![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রথমেই বলে রাখি আমি নিজে কাশেম সাহেবের ভক্ত নই। তিনি আমার পছন্দের কোন লেখকই নন। তার একটা দুটা বই চলতি পথে পড়েছিলাম বোধহয়। পুরা কোন বই পড়া হয়নি বলেই আমার মনে পড়ে। গতকাল পর্যন্তও আমি তার ব্যাপারে নাক উঁচু ভাব নিয়ে কমেন্ট করেছি, পোস্ট দিয়েছি। তার পাঠকদের মধ্যে জামাত শিবিরের পোলাপাইন বেশী ছিলো বলে মনে করতাম সে জামাতি। পরে অবশ্য বুঝতে পেরেছি ইসলাম মানে শুধু জামাত ইসলাম নয় এবং তিনিও ইসলাম সম্পর্কে খুব বেশী আপগ্রেড ধারনা রাখতেন না। তিনি ইসলামী স্কলারও নন।
নানা জনের নানা লিখা, লিখার নীচে কমেন্ট সব পড়ে আমার নিজের কাছে যে সারাংশটা তৈরী হয়েছে তা নিয়েই লিখতে বসলাম। ভাবছিলাম এসব ছোট ব্যাপার নিয়ে লিখবো না। আবার ভাবলাম এটা আসলে সিলি ম্যাটার না। এটা সাহিত্যের এতদিনের বনেদী ঘরের সব গুলা খুটিকে খান খান করে দেয়ার মতো। এটা সাহত্যের এক তরফা ঘরের মধ্যে আরেক তরফা মেরুকরণ।
প্রথম কথা হলো টোটাল বিষয়টাতে কাশেম বিন আবু বাকার দায়ী কিনা? তিনি নিজে যেচে বিশ্বমিডিয়ার কভারেজ পেতে চেয়েছেন কিনা? তিনি নিজে কখনো নিজেকে খুব বেশী মুল্যায়ন করেছেন কিনা? এসব প্রশ্নের সবক'টি উত্তরেই আমি কাশেম বিন আবু বাকারকে দায়ী করতে পারি নাই।
এবার আসা যাক - তিনি যা লিখেছেন তা কি খুব আপত্তিকর? এমন যৌনতা বা ধর্মাবরণ কি আগে কেউ কখনো লিখেন নি? যদি ধরে নেয়া হয় ধর্মের বিরুদ্ধেও লিখা যায় তাহলে ধর্মের পক্ষেও লিখা যায় । তাহলে এখানে কাশেম সাহেবের দোষ কোথায়? ইন্ডিয়ান ফিল্ম যদি ড্রইং রুমে বসে দেখা যায়। অবাস্তব বস্তাপঁচা কাহিনী দ্বারা নির্মিত ভুতু মুতু ইন্ডিয়ান সিরিয়াল যদি দেখা যায় তাহলে কাশেম সাহেব সেই সত্তরের দশকে যেখানে সেভাবে বোদ্ধা পাঠকই তৈরী হয়নি, তিনি নিজেও বিকশিত হতে পারেননি সে সময়ের লিখা বই গুলাতে সাহিত্য মুল্য খুঁজে লাভ কি? শরীয়ত সম্মত প্রেম বা একটা অনৈতিক বিষয়কে নৈতিকতার মোড়কে পাঠককে গিলতে দেয়া নিয়ে যে অভিযোগ করা হয় তার বিরুদ্ধে। সেটা বলে কি আমরা ধর্মবাদীদের উস্কে দেবো? ধর্ম অবমানানার জন্য শামীম উসমানীয় ডায়লগ দেবো? নাকি লিখকের ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশনকেই এগিয়ে রাখবো?
ধরে নিলাম তিনি ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করেছেন। কে কি নিয়ে ব্যবসা করছেন না? সিটিং সার্ভিস নাম দিয়ে ব্যবসা করছেন, ধর্ম নিয়ে রাষ্ট্রদোহী জামায়াত রাজাকারের রাজনীতি করেছেন এমনকি মন্ত্রী পর্যন্ত হয়েছেন, সেখানে পাঠকের ইন্টারেষ্টকে পুঁজি করে তিনি এমন কি জঘন্য অপরাধ করেছেন? যেহেতু এখানে কাউকে বাধ্য করা হয়নি বই পড়ার জন্য তাহলে তিনি কিভাবে দায়ী হন ? রাজনৈতিক আদর্শ গিলানোর জন্য হাজার হাজার বিখ্যাত লেখক বই লিখেছেন। কমিউনিজম সাহিত্যের হাত ধরেই মুলত এগিয়েছে। আমি নিজে মনে করি বই লিখা একটা নিরিহ কাজ। সেটা আস্তিক্যবাদ হোক আর নাস্তিক্যবাদ হোক। আমি নিজে যে কোন একটা বাদের সমর্থক হলেই অন্যবাদের লোকের কল্লা নামিয়ে ফেলবো সেটা আমি মেনে নিতে পারি না।
এখন বিশ্বমিডিয়ার নজরে উনি কিভাবে গেলো সেটা নিয়ে কথা হতে পারে। কে নিয়ে গেলো কারা নিয়ে গেলো কেন নিয়ে গেলো সেটা নিয়ে নানা কথা হতে পারে। আগেই বলেছি এই কলকাটির পিছনে উনি নিজে খুব একটা জড়িত বলে আমার মনে হচ্ছে না। পিনাকীর একটা পোস্টেই কাশেম বিন আবু বকর সামাজিক মিডিয়ার নজরে আসে বলে আমার মনে হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো পিনাকীর স্বার্থ কি? হ্যাঁ পিনাকী এখন খ্যাতির রোগে, জনপ্রিয়তা মোহে ভুগছেন। তিনি নিজে রেড ওশানে জন্ম নিলেও তিনি এই মুহুর্তে রেড ওশান ছেড়ে তিনি ব্লোওশান তৈরীতে ব্যস্ত । কারণ রেড ওশানে অনেক হাঙ্গরের কামড়াকামড়ি এবং লাইক ফলোয়ারের বড় অভাব। তাই তিনি চমকে অভ্যস্ত। তিনি ডানের পিলার গড়ে দিতে চান। নিজে ডান না হয়েও ডানের হিরু হতে চান। তেনার মতই কাশেম সাহেব এদেশের এ্যামেচার পাঠকদের ইন্টারেষ্ট বুঝেছিলেন বহু আগেই। বলছি না এসব দোষের বলছি এসব আসলে বুঝার। বাম বা মধ্যপন্থায় লিখকের অভাব নেই হুমায়ুন আহমেদ জাফর ইকবাল আনিসুল হক সহ কয়েক সহস্র লিখক ডানের বিপরীত পাশে থাকলেও ডানে খ্যাতিমান লিখক শুন্য ছিলো । খ্যাতিমান হলেও প্রচার শুন্য ছিলো। হুমায়ুন গংদের প্যারালালে পিনাকীর এবং রাজনীতিতে ভিন্নভাবে প্রবেশের জামাতী প্রচেষ্টাই হলো কাশেম সাহেবকে লাইম লাইটে আনা। কাশেম সাহেব এমনিতেই গ্রামের পাঠকদের লাইম লাইটে থাকলেও মিডিয়ার লাইটে আনার জন্য যারা কাজ করেছেন তাদের ভিন্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে । আবেগে নয় সাহিত্যের রাজনৈতিক মেরুকরণ এবং ভারসাম্যের জন্য তারা গ্রামের ব্যাপক পাঠক প্রিয় কাশেম সাহেবকে নতুন করে ইট পাথরের নগরে পরিচয় করিয়ে দিতে চান। তাদের এই প্রচেষ্টায় এক মাত্র বাঁধা হতে পারে বর্তমান সময়। কারণ আশির দশকের যুবকের মধ্যে যে শাবানা লাইলির পুতু পুতু আবেগ সেটা আর নাই। এখন গ্রামের বাড়িতেই আছে ডিশ , টং দোকানেও চলে ইমরান হাসেমির সিনেমা। এখন রং নাম্বারে ডায়াল করলেই বোরকাওয়ালী লাইলিরা বোরকা ফেলে চলে আসে মধু নাগরের কাছে ওয়েস্টার্ন ড্রেসে। বোরকা পড়া এবং খোলার মধ্যে এখন সময়ের ব্যবধান অনেক কমে গেছে। এখন ওয়ান এক্স বইয়ের হালাল সেক্স পড়ে অবদমন করা লাগে না। প্যাকেজে কেনা অল্প মুল্যের ডাটায় ই্উটিউব চালালেই বাংলা সাহিত্যের এ যাবৎ যত লিখক হালাল বা হারাম ভাবে সেক্সকে লিখেছেন সবই আঁধাঘন্টায় পাওয়া যায়। বালিশের নীচে চটি বই রাখার প্রয়োজন এখন মুলত নাই। সম্ভবত সে কারণে কাশেম বিন আবু বাকার ও আর লিখেন না অথবা লিখার উৎসাহ পান না।
আমরা আশির দশকের একজন লিখকের এ্যামেচার পাঠক ধরার চিরায়ত কৌশল নিয়ে অনেক কথা বলছি। কৌশলটির বেশ পরিস্কার - মধ্যবিত্তের হালকা রক্ষণশীলতা, হালকা যৌনতা এবং মধ্যবিত্তের সংশয় মাখা ফ্যান্টাসিজম রোমান্টিসিজমের ভয়কে জয় করিয়ে দেয়ার কৌশল। ব্যবসার জন্য গ্রাহকের মন বুঝে প্রডাক্ট তৈরী করা কি খুব অন্যায়? এই বলার মধ্যে ঈর্ষা আছে, তাচ্ছিল্য আছে। বনেদী ঘরে গ্রাম্য লোকটি কাদা মাখানো পা দিচ্ছে কেন সেটা নিয়ে অহেতুক ভয় আছে।
২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:৫২
চাঁদগাজী বলেছেন:
মোটামুটি বকবক
৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৪৯
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমি ক্লান্ত...
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:৪০
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আমি অবাক হয়েছি dailymail.co.uk তে খবর পড়ে।
এখন আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে এমন কেন হলো জানার জন্য।