নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সমস্ত সৃষ্টি জগৎ কতটা বৃহৎ ও বিস্তৃত তা আধুনিক বিজ্ঞান আজ তার চূড়ান্ত অবস্থানে পৌঁছেও নির্ধারণ করতে পারে নি। এ পর্যন্ত হাবল টেলিস্কোপের মাধ্যমে ১২ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের বস্তুকে দেখা সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ কোন বস্তু যদি আলোর গতিতে ধাবিত হয় তাহলে তা ১২ বিলিয়ন বছর পরে গিয়ে সেই দূরত্বে পৌঁছুতে পারবে। একটু চিন্তা করলেই দেখা যায়, কি অসীম দূরত্ব সেটা! এরপরেও স্রষ্টার সৃষ্টির আরো কত যে বাকি রয়ে গেছে তা সহজেই অনুমেয়। স্রষ্টার এই মহা সৃষ্টি কিন্তু তাঁর নির্ধারিত নিয়মের অধীনেই সূচারুরূপে পরিচালিত হচ্ছে। এই নিয়মগুলোর মধ্যে কোন একটার সামান্য ব্যত্যয় ঘটলে পুরো মহাবিশ্বই যে কোন সময় ধ্বংসের মুখোমুখি হতে পারে। কিন্তু এই নিয়মের স্রষ্টার ইচ্ছা ব্যতীত অনিয়ম করার ইচ্ছাশক্তি বা সামর্থ কারোরই নেই। তবে সম্ভবত একমাত্র মানুষ নামের এই সৃষ্টিটিই একটি নির্ধারিত সময় এবং একটি নির্ধারিত পরিধির মধ্যে আল্লাহর দেওয়া নিয়মকে লংঘন করতে সক্ষম। আল্লাহ তাকে সেই শক্তি দিয়েছেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই যে, এই মহাবিশ্বের একমাত্র নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহও কিন্তু তাঁর সৃষ্ট নিয়মকে মান্য করে চলেন- যদিও তাঁর তা লংঘন করার ক্ষমতা রয়েছে। মানুষকে এই সামান্য অধিকারটুকু দান করাও হয়তো তার মহা পরিকল্পনারই কোন অংশ।
এই যে আল্লাহ মানুষকে নিয়ম তৈরি করে আবার অমান্য করার ক্ষমতাটুকু দান করলেন এবং মানুষ এই ক্ষমতা পেয়ে কি করলো? আল্লাহর ভাষায় তারা অধিকাংশই নিজেদেরকে অকৃতজ্ঞ হিসেবে প্রমাণিত করলো। নিয়ম অমান্যের ফল কি তাও কিন্তু আল্লাহ আগেই মানুষকে জানিয়ে সাবধান করে দিয়েছেন। সমস্ত ভাল, সকল কল্যাণের স্রষ্টা আল্লাহ। আর সমস্ত বিপদ-আপদ ও অকল্যাণ মানুষেরই সৃষ্টি। কেউ অন্যায় করলে আল্লাহ তাকে সে জন্য উপযুক্ত শাস্তি দান করেন। তিনি এর বিন্দুমাত্র এদিক ওদিক করেন না। আপাত দৃষ্টিতে হয়তো আমরা তা বুঝতে পারি না, কিন্তু সেটা মানুষের মাধ্যমেই হোক কিংবা তাঁর আভ্যন্তরীণ প্রশাসনের (Inner Administration) মাধ্যমেই হোক, তা আল্লাহ বাস্তবায়ন করেই ছাড়েন। এটা তাঁর সেই চিরন্তন নিয়মেরই অংশ। তিনি তা কখনো লংঘন করেন না।
বিপরীত দিকে আমরা আজকের পৃথিবীতে দেখতে পাচ্ছি এখানে যারা কর্তৃত্ব করছেন তারা সব সময় আইনের উর্ধ্বে অবস্থান করেন। তারা নিজেদেরকে কখনোই সেই আইনের অধীন ভাবতে পছন্দ করেন না। নিয়ম বা আইন প্রয়োগ করা হয় শুধুমাত্র অধীনস্তদের উপর। একদিকে সুস্থ্য মস্তিষ্কে চিন্তা করে স্রষ্টার দেওয়া নিয়মকে লংঘনতো করেছেনই, আবার ক্রমাগত নিজেদের তৈরি নিয়মও তারা লংঘন করে চলেছেন। এক্ষেত্রে যে যত উচ্চ ক্ষমতার অধিকারী সে তত আইনের বড় বড় বিষয়গুলো লংঘন করে। ক্রমাগত এই নিয়ম লংঘন করার প্রবণতার কারণেই বর্তমান পৃথিবীর চলমান দুরাবস্থা থেকে মানবজাতি মুক্ত হতে পারছে না। তাই মানবজাতির বৃহত্তর কল্যাণের জন্য প্রত্যেককেই নিয়ম মান্য করে চলতে হবে। অন্যথায় সর্বত্র সৃষ্টি হবে বিশৃঙ্খলা। এর নজির বর্তমান পৃথিবী।
©somewhere in net ltd.