নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মাত্রই স্বাধীনতার আকাক্সক্ষী। আবার একই সাথে সদাই মানুষ অপরের উপর কর্তৃত্ব এবং প্রভুত্বও বিস্তার করতে চায়। ফলে স্বাধীনতা আকাক্সক্ষী এবং কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাকারীদের মধ্যে যুগে যুগে সংঘাত চলে আসছে। এই সংঘাতের মধ্য দিয়েই মানব জাতি আজকের এই অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। মানুষের এই স্বাভাবিক স্বভাবকে অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু মানুষের এই স্বভাব যদি সীমা অতিক্রম করে তখনই বিপত্তি বাধে। অথচ এই অতি স্বাধীনতার মানসিকতা এবং অতি প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকে একটি নির্ধারিত মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই মানুষ সংঘাতকে এড়াতে পারত। কিন্তু আমরা এর বিপরীত দৃশ্যই দেখতে পাই। অতি স্বাধীনতার আকাক্সক্ষায় মানুষ বহু ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। ভৌগোলিকভাবে বিভিন্ন দেশে, সেখানেও বিভিন্ন মতবাদের ভিত্তিতে বহু রাজনৈতিক দলে, আবার দলের অভ্যন্তরেও কোন্দলে লিপ্ত হয়েছে। বিশ্বাসগত দিক থেকে নানা ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি ধর্মেই আবার বিভিন্ন ফেরকা, উপ ফেরকার সৃষ্টি হয়েছে। এইভাবে বিচ্ছিন্ন হতে হতে প্রতিটি মানুষ আলাদা হয়ে গেছে। এমনকি মানুষের সত্ত্বায়ও আজ বিভক্তি এসে গেছে। তার দেহ ও আত্মা সামঞ্জস্য রেখে চলে না। আত্মা সত্যকে আকড়ে ধরার চেষ্টা করে, কিন্তু দেহ ন্যায় অন্যায় ভুলে ভোগে নিমজ্জিত হয়। মানুষের এই বিভক্তির কারণে দিন দিন তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। তাই তারা একে অপরের সহযোগিতা না করে অপরকে দমনের চিন্তা করছে।
অপরদিকে অন্যের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার আকাক্সক্ষায় মানুষ প্রভূত শক্তি অর্জন করেছে। নিজ দেশের উন্নয়ন কাজের ক্ষতি করে বছরে বছরে বাজেটে সামরিক ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। সমাহার ঘটানো হচ্ছে মারনাস্ত্রের। পাখির মত উড়তে পারা প্রাণীকে খাঁচায় আটকে রাখার মত করে মানুষকেও জোর করে নির্দিষ্ট ভূ-খণ্ডে আটকে রেখেছে কৃত্রিম রেখা কিংবা কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে। কেউ স্বাধীনতার আওয়াজ তুললেই তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যা দিয়ে তার বা তাদের উপর সেই অস্ত্র প্রয়োগ করে অবদমন করা হয়। এই অবস্থায় নিশ্চিতভাবে বলা যায় কোন মানুষ যদি অপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতা লাভ করতে পারত তবে সে পৃথিবীর অন্য সকল মানুষের উপর প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠিত করে গোলাম বানিয়ে রাখত। বিপরীত দিকে যদি মানুষকে স্বাধীন হওয়ার পূর্ণ অধিকার দেওয়া হত তবে পৃথিবীর প্রতিটি গ্রাম, প্রতিটি পরিবার, প্রতিটি ব্যক্তি স্বাধীনতা ঘোষণা করে বসত। ইতোমধ্যেই যেমন এর অনেকটা হয়ে গেছে। অথচ মানুষের স্বভাবের উপরোক্ত অবস্থা তার একেবারে চূড়ান্ত অবস্থান। দুটোকেই যদি নিয়ন্ত্রণ করে একটি মধ্যমপন্থায় নিয়ে আসা হত তবে মানুষের মধ্যে বি¯তৃত সংঘাতের অবসান ঘটত।
তাই অতি কর্তৃত্ব করার মানসিকতা ও অতি স্বাধীনতার মানসিকতা- এর দুটোই মানবের জন্য ক্ষতিকর। অন্যের উপর কর্তৃত্ব করে আমার লাভ কী? সময়ের অবসানে দেখা যাবে সে আর আমি একই সমান, একই স্রষ্টার সৃষ্টি। আবার যে যা করার মত অতিরিক্ত স্বাধীনতায় লাভটাই বা কী? অন্যকে মেনে নেওয়ার মধ্য দিয়ে যদি সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় তবে সেটাই উত্তম নয়? তাই সামষ্টিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় দুই পক্ষকেই নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। দুই পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে। পারস্পরিক দূরত্ব কমাতে হলে একজনকে নেমে আসতে হবে আর একজনকে উপরে উঠতে হবে। অন্যথায় এক পক্ষের ছাড়কে দুর্বলতা মনে করে অন্য পক্ষ আরো বেসামাল হয়ে উঠতে পারে। এর মাঝেই নিহিত আছে ভারসাম্য। সকল মত ও পথের মানুষের মাঝে ভারসাম্য ফিরে আসুক এমনটাই কামনা করছি।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৮
উড়োজাহাজ বলেছেন: হুম, সহমত।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২০
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: অতি কর্তৃত্ব করার মানসিকতা ও অতি স্বাধীনতার মানসিকতা এর ভারসাম্যের ব্যাপারটা দেহমন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় বা আন্তর্জাতিক,প্রতিটা ক্ষেত্রেই প্রধান প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এমনকি রাষ্ট্রীয় নীতিমালাও এর প্রভাবেই রচিত হয়।
নিরংকুশ ক্ষমতা ও শক্তি এর ভালসাম্যের প্রধান অন্তরায়। চোখ মেললেই যার দেখা পাওয়া যায়।।