নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনের ক্রিমিয়াকে একীভূত করা নিয়ে পাশ্চাত্যের যে ভয়টি কাজ করছিলো অবশেষে পরিস্থিতি সে দিকেই মোড় নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। পূর্বে ধারণা করা হচ্ছিল ক্রিমিয়াকে হজম করতে পারলে ভাদিমির পুতিন নেতৃত্বাধীন রাশিয়া সাবেক রুশ ফেডারেশন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেশগুলোকে নিজেদের করতলগত করে নেবে। এই ভয় থেকেই ইউসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে অবরোধ আরোপ করে। ক্রিমিয়া ইস্যুতে রাশিয়া বনাম ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সৃষ্টি হয় ব্যাপক উত্তেজনা। এ উত্তেজনা বার বার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিল øায়ু যুদ্ধের দিনগুলোর কথা। পরস্পর পরস্পরকে হুমকি, বাক-বিতণ্ডা, সামরিক তোড়-জোর ক্রমশঃই বেড়েই চলছিল। কিন্তু এরই মধ্যে দেখা যাচ্ছে রাশিয়া নয়, অন্যরাই রাশিয়ার সাথে অঙ্গীভূত হওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে। সা¤প্রতিক ইউক্রেনের অন্তত তিনটি নতুন অঞ্চলের অধিবাসীরা স্বাধীনতার জন্য একটি গণভোটের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে। এর মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর ডোনেতক্সের সরকারি ভবনগুলো দখলের পর এটিকে ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন উল্লেখ করে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এসব কিছুর পেছনে ইউক্রেন মূলত রাশিয়াকেই দায়ী করছে।
সরকারি ভবনগুলো দখলে রাখা বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে এসে সোমবার স্বাধীনতা ও গণভোট দাবির সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এক বিক্ষোভকারী। ইউটিউবে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন রুশ বক্তা মঞ্চ থেকে ঘোষণা করেন, ‘আই প্রোক্লেইম দ্য ক্রিয়েশন অব দ্য সভরেইন স্টেট অব দ্য পিপলস রিপাবলিক অব ডোনেতস্ক’। এছাড়াও রোববার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় লুহান্?স্ক ও খারকিভ অঞ্চলেও স্বাধীনতার দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ওলেক্সান্ডার তুরচিনভ ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য তার লিথুয়ানিয়া সফর বাতিল করেছেন।
এদিকে ডোনেতক্স শহরে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে আঞ্চলিক সরকারের সদর দপ্তরে ঢুকে পড়ে। তারা ভবনটিতে রুশ পতাকা উড়িয়ে দেয় এবং ভবনের দেয়ালে একটি বিশাল ব্যানার টানিয়ে দেয়। এ সময় সদর দপ্তরের সামনে সমবেত বিক্ষোভকারীরা ‘রাশিয়া, রাশিয়া’ বলে স্লোগান দেয়।
লুহান্স্ক শহরে শত শত বিক্ষোভকারী স্থানীয় পুলিশের দপ্তরে হামলা চালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। সহিংসতা উস্কে দেয়ার অভিযোগে গত সপ্তাহে আটক ১৫ জন রুশপন্থী বিক্ষোভকারীকে মুক্ত করে নেয়ার চেষ্টা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এ সংঘর্ষে অন্তত দু’জন আহত হয়। এ ছাড়া খারকিভ শহরেও পুলিশি বেস্টনি ভেদ করে শত শত বিক্ষোভাকারী আঞ্চলিক সরকারের দপ্তরে ঢুকে পড়ে। তারা ভবনটির জানালা দিয়ে রুশ পতাকা ওড়ায় এবং ভবনের বাইরে অপেক্ষমান বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং রুশপন্থীদের হাতে দপ্তরের দখল ছেড়ে দিয়ে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে।
ইউক্রেনের সাবেক স্বশাসিত প্রজাতন্ত্র ক্রিমিয়ার জনগণের আকাক্সক্ষা অনুযায়ী রাশিয়ায় একীভূত হয়ে যাওয়ার পর মস্কোর সঙ্গে কিয়েভের উত্তেজনাকর সম্পর্কের মধ্যে স্বাধীনতা আগ্রহীদের দ্বারা এসব বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হলো। ধারণা করা হচ্ছে এসব অঞ্চলের জনগণ ক্রিমিয়ার ঘটনায় উৎসাহিত হয়েছে, যার কারণে তারা স্বাধীনতার পক্ষে গণভোটের দাবি করতে সাহস পাচ্ছে। তা ছাড়া ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্ত জুড়ে বর্তমানে রাশিয়ার হাজার হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভাতিরমির পুতিনের ভাষ্য ‘ইউক্রেনের রুশ-ভাষাভাষি নাগরিকদের রক্ষা করার অধিকার মস্কোর রয়েছে’ এই অজুহাতের আশ্রয় নিয়ে আরো অনেক অঞ্চলই রাশিয়ার সাথে একীভূত হয়ে যেতে পারে। অবশ্য ইউক্রেনের পাশ্চাত্যপন্থী নেতারা দাবি করছেন, দেশটিতে বসবাসরত রুশ-বংশোদ্ভূতদের প্রতি কোনো হুমকি নেই; কাজেই তাদের রক্ষা করার অজুহাতে যেকোনো হস্তক্ষেপ প্রতিহত করা হবে। তবে শক্তিশালী দেশ রাশিয়ার সাথে সংঘাতে জড়িয়ে ক্ষুদ্র রাষ্ট্র ইউক্রেন কতটা কী করতে পারবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। অপরদিকে পাশ্চাত্য শক্তিগুলোও ইউক্রেনের স্বাধীনতা হরণের প্রাক্কালে কতটা সহায়তা করতে পারবে কিংবা এই ইস্যুতে রাশিয়ার সাথে চলমান বাক-বিতণ্ডা কোন পর্যায়ে পৌঁছায় তা আগাম ধারণা করা যাচ্ছে না। কেননা পাশ্চাত্যের অনেক দেশই তেল-গ্যাসের প্রয়োজনে ক্ষেত্রেই রাশিয়ার সাথে সম্পর্কিত। রাশিয়ার সাথেও রয়েছে বিপরীত অক্ষের কতগুলো দেশ। বিশেষ করে চীন, ভারত, ইরান, সিরিয়া রাশিয়ার পক্ষেই থাকার পক্ষে। এমনকি ক্রিমিয়া ইস্যুতে বাংলাদেশও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আনা প্রস্তাবে ভোট দানে বিরত ছিল। রাশিয়াও ইতোধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গন পরবর্তী যে কোন সময়ের তুলনায় সর্বদিকেই ভাল অবস্থানে আছে।
এ অবস্থায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে কতদূর কী করতে পারে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে- তবে কী রাশিয়া আবারও বিশ্বের একক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে, না কি পরিস্থিতি শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ না থেকে পৃথিবীর পট পরিবর্তন হতে চলেছে? এর যথাযথ উত্তর সম্ভবত সময়ের হাতেই গচ্ছিত আছে, সময়ই বলে দেবে কোন দিকের পানি কোন দিকে গড়ায়।
২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৩৬
নিরীহ বালক বলেছেন:
অরা ধ্বংশ হোক
৩| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:২৭
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: এককশক্তির দাবীদার এবং তার দোসর পশ্চিমাদের চ্যালেঞ্জ শিরোনামে আমি একটু লিখেছিলাম কিন্তু আমার দূর্ভাগ্য একজনও মন্তব্য করে নি। ব্যাপারটা ঠিক বোধগম্য হচ্ছে না।। দলীয় ব্যাপার-স্যাপর কি?সত্যি বলছি থকলে মন্তব্যের ঘর শুন্য থাকাই ভাল। সুন্দর লিখেছেন।।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৪৯
আলী খান বলেছেন: