নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সরল বচন

ধাতবগোলক

জন্মেছি যখন চিহ্ন রেখেই যাবো....

ধাতবগোলক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সায়েন্স ফিকশনঃ হোপ্রিম

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:২১

১.

মৃদু কর্কশ একটা শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। চোখ খুলতেই বুকটা ধরাস করে উঠলো। মাথার উপর পরিচিত ছাদ টা নাই।মনে হচ্ছে যেন বিশাল এক হলরুমে আছি।

শহরতলির এক আকাশছোঁয়া গিঞ্জি অ্যাপার্টমেন্টের ১২৩ তালায় থাকি আমি,সিলিং বলা যায় মাথা ছুঁইছুঁই থাকে সব সময়।আমি এবার সাবধানে চার পাশে চোখ বুলালাম...আসলেই বিশাল এক হলরুমে আছি,অনেক দূর পর্যন্ত সাড়িসাড়ি সাদা বিছানা।দেখে মনে হয় কোনো ধরণের স্বাস্থ্যকেন্দ্র এটা।

শরীরে ঘুম জড়িত কোনো ক্লান্তি নেই।তারপরো ধীরে ধীরে উঠে বসলাম। আমার চারপাশের কোনো বিছানাতেই কেউ নাই। মনে হচ্ছে এই বিশাল ঘরটিতে আমি একা...

গতকাল রাতের কথা মনে করতে চেষ্টা করলাম। রাত ২টায় ইরিনাকে তার বাসায় নামিয়ে দিয়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরেছিলাম। ফিরেই ঘুম। উত্তেজক পানীয় গুলোর কার্য ক্ষমতা পেরিয়ে গেলে ভয়ানক ক্লান্তি লাগে। এই জায়গায় আসলাম কি ভাবে,কিছুতেই বুঝতে পারলাম না।

আমার বিছানার পাশেই ছোটো একটা ফাইবার গ্লাসের টেবিল। ওটার উপরে কিছু নেই। ডান পাশে ছোট মনিটর একটা,অন্ধকার।ওটার নিচে ছোটো একটা কন্ট্রোল মডিউল।

আমার গায়ে কাল একটা টিশার্ট আর জিন্স ছিল। এখন দেখি অত্যন্ত দামি নিওপলিমারের গাউন।বেশ কোমল।



আমি বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালাম।ঠিক তখনই আমার পেছনে একটা দরজা খুলে গেল। মধ্যবয়স্ক দুইজন লোক আর একটি চতুর্থ প্রজন্মের কিউ-১২ রোবট প্রবেশ করল। কিউ-১২কে দেখে চমকালাম। অত্যন্ত উন্নত রোবট। এদের কপোট্রনে নিউরাল নেটওয়ার্ক আছে।



অপেক্ষাকৃত লম্বা লোকটি আমার কাছে এসে হাত বাড়িয়ে বললেন,"আরান রাফিস,আমি ক্লিহান,কিহানুস ক্লিহান।'' তাঁর মুখে মৃদু হাসি।

আমি বাড়ানো হাতটা দেখতে পাচ্ছিলাম না। মহামতি ক্লিহান আমার সামনে দাঁড়িয়ে? উনার নামই শুনেছি,কখনও দেখি নি।বেশির ভাগ মানুষই তাঁকে দেখে নি।উনি কখনও মিডিয়াতে আসেন না,তাঁর সব ছবি অপসারণ করা হয়েছে যাতে উনার পরিচয় শত্রুদের কাছে গোপন থাকে।

একবিংশ শতাব্দির শেষের দিকে এসে মানুষের অব্যাহত কৌতুহল তাদের এক ভয়াবহ সংকটের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়।প্রজেক্ট অতিমানবি নামক একটা প্রজেক্টে ক্লোন করে কয়েকজন অতিমানবি তৈরী করা হয়েছিল,যাদের চিন্তাতীত ক্ষমতা ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই প্রজেক্টের হেড কোয়ার্টার সহ সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু একটি ক্রিমিনাল সিন্ডিকেট আবার এ প্রজেক্ট হাতে নেয়। তারা এবার ভাল মানবিক বোধ অপসারণ করে চতুর ও হিন্স্র টাইপের একটা প্রজাতি তৈরী করার চেষ্টা করে ও প্রায় সফল হয়। সেই প্রজেক্টে তৈরী হওয়া পঞ্চাশটি অতিমানব একপর্যায়ে সঙ্ঘটিত হয়ে পালিয়ে যায়। তারা প্রত্যান্ত অঞ্চলে নিজেদের একটা টেরিটরি তৈরী করে এবং নিজেদের ক্লোন করতে থাকে। ধারণা করা হয়,ক্রাইম সিন্ডিকেটের সাথে তাদের যোগাযোগ আছে,তবে তারা স্বাধীন। এই অতিমানবেরা নিজেদের প্রজাতির নাম "হোমো সুপ্রিম" সংক্ষেপে হোপ্রিম নাম দিয়েছে।



এদিকে সারা পৃথিবীতে ফেডারেশন তাদের শাসন কায়েম করে,ফলে রাষ্ট্র ব্যাপারটা উঠে যায়। পৃথিবীতে এখন দুটো পক্ষ,মানুষ আর হোপ্রিম। হোপ্রিমদের ক্ষমতা অনেক হলেও তারা সরাসরি সংঘাতে যেতে পারছে না কারণ তাদের লোকবল অনেক কম। ১৫বিলিওন মানুষের সাথে কয়েক হাজার হোপ্রিম পারবে না,কিন্তু তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে। তাদের টেরিটরিটা মূলত দক্ষিণ আমেরিকায়। সেটা শক্তি বলয় দিয়ে ঘেরা কয়েক লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকা। মানুষ চাইলেও পারমাণবিক হামলা চালাতে পারছে না।



হোপ্রিমরা মানুষের বেশে সারা পৃথিবীতে লুকিয়ে আছে। প্রায়ই মূল্যবান ফর্মূলা তারা চুরি করে। হোপ্রিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ফেডারেশন কর্তৃপক্ষের সর্বচ্চ ক্ষমতা এই কিহানুস ক্লিহানের হাতে। তিনি কেন্দ্রিয় বিজ্ঞান একাদেমীরও সদস্য। তিনি নিঃসন্দেহে হোপ্রিমদের হিট লিস্টে সবাড় উপরে আছেন।



আমার সংবিত ফিরতেই বাড়ানো হাতটা ধরে ঝাঁকালাম,মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কয়েক মুহূর্ত পর বলতে পারলাম,"আপনার সাথে দেখা করতে পারাটা অত্যন্ত সম্মানের কিন্তু এখানে কি হচ্ছে কিছু বুঝতে..."

ক্লিহান হেসে বললেন,"ঘটনা খুব সহজ,আমরা তোমাকে তোমার এপার্টমেন্ট থেকে নিয়ে এসেছি। এটা কেন্দ্রিয় বিজ্ঞান একাডেমী।''

"কিন্তু কেন?" ক্লিহান আমার চোখ থেকে চোখ সরিয়ে বললেন,"ইরিনা"

আমার মাথাটা চক্কর দিয়ে ঊঠলো, আমি হা করে তাকিয়ে থাকলাম তাঁর দিকে।

তিনি বলতে লাগলেন,"তুমি আমাদের ডিপওয়াচ লিস্টে প্রথম থেকেই ছিলে,ছিল তোমার প্রেমিকা ইরিনাও।তোমাদের আমরা কখনও ঘাটিনি। তুমি যে অনেক মেধাবী ও প্রতিভাবান,এটা আমরা জানি।তোমার মত ৫ জন একবার শ্যালক্স গ্রুনের হাত থেকে পৃথিবী বাঁচিয়ে ছিল। তুমি কখনো তোমার মেধা ব্যাবহার করনি,খুব সাদামাটা থেকেছ।কিন্তু তোমার প্রেমিকা ইরিনার বেশ কিছু ব্যাপারে আমাদের হিসেব মিলছিলনা। সে সকল জায়গায় তথ্য দিয়েছে,সে উত্তর ইউরোপ থেকে এসেছে,কিন্তু আমরা চেক করে দেখছি,তার সকল কাগজ ভুয়া,যদিও সাধারণ প্রযুক্তিতে ধরা যেতনা।আমাদের সন্দেহ আরো শক্ত হয় যখন দেখলাম, সে তার মেধা খরচ করে বিভিন্ন প্রতিরক্ষা সংস্থার এডমিন্সট্রেশনে যোগদানে ব্যাবহার করছে,যেখানে ইচ্ছা করলেই সে বিজ্ঞানী হিসেবে যোগ দিতে পারতো।গত কিছুদিন ধরে ওই সংস্থা হতে বেশ কিছু ডকুমেন্ট খোয়া যায়। গত পরশু ইনফ্রা রেড ক্যামেরায় ইরিনা কে দেখা গেছে কিছু ডকুমেন্ট সরাতে...''

"আপনিকি বলতে চাচ্ছেন,ইরিনা একজন হোপ্রিম?" আমার গলার কাছে কি যেন আটকে আছে।

"জানি তোমার খারাপ লাগছে খুব,কিন্তু এটাই সত্যি রাফিস,সে একজন হোপ্রিম চর"..."কিন্তু কিভাবে আপনারা নিশ্চিত হলেন? আমি তাঁকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।

"তার ক্রোমজম ৪৭টা রাফিস" ক্লিহানের এই কথাটা আমার বুকটা ভেঙ্গে দিল।আমি মাথা নিচু করে বসে ধাক্কাটা হজম করতে চাইলাম।অবশেষে আমি বল্লাম,''আমি কিভাবে সাহাজ্য করতে পারি বলুন।"

ক্লিহান একটু অবাক হলেন মনে হল এত সহজে মেনে নিলাম ব্যাপারটা দেখে।তিনি পিছনে ফিরে অপর লোক আর কিউ রোবোটের দিকে তাকিয়ে বললেন ,"ম্যক্স আর কিষুন তোমাকে ব্রিফ করবে।সব প্রস্তুত করাই আছে"।

আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে হাত দিয়ে মুখ ঢাকলাম।

২.

আমার ঠিক সমনে চেয়ারে হাত পা বাঁধা অবস্থায় ইরিনা বসে আছে। নমনীয় সিলঝিনিয়ামের তন্তু দ্বারা তৈরী ব্যন্ড দিয়ে বাঁধা হয়েছে তাকে,গরিলাও ছিঁড়তে পারবে না এটা।যদিও ইরিনা কোনো চেষ্টা করছে না বাঁধন খোলার।

আমি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ইরিনার দিকে।কি মায়াময় একটা মুখ।কি গভীর নীল দুটি চোখ।সে কিনা একজন হোপ্রিম? আমি এত দিন একটা হোপ্রিমের সাথে মন দেয়া নেয়া করলাম? পুরোটাই ছিল ভান,কারণ হোপ্রিমরা ভালবাসতে জানে না...

"ভূল,রাফি" আমি চমকে উঠলাম।"কি ভূল ইরিনা?" আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম।

"আমাদের ভিতরে সকল মানবিক অনুভুতি আছে,রাফি।প্রথম সত্তুরটি ব্যাচের হোপ্রিমদের ছিলনা।কিন্তু এরপর আমরা জৈবিক ভাবে জনসংখ্যা বাড়তে থাকলে মানবিক বোধ অপসারণ ব্যায় বহুল হয়ে পড়ে।কিন্তু আমাদের কঠিন অনুশাসনে বড় করা হয় বলে আমরা ভূল করি না। আমিই প্রথম হোপ্রিম যে কোনো মানুষের প্রেমে পড়েছে।আমি চর,এটা সত্যি,কিন্তু আমি সত্যিই তোমাকে ভালবাসি,রাফি।জানি আমাকে তুমি আর কখনই বিশ্বাস করবে না,কিন্তু তোমার কাছে আমার আর কোন স্বার্থ ছিল না,এটা তুমি জান।"

আমি বুঝলাম সেলুলয়েডের টুপিটা খোলার পর সে আমার মনের কথা বুঝতে পারছে।সে নিশ্চয়ই জানে যে আমি তকে কতটা ভালবাসি।কিন্তু মাথার ভেতর একজন চিতকার করে বলছে সব মিথ্যা,এ কুহুকিনী।এর কোন কথা বিশ্বাস করনা। ইরিনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে মাথা নিচু করে বসে আছে। নিরাপত্তা বাহিনী সহ ক্লিহানের পৌঁছুতে এখনও ১০ মিনিটের মত বাকি।ইরিনা আমাদের অনুমিত সময়ের বেশ আগেই চলে আসায় হাতে বেশ কিছুটা সময় পেয়েছি তার সাথে একান্তে কথা বলার।

হোপ্রিমদের অন্যান্য বিষাক্ত কেমিকেলে দুর্বলতা না থাকলেও একমাত্র রিলিবিক্সিন গোত্রের যৌগ গুলোতে তারা অচল,মানুষের উপর এটার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। আমার অ্যাপার্টমেন্টের একটা নির্দিষ্ট কোনায় তাকে নিয়ে যেতেই সে অচল হয়ে পড়ে। তারপর তাকে বেঁধে ফেলি চেয়ারে।

ইরিনা মাথা তুলে আমার চোখের দিকে তাকালে দেখি পানি চিক চিক করছে। আমার বুকের ভেতর হঠাত কি জানি ঘটে গেল।আমি ছুটে গিয়ে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললাম,"হও তুমি হোপ্রিম,হোক তোমার ৪৭টা ক্রোমজম,আমি তোমাকে ভালবাসি,ইরিনা।" ইরিনা ঝরঝরিয়ে কেঁদে ফেলল। আমি তার চোখের পানি মুছে তার ঠোঁটে আলতো করে চুমু খেলাম।

"মাফ করে দিও আমাকে রাফি।তুমি ভূল মানুষ কে ভালবেসেছিলে।'' কান্না থামাতে কষ্ট হচ্ছে তার।

আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি আরো ৭ মিনিট আছে।"আচ্ছা,তোমার নিজস্ব সেফ হাউজ আছে?" ইরিনা অবাক হয়ে বললো," হ্যাঁ,পলেনেশিয়ায়।" "আচ্ছা তোমাকে যদি এখন ছেড়ে দেই তুমি কি পালাতে পারবে?" প্রথমে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো সে তারপর বললো,"আমি একজন হোপ্রিম।আমার অসাধ্য খুব বেশি কিছু নেই।কিন্তু তুমি কেন তা করবে?"

"কারণ আমি জানি তোমাকে নিরাপত্তা বাহিনীরা নিয়ে কি করবে।কিভাবে তোমাকে ইন্টারোগেট করবে।আমি এটা সহ্য করতে পারবো না।" "কিন্তু ওরা তো তোমাকেও ছাড়বে না!" আমি হেসে বললাম,"একজন হোপ্রিম আমাকে বোকা বানিয়ে পালিয়ে গেছে এটা অবিশ্বাস্য কিছু নয়"।

"রাফি,তুমি যাবে আমার সাথে?পলিনেশিয়ায়? আমার বিরাট দ্বীপ...শক্তি বলয় দিয়ে ঘেরা...খোলা সাগরের পাশে আমার কাঠের বাংলো..." আমি তার মুখে হাত দিয়ে বল্লাম,"আমাকে আর লোভ দেখিও না।আমি যাবো..." ইরিনা আমার দিকে তার বাঁধা হাত বাড়িয়ে দিল।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৩০

আজমান আন্দালিব বলেছেন: আপনার সায়েন্স ফিকশনের হাত ভালো। ভালো লেগেছে। +

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৫৮

ধাতবগোলক বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৫৪

ফারজানা শিরিন বলেছেন: বিবেকের দংশন তৈরি করিয়ে দিতে পেরেছেন !!! চমৎকার ! বুজতেছি না রাফিকে ক্ষমা করবো কিনা !!!?

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৫৭

ধাতবগোলক বলেছেন: আমি রাফির পক্ষ নিতাম।খেতা পুড়ি সবকিছুর,প্রেমিকা আগে :D

৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:২৯

মাক্স বলেছেন: মুগ্ধতা নিয়ে পড়লাম। ভালো লিখেছেন।
২য় প্লাস!!

১০ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:০৬

ধাতবগোলক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ :D :D :D

৪| ০৫ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:১৯

ফারজানা শিরিন বলেছেন: :|

১০ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:০৭

ধাতবগোলক বলেছেন: :-<

৫| ০৫ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৩২

জাওয়াদ তাহমিদ বলেছেন: ভাল হয়েছে তবে এই কপোট্রনিক গোলক ধাঁধা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

১০ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:০৩

ধাতবগোলক বলেছেন: পারুম না :P

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.