নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আতাহার হোসাইন

উড়োজাহাজ

ফেসবুক প্রোফাইল-https://www.facebook.com/ataharh

উড়োজাহাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিয়াম সাধনার প্রকৃত শিক্ষা আজ কোথায়?

২৯ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ২:১৩

রমজান মাস সংযমের মাস, সাধনার মাস। আল্লাহ মো’মেনদের জন্য এই পুরো মাসটিকে নির্ধারণ করে দিয়েছেন সংযম শিক্ষা গ্রহণের জন্য। কিসের সংযম? সর্বপ্রকার সংযম। শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকাই নয়, এ মাসে মো’ মেনগণ নিজেদের চরিত্র গঠন করতে সকল প্রকার অন্যায় কাজ, অন্যায় চিন্তা, ভোগ-বিলাস, লোভ-লালসা ত্যাগসহ সকল প্রকার অপচয় থেকে বিরত থাকবেন। একই সাথে পানাহার থেকে বিরত থেকে গরিব দুঃখী মানুষের কষ্ট উপলব্ধি করবেন, নিজেদেরকে মানবজাতির সার্বিক কল্যাণ ও উন্নতির জন্য আত্মনিয়োগ করার শিক্ষা অর্জন করবেন। রমজান মাস থেকে গ্রহণ করা এই শিক্ষা পরবর্তীতে সারা বছর ধরে ধারণ করতে হবে এবং বাস্তব ক্ষেত্রে তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। কিন্তু বর্তমানে পবিত্র এই মাসটিকে শুধু দিনের বেলা পানাহার বর্জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। আর রাতের বেলায় ঠিকই ভোগ-বিলাস ও দামি দামি খাবার খাওয়ার উৎসব হিসেবে চালু করা হয়েছে। যেখানে রমজান মাস এলে স্বাভাবিকভাবেই খাদ্যপণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ার কথা সেখানে খাদ্যপণ্যের চাহিদা বেড়ে গিয়ে দামও বেড়ে যাচ্ছে। এই সুযোগকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা খাদ্যসামগ্রীর কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে অধিক ভোগ করতেও উৎসাহিত করা হচ্ছে। এর জন্য বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমগুলোকে তারা বেছে নিচ্ছে। হরেক রকমের খাবারের বিজ্ঞাপন, ইফতারের আইটেম, রেসিপি প্রচার করে মানুষকে কৌশলে অধিক ভোগের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবছরই এমনটা হয় বিধায় বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার তরফ থেকে আগে-ভাগেই বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসবের বেশিরভাগই মাঠে মারা যায়। এর মূল কারণ মানুষ স্বাভাবিকভাবে যতটুকু ভোগ করার কথা এ মাসে তার চাইতে বেশি ভোগ করছে। ফলে খাদ্যপণ্যের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। সুতরাং উৎপাদন বাড়ানো ছাড়া কিছুতেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। আর হঠাৎ করে বছরের একটি মাসে অতিরিক্ত চাহিদার যোগান দেওয়াও যেহেতু সরকারের পক্ষে সম্ভব নয় সেহেতু বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কখনোই সরকারের দ্বারা সম্ভবপর হয় না।



রমজান কোন উৎসবের মাস নয়, শিক্ষাগ্রহণের মাস, আত্মিক পরিশুদ্ধির মাস। কিন্তু এর পরপরই রয়েছে জাতীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফেতর। এটা শুধু তাদেরই জন্য যারা বিগত একটি মাস প্রকৃতির নিয়মের বাইরে গিয়ে স্বাভাবিক ভোগ বিলাস ত্যাগ করেছে এবং সে প্রকৃতি আবার ফিরে এসেছে। তাই এর নাম ঈদুল ফেতর, ফিতরাতে ( প্রকৃতিতে) ফিরে আসার উৎসব। কিন্তু আমরা দেখতে পাই বছরের এই দিনটিকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। পুরো রমজান মাস জুড়েই আমাদের এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙ্গা হয়ে উঠে, দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যায়। অথচ অন্যান্য ধর্মের উৎসবগুলোর আগে দেখা যায় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যে মূল্যছাড়ের আয়োজন করে, সাধারণ মানুষ যাতে উৎসব উপভোগ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখা হয়। অথচ আমাদের এ অঞ্চলে সেটা হয় না। বরং ঈদুল ফেতরের আগের একটি মাস অর্থাৎ রমজান মাসে সারা বছরের মুনাফা আদায় করে নেওয়ার চিন্তা থাকে তাদের। সুতরাং এই যদি হয় আমাদের অবস্থা তাহলে আমরা কি সংযম শিক্ষা নিলাম তা প্রশ্নই থেকে যায়। আর এ অবস্থায় সরকার শত চেষ্টা করেও বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেনা তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। সুতরাং এই মাসটি আসলে আমাদের লোভ-লালসাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারাটাই মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ। আর পানাহার বন্ধ রাখাটাতো শুধুমাত্র একটা আনুষ্ঠানিকতা। মানুষ চাইলেই লোক চক্ষুর আড়ালে গিয়ে খেয়ে নিতে পারে। প্রকৃত মো’মেনগণ যেমন সেটা করবেন না তেমনি তাদের উচিত প্রকৃত সংযমী হওয়ার সাধনা করা। অন্যথায় তা হবে শুধুই উপবাস থাকা। এ ব্যাপারে আমাদের শেষ রসুলের একটি ভবিষদ্বাণী রয়েছে যে, এমন এক সময় আসবে যখন মানুষের তাহাজ্জুদ পড়া হবে ঘুম নষ্ট করা এবং রোজা রাখা হবে না খেয়ে থাকার সমান। আমাদের সিয়াম সাধনা কি তেমনটাই হচ্ছে না?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.