নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিম্বারের আহবান

আবু সাঈদ মুহাম্মদ নু’মান

আবু সাঈদ মুহাম্মদ নু’মান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবুল হাসান আলী নদভির দৃষ্টিতে দাওয়াত ও তাবলিগের মূলনীতি

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪৯

মহান আল্লাহ সাইয়্যেদ আবুল হাসান আলি নদভি রহ. এর কবরকে জান্নাতের বাগিচা বানিয়ে দিন। তিনি কত বড় মুফাক্কিরে ইসলাম ছিলেন, তা বোঝার জন্যে নিন্মের চয়িতাংশ পড়ে দেখুন। চোখ বা দৃষ্টি তো সবারই আছেন; কিন্তু সত্যিকারের দূরদৃষ্টি ক’জনের আছে! নিজের পরিমণ্ডল ও চেনাজানা পরিবেশের ঊর্ধ্বে উঠে মহাকাল পর্যবেক্ষণের এই বিরল প্রতিভাকেই তো ‘বসিরত’ বলে। কালান্দার বা আল্লাহওয়ালা বুযুর্গগণের এই বসিরতদীপ্ত হিদায়াত যদি আমরা এড়িয়ে যাই তাহলে সেটা হবে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তির নীরব হত্যা।
বিশেষত দ্বিতীয় প্যারা পড়ুন আর এর আলোকে আমাদের বর্তমান সময় নিরীক্ষণ করুন, আমি সত্যি বিস্মিত।
নদভি রহ. লিখেছেন,
‘আল্লাহর দিকে, আল্লাহর দ্বীনের দিকে মানুষকে ডাকা ফরয। এই ফরয দায়িত্ব ব্যক্তিগতভাবে অথবা সম্মিলিতভাবে, ভাষণের মাধ্যমে অথবা লেখালেখির মাধ্যমে, প্রকাশ্যে অথবা নিভৃতে অর্থাৎ যেকোনো ভাবে পালন করা যাবে। এর জন্যে কোনো ধরন নির্ধারিত নেই। দ্বীনের দাওয়াত দিচ্ছেন, এমন প্রতিটি দল বা ব্যক্তির স্বাধীনতা রয়েছে যে, সে তার পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোনো বিশুদ্ধ পদ্ধতি চয়ন করে নেবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তি বা দল যদি নিজ প্রচেষ্টা ও প্রয়াস ব্যয় করার জন্যে কোনো সঙ্গত ও উপকারী পথ অবলম্বন করে তাহলে সেটিকে জায়েয-নাজায়েয ঠাওরানো বা তার ওপর কোনো শর্ত-নিয়মাবলি প্রয়োগ করার অধিকার কারো নেই। এটি তখন যখন তার পথ ও পদ্ধতির মাঝে শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো নিষিদ্ধ বা দ্বীনের মূল লক্ষ্যের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়, এমন কোনো উপাদান যুক্ত না হবে। কাজেই দাওয়াতের পথ-পদ্ধতি চয়ন করার বিষয়টি ব্যক্তির ইচ্ছাধীন ও অভিজ্ঞতাপ্রসূত। কাজেই সব জায়গায় বা সব ব্যক্তির ওপর দাওয়াতের একটি ধরণ নির্ধারিত করে অহিলব্ধ বিধানের মতো চাপাচাপি করা কখনই সঠিক নয়।
আমরা মাঝে-মাঝে অনুভব করি যে, একটি শ্রেণি মনে করে বেড়াচ্ছে যে, ‘তাদের কর্মপদ্ধতিই সঠিক। যারা দ্বীনের খেদমত করতে চায়, তাদেরকে সবসময় ও সব জায়গায় ওই পদ্ধতিই অবলম্বন করতে হবে। এর বাইরে অন্য সব পদ্ধতি ভুল। যতোক্ষণ পর্যন্ত তার বলা বিশেষ পদ্ধতির ওপর অন্যরা কাজ না করবে, তাদের সব চেষ্টা, প্রয়াস ও সাধনা ব্যর্থ। বাইরের সবার সব চেষ্টা নিরর্থক।’ বলার অপেক্ষা রাখে না, তাদের এ মনোভাবে ভারসাম্য নেই। তাদের এই দৃষ্টিভঙ্গি খুবই বিপদজনক।
যুগে যুগে এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই বিভিন্ন দল-উপদল-ফেরকা জন্ম নিয়েছে। হ্যাঁ তার এ ধারণা করার অধিকার রয়েছে যে, এ পর্যন্ত বিভিন্ন জনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা আমাদেরকে যেখানে উঠিয়ে এনেছে, তার আলোকে বলা যায়, আমাদের এ কর্মপদ্ধতি উপকারী।
যতক্ষণ পর্যন্ত এটিকে উপকারী মনে হবে, ততোক্ষণ পর্যন্ত তা চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু যদি কোনো বিশেষ পদ্ধতি প্রথার রূপ নেয় তাহলে তা স্বতন্ত্র ধর্মের রূপ নিতে শুরু করবে। এভাবে বিদআত জন্ম নেয়। যদি কখনো এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তখন আল্লাহওয়ালা সংস্কারকদের দায়িত্ব হবে, তারা তা সংশোধন করার চেষ্টা শুরু করে দেবেন। গজিয়ে ওঠা প্রথার মূলোৎপাটন করবেন। ইতিহাসের পাতায় এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে যে, কোনো কাজ প্রথম দিকে বিশুদ্ধ লক্ষ্য ও দ্বীনের কল্যাণকামিতার উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে সেটি ভুল পথে চলে যায়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে মূল বাস্তবতা ও রুসম, সুন্নত ও বিদআত, বৈধ ও ফরযের মাঝে পার্থক্য করাটাই তাফাক্কুহ ফিদ দ্বীন বা দ্বীনের গভীর প্রজ্ঞার প্রতীক।’
[তাবলীগে দ্বীন কে লিয়ে এক উসুল, খুতুবাতে আলি মিয়াঁ,
পৃষ্ঠা-৪৪২-৪৪৪, খণ্ড- ৫]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.