নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিম্বারের আহবান

আবু সাঈদ মুহাম্মদ নু’মান

আবু সাঈদ মুহাম্মদ নু’মান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পরিচয় : নাজাত প্রাপ্ত দলের পরিচয়

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৩

سم الله الرحمن الرحيم
أهل سنت والجماعت حنفي
الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على سيد المرسلين أما بعد :
সম্মানিত পাঠক! এই পৃথিবীতে অনেকগুলি ধর্ম পাওয়া যায়, কিন্ত এর মধ্যে ইসলামই একমাত্র সত্য ধর্ম। اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللّٰهِ الْاِسْلَامُ ۫ আল্লাহর কাছে মনোনিত একমাত্র দ্বীন ইসলাম” (সুরা আল ইমরান : আয়াত ১৯)
۝۸۴ وَ مَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْهُ ۚ وَ هُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ۝۸۵
যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত। (সুরা আল ইমরান : আয়াত ৮৫)
অনুরূপ মুসলমানদের মধ্যে অনেকগুলি দল পাওয়া যায়, কিন্তু তাদের মধ্যে মুক্তি প্রাপ্ত দল একমাত্র “আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত”। রাসূল সা. এরশাদ করেন:ما أنا عليه و أصحابي (যারা আমার ও আমার সাহাবীগণের আদর্শের উপর থাকবে) অনত্র এরশাদ করেন :عليكم بسنتي و سنة الخلفاء الراشدين المهديين (যারা আমার ও আমার খলীফাগণের সুন্নাতের অনুসরণ করবে)। অনত্র এরশাদ করেন : যারা আমার সুন্নাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল সে আমার উম্মতভূক্ত নয় । অন্য রেওয়াতে আল্লাহর রাসুল সা. সুন্নাত বর্জনকারীকে অভিসম্পাত করেছেন । “আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত” ছাড়া অন্যদের কে আল্লাহর রাসুর সা. জাহান্নামী বলে সাব্যস্ত করেছেন । হযরত আবু সাইদ খুদরী রা. বর্ণনা করেন, রাসুল সা. এর নিকট یَّوْمَ تَبْیَضُّ وُجُوْهٌ ( যেদিন কিছু চেহারা শুভ্রজ্জ্বোল হবে) এ আয়াতের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হলে রাসুল সা. বলেন, যাদের চেহারা কিয়ামত দিবসে উজ্জ্বল হবে তারা হল “আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামাত”। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস থেকেও অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে । রাসুল সা. এরশাদ করেন, হাসান ও হুসাইন রা. ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের” চোখের শিতলতা ।
ব্যাখ্যা :-
রাসুল সা. এরশাদ করেন, হে লোকসকল! আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে গেলাম, তোমরা যদি তা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধর তাহলে গোমরাহ হবে না। একটি হল আল্লাহর কিতাব, অপরটি হল আমার সুন্নাত । কোরাআন আল্লাহর সর্বশেষ ও পরিপূর্ণ কিতাব যাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। রাসূল সা. এই কিতাবের উপর আল্লাহ প্রদত্ত শিক্ষার আলোকে, তারই তত্তাবধানে আমালের যে বাস্তব নমুনা পেশ করেছেন তাকেই “সুন্নাত” বলে অভিহিত করা হয়। এবং এ থেকে ‘আহলে সুন্নাতের” অর্থও স্পষ্ট হয়ে গেল। যারা কোরআনের উপর নিজের জ্ঞান-বুদ্ধি মোতাবেক নয়, বরং রাসুল সা. এর আমলী নমুনা “সুন্নাত” কে সামনে রেখে আমল করে তাদেরকেই “আহলে সুন্নাত” বলে। কেননা শব্দ হবে কোরাআনের আর আমলের নমুনা হবে রাসুলের সা. এটাই বিধি সম্মত।
“ওয়াল জামাত”
কোরআন মাজীদ কে বোঝার জন্য শুধুমাত্র আরবী ভাষা জানাই যথেষ্ট নয়। কোরআনের বিশুদ্ধতম তাফসীর হল রাসুল সা. এর “আমলী জিন্দেগী”। ঠিক তেমনিভাবে রাসুল সা. তাঁর অনাগত উম্মতের রাহনুমায়ীর জন্য এমন একটি ‘জামাত’ তৈরী করেছেন যারা সরাসরি তাঁর তত্ত্ববধানে তাঁর সুন্নাতের উপর আমল করেছেন এবং পরবর্তীদের জন্য রাসুলের সুন্নাতের আমলী নমুনা হিসাবে স্বীকৃত হয়েছেন। তারা যে কেবল রাসুল সা. এর তত্ত্বাবধানে প্রস্তুত হয়েছেন তা নয়, বরং আল্লাহ তায়ালা তার রুবুবিয়্যাতের পরিপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দান করেছেন। এবং رَضِیَ اللّٰهُ عَنْهُمْ وَ رَضُوْا عَنْهُ ؕ ( আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট) এর সার্টিফিকেট দিয়েছেন। রাসুল সা. অনাগত উম্মতকে নির্দেশ দিয়েছেন এই ‘জামাত’ কে আঁকড়ে ধরার (عَلَيْكُمْ بِالجَمَاعَة) এবং যারা এই দল থেকে নিজেকে দুরে সরিয়ে নিবে তাদেরকে শয়তানের ‘শিকার’ বলে অভিহিত করেছেন। এবং ঐ দলছুট বকরীর সাথে তুলনা করেছেন যে বকরী পাল ছেড়ে তার রাখালের তত্বাবধান থেকে পালিয়ে গেল এবং হিং¯্র শ্বাপদের গ্রাসে পরিনত হল ।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া রাহ. বলেন "فأهل السنة والجماعة هم المتبعون للنص والإجماع" অর্থাৎ ‘আহলে সুন্নাত’ হল তারা যারা ‘নস’ (কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতে রাসুলুল্লাহ) ও ইজমার অনুসরণ করে। (মিনহাজুস সুন্নাহ ৩/২৭২)
দ্বীনের পূর্ণতা :
আল্লাহ তায়ালা তার সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ পরিপূর্ণ গ্রন্থ কোরআনে হাকীমে দ্বীনের পরিপূর্ণতার ঘোষনা দিয়েছেন। اَلْیَوْمَ اَكْمَلْتُ لَكُمْ دِیْنَكُمْ وَ اَتْمَمْتُ عَلَیْكُمْ نِعْمَتِیْ وَ رَضِیْتُ لَكُمُ الْاِسْلَامَ دِیْنًا ؕ (আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম, ও তোমাদের উপর আমার নেয়ামতকে পরিপূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য ইসলাম কে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।
দ্বীনের প্রতিষ্ঠা।
রাসুল সা. যে দ্বীন নিয়ে আগমন করেছেন তা ছিল সমগ্র মানবতার জন্য। রাসুল সা. এর জীবদ্দশায় সমগ্র আরবে এ দ্বীন পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু জাযিরাতুল আরবের বাইরে এ দ্বীনকে পৌঁছানোর এ সুমাহান দায়িত্ব সাহাবায়েকেরাম পালন করেন, যারা ছিলেন সুন্নাতের রাসুলের জীবন্ত নমুনা। পবিত্র কোরাআন যার ভূয়োসী প্রশংসায় এভাবে বাঙ্গময় হয়ে ওঠে।
۝۵۴ وَعَدَ اللّٰهُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مِنْكُمْ وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَیَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِی الْاَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ ۪ وَ لَیُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِیْنَهُمُ الَّذِی ارْتَضٰی لَهُمْ وَ لَیُبَدِّلَنَّهُمْ مِّنْۢ بَعْدِ خَوْفِهِمْ اَمْنًا ؕ یَعْبُدُوْنَنِیْ لَا یُشْرِكُوْنَ بِیْ شَیْـًٔا ؕ وَ مَنْ كَفَرَ بَعْدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ۝۵۵
তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসনকর্তৃত্ব দান করবেন। যেমন তিনি শাসনক্ষমতা দান করেছেন তাদের পূর্ববতীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের ধর্মকে, যা তিনি তাদের জন্যে পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে শান্তি দান করবেন। তারা আমার এবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না। এরপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে, তারাই অবাধ্য।
সুতরাং রাসূল সা. এর উপর যে দ্বীনের পরিপূর্ণতা হয়েছিল সাহাবায়েকেরামের মাধ্যমে তা দুনিয়াতে সুসংহত হয়েছিল ও মজবুতভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। এরাই উম্মতের সেই শ্রেষ্ঠ ‘জামাত’ যাদের উল্লেখ আমাদের নামে ‘ওয়াল জামাত” শব্দে উল্লেখ হয়েছে। ‘আহলে সুন্নাত’ ছাড়া কোন বেদআত পন্থি দলের নামে এ শব্দের উল্লেখ নেই আর থাকলেও এর দ্বারা উদ্দেশ্য অবশ্য সাহাবায়েকেরাম নন।
দ্বীনের সংকলন:
কোরআনে কারীমের পরিপূর্ণ ‘আমলী তাফসীর’ হল ‘সুন্নাতে রাসুল’ সা.। সুন্নাতে রাসুলের পরিপূর্ণ নমুনা হল ‘জামাতে সাহাবা’ যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের তত্বাবধানে তৈরী হয়েছিলেন। তাদের মাধ্যমে আল্লাহর রাসূলের সুন্নাত সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। রাসূল সা. ছিলেন হেদায়েতের আকাশে উজ্জ্বল দিবাকর, আর সাহাবায়েকেরাম ছিলেন এক একটি নক্ষত্রের মত। তাদের মাধ্যমেই দ্বীন পৃৃথিবীতে প্রসার লাভ করেছে। কিন্তু এই মোবারক জামাতের জিন্দেগির সিংহভাগ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের ময়দানে অতিবাহিত হয়েছে। তাদের পক্ষে এ সুযোগ মিলেনি যে তারা রাসুল সা. এর যে সুন্নাতকে তাঁরই তত্বাবধানে থেকে আহরণ করেছেন, তাকে পুস্তকাকারে সুবিন্যস্ত করে সহজ থেকে সহজতরভাবে উম্মতের জন্য রেখে যাবেন। যাতে উম্মতের প্রতিটি সদস্য তার প্রিয় হাবীব সা. এর সুন্নাত মোতাবেক সহজভাবে আমল করতে পারে। যা ছিল এ দ্বীনের জন্য একান্ত অপরিহার্য বিষয়। যেহেতু এ দ্বীন কিয়ামত পর্যন্ত অবশিষ্ট থাকবে। দ্বীনের এই সংকলনের কাজ সাহাবায়েকেরাম যদিও হাতে কলমে করে যেতে পারেন নি। কিন্তু তারা এমন একদল লোককে তৈরী করতে সক্ষম হয়েছেন যারা তাদের এই অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করে দ্বীনের এই শূণ্যতাকে পূরণ করেছেন। এবং সাহাবায়েকেরামের জীবদ্দশায়ই এ সংকলনের কাজ শুরু হয়ে যায়। ইমাম আ’জম নু’মান বিন সাবিত আবু হানিফা রহ. সেই সৌভাগ্যবানদের প্রথম ব্যক্তি যার ললাটে আল্লাহ এই সৌভাগ্যের তারকা দ্যাদীপ্যমান করেছেন। পবিত্র কোরাআন ও হাদীসে ইংগিতার্থে যার সুসংবাদ এভাবে বিধৃত হয়েছে।
هٰۤاَنْتُمْ هٰۤؤُلَآءِ تُدْعَوْنَ لِتُنْفِقُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ۚ فَمِنْكُمْ مَّنْ یَّبْخَلُ ۚ وَ مَنْ یَّبْخَلْ فَاِنَّمَا یَبْخَلُ عَنْ نَّفْسِهٖ ؕ وَ اللّٰهُ الْغَنِیُّ وَ اَنْتُمُ الْفُقَرَآءُ ۚ وَ اِنْ تَتَوَلَّوْا یَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَیْرَكُمْ ۙ ثُمَّ لَا یَكُوْنُوْۤا اَمْثَالَكُمْ۠۝۳۸
অর্থ : শুন, তোমরাই তো তারা, যাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার আহবান জানানো হচ্ছে, অতঃপর তোমাদের কেউ কেউ কৃপণতা করছে। যারা কৃপণতা করছে, তারা নিজেদের প্রতিই কৃপণতা করছে। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্থ। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তিনি তোমাদের পরিবর্তে অন্য জাতিকে প্রতিষ্ঠিত করবেন, এরপর তারা তোমাদের মত হবে না।
আল্লামা উসমানী রহ. বলেন, অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা যে হিকমত ও মাসলাহাতের কারণে বান্দাদেরকে খরছ করার নির্দেশ প্রদান করেন, তা তোমাদের উপর সিমাবদ্ধ নয়। যদি তোমরা কৃপণতা কর, এবং তার হুকুম থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে তিনি তোমাদের স্থলে অন্য এমন একটি জাতি তৈরী করবেন যারা তোমাদের মত কৃপণ হবে না বরং সানন্দচিত্তে আল্লাহর হুকুম তামিল করবে এবং আল্লাহর রাস্তায় খরছ করবে। যেভাবেই হোক আল্লাহর হিকমত ও মাসলাহাত পূর্ণ হবেই কিন্তু তোমরা এ সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত থেকে যাবে।
হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে সাহাবায়েকেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে অন্য জাতি কারা, যাদের কথা আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারীমের এ আয়াতে উল্লেখ করেছেন? তখন রাসূল সা. হযরত সালমান ফারসী রা. এর কাঁধে হাত রেখে বললেন, ‘এর কওম’ এবং বললেন, আল্লাহর শপথ! ঈমান যদি সুরাইয়া পর্যন্তও গিয়ে পৌঁছে যায় তবুও পারস্যের লোকজন সেখান থেকে নিয়ে আসবে।
আলহামদু লিল্লাহ, সাহাবায়েকেরাম ঈমানী জোশ ও হুব্বে নববীর এবং দ্বীনের জন্য আত্নত্যাগ ও কুরবানীর এমন বে-মেছাল পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করলেন, তাদের জায়গায় অন্য কওম কে আনার প্রয়োজন হয়নি। ইত্যবসরে পারস্যের লোকজন ইসলামে দীক্ষিত হয়ে দ্বীন ও ঈমানের, ইলম ও হিকমাতের এমন শানদার প্রকাশ ঘটালেন, যা দেখে প্রতিটি বিবেকবান একথা স্বীকার করতে বাধ্য হবেন যে সত্যই রাসূলুল্লাহর সা. ভবিষ্যতবানী মোতাবেক এই সেই কওম যারা প্রয়োজনের মুহুর্তে আরবদের শূণ্যস্থান পূরনে সক্ষম হয়েছিল। অগনিত উলামায়ে কেরামের মধ্য থেকে শুধুমাত্র ইমাম আজম আবু হানিফা রহ. এর অস্তিত্বই এ সুসংবাদের বাস্তব সাক্ষি। বরং এই সুসংবাদের পরিপূর্ণ ও সর্ব প্রথম ‘মিসদাক’ই হলেন ইমাম আবু হানিফা রহ.। অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা (উম্মিয়িন) আহলে আরবদের আলোচনার পর এরশাদ করেন,
وَّ اٰخَرِیْنَ مِنْهُمْ لَمَّا یَلْحَقُوْا بِهِمْ ؕ وَ هُوَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ۝۳ ذٰلِكَ فَضْلُ اللّٰهِ یُؤْتِیْهِ مَنْ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِیْمِ۝۴
এই রসূল প্রেরিত হয়েছেন অন্য আরও লোকদের জন্যে, যারা এখনও তাদের সাথে মিলিত হয়নি। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ( ৪ ) এটা আল্লাহর কৃপা, যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। আল্লাহ মহাকৃপাশীল।
আল্লামা উসমানী রহ. বলেন, শাহ ওলিউল্লাহ রহ. এরশাদ করেন, দ্বীনের জন্য আল্লাহ তায়ালা সর্ব প্রথম আরবকে সৃষ্টি করেন, তার পর এ দ্বীন কে ধারণ-বাহনের জন্য আজম কে সৃষ্টি করেন, যার মধ্যে এমন কামেল ইনসান তৈরী হবে যারা এ দ্বীনের ধারক-বাহক হবে।
হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, এই আয়াত সম্পর্কে রাসুল সা. কে জিজ্ঞাসা করা হল। রাসূল সা. হযরত সালমান ফারসী রা. এর কাঁধে হাত রেখে বললেন, দ্বীন বা ইলম যদি সুরাইয়া পর্যন্তও পৌঁছে যায় তাহলেও তার কওম, পারস্যের লোকজন সেখান থেকেও ইলম ও দ্বীনকে নিয়ে আসবে। হযরত শাইখ জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহ. সহ অন্যান্য মুফস্সিরিনেকেরাম একথার স্বীকৃতি দিয়েছেন যে এই সুসংবাদের সবচেয়ে বড় ‘মিসদাক’ হলেন ইমাম আজম আবু হানিফা রহ .।
সুতরাং এ সুসংবাদের আলোকে ইমাম আজম আবু হানিফা রহ. দ্বীনের সংকলন করলেন। কোরআনে কারীমে এ দ্বীনকে “দ্বীনে হানিফ” বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যার পরিপূর্ণতা এসেছে রাসূলের মাধ্যমে, প্রতিষ্ঠা হয়েছে সাহাবায়েকেরামের মাধ্যমে। এবং সংকলনে ইমাম আজম আবু হানিফা রহ. ‘সর্বাগ্রে’র সৌভাগ্য হয়েছে। একারণে সমগ্র উম্মতের মধ্যে ইমাম আজমের কুনিয়াত ‘আবু হানিফা’ স্বীকৃতি লাভ করেছে। যার অর্থ হল ‘দ্বীনে হানিফের’ প্রথম সংকলক।
আবু হানিফা রহ. এর নাম হল “নু’মান”। ইবনে হাজার মক্কী রহ. বলেন, ‘নুমান’ শব্দের তিনটি অর্থ রয়েছে। (চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.