ (০০:০৩) ]
৬। ইউনাইটেড স্টেট অব ইন্ডিয়া/ভারতের প্রত্যেকটি আলাদা স্টেটের সামরিক বাহিনি থাকবে। আমি যে, ভারতের স্থায়ী শান্তি ও ঐক্যের জন্য ইউনাইটেড স্টেট অব ইন্ডিয়া/ভারত প্রস্তাব করছি তার গঠন হুবুহু যে ইউ.এস.এ এর মতো হবে এমন না। প্রতিটি স্টেটের সেনাবাহিনি ঐ স্টেটের জন্মসূত্রের নাগরিক দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হবে। প্রতিটি স্টেটের নিজস্ব আইনি কাঠামো অনুসারে সেনাবাহিনি কাজ করবে। আলাদা আলাদা ষ্টেটের আইন এর কিছু কিছু তফাত এমনি থেকেই তৈরি হয়ে যায়। মূলত জনগনের চাহিদা, প্রথা, সামাজিক ব্যবস্থা, শিক্ষার অগ্রযাত্রা ও ভৌগলিক অবস্থানের কারণে স্টেটগুলোর মধ্যে আইনের কিছু কিছু পার্থক্য আসবেই। যা কোনো ভাবেই ইউনাইটেড স্টেট অব ইন্ডিয়া/ভারত এর কেন্দ্রীয় প্রধান কাঠামোতে প্রভাব ফেলবে না। সব স্টেট থেকে বাছাই করা একটি ফোর্স থাকবে অল ইন্ডিয়া মিলিটারি যারা মূলত কঠিন কোনো দুর্যোগেই কাজ করবে। এভাবে আর একটি ফোর্স থাকবে অল ইন্ডিয়া বর্ডার গার্ড যারা সিমান্তরক্ষী হিসেবে কাজ করবে। ইউ.এস.এ. এর আর্মি ও পেন্টাগন কেন্দ্রিক হওয়ার ফলে সমস্যা বেশি হয়েছে। এই সমস্যা গুলো দিয়ে শিক্ষা নিতে হবে। অলইন্ডিয়া মিলিটারি ফোর্সে কোনো স্টেট থেকে সদস্যদের নিয়ে আসতে হলে অবশ্যই উক্ত স্টেটের রিকুইজিশন নিতে হবে। কোনো স্টেট যদি অলইন্ডিয়া মিলিটারি ফোর্সে সদস্য দিতে অসম্মতি প্রকাশ করে তাহলে কেন্দ্রীয় পরিষদ জোড়াজুড়ি বা বাধ্য করতে পারবে না এমনকি এই কারন দেখিয়ে উক্ত স্টেট কে ইউনাইটেড স্টেট অব ইন্ডিয়া থেকে বেড় করেও দেয়া যাবে না। এরকম হলে যুদ্ধ পরিস্থিতি অনেক কমে যায়। অনেকের হয়তো মনে হতে পারে এই রকম ব্যবস্থা চালু করলে রাস্ট্র দুর্বল হয়ে যাবে বা অন্য কোনো দেশ সুযোগ কাজে লাগানোর সুবিধা খুঁজবে, এ ধারনা ভুল। যেখানে একজন ধর্মগুরু দেশের তাজের মতো অবস্থান করছে। প্রতিটা স্টেট ন্যায় ভাবে তাদের অধিকার পাচ্ছে এবং একটি বিশেষ সম্মানজনক পর্যায়ে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেবার জন্যই ইউনাইটেড থাকছেন, সেখানে কোনো ভাবেই অলইন্ডিয়া এর উপর কোনো অসম্মান বা খারাপ পরিস্থিতি এলে দেশের জনগনই তখন সেনাসদস্যদের মতো অকুতভয় সৈনিক হয়ে যাবে। এবং বিদেশি শক্তি কোনোভাবেই দেশের অভ্যন্তরিন দুর্বলতার জন্ম দিতে পারবে না।
আমি একটি উদাহরন দিচ্ছি, বর্তমান এই সময় ভারত বাংলাদেশের নদীগুলোর স্বাভাবিক গতিপথের উপর যেভাবে অন্যায় আচরন করছেন তা ইতিহাসে নজির বিহিন তো বটেই সেই সাথে অনেক বেশি অমানবিক ও বোকা সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু না। আর বর্ডার এলাকায় যে ভাবে বাংলার নিরিহ সন্তানদের নিয়মিত মারা হচ্ছে তা কোনো সুশৃঙ্খল ও সুসাসন প্রতিষ্ঠিত রাস্ট্র দ্বারা কোনোভাবেই সম্ভব না। বাংলাদেশি জনগনকে নিয়মিত মারা ইন্ডিয়ার দুর্বলতা ছাড়া কিছু না। কিন্তু এই ব্যাপারটিই উভয়দেশ এখনো বোঝে না বলে আমার দুঃখ লাগে। আজ হঠাৎ বা একদম সহ্য ক্ষমতার দেয়াল ভেঙ্গে দিয়ে যদি বাংলার সন্তান বি.জি.বি ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনি একদিন/নিয়মিত কিছু দিন ইন্ডিয়ান বি.এস.এফ. বা বর্ডারে থাকা সামরিক বাহিনির উপর আক্রমন করে অকাতরে মেরে ফেলে তাহলে ইন্ডিয়া লাভবান হবে নাকি বাংলাদেশ লাভবান হবে? অবশ্যই বাংলাদেশ লাভবান হবে আর ইন্ডিয়ার জন্য আরো অনেকগুলো বাজে কারনের জন্ম হবে এই একটি হঠাৎ ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার জন্য। ওতে যদি বাংলাদেশ অনেক হতাহত হয় আর তার মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা বেশিও থাকে তারপরও ইন্ডিয়ার জন্য বিশাল ক্ষতি হবে তাতে কোনো সন্দেহ নাই। বাংলাদেশ একক ল্যাঙ্গুয়েজ, কালচার ও রিলেজনের একটি একক ভুখন্ডের রাষ্ট্র। যখন বাংলাদেশ দ্বারা ইন্ডিয়ার সিকিউরিটি ফোর্সের উপর বিশাল চ্যালেঞ্জ আসবে তখন ইন্টারন্যাশনাল, ন্যাশনাল ও স্বাভাবিক মিডিয়ার বদৌলতে টোটাল ইন্ডিয়ার জনগনের উপর ব্যাড ইফেক্ট পড়তে বাধ্য। ইন্ডিয়াকে বুঝতে হবে ইন্ডিয়ার সিমান্ত অনেক গুলো রাষ্ট্রের সাথে এবং অনেক সিমান্ত নিয়েই ঝামেলা আছে। এই সুযোগে ইন্ডিয়ার কোনো কোনো রজ্য ও অন্য কোনো দেশ একই সাথে ইন্ডিয়ার উপর বৈরি আচরন শুরু করে দিলে, তখন কেন্দ্রীয় সরকার এই লাগাম কিভাবে টেনে রাখবে। লাগাম টানার বড় মাধ্যম ইউ.এস.এ বা যুক্তরাস্ট্র অথবা জাতিসংঘের সাহায্য কামনা করা। যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু সুযোগ সবসময়ই খুঁজে বেড়ায় তা আজ যুক্তরাষ্ট্রের জনগনও স্পষ্ট ভাবে বলবে। (আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র তার অতিত ভুল থেকে অনেক শিক্ষা পেয়েছে। আমি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।)
এরকম পরিস্থিতি হলে যুক্তরাষ্ট্রকে ডাকা আবার না ডাকা দু’টোই ইন্ডিয়ার জন্য বিশাল হুমকি ছাড়া কিছু না। এজন্যই আমি বার বার অনেক আপন মনে করে ইন্ডিয়াকে ঠিক হতে বলি।
বন্ধু! আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আজ ইন্ডিয়ার সামনে সময় এসেছে সমস্ত ডিসিসন নিজেদের নেবার। ধার করা ডিসিসন রাষ্ট্রিয় পলিসি যে কতো ভয়ঙ্কর রূপের দশমুখো রাবন হয়ে একটি সুন্দর জাতিকে অসুন্দর কুৎসিতের পথে নিয়ে যায়- আজ আমরা তা জেনে গেছি।
৭। ইউনাইটেড স্টেট অব ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠিত হলে তুলনামুলক অনুন্নত রাজ্যগুলো (প্রস্তাবিত স্টেট) যে কত তাড়াতাড়ি ডেভলপ হয়ে উঠবে তা একজন অভিজ্ঞ চিন্তাশিল মানুষ সহযেই অনুধাবন করতে পারবেন।
ইন্ডিয়ার প্রতিটা রাজ্যের মধ্যে আলাদা আলাদা রকমের বৈচিত্র আছে। কোথাও পোর্ট আবার কোথাও আছে দর্শনীয় স্থান। যে সব স্টেটে পোর্ট থাকবে, সেই স্টেট এর পোর্ট ব্যবহার করার জন্য অন্য স্টেটের একটি ন্যায্য শুল্ক নির্ধারন করা থাকবে। যার পুরো অংশই পাবে পোর্ট থাকা ষ্ট্রেটটি। খুব সামান্য একটি পরিমান ট্যাক্স কেন্দ্রীয় পরিষদ ও কেন্দ্রিয় পররাস্ট্র নিতি সহ বিবিধ বিষয়ের জন্য নির্ধারিত হতে পারে। আবার যে স্টেট এ ট্যুরিজম সেক্টর থেকে ইনকাম বেশি হবে সেই স্টেট ঐ টুরিজ্যম সেক্টরের পুরো ইনকাম নিজেরা গ্রহন করে স্টেটের উন্নয়ন কাজে ব্যায় করবে। এইভাবে বিশ্লেষন করলে দেখবেন, ইন্ডিয়ার প্রতিটা রাজ্যই (প্রস্তাবিত স্টেট) কোনো না কোনো দিক দিয়ে এগিয়ে আছে। যা দ্বারা প্রতিটা স্টেট অনেক উন্নত হয়ে ইউনাইটেড স্টেট অব ইন্ডিয়া/ভারতকে খুব দ্রুত অনেক অগ্রগতি এনে দিতে পারে।
ইউনাইটেড স্টেট অব ইন্ডিয়া/ভারত প্রতিষ্ঠা হলে ইন্ডিয়ার পিছিয়ে পড়া নারীদের মুক্তি দ্রুত হয়ে পড়বে। বর্তমান সময়ে ইন্ডিয়ার মতো এতো বেশি অবহেলিত নারী পৃথিবীর আর কোথাও নেই। একটু সহজ করে ভাবলে দেখবেন, এই নারীদের পুরুষের সমান অধীকার, মজুরী ও শিক্ষার সুযোগ করে দিলে এই নারী সমাজ যে পরিমান কর্মঘন্টা দিয়ে ইন্ডিয়াকে সাহায্য করতে পারে তা এক কথায় বিস্ময়কর বলে ঠেকবে। নারীদের প্রতি এই অবজ্ঞা দ্বারা ইন্ডিয়া কি পেয়েছে? বরং ইন্ডিয়ার স্থায়ী শান্তি ও মুক্তির জন্য নারীদের ন্যায্য পাওনা দেয়ার ব্যবস্থা করা বাধ্যতামুলক। আজ যে নারী ঘরে বসে নির্জাতিত হচ্ছে কাল সে নারী নিজের মেধা, শ্রম, জ্ঞান ও আত্মসম্মান দিয়ে নিজের মনের স্বাধীনতা ও দেশের উন্নতিতে বিরাট বড় ভূমিকা রাখতে পারবেন। সেই সাথে ঘরে ঘরে যে কলহ-বিবাদ-ঋণ-অভাব তা দ্রুততার সাথে কমে যাবে।
পরিশেষে বলতে চাই, আমাদের এই ভারতমাতা হাজার বছর ধরে অন্যের ঘরে চাকরানির মতো থেকে থেকে মলিন মুখে কাজ করে গেছে আর ভেবেছে সন্তানরা সক্ষম হলে আর কোনো দুঃখ অভাব থাকবে না। যখন ভারতমাতা তার সন্তানদের নিয়ে নিজের ঘর পেলো- তারপরও সন্তানদের গোড়ামি, দাসত্বের অভিশাপ, সহোসের অভাব ও নিজ দোষে অর্জিত দারিদ্রের কারনে সুখ-শান্তি পেলো না। আজ নিজেদের ভারতমায়ের কথা ভেবে হলেও- “মা” এর যোগ্য সন্তান হয়ে উঠি।
২৯-০৪-২০১৪ (২৩:০৩)
https://www.facebook.com/asif.ud
১৮ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:১০
মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ বলেছেন: দেখেছি
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন: Click This Link