![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শেখ মুজিবুর রহমান এই দেশের সব থেকে জনপ্রিয় নেতা। জীবনের শুরু থেকেই তিনি কাজ করে গেছেন দেশের মানুষের জন্য। তবে জীবনের শেষ দিকে এসে তিনি এমন সব কাজ করেছে যা তাকে মানুষের চোখেই ভিলেন হিসাবে উপস্থাপিত করেছে। একজন জনপ্রিয় নেতা থেকে কিছু ক্ষেত্রে তিনি হয়ে উঠেছিলেন স্বৈরশাসক। তাঁর এই রূপান্তরের পেছনে রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি যেমন বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে উজ্জ্বল ছিলেন, তেমনি তাঁর শাসনকালে কিছু সিদ্ধান্ত তাঁকে সমালোচনার মুখে ফেলেছে।
শেখ মুজিবের জনপ্রিয়তার শিকড় গভীর এবং তা ১৯৪০-এর দশক থেকে শুরু হয়। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রামে অংশ নেন। ভাষা আন্দোলনে শুরু থেকেই তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এই কারণে তাকে জেলেও যেতে হয়। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে শক্তিশালী করেন। এই দাবি বাঙালি জনগণের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন লাভ করে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় অর্জন করে, যা তাঁকে পূর্ব পাকিস্তানের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর নেতৃত্ব ছিল অতুলনীয়। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেন, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়। স্বাধীনতার পর তিনি একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং তাঁর জনপ্রিয়তা তখন তুঙ্গে ছিল।
কিন্তু ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তাঁর শাসনকালে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত ও পরিস্থিতি তাঁর ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল ১৯৭৫ সালে বাকশাল (বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করা। এর ফলে অন্যান্য রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হয় এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এই পদক্ষেপকে অনেকে স্বৈরশাসনের দিকে যাওয়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখেন। যে গনতন্ত্রের জন্য, দেশের মানুষের অধিকারের জন্য, এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে দেশের ক্ষমতা অর্পনের জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন সেই তিনি নিজে সকল গনতান্ত্রিক পথ বন্ধ করে দিয়ে একক দলের রাজনীতি শুরু করেন। ইতিহাসে এর থেকে বড় আইরনি আর কী হতে পারে? এছাড়া, সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। এই ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি নির্বাহী, আইন প্রণয়ন, এবং বিচার বিভাগের উপর অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতা পান। এটি গণতান্ত্রিক ভারসাম্যকে দুর্বল করে এবং তাঁর শাসনকে কেন্দ্রীভূত করে তোলে।
শেখ মুজিবের শাসনকালে অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জও তাঁর জনপ্রিয়তাকে ক্ষুণ্ণ করে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি, অবকাঠামোগত সংকট, এবং খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখি হয়। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ এই সংকটকে আরও তীব্র করে। তাঁর সরকারের সমাজতান্ত্রিক নীতি, যেমন শিল্প ও ব্যাংকের জাতীয়করণ, প্রাথমিকভাবে জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে গ্রহণ করা হলেও, দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির কারণে তা অর্থনৈতিক স্থবিরতার দিকে নিয়ে যায়। এই ব্যর্থতা মধ্যবিত্ত ও ব্যবসায়ী শ্রেণির মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।
এছাড়া, তাঁর শাসনকালে রাজনৈতিক দমন-পীড়নের অভিযোগ উঠে। রক্ষীবাহিনী নামক একটি আধাসামরিক বাহিনী বিরোধী রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, এবং ভিন্নমত পোষণকারীদের দমনে ব্যবহৃত হয় বলে অভিযোগ করা হয়। এই বাহিনীর কার্যক্রম জনমনে ভয় ও অসন্তোষের জন্ম দেয়। সংবাদপত্রের স্বাধীনতাও সীমিত করা হয়, মাত্র চারটি সংবাদপত্র বাদ দিয়ে অন্য সব সংবাদ পত্র নিষিদ্ধা করা হয়। মত প্রকাশের সকল মাধ্যমকে গলা টিপে মেরে ফেলা হয়।
তবে, শেখ মুজিবের সমর্থকরা যুক্তি দেন যে, তিনি একটি অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেশ পরিচালনা করছিলেন। স্বাধীনতার পর দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সংকট, এবং আন্তর্জাতিক চাপ ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, একদলীয় শাসনব্যবস্থা দেশে স্থিতিশীলতা আনবে এবং অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ত্বরান্বিত করবে।
২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:৫৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এ পথের পথিক@ভারত শেখ মুজিবুর রহমান কে বাকশাল কেন গঠন করতে বলবে? বাকশাল গচ্ছে সমাজতন্ত্রের একটা ভারসন যেটা এখন চীনে চলছে, কিউবায় চলছে । সে সময়কার সোভিয়েত ও সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো থেকে পরামর্শ নিয়ে বাকশাল গঠিত হয় অনেকটা চায়নিজ কমিউনিস্ট পার্টির মতো। কিন্তু সেটা চীনের মতো সাসেক্স না হয়ে তালেবানদের মতো হয়ে যায়। তালেবানদের মতে তারাই আফগানিস্তান চালাবোর যোগ্য উত্তরসূরী আর আম্লিকের মতে তারা !
ভারত শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার সাথে জড়িত থাকতে পারে। কারণ যদি বাংলাদেশ সমাজতন্ত্রের দিকে মুভ করতো ভারতের বিপদ ছিলো। কারণ ডোমিনো ইফেক্ট !
আপনি বলতে পারেন যে, শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার পিছে ভারতের ভূমিকা আছে।
৩| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:২৭
এ পথের পথিক বলেছেন: কুতুব সাহেব আপনি যে ক্লেইম করেছেন করেছেন সেটা চুড়ান্ত সত্যতা নির্নয়ের কোনো পথ ও পদ্ধতি নেই ঠিক আমি যে ক্লেইম করেছি ঠিক আমার ক্ষেত্রেও এমনি । আমরা হয়ত বলতে পারি এমন এমন কিছু কাজ করেছিল অথবা এমন কিছু হয়েছিল তাই সে এমন করেছে, এসব দাবি করা মানে তা চুড়ান্ত সত্য হয়না ।
যাইহোক আপনার সাথে আলোচনায় আমি আগ্রহী না ।
৪| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:১৪
নতুন বলেছেন: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরকে ২০২৪ এ অপমান করেছে জামাতীরা। যদিও ১৬ বছর আয়ামীলীগও বঙ্গবন্ধুর ইমেজ বিক্রি করে খেয়েছে। তাকে ছোট করেছে।
১৯৭১ এ পাকিস্তানীদের ২৫ মার্চ আক্রমনে বাধ্য করতে শেখ মুজিবরের ভুমিকার কথা সবার স্বীকার করতে হবে।
ভারতীয় বাহিনি বাংলাদেশ থেকে ফেরত পাঠাতে শেখ মুজিবরের ভুমিকা সবাইকে স্বীকার করতে হবে।
দেশে পাকিপন্হ্রীরা বেশি স্বাধীনতা পেয়ে গেছে। জামাতীদের ১৯৭১ এ কথা শুনে হাসি পায়।
৫| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৩:৪২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আরো পড়াশোনা করুন।
৬| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: শেখ মুজিবের নাম নেওয়ার আগে ওজু করা উচিৎ।
১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়। তাকে হত্যার পর সমস্ত বাঙ্গালীর কপাল পুড়ে। তা আজও অব্যহত আছে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:০১
এ পথের পথিক বলেছেন: স্বৈরশাসক মজিবর ভারতের মদদে বাকশাল কায়েম করেছিল, অথচ তার উচিত ছিল জনতাকে বুঝে জনতার জন্য রাজনীতি করা ।
বর্তমানে আম্লিক যে পরিমাণ মজিবরের তোষামোদ করে তা অতিরঞ্জিত, মিথ্যা ।