নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তৃতীয় শক্তিকে এত ভয় কেন?

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৪৭

ইদানিং রাজনীতিবিদদের বক্তব্যে প্রায়ই তৃতীয় শক্তির উত্থানের কথা উঠে আসছে। তাদের বক্তব্যের ঢং দেখে মনে হয় তারা তৃতীয় শক্তির উত্থানকে ভয় পাচ্ছেন। শুধু রাজনীতিবিদরাই নন, বুদ্ধিজীবী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও কলামিস্টরাও তৃতীয় শক্তির উত্থানের বিষয়টি বার বার সামনে নিয়ে আসছেন। কোন কোন রাজনৈতিক শক্তি আবার নিজেদেরকেই দাবি করছেন তৃতীয় শক্তি বলে। এই তালিকায় ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে বাম, অতিবাম কিংবা জাতীয়তাবাদীরাও বাদ নন। আবার অনেকে চলমান রাজনৈতিক সংকটে ওয়ান ইলেভেনের মত সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় হস্তক্ষেপের আশঙ্কাকেও তৃতীয় শক্তির উত্থান বলে মনে করছেন।

সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর ফতেপুর রেলক্রসিং এলাকার চারলেন প্রকল্পের উড়াল সেতুর কাজ পরিদর্শনকালে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঠিক এই কথাটিই বলেছেন। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা বাক যুদ্ধ করতে করতে একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবো তৃতীয় কেউ মঞ্চ দখল করে নিয়েছে। আমাদের দেশে ক্ষমতার স্বপ্ন দেখা সহজ কিন্তু, হারানো ক্ষমতা ফিরে পাওয়া খুবই কঠিন। ফেব্র“য়ারি মাস থেকে দেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপট ও দৃশ্যপট বদলে গেছে।’



তেমনি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী থেকে শুরু কোরে মাহমুদুর রহমান মান্না, ডক্টর তুহিন মালিকসহ বহু পরিচিত মুখ এর পক্ষে প্রকাশ্যে বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও টকশোতে কথা বলছেন। কিন্তু যত যাই বলা হোক- বাস্তবতা হচ্ছে তৃতীয় শক্তি এখনো একটা বায়বীয় বিষয়ই রয়ে গেছে। এর অস্তিত্ত্ব এখনো ধোয়াশায় ঘেরা। প্রশ্ন হোচ্ছে তৃতীয় শক্তির এই চিন্তাটি সাধারণ মানুষ থেকে শুরু কোরে শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের মাথায় এলো কি করে? এর উত্তর হচ্ছে- প্রকৃতপক্ষে বর্তমান সংকটে নিমজ্জিত, নিপীড়িত মানুষের এটি একটি সুখ কল্পনা। এই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার প্রতি তাদের ঘৃণা ও বীতশ্রদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু মানুষ যখন একটা স্বপ্ন দেখতে শুরু করে কিংবা কল্পনা করতে থাকে- তখন তার জীবন অলক্ষ্যে হলেও ধীরে ধীরে সেই সে দিকেই ধাবিত হয়। স্বপ্ন বাস্তবায়নমুখী হয়ে যায় তার জীবনের সকল কর্মকাণ্ড। আর একটা জাতির চিন্তা চেতনায় যখন একটি বিষয়ই কাজ করে তখন তা বাস্তবায়িত হয়ই। কোন শক্তিই একে দাবিয়ে রাখতে পারে না। যে কোন জগদ্দল পাথর শুধুমাত্র তাদের চাওয়ার কারণেই এক সময় সরে যেতে বাধ্য হয়। কিন্তু প্রশ্ন হোল- রাজনীতিবিদরা তৃতীয় শক্তির উত্থানকে ভয় পাচ্ছেন কেন? সাধারণ মানুষ অবচেতন মনে হলেও দিনে দিনে এই সুখ কল্পনাকে বাস্তবে দেখতে চাইছে, ভালবাসতে চাইছে। রাজনীতিবিদদের বলা হয় গণমানুষের প্রতিনিধি। মানুষের চাওয়া-পাওয়া, সুখ-দুঃখ, চিন্তা-চেতনা তাদের মধ্যে ফুটে ওঠে। কিন্তু গণমানুষের এই চাওয়াকে তারা ভয় পাচ্ছে কেন? অধিকাংশ রাজনীতিবিদরা ভীত এই কারণেই যে তারা অপরাধী। তাদের নৈতিক মনোবল নেই। ক্রমাগত অপরাধ করে, দুর্নীতি করে তাদের নৈতিক মনোবলের মেরুদণ্ড বহু আগেই ভেঙ্গে গেছে। সুতরাং ভয় তাদের হবেই। ভয় হবে এই জন্যই যে বর্তমান প্রচলিত দুর্নীতিগ্রস্থ, কায়েমী স্বার্থবাদী সিস্টেম তারা জোর করে জনতার উপর চাপিয়ে রেখেছে। তৃতীয় শক্তির উত্থান হলে তাদের এই কায়েমী স্বার্থে আঘাত আসবে সর্বপ্রথম। তাই তাদের এত ভয়। তারা সাধারণ মানুষের চাওয়ার সাথে নিজেদের চাওয়াকে মিলিয়ে নিতে পারেন নি। কিন্তু আবারো ফিরে আসি তৃতীয় শক্তির বাস্তবতায়। কি হবে তৃতীয় শক্তির বাস্তব রূপ?



এর আগেও ২০০৮ সালে একবার আমরা রাজনীতিবিদদের সীমাহীন দুর্নীতি, অনৈক্য, হানাহানি, রক্তপাতের কারণে দেশ যখন ধ্বংসের পথে তখন বাধ্য হয়ে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয় দেশের সেনাবাহিনী। নিষিদ্ধ করা হয় সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। জেলে পুরা হয় শীর্ষস্থানীয় দুটি দলের প্রধান ব্যক্তিদ্বয়কে। সাথে গণহারে আটক করা হয় উপর থেকে নিচে পর্যন্ত বহু নেতাকর্মীকে, সাবেক এমপি মন্ত্রীদেরকে। দীর্ঘ দুই বছর সেনাবাহিনীর সমর্থনে তত্ত্বাবধায় সরকার ক্ষমতায় থাকে। এ সময় দুর্নীতির দায়ে বহু নেতাকর্মীর জেল জরিমানা হয়। প্রথমত সেনাশাসন তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। সাধারণ মানুষ তাদের হস্তক্ষেপকে স্বাগত জানায়। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সাধারণ মানুষ। কিন্তু কিছুদিন পরেই দেখা যায় যে এই সরকার আবার জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করে। অনেক সেনা কর্মকর্তা সে সময় অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে বিতর্কিত হয়ে পড়েন। দীর্ঘ দুই বছর পর নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় ফিরে আসে পূর্বেরই একটি রাজনৈতিক দল। এরপর আমরা কি দেখলাম তা আমাদের চোখের সামনেই হাজির। পূর্বের মতই রাজনৈতিক হানাহানি, প্রতিহিংসা, টেণ্ডারবাজি- বিরোধীদলের আন্দোলন, রাজপথে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জ্বালাও পোড়াও ইত্যাদি। বিরোধীদলও সরকারীদলের দলীয় পাণ্ডবদের পূর্ববৎ দাপাদাপিতে আবারো ওষ্ঠাগত মানুষের জীবন। ঈদের পর রাজনৈতিক অবস্থা কি হবে তা নিয়ে শঙ্কিত সাধারণ মানুষ। সামনে নির্বাচন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্তই হয় নি ঠিক কি পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।



বিরোধীদল দাবি করছে তত্ত্বাবধায়ক আর সরকারী দল বলছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে মনে হয় রাজপথেই। কারণ আইনগত দিক অনেক আগেই এর বিহিত হয়ে গেছে। সংসদের মেয়াদও প্রায় শেষের দিকে। নতুন করে আইন করে আবার তত্ত্বাবধায়ক আনা আর সম্ভব নয়। এদিকে এই অচলাবস্থায়ই বেরিয়ে আসছে তৃতীয় শক্তির উত্থানের কথা। তাই মানুষের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা তৃতীয় শক্তি, তৃতীয় শক্তি করে মুখে ফেনা তুলে যে শক্তিকে নিয়ে আসবে সেই শক্তি কি আবারো এমন অবস্থাই নিয়ে আসবে- যেখানে একদল ক্ষমতায় বসবে আর আরেকদল সরকারের সকল কর্মকাণ্ডের বিরোধীতা করার আইনি বৈধতা ভোগ করে যা ইচ্ছা তা করার অধিকার দিবে, রাজপথে মিছিল মিটিং করে, জ্বালাও পোড়াও করে জনগণও রাষ্ট্রের সম্পদ নষ্ট করবে, না কি পুরো এই ব্যবস্থাকেই উচ্ছেদ করবে। কারণ এই ব্যবস্থা যদি বিদ্যমান থাকে তাহলে এর স্বাভাবিক ফলও এমনি আসবে- যা বর্তমানে আমরা দেখতে পাচ্ছি।



একটি নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে পুরো জাতি যদি একতাবদ্ধ না হয়, ঐক্যমত পোষণ না করে, বহুদলের, বহুমতের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখে তাহলে সেই জাতির উত্থানের কোন সম্ভাবনা নেই। বহুদলের অস্তিত্ব রেখে শাসন করা ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুদের শাসন করার হাতিয়ার। তারা আজ নেই। কিন্তু তাদের সেই উরারবফ ধহফ জঁষষ নীতি আজও চলছে। বর্তমান বাস্তবতায় এই ব্যবস্থা চলতে পারে কি না তা ভাল করে ভেবে দেখতে হবে। না হলে বার বার হয় তো শাসকের পরিবর্তন হবে, চেহারার পরিবর্তন হবে, কিন্তু জাতির দুর্দশার কোন পরিবর্তন হবে না। তাই পরিবর্তিত তৃতীয় শক্তির চেতনাকে যারা লালন করেন, চিন্তা করতে ভালোবাসেন- তাদের উচিৎ ধীর-স্থিরভাবে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া। তাদর ভালোভাবে চিন্তা করে দেখতে হবে যেন ভুল করে আবার এই সিস্টেমকেই না নিয়ে আসেন-শুধুমাত্র মুখের পরিবর্তন করে, হাতের পরিবর্তন করে।





পরিবর্তনের বাধা আসবে, প্রতিরোধ আসবে। প্রতিষ্ঠিত শক্তিই বাধা দেবে। কারণ তারা আশঙ্কা করে নতুন ব্যবস্থায় হয় তো তারা তাদের কায়েমী স্বার্থকে বজায় রাখতে পারবে না। কিন্তু তাদের জেনে রাখা উচিত, যদি তারা পরিবর্তিত হয়, নিজেদের সংশোধন করে নেয় তাহলে হয়তো তাদের ঠাই হতেও পারে। কারণ নতুন এই ব্যবস্থা হবে সবার জন্য সুখকর, সবার প্রতি সহানুভূতিশীল। এখানে প্রতিশোধপরায়নতা থাকবে না, অবিচার থাকবে না। এই ব্যবস্থা জানবে বর্তমান প্রচলিত ‘ব্যবস্থা’ই-তাদের বাধ্য করেছে অপরাধী হতে। সিস্টেমের পরিবর্তন হলে তাদের অপরাধপ্রবণতার মানসিকতাও দূর হয়ে যাবে। তারাই হবে সোনার মানুষ।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫১

বাগসবানি বলেছেন: এত পাপকাজ করছে জীবনে, এখন এক পা কবরে দিয়ে হিসাব কষছে

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫৮

উড়োজাহাজ বলেছেন: কবরে পা এখনো পড়ে নি। তবে পড়া শুরু করলে কেউ আটকাতে পারবে না।

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:০২

নতুন বলেছেন: আমাদের দেশে পরিবত`ন আম্লিগ/বিএনপি বাদে নতুন কেউ ক্ষমতায় না এলে ...

হাসিনা/খালেদার ভাব কমবেনা.... তাদের দেমাগ খুব বেশি এবং জনগনকে মোটেও সন্মান বা ভয় করেনা...

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:০৮

উড়োজাহাজ বলেছেন: নতুন কেউ আসুক আর না আসুক- প্রচলিত সিস্টেম পরিবর্তন না করলে পীর সাহেবরাও খারাপ হয়ে যাবে। কিন্তু সিস্টেম ভাল হলে আজকের চোর বাটপারেরাও ভাল হতে বাধ্য।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:০৭

নতুন বলেছেন: আমাদের দেশের মানুষই তো চায়না পরিবত`ন আসুক....

বেশির ভাগ মানুষই তো কোন না কোন দলের সমথ`ক.....

আম জনতা কই???????????

সাধান মানুষ না চাইলে ভাল রাজনিতিবিদরা ক্ষমতায় যেতে পারেনা...

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:১৫

উড়োজাহাজ বলেছেন: নারে ভাই! আসলে তা নয় । এরাও সিস্টেমের গ্যাড়াকলে আটকা পড়ে আছে। এটা সত্য মনে হতে পারে। কারণ আমিও দেখেছি যে রাজপথে যখন এমনকি সংখ্যালগুদের রথযাত্রাও যায়-শেষ হতে সময় লাগে একঘন্টা। হাজার হাজার মানুষ যায়-ট্রাক যায়। আবার আওয়ামীলীগের মিছিলের চেয়ে বিএনপির মিছিলে লোক কম হয় না। জামায়াতের মত ৫/৬ আসন পাওয়া দলও মিছিল করলে হাজার হাজার লোক হয়। কিন্তু বাকী মানুষ কিন্তু আসে না। আবার যারা আসে তাদের মধ্যেও অনেকে মিছিল করে ঘরে ফিরে পরিবর্তনই চা্য়। যে কোন দলকেই প্রশ্ন করে দেখুন তারা আল্লাহর বিধান চায় কি না। একবাক্যে বলবে , হ্যা। কিন্তু ইসলাম তো কেউ কায়েম করে না। করে না বলতে আসলে করতে পারে না। মানুষের চিন্তা চেতনা এক জায়গায় পৌছতে হবে। তবেই সফলতা আসবে। এর জন্য আপনার আমার দায়িত্ব রোয়েছে।

৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:২৯

নতুন বলেছেন: সবাই চিন্তা করে যে এবার বিএনপি ক্ষমতায় আসবে... তাই আমি কেন অমুকে ভোট দেবো?? ভোট নস্ট করা ঠিক হবেনা...

সবাই চাইলেই পরিবত`ন আসবে নতুবা না.... ++

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৫

উড়োজাহাজ বলেছেন: ‌তাহলে আবার নর্দমায় পড়বে। এর পরে আবার পড়বে. আবার পড়বে।

৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৩২

আবিরে রাঙ্গানো বলেছেন: তৃতীয় শক্তিকে ভয় কারণ দেশের প্রতিটি নাগরিক চায় তৃতীয় শক্তি আসুক। ভাল কাউকে পেলে জনগন দেরি করবে না তাকে ক্ষমতায় বসাতে। ভয় পাওয়ার যৌক্তিক কারণ আছে।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৬

উড়োজাহাজ বলেছেন: অযৌক্তিক ভয়। কায়েমী স্বার্থ হারানো ভয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.