নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ পবিত্র হরতাল দিবস। দীর্ঘদিন পর মহাসমারোহে আমাদের মাঝে বরকতময় এই পবিত্র দিনটি হাজির হয়েছে। আগে প্রায় ২/১ দিন পরপর নিজস্ব গাম্ভীর্যতা নিয়ে এবং প্রতিবাদী হওয়ার শিক্ষা নিয়ে দিনটি আমাদের মাঝে ফিরে আসত। কিন্তু বিরোধিদলগুলোর মাজায় তেমন জোর না থাকায় জাতিকে তারা ঘন ঘন বিনোদনমূলক এই দিবসটি দিতে পারছেন না, যা তাদের ব্যর্থতাই প্রমান করে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন সরকারও আগের মত ঘন ঘন বড় বড় ইস্যু সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এখন যা করছে তা কোনমতেই আগের চাইতে বিষ্ময়কর নয়। সাইদী সাবের ফাঁসির আদেশের দিন সরকার আমাদেরকে শিহরিত হওয়ার মত আনন্দ দিতে পেরেছিল। কিন্তু পরে আর তেমন খেলা জমছে না। যা ঘটে তা একঘেয়েমীপূর্ণ আনন্দ। বিজ্ঞমহল মনে করেন শিশু গণতন্ত্রের জন্য এটি একটি ভয়ানক হুমকি। তবে প্রায় ২ মাস যাবৎ আমরা এই দিনটি উদযাপন করা থেকে বিরত থাকাটা প্রমাণ করে আমাদের ধর্মীয় চেতনা এবং স্বাধীনতার চেতনার ব্যাপক ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। তারা আরো বলেন, আমাদের সন্দেহ আমাদের জাতীয় চেতনাকে ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য এবং ধর্মচূত করার জন্য নিশ্চয় বৈদেশিক সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো ষড়যন্ত্র করছে যা গণতন্ত্রের সৈনিকদের জন্য মোটেই সুখকর নয়। আমাদরে মনে রাখতে হবে এই শিশু গণতন্ত্রকে যদি আমরা টিকিয়ে না রাখতে পারি তাহলে একদিন আমরা পবিত্র হরতালের মত দিনকে আর পাব না। জাতি হারাবে তার গৌরব ও চলমান সংস্কৃতি। সেই সাথে জাতি রাজপথে পিকেটিং ভুলে গেলে একদিন তারা নিবীর্জ হয়ে পড়বে। আর জাতি নিবীর্জ হয়ে পড়লে, অলস হয়ে পড়লে নিশ্চয় প্রতিবেশি দেশগুলো আমাদের উপর হামলা চালিয়ে প্রায় বিনা বাধায় আমাদের দেশকে দখল করে নেবে। সভ্য জাতি হিসেবে আমাদের এরকম উদাসীনতা মোটেও কাম্য নয়, (১৬+১৬+১৬+১৬) ৬৪+ কোটি !মানুষের ধর্মীয় এবং জাতীয় চেতনাকে সমুন্নত রাখার জন্য প্রতিদিন হরতাল উদযাপন করা আমাদের জন্য ফরজে আইন করা সম্ভব না হলেও শুক্র ও শনিবার ছাড়া অন্য কোন কর্মদিবসে অন্তত একটি দিন হরতাল ফরজে আইন করা উচিত। বুদ্ধিজীবীদের উচিত এ ব্যাপারে টকশো এবং মানববন্ধনগুলোতে জোর গলায় আওয়াজ তোলা। এ ব্যাপারে চিন্তা করার জন্য জাতির কর্ণধারদের প্রতি অনুরোধ রইল। নইলে নিত্য নৈমেত্তিক কাজের ব্যস্ততায় একসময় বাঙ্গালী জাতির মধ্যে থেকে ককটেল ফাটানোর মত প্রতিবাদী ও জেহাদী জজবা এবং সরকারী বাহিনীর জং ধরা অস্ত্রের জংরোধ ও মশামারার কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে মারার মত বহির্মুখী চরিত্র হারিয়ে যাবে (কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে মারায় যারা পারদর্শী তাদেরকে আমরা বিশ্ব অলিম্পিকে ড্রিলিং প্রতিযোগিতায় পাঠিয়ে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনতে পারে) সেই সাথে ঐতিহ্যবাহী গাদা বন্দুকের ঠাস ঠাস গুলির আওয়াজও বিলুপ্ত হোয়ে যেতে পারে, যার দায়ভার নিতে হবে শিশু (এটা আর শুনতে ভাল লাগে না, এই ব্যাটা তিনশত বছরেও বড় হতে পারল না!) গণতন্ত্রের তার ধারক বাহকদেরকেই। এটা ভাবাও খুব কষ্টকর! যদি হরতাল পালনে জাতি কোনভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয় তাহলে বাংলার ৬৪++ কোটি জনতা মুখ বুজে বসে থাকবে না। যেখানে গনতন্ত্র উক্ত দিবসটি পালনের জোর উৎসাহ যোগায়, অনুপ্রেরণা যোগায় সেখানে তুমি কে হে বাধা দেবার? এখন থেকে প্রতিদিন হরতাল পালন করবো, এটি আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। বাধা দিলে প্রয়োজনে আমরা জেহাদ করে শহীদ হয়ে যাব। হরতাল আমাদের গর্ব, হরতাল আমাদের অহঙ্কার। হরতাল ছাড়া কি আমাদের একদিনও চলে? কি যে বলেন না ভাবি!! সরি! সরি!! সরি!!!, হরতালের চেতনায় পুরো আবেগে আপ্লুত হোয়ে কিছুটা লাইনচ্তু হয়ে গেছি। গণতান্ত্রিক এই সুখের দিনে হৃদয়াকাশে হঠাৎ সংসদীয় জোস (খিস্তি খেউর) এসে গিয়েছে। আজকের এই পবিত্র দিনের অজুহাতে মাফ করে দিবেন। এবারে আসা যাক আজকের হরতাল আয়োজনে জাতি কি কি পাচ্ছে তার একটা লাইভ প্রতিবেদন দেখি। হরতালের অনেক আগেই ঢাকা শহরের মেইন মেইন পয়েন্ট ঘুরে আসা আমাদের নিজেস্ব আব্রাহাম ক্লিনটন।
আব্রাহাম ক্লিনটন: সকল দর্শকদেরকে মহা পবিত্র হরতালবাদ জানাচ্ছি। সম্মানিত দর্শকবৃন্দ! আপনারা নিশ্চয় ঠুসঠাস আ্ওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন। হ্যা এটাই আমাদের চেতনা, আমাদের গৌরব। কতদিন পর্যন্ত আমরা অপেক্ষায় ছিলাম এমন একটি দিনের। তাই প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে শেষ কবে এই মধুর আওয়াজ শুনেছেন? আপনারা জানেন এ আওয়াজ না শুনলে আমাদের ধর্মীয় গাম্ভীর্য এবং চেতনায় আঘাত লাগে। আরো নিশ্চয়ই জানেন বাঙ্গালী কতটা আবেগপ্রবণ জাতি। চেতনায় সামান্য আঘাত লাগলে আমরা আমাদের কান্না আসে। চেতনায় আঘাত করলে শহীদের আত্মারা আমাদের অভিশাপ দেয়। ককটেলের এ আওয়াজ না শুনলে নিশ্চয় তাদের আত্মা খুশি হয়। কেননা তারা তো এর জন্যই নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন! স্বাধীনতার ৪২ বছর পরে এসে হরতাল বন্ধে কথা শোনা যায়। প্রথমেই জানিয়ে রাখা ভালো আজকের দিনে ছাগু আর আম্বার (সরি হাম্বা), আদা আর পাদার মধ্যে বহুমুখী মোলাকাতের আয়োজন করা হয়েছে। রাজপথে এদের হরতাল হরতাল খেলা জটিল আকার ধারণ করার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আজকের খেলাটা মাঠে থেকে না দেখে আমার মতে টিভির স্ক্রিনে দেখাই ভালো হতে পারে। কারণ উৎসাহে বিগলিত হয়ে আপনাকে গণতন্ত্রের সহসৈনিক মনে করে কোলাকুলি করার জন্য আপনার দিকে ছুটে আসতে পারে, পুলিশ এসে শুভেচ্ছাস্বরূপ লাঠিচার্জ করতে পারে, কিংবা গণতন্ত্রের অগ্রনী সৈনিকেরা দু একটা ককটেলও ছুড়ে মারতে পারে। এমন কি আপনাকে পেয়ে তারা উৎসাহ সহকারে লগি বৈঠা এবং কাস্তে নিয়ে আপনার উপর এসবের কার্যকারিতা পরিক্ষাও করতে পারে।
আমার কথা পছন্দ না করে যদি কেউ বুকের পাটা উচু কোরে মাঠে নেমেই পড়েন তাহলে ছোট বড় সব কাপড় চোপড়গুলো ভালোভাবে ঠিকঠাক আছে কিনা তা আরেকবার দেখে নিন। বিশেষ দ্রষ্টব্য, হাদীসে বাস্তবতা মোতাবেক গণতান্ত্রিক উৎসবের দিনে লুঙ্গি পরিধান করা সম্পুর্ণ হারাম। যদি শাহরুখ খানকে আদর্শ ভেবে লুঙ্গি পরিধান করেই বসেন তবে মালকোচা মারতে যেন কিছুতেই ভুলে না যান। কারণ কাওরান বাজার চ্যানেল থেকে পুরো শহরের প্রতিটি গলি ক্যাপচার করা হচ্ছে। কোনভাবে যদি আপনার দিগম্বর অবস্থা হয়ে যায় তা হলে আমাদের ক্যামেরা কিন্তু আপনাকে আলাদ করে দেখবে না। কারণ এখন আমরা লাইভে আছি। যাক ভূমিকা বাদ দেই, আবারো আসি ককটেল প্রসঙ্গে।
সারা রাত ব্যাপী ছাগুরা পরামর্শ করে ডিব্বার ভেতর বারুদ ঢুকিয়ে ককটলে বানিয়ে ভোর বেলা যখন রাস্তায় গিয়ে হাজির হ্ইবে অতপর রাস্তায় তা ছুড়ে মেরে কারো কান, কারো হাত পা উড়াইয়া দিবে, তার আর্ত চিৎকার এবং ককটেলের মুহুর্মুহু মনমুগ্ধকর আওয়াজের মধ্য দিয়ে আমাদের ঘুম ভাঙ্গবে। এ নিয়ে আমরা সারা দিন ব্যাফুক আনন্দ আলোচনা করব। আম্বারা পুলিশ ঘেরা কার্যালয়ে ছাগুদিগকে এহেন গণতান্ত্রিক বিশেষ ভূমিকা পালন করায় সন্ধা বেলায় শুভেচ্ছা বাণী প্রেরণ করবেন। এই দিনিটিতে মাঝে মাঝে বাংলা সিনেমায় ভিলেন যেমন বস্তি উচ্ছেদ করে তেমনভাবে শহরের বড় বড় দোকানপাটগুলোর ভাংচুর লাইভ দেখে আমরা শিহরিত হব। জলিল ভাইয়ের মত করে হলিউড স্টাইলে দামী দামী গাড়ি ভেঙ্গে ফেলে গাড়ির জন্মহার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। শহরের উচ্চবিত্ত থেকে শুর করে নিম্নবিত্ত জনগণ তাদের জানালা ফাঁক করে নিত্যনৈমেত্তিক কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিনা টিকিটে এই শো গুলো দেখতে পাবেন। এজন্য কোন চার্জ দিতে হবে না। এটা শুধু হরতালের দিনের জন্য প্রযোজ্য।
এই আনন্দঘন পরিবেশে শো'য়ের সফলতা বিফলতা নিয়ে আগের দিন রাতের বেলায় সরকারী ও বিরোধী দল পৃথক পৃথক বাণী দিয় থাকেন। আর পরের দিন রাতের টকশোতে বুদ্ধিজীবীরা কথার তুবড়ি ছোটাবেন। একই ভবনের একতলা থেকে নেমে আরেক তলার আরেক চ্যানেলে গিয়ে টকশোর চেয়ারে আসীন হবেন। আমরা তাদরে ঝগড়া (সরি, গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় আলোচনা, আরবীতে একে বাহাস বলে) দেখব আর পরের দিন পাড়াত ভাইদের সাথে চায়ের দোকানে গিয়ে চায়ের কাপে সুনামী ঘটাব।
বলতে পারেন কে আমাদের এই বিনোদন দিতে পারবে? গণতন্ত্র না থাকলে জীবনে কি আমরা এই আনন্দ পেতাম? তাই হরতালের মত গনতান্ত্রিক দিবসগুলো বারবার আমাদের জীবনে ফিরে আসুক এই কামনা ব্যক্ত কোরে আজকের মত বিদায় ঘণ্টায় আঘাত কোরছি। গণতন্ত্র নিপাত যাক!
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪২
উড়োজাহাজ বলেছেন: পরিবেশ বন্ধু থাকেন কই?
আমি কিন্তু গণতন্ত্রী নই!
২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫০
জো জো বলেছেন: মহাপবিত্র হরতাল!!!!!
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৭
উড়োজাহাজ বলেছেন: কেন নয়? গণতান্ত্রিক পবিত্রতা। গণতন্ত্রের অন্যতম উপরকরণ এই হরতাল।
৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:১৫
ferdous বলেছেন: excellent..............
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৭
উড়োজাহাজ বলেছেন: আমি পুরো পুরো এক্সিলেন্ট বলব না। কারণ খুব তাড়াহুড়ার লেখা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৯
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: তাই ,বেশ কথা
একদম মন্দ নয়
হরতাল দিবস নামকরনে
দিনটি ইতিহাস হয়ে রয় ।।