নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিম্বারের আহবান

আবু সাঈদ মুহাম্মদ নু’মান

আবু সাঈদ মুহাম্মদ নু’মান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সম্মানের আসন যিনি গড়তে চান

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫০



রিয়াদের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সাথে আমার হৃদ্যতা রয়েছে। সম্মান ও মর্যাদা যেন তাদের পারিবারিক ঐতিহ্যরূপে পরিগণিত হয়েছে। একবার একটি প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সে সম্মানিত গৃহে উপস্থিত হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে।
যে পরিবারটির কথা বলছি তার সম্মানের দরজাটি মূলত তাদের মা-ই খুলে দিয়েছেন। এ ভদ্রমহিলা একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এর সমুদয় ব্যয়ভার নিজে বহন করেন। প্রকল্পটি হলো, রাসূলুল্লাহ সা. এর সুন্নাহর নয়টি কিতাবের এ্যাপস তৈরি করা। এর মাধ্যমে বিশ^ময় নবীজির সুন্নাহকে ছড়িয়ে দেয়া। এই এ্যাপসটির মাধ্যমে পৃথিবীর ছয়টি উপমহাদেশের লোকজনের কাছে অতি সহজেই হাদিসের নয়টি কিতাব পৌঁছে যাবে। প্রকল্পটির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানার পর মনে হল, অবশ্যই এটি একটি বিশাল প্রোগ্রাম, কোন প্রতিষ্ঠিত সংস্থার পক্ষ্যেই এমন প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করা সম্ভব। অথচ এই কাজটিই সম্পাদন করছে এই সম্মানিত পরিবার আর এর পেছনে অর্থ ব্যয় করছেন তাদেরই মা। কত বড় ও উপকারী একটি প্রকল্প এটি যে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে মাত্র এক ক্লিকেই আপনি পেয়ে যাচ্ছেন হাদিসের বিশাল বিশাল নয়টি গ্রন্থ। এরজন্য প্রয়োজন কেবল একটি উপযুক্ত মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ।
কেবল আল্লাহ পাকের অনুগ্রহেই এমন একটি মহৎ কাজ সম্পাদন করা সম্ভব। এরপর এমন নেক কাজে যদি কেউ মন-প্রাণ ঢেলে দেয় তখন খোদার পক্ষ থেকে তার রহমত শামিলে হাল হয়। এই নেককার মহিলা ও তার শ্রেষ্ট সন্তানরা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর অপার অনুগ্রহ লাভ করেছেন। এবং আশ্চর্য রকম তাওফিক প্রাপ্ত হয়েছেন। ফলে এ কাজের মধ্য দিয়ে তারা তাদের জীবনের সাথে আরো অসংখ্য জীবন যোগ করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। সম্মান ও মর্যাদার আসরে নিজেদের জন্য একটি আসন তৈরি করে নিতে সক্ষম হয়েছেন।
কবি মুতানাব্বির একটি কবিতা এখানে উল্লেখ করা সংগত হবে। কবি বলেন,
ذكر الفتى عمره الثاني وحاجته ما قاته وفضول العيش أشغال
অর্থ :
এ প্রকল্পটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সেদিন আমি আমার বক্তব্যে যে কথাগুলো বলেছিলাম তার চুম্বক কথাটি এখানে উল্লেখ করছি। সে পরিবারটির শুকরিয়া ও ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে এবং তাদেরকে উৎসাহ দিতে গিয়ে বলেছিলাম, ‘সত্যিই তোমরা নবীজির সুন্নায় বর্ণিত তিনটি আলোরই মালিক হয়ে গিয়েছ। হাদিসে বর্ণিত তিনটি সুসংবাদই তোমাদের জন্য প্রযোজ্য হয়ে গিয়েছে। নবীজি সা. এরশাদ করেন,
>إذا مات ابن آدم انقطع عمله إلا من ثلاث : صدقة جارية ، أو علم ينتفع به ، أو ولد صالح يدعو له<
অর্থ : কোন আদম সন্তান যখন মারা যায়, তার আমল করার সকল পথ তখন বন্ধ হয়ে যায়। কেবল তিনটি পথ খোলা থাকে। এক. সদকায়ে জারিয়া। দুই. উপকারী ইলম। তিন. নেক সন্তান যে তার জন্য দু’আ করে।
এই যে প্রকল্পটি তোমরা নবীজির সুন্নাহর প্রচার ও প্রসারের জন্য হাতে নিয়েছ অবশ্যই তা সদকায়ে জারিয়া হিসেবে গণ্য। আর তোমরা তোমাদের মায়ের জন্য দু’আ করার মাধ্যমে ‘নেক সন্তান’ হিসেবে গণ্য হবে। আর উপকারী ইলমের বিষয়টি স্পষ্ট। এই যে হাদিসের প্রসারের জন্য উদ্দোগ গ্রহণ করেছ, তা আল্লাহ চাহেন তো উপকারী ইলমের মধ্যেই শামিল হবে।
অপরদিকে কিছু এমন ব্যবসায়ির সাথেও আমার পরিচয় রয়েছে, যাদেরকে আল্লাহ প্রচুর ধন-দৌলত দিয়েছেন। ব্যবসার মাধ্যমে তারা অঢেল অর্থ-কড়ির মালিক হয়েছে। কিন্তু তাদের সে ধন-সম্পদ দিয়ে তারা কেবল গুনাহ ই কামাই করছে। হারাম ও অবৈধ জিনিসের পেছনে খরছ করছে। কোন ভাল কাজে তাদের টাকা-পয়সা ব্যয় হয় না। কোন জনহীতকর কাজে তাদের সম্পদ লাগে না। এরাতো আল কুরাআনের এ আয়াতের যেন বাস্তব নমুনা। আল্লাহ বলেন,
فَسَیُنْفِقُوْنَهَا ثُمَّ تَكُوْنُ عَلَیْهِمْ حَسْرَةً ثُمَّ یُغْلَبُوْنَ ؕ۬
অর্থ : তারা তো তা ব্যয় করবে। অতঃপর এটি তাদের উপর আক্ষেপের কারণ হবে এরপর তারা পরাজিত হবে।
সুতরাং যে চায় সম্মানের আসন অধিকার করতে, মানুষের মাঝে প্রশংসার সাথে আলোচিত হতে, রহমান-রহীমের কাছ থেকে সওয়াব লাভ করতে, সে যেন তার সম্পদকে আল্লাহর পথে খরছ করে। কল্যাণের পথে ব্যয় করে। যাতে সেদিন একজন সাহায্যকারী পেয়ে যায়, যেদিন
یَوْمَ لَا یَنْفَعُ مَالٌ وَّ لَا بَنُوْنَۙ۝۸۸ اِلَّا مَنْ اَتَی اللّٰهَ بِقَلْبٍ سَلِیْمٍؕ۝۸۹
অর্থ : ‘যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোন উপকারে আসবে না’। ‘তবে যে আল্লাহর কাছে আসবে সুস্থ অন্তরে’।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.