নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে যে ইউরোপ-আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ও বিভিন্ন দেশ যেভাবে বিভিন্ন জোটে বিভক্ত হয়ে পড়ছে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধেরই প্রস্তুতিপর্ব হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অবশ্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্লট অনেক আগেই রচিত হয়ে গেছে। এখন শুধু অপেক্ষা করার পালা যে কোন সময় ব্যাপকভাবে অস্ত্রের দামামা বেজে ওঠে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, যে কোন একটি স্ফুলিঙ্গ যুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে দিতে পারে। তুরস্ককর্তৃক রাশিয়ার বিমান ভূপাতিত করা এমনই একটি পদক্ষেপ ছিল। আপাতত সেটা নিয়ে হামলা-প্রতি হামলার ঘটনা না ঘটলেও এটার সুরাহা অবশ্য এখনও হয়নি। কিন্তু এই ঘটনা পক্ষ-বিপক্ষের মধ্যে স্বার্থসংশ্লিষ্টতা ও পছন্দসই পক্ষ নেওয়ার একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এর একদিকে আছে ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলো আর অন্যদিকে রাশিয়া। ইউরোপ-আমেরিকার দিকে ঝুঁকে আছে সুন্নী মুসলিম দেশগুলো। অপরদিকে শিয়াপন্থীরা যাচ্ছে রাশিয়ার দিকে। ইউরোপ-আমেরিকানদের হয়ে সুন্নীদের পক্ষ থেকে আঞ্চলিক নেতৃত্ব দেবে সৌদি আরব আর রাশিয়ার হয়ে শিয়াদের নেতৃত্ব থাকবে ইরান। এমতাবস্থায় অনানুষ্ঠানিক সূত্রে জানা যাচ্ছে যে বাংলাদেশ সুন্নী রাষ্ট্র সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন ৩৪ টি রাষ্ট্রের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে আইএসের মোকাবেলা করতে যাচ্ছে।
যেহেতু সংবাদটি অনানুষ্ঠানিক সেহেতু সেটাকে সঠিক ধরে নিয়ে কোনো ধরনের মতামত প্রকাশ করা উচিত হবে না। তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতি যে আকার ধারণ করছে তাতে আসন্ন পরিস্থিতি মোকাবেলায় অবশ্যই আগে থেকে বাংলাদেশের ভবিষ্যত করণীয় ঠিক করে নিতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেটা মূলত তাদের ধর্মীয় মতপার্থক্য ও আঞ্চলিক কর্তৃত্বের বহিঃপ্রকাশ। তাদের এই অনৈক্যের সুযোগে ফায়দা তুলে নিচ্ছে আধিপত্যবাদী পশ্চিমা বিশ্ব তাদের আগ্রাসী নীতির মাধ্যমে। আর রাশিয়ান ভল্লুককে টেনে এনেছে তাদের নিজস্ব স্বার্থের গন্ধ ও এই সুযোগে তাদের পুরনো শত্রুকে দেখানো যে ‘আমরা একেবারে মরে যাইনি’।
সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ। সাংবিধানিকভাবে এদেশ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হলেও যেহেতু অধিকাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী সেহেতু বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে ইসলাম প্রধান দেশ হিসেবে স্থায়িভাবে পরিগণিত হয় এবং এর আলোকেই বাংলাদেশের সাথে অন্যরা সম্পর্কিত হয়ে থাকে। সাংবিধানিক অবস্থা যাই হোক, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ হওয়ায় কিছুতেই আমরা আমাদের ইসলাম পরিচয় আমাদের মুছে ফেলতে পারি না এবং সেটা আমরা চাইও না। ধর্মনিরপেক্ষ নীতিতে বিশ্বাসী বলে আমরা অন্যদের ধর্মীয় অধিকারে বিশ্বাসী, কিন্তু তাই বলে কিছুতেই সেটা নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় অস্বীকার করে নয়। আমাদের স্বকীয়তা বজায় রেখেই আমরা ধর্মনিরপেক্ষ। কিছুতেই আমরা সেই ধর্মনিরপেক্ষ নই যার কারণে আমাদেরকে ধর্মহীনতার পরিচয়ে পরিচিত হতে হবে।
আজ মধ্যপ্রাচ্যে যখন মুসলিম পরিচয়ধারীরা দুইটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন আমাদের কোনোভাবেই উচিত হবে না এদের মধ্যে যে কোন একটা পক্ষ নেওয়া। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন ৩৪টি দেশের জোটের আপাত কার্যক্রম আইএসের মোকাবেলা হলেও সেই শক্তি আদতে শিয়াদের বিরুদ্ধেই ব্যবহৃত হবে। কেননা মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব মূলত শিয়া-সুন্নী দ্বন্দ্বেরই স্বরূপ। তাই বাংলাদেশর কিছুতেই উচিত হবে না তাদের এই শিয়া-সুন্নী দ্বন্দ্বে কোন একটা পক্ষ অবলম্বন করা। বাংলাদেশ যদি এই এই দ্বন্দে জড়িয়ে পড়ে তবে অবশ্যই মুসলমানদের কিছু দেশকে শত্রুতে পরিণত করতে হবে। মুসলমান দেশ হিসেবে সেটা আমাদের কিছুতেই কাম্য নয়। বরং আমাদের উচিত এই নিজেদের এই দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা করা।
শিয়া-সুন্নীর দ্বন্দ্বে যে পক্ষই বিজয়ী হোক না কেন আদতে যে ক্ষতিটা হবে সেটা আমাদেরকেই দুর্বল করবে। আর বিজয়ী করবে পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি কিংবা স্বার্থান্বেষী রাশিয়াকে। মধ্যপ্রাচ্যকে কেন্দ্র করে যে লড়াইয়ের সূচনা হবে তাতে মধ্যপ্রাচ্যই যে যুদ্ধের তীর্থভূমিতে পরিণত হবে, সেখানেই যে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যবহার হবে সেটা প্রায় নিশ্চিত। সুতরাং এই যুদ্ধে ক্ষতিটাও হবে সবচেয়ে বেশি মধ্যপ্রাচ্যবাসীর। মরবে মুসলিম শিয়ারা, মরবে মুসলিম সুন্নীরা সর্বোপরী মরবে মানুষ। সাম্রাজ্যবাদী ও স্বার্থান্বেষী শক্তির সেখানে লাভের কিছু থাকলেও আমাদের ক্ষতি ছাড়া কিছুই ভাগে জুটবে না। বরং আমাদের দেশের অস্ত্র-শস্ত্র বিনষ্ট ও সৈনিকদের প্রাণ যাবে। আমাদের হাত রক্তরঞ্জিত হবে অপর মুসলিম ভাইদের রক্তে। সুতরাং আমরা যদি এই ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ নাও থামাতে পারি তবুও আমাদের উচিত হবে না সেখানকার কোন একটি পক্ষাবলম্বন করা।
এমতাবস্থায় আইএস প্রসঙ্গে আমাদের করণীয় নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নিলে সেটা আইএসের স্বার্থরক্ষা করবে বলে মনে হয়। এ ব্যাপারে বলতে গেলে সত্যিকার অর্থে আইএসকে নির্মূল করতে পাশ্চাত্য শক্তিগুলোই কতটুকু আন্তরিক সেটা আগে বিবেচনা করতে হবে। এটা পরিষ্কার যে তারা আইএসের উত্থান ঘটিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করেছে আবার তারাই এখন আইএস নির্মূল করতে চাইছে। মূলত আইএস যতদিন থাকবে ততদিনই তাদের স্বার্থোদ্ধার হতে থাকবে, অস্ত্রব্যবসা চলতে থাকবে। পাশাপাশি আইএস যতদিন থাকবে ততদিন সেখানকার পরিস্থিতি ঘোলা থাকবে এবং সেই ঘোলা পানিতে তারা তাদের শিকার চালিয়ে যাবে। তারা যদি আইএস দমনে তৎপর থাকত কিংবা সত্যি সত্যি আইএসের বিলুপ্তি চাইত তবে তারা এর জন্মই দিত না। আইএস নির্মূলে তাদের অবশ্যই সামর্থ আছে। তাই সেটা করেই তারা তাদের আন্তরিকতা দেখাক। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ তখনই আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে পারে যখন শিয়া-সুন্নী সম্মিলিতভাবে তাদেরকে দমন করতে নামবে। এর আগে বাংলাদেশের নামাতে কিংবা কারো কোন পদক্ষেপেই ক্ষতিবৃদ্ধি ছাড়া কোনো ধরনের কল্যাণ বয়ে আনবে না। সুতরাং যদি আইএসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের নামতেই হয় তবে আগে শিয়া-সুন্নী পক্ষকে অন্ততপক্ষে তাদের স্বার্থের দিকটা বুঝিয়ে একত্রে লড়াই করাতে হবে। এই লড়াইটাই বাংলাদেশের জন্য এখন উপযুক্ত লড়াই। এ লড়াইয়ে বাংলাদেশের অস্ত্র লাগবে না, সৈন্য লাগবে না। লাগবে কিছু মগজওয়ালা মানুষ এবং মানবতার প্রতি তাদের আন্তরিকতা। বাংলাদেশ কি সেদিকে হাটবে?
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৪
উড়োজাহাজ বলেছেন: কোটি টাকার প্রশ্ন।
২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৪
shiponblog বলেছেন: আপনার মত দেশের নেতা গুলো ভাবলে কতই না ভালো হত।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৬
উড়োজাহাজ বলেছেন: আসলেই কতই না ভালো হতো!
৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৮
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
উড়োজাহাজ,
আমাদের বুদ্ধিওয়ালাদের মাথায় বুদ্ধি আছে অনেক। কিন্তু খাটানোর সাহস/যোগ্যতা নাই। এজন্যই, আপনাদের তো আমরা নেতা বানাতে পারছি না।
আপনার প্রস্তাব ভেবে দেখার মতো।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৭
উড়োজাহাজ বলেছেন: আপনার বক্তব্যটা ধরতে মুশকিল হচ্ছে। তবে শেষ লাইনটা ভালোই বোধগম্য হয়েছে।
৪| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৬
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
উড়োজাহাজ,
বলছিলুম আমরা সাধারণ মানুষ বুদ্ধিওয়ালাদের (মগজযুক্ত এবং মানবতার প্রতি আন্তরিকতা) তাদের সাহস/যোগ্যতায় শক্তি যোগান দিতে পারছিনে। এবার বোঝা গেলো ?
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৯
উড়োজাহাজ বলেছেন: হুম। ক্লিয়ার।
৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৯
আবু আবদুর রহমান বলেছেন: রাশিয়াকে ইয়াহুদিরা অর্থ দিয়ে হামলা করাচ্ছে সিরিয়াতে। মূল কারণ হল এই জায়গাগুলো ইসরাইলের জন্য খালি করা হচ্ছে । অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে বলে মনে হয় না ।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫০
উড়োজাহাজ বলেছেন: সত্য হলেও একই কথা। ক্ষতি আমাদেরই।
৬| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫৫
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: লাগবে কিছু মগজওয়ালা মানুষ এবং মানবতার প্রতি তাদের আন্তরিকতা। বাংলাদেশ কি সেদিকে হাটবে?
ওরে বাপরে বাপ!!!
বন্ধুবরের মাথায়ও কত্ত মগজরে বাবা!!!
কি ভারী ভারী সবকথা............
অত শত বুঝিনে
হীরক রাজ্যে ''জয়'' মহারাণী
এই হলো মূলমন্ত্র
বুঝলে ভায়া.................তাতেই মজে আছি
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫৯
উড়োজাহাজ বলেছেন: থাকেন। সময় মত হাপিশ হয়ে যাবেন। অসুবিধা কি?
৭| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১১
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: হা হা হা
হাপিশ হতে বাকী আছে কি?
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩১
উড়োজাহাজ বলেছেন: আছে আরেকটু। বঙ্গোপসাগরে তো বউ বাচ্চা নিয়া নামেন নাই। চিন্তা করে দেখেন তিন দিকে কাটাতার। একমাত্র দক্ষিণে খোলা। লাখ লাখ আয়লান কুর্দি হবে সেখানে।
৮| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১১
মেঘনা পাড়ের ছেলে বলেছেন: শেষ লাইনটাই আসল। পরিপুর্ন একমত বক্তব্যের সাথে
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২২
উড়োজাহাজ বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এ লড়াইয়ে বাংলাদেশের অস্ত্র লাগবে না, সৈন্য লাগবে না। লাগবে কিছু মগজওয়ালা মানুষ এবং মানবতার প্রতি তাদের আন্তরিকতা। বাংলাদেশ কি সেদিকে হাটবে?
ভাল বলেছেন। কিন্তু ভাল কথা শোনার লোক কই?