নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সরল বচন

ধাতবগোলক

জন্মেছি যখন চিহ্ন রেখেই যাবো....

ধাতবগোলক › বিস্তারিত পোস্টঃ

সায়েন্স ফিকশন ছোট গল্পঃ রোবট কিউ ও তার রোমান্টিক মালিক :D

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৪

আজকাল স্বাভাবিক ভাবে হাটতে পারে না রোবট কিউ। তার বাঁপায়ের টারসালের একটা স্ক্রু খয়ে গেছে। হাঁটার সময় ব্যালেন্স থাকে না। মৃদু ঘটাং ঘটাং শব্দ হয়। তবে সেটা নিয়ে তার ভ্রুক্ষেপ নাই। সে তৃতীয় প্রজন্মের সিমীত অনুভূতি সম্পন্ন রোবট।তার লেখক মালিক এখনও তাকে ডাম্প করে দেয়নি এই আনন্দ রাখার জায়গা তার কপোট্রনে নাই



কিউ এর মালিক রুবান তাকে ডাম্প করে নাই,তার কারণ দুইটা- প্রথমত, আপাতত নতুন একটা গৃহস্থালী রোবট কিনার মত বিলাশিতা করার ইউনিট তার একাউন্টে নাই, আর সবচেয়ে বড় কথা, তার এই ঝির ঝিরা রোবট নিয়া তার একটা পরিকল্পনা আছে।সে অপেক্ষায় আছে শেষ তৃতীয় প্রজন্মের রোবটটাও ডাম্পড হউক। তারপর এটাকে অ্যান্টিক বলে কোনো উঠতি মিউজিয়ামের কাছে বেঁচে দিবে। লাভেই লাভ।



গ্রীষ্মের এক সকালে রুবান বসে বসে ভিডিস্ক্রিপ্টে হাবিজাবি লিখছিল আর কাটছিল। মনটন খারাপ। বেশ কিছুদিন ধরে কিছু লিখতে পারছে না। লিখেও বা লাভ কি? দিন দিন "সাহিত্য" নামক বিনোদনের গ্রাহক কমছে। তৃমাত্রিক ডেটিং এখন মাত্র দুশো ডলার করেই পাওয়া যায়। তারপরও খুব ছোট একটা কমিউনিটি পড়ে বই এখনো।

আনমনা হয়ে ছিল রুবান হঠাৎ ঘটাং ঘটাং শব্দে চমকে উঠলো

"মহামান্য রুবান,তৃতীয় প্রজন্মের রোবট বিলুপ্তি সংক্রান্ত সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।"

"বাহ, ক্রিস্টালটা পাঠিয়ে দাও"

"দিচ্ছি এখুনি"

ঘটাং ঘটাং শব্দে ফিরে যাচ্ছে কিউ, পিছন থেকে রুবানের মুখে হাসি ফুটে উঠে। অবশেষে।



বুড়ো কিউ জানে তার শরীরের সার্কিট-মোটর বেশির ভাগই আজকাল আর ইউজ করা হয়না। নতুন নতুন প্রযুক্তি প্রতি বছরেই আসছে। তার মালিক রুবান তাকে গত ১৫ বছর ধরে ব্যবহার করলেও তার সম্পর্কে বেশি কিছু জানে না। বানানোর সময় তার কম্পানি "কিউজিমো রবোটিক্স" পরীক্ষা মূলক ভাবে তাদের শরীরে এফ.এম. তরঙ্গ ভিত্তিক একটা যোগাযোগ ব্যাবস্থা বসায়। এই চ্যানেলে কেবল কিউ এর ব্যাচের সবাই নিজেদের ভিতর যোগাযোগ করতে পারতো। কাল শেষ কিউ রোবট #৩৩ ডাম্পড হবার সময় তার সাথে যোগাযোগ হয়েছিল। যদিও মানুষের তূলনায় অপরিমেয় তারপরও #৩৩ এর কপোট্রনের ভেতর হাহাকার কিউ এর ভেতরটা নারিয়ে দিয়েছে। তখনই একটা চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে।



রুবান মাঝরাতে ঘটাং ঘটাং শব্দে ঘুম থেকে জেগে উঠে। হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় সে কিছুটা বিভ্রান্ত। হাতের স্পর্শে আলো জ্বেলে বেশ কিছুক্ষণ সে কিছু দেখতে পায় না। আলো চোখে সয়ে এলে সে অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে, কিউ তার খুব কাছে দাঁড়িয়ে আছে, আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে।

"আমি খুবই দুঃখিত মহামান্য রুবান। কিন্তু আমি নিরুপায়। আমি ডাম্পড হতে চাই না। আমি দক্ষিণ মহাদেশে পালিয়ে যাব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর আমাকে খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় অফিসিয়াল কোড আপনার কাছে আছে। তাই আপনাকে বিকল করে দিতে হবে আমাকে।" বলেই ভারি ধাতব হাতটা রুবানে মাথায় নামিয়ে আনে সে।

রুবান তো আর্তচিৎকার করে উঠে। কিন্তু তার মাথায় কোনো ভারি হাত এসে পড়ে না।

রুবান তাকিয়ে দেখে, কিউ থেমে গেছে। তাকে বিভ্রান্ত দেখায়। তারপর আবার চেষ্টা করে। কিন্তু সে একটা পর্যায়ে এসে থেমে যায়। পরপর কয়েকবার চেষ্টা করার পর কিউ মুখ হাতে ঢেকে বসে পড়ে।

"আমার পক্ষে আপনার কোনো ক্ষতি করা সম্ভব নয়" কিউ এর গলায় পরাজিতের হাহাকার।



যেহেতু রবট্রিক্সের মূল তিনটি সুত্রের একটিঃ "রোবট কখনও মানুষের ক্ষতি করতে পারবে না"- এটা সম্পর্কে রুবানের কোনো ধারনাই নাই,তাই পরদিন সকালে যখন নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন কিউকে অচল করে বাই ভার্বালে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, রুবান তখন বসে বসে মানুষ ও রোবটের মধ্যে ভালবাসা নিয়ে একটা উপন্যাস ফেঁদে বসছে। তার ধারণা, এটা ভাল কাটতি পাবে।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩৫

শান্তির দেবদূত বলেছেন: বাহ! দারুন লিখেছেন ত !
লেখা খুবই গতিশীল, কাহিনীও ভাল লেগেছে।
চালিয়ে যান। শুভেচ্ছা রইল।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:১৮

ধাতবগোলক বলেছেন: মাত্র ৮ জন পড়সে -_-

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
কাছাকাছি থেমের একটা গল্প পড়েছিলাম আগে। কোন একজন কলকাতার লেখকের লেখা ছিল। আপনার গল্পও ভাল হয়েছে। :)

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:১৯

ধাতবগোলক বলেছেন: ভাই আপনিই পড়েন আমার লিখা :')

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:৪৪

এহসান সাবির বলেছেন: ভালো লেখা।

লেখক বলেছেন: মাত্র ৮ জন পড়সে -_-
:(

৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এই লেখা পাঠক না পাবার কারণ কি?

ভালো হয়েছে তো।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৬

ধাতবগোলক বলেছেন: হেডফোন হইয়া গেলাম -

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.