নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অভিজিত রায়ের হত্যাকাণ্ডে মুক্তমনা দাবিদার যে অংশটি অতিরিক্ত বিমর্ষ হয়ে পড়েছে তাদের বড় একটা ব্যর্থতা হচ্ছে এরা কোনভাবেই স্বীকার করে নিচ্ছে না যে অভিজিত রায় এবং মুক্তমনা ব্লগটি ধর্ম- বিশেষ করে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষপ্রবণ ছিল। একজন মানুষ যিনি ১৪০০ বছর আগে গত হয়েছেন অথচ এখনও তিনি প্রায় দেড়শো কোটি মানুষের হৃদয়ে অবস্থান করছেন, তার সম্মানার্থে এখনও মানুষ নির্দ্বিধায় প্রাণ উতসর্গ করতে কুণ্ঠাবোধ করে না, পৃথিবীর বহু অমুসলিম পণ্ডিতগণ তার কর্মযঞ্জের বিশালতা, নিরন্তর সংগ্রামের মাধ্যমে পারস্পরিক কলহে লিপ্ত উষর মরুর পশ্চাদপদ একটি জাতিকে জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, শিক্ষায়, সভ্যতায়, চিকিতসায় পৃথিবীর প্রভু জাতিতে পরিণত করা, রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্য যাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখতো তাদেরকে দিয়ে ততকালীন ঐ দুই দুইটি সুপার পাওয়ারকে একই সংগে গুড়িয়ে দেওয়ার মত সংগ্রামী বাহিনী তৈরি করা, ৫ লাখের মত জনসংখ্যার একটি জাতিকে পৃথিবী অভিমুখে বের করার জন্য তৈরি করা, তাদেরকে একটি জীবন বিধান দিয়ে যাওয়া এবং সেই জীবন বিধানটাকে নিজে ধারণ করার মত যে বিশাল ব্যক্তিত্ব, তাকে তারা তার ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়ে ঢুকিয়ে ফেলা, গৃহাভ্যন্তদের স্ত্রীদের সাথে তার আচার-আচরণ ইত্যাদি বিষয়গুলোকে হাইলাইট করা, নিয়ত সেগুলো নিয়ে দিনের পর দিন ক্রমাগত লিখে যাওয়া, তার প্রতি অরুচিকর ভাষা প্রয়োগ করে ছোট করার চেষ্টা করা যে কত ক্ষুদ্রতা, কত নীচতা তা এরা উপলব্ধি করতে পারছে না।
এ্ই না পারার একটি কারণ হচ্ছে এরা নিজেরা নিজেরা রোমান্টিক একটি চিন্তা-ধারা সৃষ্টি করে নিয়েছে। শ্লীলতা-অশ্লীলতার কোন মানদণ্ড এরা জানে না, মানে না। বাধাহীন ভোগ-বিলাস, যৌনতা এদের চাহিদা। এরা হাজার হাজার বছর থেকে চলে আসা মূল্যবোধ, সামাজিক মানদণ্ডকে এক লহমায় ভেংগে ফেলতে চায়। এরা জানেনা অথবা জানলেও পাত্তা দিতে চায় না যে কত সংগ্রাম-সংঘর্ষ ও চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সমাজ আজকের অবস্থানে এসে পৌছেছে। এর পেছনের সমস্ত কৃতিত্বকে এরা অস্বীকার করতে চায়। এদের এসব চিন্তাধারা কনস্ট্রাকটিভ নয়, ডেসট্রাকটিভ। তাদের এসব চিন্তাধারা রোমান্টিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাদের এই হঠকারী কর্মকাণ্ড, রোমান্টিকতা দিনে দিনে পৃথিবীকে আরো অশান্তিপূর্ণ করতে তুলছে। তাদের এই পাগলামীতে সমর্থন দেওয়া কোন যৌক্তিক কাজ হতে পারে না।
নবী জীবনের ক্ষেত্রে একটা আয়রনি হচ্ছে, এই বিশাল ব্যক্তিত্বকে তার পরবর্তী প্রজন্ম অনেকটাই বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। এই যে যে গোষ্ঠীটি তার জন্য প্রাণ দিতেও কুণ্ঠাবোধ করে না তারাও কি তার সঠিক মুল্যায়ন করতে পেরেছে? এরাও কি এই বিশাল ব্যক্তিত্বের বিশাল কর্মযজ্ঞকে অস্বীকার কিংবা গোপন করে তার ব্যক্তিগত জীবনের খুটিনাটি পোশাক-আশাক, হাটাচলা, ডান কাতে ঘুমানো, খাওয়ার আগে মিঠাই খাওয়ার মত তুচ্ছ বিষয় নিয়ে পড়ে রয়নি? তারা যেমন নবীর ব্যক্তিগত আচরণ, চলাফেরা ইত্যাদিকে প্রাধান্য দিয়েছে তেমনি কথিত মুক্তমনারাও তার জীবনের খুটিনাটি, অন্দরমহলের গোপন বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে তাকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এই স্থানটিতে এই দুটি পক্ষই নবী জীবনের মূল দিকটি ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ তার জীবনের মূল দিকটি ধরতে পারলে এবং সেটাকে অনুসরণ করতে পারলে মুক্তমনারা যেমন পেত তাদের কাংখিত অবিচারহীন দুনিয়া, তেমনি আখেরাতে বিশ্বাসীরা পেত পার্থিব কল্যাণের পাশাপাশি পারলৌকিক মুক্তি। সেটা না করে এখন এরা অর্থহীন বিষয় নিয়ে একজন আরেকজনকে খুন করছে, যা মানব সভ্যতার জন্য বিরাট হুমকি। এখন এই দুয়ের লড়াই থেকে নিজেদের বাচিয়ে রাখতে পারাই হবে অন্যদের প্রধান কর্তব্য।
০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৫১
উড়োজাহাজ বলেছেন: শুনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৩২
উইন্ডো বলেছেন: অসাধারন লিখেছেন। আপনার বক্তব্য আমার অন্যদের উদ্দেশ্যে বলা বক্তব্যের লিখিত রুপ। বাহ্