নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রত্যেক মানুষই স্রষ্টার প্রতিভূ। স্রষ্টা তাঁরই প্রাণ থেকে প্রাণকে ফুঁৎকার দিয়ে মানুষকে জীবনী শক্তি দান করেছেন। আর সেই প্রাণকে ধারণ করেছে মাটির দেহ। বসন্তে যে কচি পাতার জন্ম হয় তার উদ্দেশ্য শীতের আগমনে ঝরে যাওয়া। ঠিক তেমনি প্রতিটি মানুষের জন্ম মৃত্যুর হাত ধরে স্রষ্টার কাছে আবার ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে। এটাই মানব জীবনের উদ্দেশ্য। আর বাকি সব সেই উদ্দেশ্য পূরণের প্রক্রিয়া মাত্র। কিন্তু মানুষ সেই সত্যকে প্রায়ই ভুলে যায়। এই স্বল্প সময়ের অবস্থানকে সে চিরকালের ভাবতে শুরু। সে মোহাবিষ্ট হয়ে এখানে আরো অধিক ভোগ করতে চায়। এই মোহ তাকে অন্যায়ের পথে চালিত করে। আবার বিপরীত দিকও রয়েছে। চিন্তাশীল ও জ্ঞানী ব্যক্তিরা তার উল্টোটাই করেন। তারা স্রষ্টার করুণা ও ভালবাসা পেয়ে থাকেন।
কিন্তু খারাপ মানুষ কি তাঁর করুণা ও ভালবাসা পায় না? হ্যাঁ, তারাও স্রষ্টার ভালবাসা পায়। কিন্তু এর রূপটা হয়তো ভিন্ন। ভাল মানুষকে তিনি পুর®কৃত করেন আর অন্যায়ের পথে পা বাড়ানো ব্যক্তিকে দণ্ড প্রদান করেন। সাধারণ মানুষ মনে করে থাকে অন্যায়কারীকে দণ্ড দেওয়া তাঁর পক্ষ থেকে শাস্তি। এটা মানবিক চিন্তা। কিন্তু তিনি মানুষের বুদ্ধি দিয়ে চিন্তা করেন? না, তিনি ভাল মানুষ আর খারাপ মানুষকে তাঁর সহজাত স্বভাব অনুযায়ী ভালই বাসেন। তিনি আমাদের মত অল্পতেই ক্রোধান্বিত হন না। যে মানুষ খারাপ কাজ করে তা তাঁর জ্ঞাতসারেই হয়। কিন্তু মানুষ যদি পাপের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করে তখন তার প্রতি স্রষ্টার আরো করুণা বৃদ্ধি পায়। সেই করুণার অংশ হিসেবেই তাকে নিজের হাতে কিংবা মানুষের হাত দিয়ে দণ্ড প্রদান করেন। কিন্তু এই দণ্ড কি তার জন্য শাস্তিস্বরূপ? না, আসলে সেই দণ্ড তার শাস্তিস্বরূপ নয়, সেটা করুণাস্বরূপ। এই দণ্ড প্রদানের মাধ্যমে তাকে অন্যায় পথ থেকে বিরত করা হয় কিংবা পবিত্র করা হয়।
সুতরাং দণ্ডকে কিভাবে খারাপ বলা যায়? দণ্ডও কি পবিত্র নয়, যা অপরাধীকে সংশোধন করে? মানব সমাজে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখা হয়। তাদেরকে ঘৃণা করা হয়। কিন্তু উল্টোটাই হওয়া উচিৎ। কোন মানুষ অন্যায় করার পর যদি দণ্ড না পায় তবে তাঁর পাওনা পূরণ হয়নি। সে অবশ্যই তার পাওনা পেতে বাধ্য। সেটা যদি মৃত্যুর আগেই হয়ে যায় তবে সে নিস্তার পেয়ে গেল, করুণা পেল। পরকালে তার জন্য দণ্ড অবশিষ্ট থাকলো না। কিন্তু যারা অপরাধ করেও দণ্ড পায় নি তারাই স্রষ্টার করুণা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। স্রষ্টা নিজে যে ধর্ম পালন করেন, যে ধর্মকে ধারণ করেন সে সম্বন্ধে যারা অবহিত তারা এ জন্যই অপরাধ করে ফেললে দণ্ড ভোগ করার জন্য আকুল হয়ে পড়তেন। তারা স্রষ্টার করুণার অন্বেষণ করতেন।
আর মূর্খ্যরাই এই করুণার পথকে বিসর্জন দিয়ে পালাতে চায়। আজকের দুনিয়ার দিকে তাকালে আমরা কি অধিকাংশ মূর্খ্য স্বভাবের মানুষকেই দেখতে পাই না? অথবা ক্ষমতাশালীকে ক্রোধান্বিত হয়ে দণ্ডের প্রয়োগ করতে দেখি না? বাস্তবে এমনটাই হওয়া উচিৎ ছিল যে অপরাধীকে করুণা করে দণ্ড প্রদান করা হবে। যাতে সে অন্যায়ের পথকে উপলব্ধি করতে পারে। ভুল পথ আর সঠিক পথের প্রভেদ করতে পারে। আমাদের সকলের মধ্যে অপরাধের দণ্ডকে শাস্তি নয়, করুণা মনে করার মানসিকতা সৃষ্টি হোক এমনটাই কামনা। আর তা হলেই আমাদের অন্যায় করার প্রবণতাও কমে আসবে। সৎকর্ম এবং অসৎ কর্ম- এই উভয় পথেই আমরা করুণা প্রাপ্ত হতে পারবো। তাঁর করুণা প্রাপ্তির মাধ্যমেই আমাদের জীবনের লক্ষ্যকে পূর্ণতা দান করতে পারি।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:২৫
উড়োজাহাজ বলেছেন: হ্যা, তাই। তাই বলেই এক সময় আদালতে বছরে একটা অভিযোগ আসত না। নির্যাতিত এবং নির্যাতনকারী উভয়েই নিজেদেরকে নিরাপদ ভাবত।
২| ০১ লা মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুন।
আসলে জ্ঞান আর প্রেম যখন মিলন হয় তখনই এমন সুন্দর পরিশীলিত বোধের বিকাশ ঘটে।
+++++++++++++
০১ লা মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৩৩
উড়োজাহাজ বলেছেন: হ্যা, তিনি আমাদেরকে পরিপূর্ণ বোধ শক্তি দান করুন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৪৪
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: এভাবে ভাবলে তো আমাদের সমাজে অন্যায়-অনাচার,ভন্ডামী কিছুই থাকতো না। আর তাহলে অনুতপ্ত বা বিচারের সম্মুখিন হবারও ভয় থাকতো না-তাই না??