নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিম্বারের আহবান

আবু সাঈদ মুহাম্মদ নু’মান

আবু সাঈদ মুহাম্মদ নু’মান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আলবানী সাহেবের মতদ্বৈততা : একটি জ্ঞানগত পর্যালোচনা । পর্ব-০৩

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৩:৩৫

বুখারি মুসলিমের হাদিসকেও ‘জঈফ’ এর হুকুম লাগিয়েছেন

তিনি একটি সিরিজ বের করেছেন, তাতে তিনি ‘সুনানে আরবাআহ’ (আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ) -এর ওপর অপারেশন চালিয়েছেন। এ গ্রন্থগুলোকে তিনি ‘সহিহ-জঈফ’ দুইভাগে বিভক্ত করেছেন। এই সিরিজের ‘সহিহ’ ও ‘জঈফ ইবনু মাজাহ’ ইতিমধ্যে ছাপার হরফে বাজারে এসেছে। আমরা বাকীগুলোর জন্য অপেক্ষায় আছি। এ বিষয়ে আমরা এখনো অন্ধকারের মধ্যে রয়েছি তার ‘সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম’র অবস্থা কী হয়। ইতিপূর্বে তিনি বুখারী ও মুসলিমের অনেক হাদিসের ব্যাপারে ‘জঈফ’ -এর হুকুম লাগিয়েছেন। সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম-এ তাখরিজ করা বিভিন্ন হাদিসের ব্যাপারে তার ‘জঈফ’ এর হুকুম লাগানোর মধ্য দিয়ে তিনি মতদ্বৈত্যতার শিকার হয়েছেন। কেননা তিনি ইবনু আবিল ইয্য রহ.-এর শরহুত তহাবিয়্যাহ গ্রন্থের ভূমিকায় বিভিন্ন উলামায়ে কেরামের বক্তব্যকে রদ করতে গিয়ে বলেন, ‘সহিহাইন’-এর হাদিসগুলোকে তাখরিজ করতে গিয়ে তিনি “সহিহ” বলে যে কথাটি উল্লেখ করেছেন তা তার পক্ষ থেকে হাদিসের কোন হুকুম নয়; বরং তিনি কেবল “সহিহ” কথাটি বাস্তবতার সংবাদ দিতে গিয়ে বলেছেন। দেখুন, আত তহাবিয়্যাহ এর ভূমিকা ২৭-২৮ নং পৃষ্ঠা। আল মাকতাবাতুল ইসলামী থেকে প্রকাশিত অষ্টম সংস্করণ। এতটুকু কথা হৃদয়ঙ্গম করার পর প্রিয় পাঠক! আপনাকে আমরা বলতে চাই-
আলবানি সাহেব নিজের সাথেই দ্বিমুখী আচরণ করেছেন। তিনি তার এ ভূমিকায় সত্যাশ্রিত হতে পারেন নি। বরং ইতিমধ্যে তিনি বুখরিতে বর্ণিত হাদিসকে, অনুরূপ মুসলিমে বর্ণিত হাদিসকেও ‘জঈফ’ বলে উল্লেখ করেছেন। এটা আমাদের কোন মুখস্থ দাবী নয়। বরং এটাই বাস্তব। দাবী করলেই তো কোন বিষয় প্রমাণ হয়ে যায় না। এর জন্য বাস্তব প্রমাণ পেশ করতে হয়। আসুন একটু ঘুরে আসি তার ‘জঈফ’ময় অঙ্গন থেকে।

০১. হাদীস : যে খানে রাসূলুল্লাহ সা. এর যবানীতে আল্লাহ পাকের কথাটি বাঙময় হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা বলেন,
"ثلاثة أنا خصمهم يوم القيامة : رجل أعطى بي ثم غدر ، ورجل باع حُرًا فأكل ثمنه ، ورجل استأجر أجيرًا فاستوفى منه ولم يعطه أجره"
অর্থ : কেয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির বিরূদ্ধে অবস্থান করবো। এক. এমন ব্যক্তি যে আমার নামে দান করলো এরপর তা অস্বীকার করলো। দুই. এমন ব্যক্তি যে স্বাধিন কোন মানুষকে বিক্রি করে তার মূল্য নিজে ভক্ষণ করলো। তিন. এমন ব্যক্তি যে কোন শ্রমিক নিয়োগ করে তার থেকে পরিপূর্ণ কাজ আদায় করলো কিন্তু তাকে তার পারিশ্রমিক দিলো না।
 আলবানি সাহেব জঈফুল জামি’ ওয়া যিয়াদাতিহি গ্রন্থের চার নং খ-ের ১১১ নং পৃষ্ঠায় ৪০৪৫ নম্বারে লেখেন,
رواه أحمد والبخاري عن أبي هريرة >ضعيفضعيف<
অর্থ : হাদিসটি ইমাম আহমদ, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ, ও ইবনে মাজাহ জাবের রা. থেকে বর্ণনা করেন, তবে হাদিসটি “জঈফ”
০৩. হাদিস : রাসূলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন
"إنَّ مِن شر الناس عند الله منزلة يوم القيامة الرجل يفضي إلى امرأته، وتقضي إليه ثم ينشر سرها"
অর্থ : কেয়ামতের দিন ওই ব্যক্তি আল্লাহর কাছে সর্বনিকৃষ্ট অবস্থানে থকাবে যে তার স্ত্রী গমন করলো এবং তার থেকে নিজের চাহিদা পূর্ণ করলো এরপর তা লোকজনের মধ্যে বলে বেড়ালো।
 আলবানি সাহেব জঈফুল জামি’ ওয়া যিয়াদাতিহি গ্রন্থের দুই নং খ-ের ১৯৭ নং পৃষ্ঠায় ২০০৫ নম্বারে লেখেন,
رواه مسلم عن أبي سعيد >ضعيفضعيفضعيف بهذا التمام<
অর্থ : হাদিসটি ইমাম মুসলিম আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণনা করেন, তবে এ সনদে হাদিসটি সম্পূর্ণ “জঈফ”।
০৬. হাদিস : রাসূলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন-
إن من أعظم الأمانة عند الله يوم القيامة الرجل يفضي إلى امرأته......"
অর্থ : কেয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড় আমানত হলো, পুরুষ তার স্ত্রীর কাছে গমণ করা .......।
 আলবানি সাহেব জঈফুল জামি’ ওয়া যিয়াদাতিহি গ্রন্থের দুই নং খ-ের ১৯২ নং পৃষ্ঠায় ১৯৮৬ নম্বারে লেখেন,
رواه أحمد ومسلم وأبو داؤد عن أبي سعيد >ضعيف<
অর্থ : হাদিসটি ইমাম আহমদ, মুসলিম ও আবু দাউদ আবু সায়িদ রা. থেকে বর্ণনা করেন, তবে হাদিসটি “জঈফ”।
০৭. হাদিস : রাসূলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন-
"من قرأ العشر الأواخر من سورة الكهف عصم من فتنة الدجَّال"
অর্থ : যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের শেষ দশ আয়াত তেলাওয়াত করবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ হয়ে যাবে।
 আলবানি সাহেব জঈফুল জামি’ ওয়া যিয়াদাতিহি গ্রন্থের পাঁচ নং খ-ের ২৩৩ নং পৃষ্ঠায় ৫৭৭২ নম্বারে লেখেন,
رواه أحمد ومسلم والنسائي عن أبي الدرداء >ضعيف<
অর্থ : হাদিসটি ইমাম আহমদ, মুসলিম ও নাসাঈ আবু দারদা রা. থেকে বর্ণনা করেন, তবে হাদিসটি “জঈফ”।
০৮. হাদিস : ইমাম বুখারি রহ. হযরত সাহল বিন সা’দ রা. থেকে বর্ণনা করেন-
"كان له صلى الله عليه وسلم فرس يقال له اللحيف"
অর্থ : রাসূলুল্লাহ সা. এর "لحيف" নামে একটি ঘোড়া ছিলো।
 আলবানি সাহেব জঈফুল জামি’ ওয়া যিয়াদাতিহি গ্রন্থের চার নং খ-ের ২০৮ নং পৃষ্ঠায় ৪৪৮৯ নম্বারে লেখেন,
رواه البخاري عن سهل بن سعد >ضعيف<
অর্থ : হাদিসটি ইমাম বুখারি রহ. সাহল বিন সা’দ রা. থেকে বর্ণনা করেন, তবে হাদিসটি “জঈফ”।
এ হলো তার অসংখ্য মতদ্বৈত্যতার সামান্য নজির। অগনিত জালিয়াতির গোনাকয়েক দৃষ্টান্ত। যদি কলেবর বৃদ্ধির আশংকা না হতো, পাঠকের বিরক্তির ভয় না হতো তবে এ বিষয়ে আমি আরো দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে পারতাম, যা আমি তার কিতাব থেকে বের করে এনেছি। আপনি যদি সবগুলো বিষয় জানতে পারেন তবে অবস্থা কী দাঁড়াবে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.