নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি তোমাদেরই

আশমএরশাদ

শিশিরের শব্দের মত

আশমএরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারী দিবসের বুলেট কথন

০৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৫১

১। আমার বন্ধু তালিকার বেশীর ভাগ পুরুষ বন্ধুই নারী দিবস দেখিয়া নাসিকা উঁচু করিয়াছে এবং বলিতে চাহিতেছে - পুরুষ দিবস নাই অথচ কোথাকার কোন নারী দিবস? অনেকটা এইরকম বসের গাড়ী নাই আর পিয়ন হয়ে গাড়ি সুবিধা চাও। :)
২।অনেক পোস্ট পড়িয়া মনে হইলো আমার পুরুষ বন্ধুরা অংকে কাঁচা। তারা বেশীর ভাগই মোট অধিকার ১০০ মনে করিয়া ভালো অধিকারের ৫০ ভাগ নিজের কাছে রাখিয়া বাকী ৫০ ভাগ নারী মহলকে দিতে চাহিতেছেন। বেশীর ভাগই অধিকার এবং বন্টনকে আলাদা করিতে পারিতেছে না। তাহারা যদি এটা ভাবিতো দুই মানুষ্য বিভাগের মধ্যে পুরুষের অধিকারের পাশ মার্কও ১০০ এবং নারীর পাশ মার্কও ১০০।
.
৩। বেশীর ভাগ ধর্ম এবং বেশীর ভাগ পুরুষ নারীকে সব সময় ভয় পায়। বিশেষত সেই পুরুষ যারা নারীকে ধরে রাখতে পারবে না এমন ভয়ের মধ্যে থাকে। সাপ তখনই ছোবল মারে যখন সে বিপদ আঁচ করতে পারে। অধিকাংশ বাণী আদেশ নিষেধ নারীর জন্য বরাদ্দ। লক্ষণীয় বিষয় হইলো মধ্যবিত্ত বাংলাদেশী পোলাপান পানির আনবিক সংকেত না জানিলেও নারীর পোশাক আশাক বিষয়ক সকল আয়াত হাদিস মুখস্ত রাখে । (একদিন বাসে বসিয়া পিছনের সীটের ডিজুস পোলাপানের আলাপ শুনিয়া)।
৪। আজকে সকালে টেবিলে রাখা ছিলো সমাজ কর্মের বই "নারী ও পরিবার কল্যাণ" বিষয়ক একখানা পুস্তক। বইয়ের প্রথম পাতার কয়েকটি লাইন দেখেই আমি অবাক হয়েছি। লিখক নারী কল্যাণ বিষয়ে বই লিখেছেন অথচ তিনি পুরুষকে কেন্দ্রকরেই নারীকে ভেবেছেন। নারীর অধিকার গুলাকে তিনি ন্যায্যতার পাল্লায় না মেপে পুরুষের সাথে মাপার সহজাত পুরুষালী মেন্টেলিটি ত্যাগ করতে পারেন নাই। তিনি প্রথম লাইনটা এভাবে লিখতে পারতেন "নারী সামাজিক জীব।" অথচ তিনি লিখেছেন --"নারীরা পুরুষের মতো সামাজিক জীব। নারীরা পুরুষের পাশাপাশি থেকে সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। নারীর অবদানকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। উন্নত দেশ সমুহে নারীরা পুরুষের ন্যায় সমধিকার ভোগ করলেও "----- মাঝখানের লাইনটা দেখে মনে হলো অবদান গুলাকে অস্বীকারের সুযোগ থাকলে তিনি তা করতেন। :)
.
৫। "অধিকার" জিনিসটাই অনেক জটিল টার্ম। সেখানে নারী অধিকার নিয়ে গোলমাল পাকানোটা অস্বাভাবিক নয়। বাসের সংরক্ষিত সীট, পত্রিকার নারী পাতা, জিন্সের প্যান্ট, "হুয়াই নারী দিবস" এই সব হালকা টার্ম গুলাই দেখছি নারী দিবসে সমাজিক মাধ্যমের আলোচনার প্রতিপাদ্য। সংবিধানের তৃতীয় ভাগের এই অংশটি (৪) নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান-প্রণয়ন হইতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না। এটা পড়িয়াও কি মনে হয় না কেন নারী দিবস পালন করা না জায়েজ নয়?
৬। সমান অধিকার বিষয়টি আমার কম পছন্দের - বলা উচিত ন্যায্য এবং সর্বোত্তম অধিকার। বাসের সংরক্ষিত সীট অন্যের অধিকারে ভাগ বসানো নয় বরং অনিবার্য প্রাপ্যতা। আইন অনিবার্য প্রাকৃতিক বৈশিষ্টের সাথে সংঙ্গতি রেখেই হয়। শারিরীক কারণে এই ন্যায্যতাকে কে অস্বীকার করে? দাঁড়িয়ে যাওয়ার মতো সুযোগ এবং কাঠামোর স্বল্পতার কারণ থেকে উদ্ভুত। পুরুষদের মনোপলির কারণে ভর্তুকি মাত্র যেটা ন্যায্যতার সাথেও সঙ্গতি রাখে।
.
৭। ইসলামী ব্যাংকে সম্প্রতি কিছু পরিবর্তন হয়েছে তাই আশা করি আগের নারী নির্মুল মনোভাব তারা কিছুটা কভার করবে । একটি পোস্টের (Nishom Sarkar ) তথ্য মতে বর্তমানে ম্যানেজার পোস্টে আছে ২০০জন। এর মধ্যে নারী ০ জন, নন মুসলিম ০ জন। মোট ৫৯৬টি পদের মধ্যে নারীর অংশগ্রহণ ১.০০৭% অর্থ্যাৎ সিনিয়র ৫৯৬ জনের মধ্যে ৬ জন মাত্র নারী। এই চিত্র শুধু ইসলামী ব্যাংকের একার নয় অনেক ব্যাংক এবং প্রতিষ্টানেরও। ব্যবধানটা বেশী বলেই উদাহরণ হিসাবে দিয়েছি। অথচ বর্তামানে দেখা যায় মেয়েরা মেধায় এগিয়ে। জিপিএ ৫ বেশী পাচ্ছে ছেলেদের [মোবাইলবাজ খতরনাক :)] তুলনায়।
৮। পুরুষরা মনে করে অধিকার তারা অনেক বেশী দিচ্ছে। ভুল এখানেই। অধিকারের সংরক্ষক তারা নয়, অধিকারের মহাজন তারা নয়। অনেক নারীদের মধ্যেও এই ভুল আছে। পুরুষদের থেকে অধিকার ছিনিয়ে নেয়ার কথা তারা বলেন বিপ্লবী তরিকায়। অধিকার আদায় করে নিতে হয় এই কথাটাও ঠিক না, অধিকার অর্জন করতে হয় এই বাক্যটাই সঠিক বলে মনে হয়।
.
৯। নারী নির্যাতনটা যতটা না নারী পুরুষের বাতচিত বলি তার চেয়ে বেশী বলা উচিত শক্তি সামর্থের। শক্তিমানরা যুগে যুগে দুর্বলের চুলের মুঠি ধরেছে, নির্যাতন করেছে। কোন একটা জায়গায় শক্তিমান চলকটি যদি নারী হয় তাহলে সেখানেও পুরুষ নির্যাতন হবে। হরিণকে হয় দৌড়াতে হবে জোরে অথবা শক্তিমান হতে হবে বাঘের ন্যায় । এই জন্য রোকেয়া আপা অনেক আগেই বলে গেছেন লেখাপড়া করো মেকাপ না করো। তসলিমা আপা ডিরেক্ট একশনে বলে গেছেন, হাতে হাতকড়া (চুড়ি) পায়ে শিকল (নুপুর) পড়িয়া নির্যাতকের কাছ থেকে কিসের মুক্তি চাও হে মেয়ে?
.
১০। এই পোস্টের লিখক অধিকার নিয়ে সচেতন / বঞ্চিতদের নিয়ে সচেতন সেটা যারই হোক। লেখক সর্বাঙ্গিন সমতায় বিশ্বাসী। ধনী গরীব নারী পুরুষ সর্বক্ষেত্রে। ব্যাক্তি জীবন যেহেতু সমাজ জীবনের সাথে আপোষ করে চলে তাই এই লিখকও সেই আপোষটা করে যদিও মর্মে যাতনা পোষে। লিখক এটলিস্ট ফিল করে যে নারী ওয়েলফেয়ার জরুরী নয় অত্যাবশ্যক। মাইয়া মাইনষের মতো আচরণ করছো কেন বলে হেয় করে না অন্তত এই লিখক। আমার মাও মাইয়া মানুষ ছিলো । আমি অধিকারবাদী, ন্যায্যতা বাদী। তথাকথিত মৌকিখ নারী বাদী বলিয়া অশেষ লজ্জা দিবেন না। দিলে "দিলে" দাগ লাগবে। :) অধিকারের বিবর্তনের পথে লিখকও পা মেলানোর চেষ্টা করছে মাত্র।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: টিক টক টিক টক টিক টিক ........ সময় বড় শক্ত হেডমাস্টার

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.