![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেয়েটা আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাচ্ছে বারবার। আমার অস্বস্তি লাগছে। নাহ,মোটেও পরিচিত লাগছে না ওই ডিমের মত মুখটা ।
অমল স্যারের কোচিং সেন্টারের উঠানে পাতা বেঞ্চে বসে আছি। মাঘের কনকনে ঠান্ডা। শৈত্যপ্রবাহ চলছে মনে হয়। শীতকাল আমার প্রিয় ঋতু। কারণ ইচ্ছা মত পাংকু করা যায়। আজকে আমার গায়ে পাঞ্জাবি আর কালো চাদর। চাদরে শীত মানছে না,কিন্তু চাদরটা আমার খুব প্রিয়। গায়ে চাদর জড়ালেই আলগা একটা ভাব আসে।
মেয়েটার গায়ে ধবধবে সাদা সোয়েটার। মনে হচ্ছে একটুকরো মেঘ জরিয়ে রেখেছে শরীরে। নীল ওড়নাটা তার মধ্যে আকাশ ভাবটা আরো পোক্ত করেছে। আশেপাশের মেয়েরা সব গল্পগুজব করছে। সে কেবল হাতের নোটটার দিকে কিছুক্ষণ চাইছে আর মাঝে মাঝে আমার দিকে ভ্র্যকুটি করছে। কারণ কিছু না বুঝতে পেরে আমার অস্বস্তি আরো বাড়তে লাগলো।
তখনই কোচিং এর গেটটা খুলে গেল আর হৈচৈ করতে করতে আগের ব্যচের ছেলে মেয়েরা বের হতে শুরু করলো। ভীড় কিছুটা কমে গেলে এবার ঢোকার জন্য ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে করে দিলাম। কে আগে পিছনের বেঞ্চে যায়গা নিতে পারে,তার জন্যই সবাই মরিয়া। কখন যে মেয়েটার ঠিক পাশে চলে এসছি খেয়াল নেই। কানে হঠাৎ একটা রিনরিনে কন্ঠ আসতেই চমকে পাশে তাকালাম। দেখি মেয়েটা বলছে,"এটাকি তোমার চাদর?" আমি তো অবাক,"আমার নাতো কার?" "এটাতো মেয়েদের চাদর,তুমি পরসো কেন?"
"কি?"
"হ্যাঁ,ঠিক এরকম একটা চাদর আমার আম্মু ইউজ করেন"
আমি নিচের দিকে তাকিয়ে চাদরের আঁচলে সোনালি সুতায় ফুলের ডিজাইনের দিকে তাকিয়ে ভাবলাম,তাই বোধ হয়। এটা আম্মুর আলমারি থেকে নেয়া।
"হতে পারে,ব্যাপার না। তোমার নাম কি?"
মেয়েটা ততক্ষণে ক্লাসে ঢুকে পড়েছে। সেদিন আর কথা বলার চান্সই পেলাম না। সত্যি কথা বলতে মেয়েটার সাথে আর দেখাই হল না।
কেন জানি আমি আর ঐ কোচিংযে আর যাওয়া হয়নি আমার। আমি কিন্তু এখনো ঐ চাদরটা গায়ে দেই। কিন্তু কেউ আর পেছন থেকে ডেকে বলে না,"তুমি এখনো এই মেয়েদের চাদর গায়ে দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছো? সমস্যা কি তোমার?"
©somewhere in net ltd.