নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা ভাষায় কথা বলা মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করি।আমি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মবিশ্বাসের চরম বিরোধিতা করি।

মোহাম্মাদ ফারহান খান

মোহাম্মাদ ফারহান খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আস্তিক-নাস্তিক বিতর্কে জনপ্রিয় লজিক-

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩২

ইন্টারনেটে আমরা যখন আস্তিক্যতা ও নাস্তিক্যতা নিয়ে বিতর্কে শুরু করি তখন স্বাভাবিক ভাবে আস্তিকরা কিছু যুক্তি ব্যবহার করেন যা একটু বিশ্লেষণ করলে খন্ডন করা যায়।ধর্ম সম্পর্কে না জানা তরুণ মুসলিমরা তাদের যুক্তিগুলো আত্মস্থ করে আর মনে করে নাস্তিকতা আসলে ভ্রান্তু ও অযৌক্তিক কিছু।তরুণরা যারা যৌক্তিক মনোভাব এখনো সৃষ্টি করতে পারে নি তারা ধার্মিকের চতুরতা ধরতে পারবে না এটাই সত্য।নাস্তিকদের কাজ হলো চতুর ধার্মিকের অপযুক্তিগুলো খন্ডন করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নাস্তিকতা,মুক্তচিন্তা তথা যুক্তিবাদী মনোভাব গঠন করা এবং তাদের(তরুণ ধার্মিক) ধর্মীয় উগ্রতা থেকে রক্ষা করা।

আজকে আমরা একজন ধার্মিকের যুক্তিখন্ডন করব যিনি নাস্তিকতা ও সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের স্বপক্ষে কিছু যুক্তি দেখানোর চেষ্টা করেছেন।অবশ্য তার (Shihab Ahmed Tuhin) ব্যবহার করা লজিক গুলো পুরাতন।উনার দেখানো লজিকগুলো নতুন নয়।

জনাব ধার্মিক (Shihab Ahmed Tuhin) প্রথমেই যে যুক্তি ব্যবহার করেছেন তাহলো-
“ধরা যাক, স্রষ্টা বলতে আসলে কেউ নেই। তাহলে মৃত্যুর পর কী হবে? তুমিও মারা যাবে, আমিও মারা যাব। তুমিও শূন্যতায় হারিয়ে যাবে, আমার ভাগ্যেও ঘটবে একই পরিণতি। কিন্তু ধরা যাক, স্রষ্টা বলতে কেউ আছেন। তাহলে? আমি তো পার পেয়ে যাব। কিন্তু তুমি তো ধরা খেয়ে যাবা, অনন্তকাল আগুনে পুড়বা। আমার কিন্তু ধরা খাওয়ার কোন চান্স নাই। কিন্তু তোমার ধরা খাওয়ার প্রবাবিলিটি ফিফটি-ফিফটি। গণিতের ভাষায় ১/২।"

শুরুতে বলে নেওয়া ভাল ,এই ধরনের অপযুক্তি অনেক নাস্তিক খন্ডন করতে পারেছেন তাদের বইয়ে কিন্তু হতাশার কথা হলো একরোখা মুসলিমরা ভিন্নমতের বই পড়ে দেখেন না।যার কারণে তারা এমন অপযুক্তির উত্তর না পেয়ে অতৃপ্ত হয়ে ঈশ্বরের বিশ্বাস করেন।রিচার্ড ডকিন্স তার দি গড ডিল্যুশন বইয়ে ব্লেইজ পাসকালের বাজী খন্ডন করতে গিয়ে অনেক সুন্দর যুক্তি দিয়েছেন।আসলে জনাব (Shihab Ahmed Tuhin) ও ব্লেইজ পাসকাল একই যুক্তি ব্যবহার করেছেন ঈশ্বরের অস্তিত্বের স্বপক্ষে তাই তাদের উত্তর একই হবে।আপনি ভাল করে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন এই ধরনের যুক্তিতে কিছু অদ্ভুত ব্যাপার আছে।কোন কিছুকে বিশ্বাস করাকে আপনি কোন পলিসি বা নীতি হিসাবে সিধান্ত নিতে পারবেন না।ব্লেইজ পাসকালের বাজী শুধু ঈশ্বরকে বিশ্বাস করার ভান করার ক্ষেত্রে হতে পারে।আপনি যে ঈশ্বরের বিশ্বাস করেন তিনি যদি সর্বজ্ঞ ঈশ্বর হয় তাহলে আপনার ধোঁকাবাজি সহজে ধরতে পারবে।যদি কোন নাস্তিক মৃত্যুর পর আল্লাহর মুখোমুখী হন এবং আল্লাহ জানতে চান কেন সে আল্লাহর উপর বিশ্বাস করতেন না?তাহলে এই প্রশ্নের সহজ উত্তর রাসেলের মত করে দেওয়া যেতে পারে “যথেষ্ট প্রমাণ ছিল না ঈশ্বর,যথেষ্ট প্রমাণ ছিল না ”। ঈশ্বর যদি সত্যি ন্যায় ও বুদ্ধিমান বিচারক হন তাহলে পাসকালের মত সুবিধাবাদি বিশ্বাসীর চেয়ে যথেষ্ট প্রামাণের অভাবে ঈশ্বররে অবিশ্বাসী নাস্তিকের প্রতি সম্মান দেখাবে।যে সব ধার্মিক আল্লাহর আস্তিত্বের বিষয়ে পলীসি করে জান্নাত বা জাহান্নাম লাভের জন্য তার উপর বিশ্বাসের ভান করবে তারা স্বাভাবিক ভাবে আল্লাহর ক্রোধে পড়ার কথা!আল্লাহর অস্তিত্বের স্বপক্ষে সামান্য সম্ভবনা আছে সেই সম্ভবনাকে পলিসি করে তার উপর কাপুরুষোচিত বিশ্বাস স্থাপন করার চেয়ে আপনি সৎ অবিশ্বাসী হয়ে অনেক সুন্দর ও পরিপূর্ণ জীবন কাটাতে পারবেন।

এরপরে তিনি নাস্তিক্যবাদীর দেখানো একটি লজিক তুলে ধরেছেন এবং সেই লজিকের কাউন্টার করতে চেষ্টা করেছেন।তার লেখা থেকে এই অংশ বিশ্লেষণ করার জন্য তুলে ধরা হলো-

“একসময় নাস্তিকরা গাধা পর্যায়ের ছিল। এখন বানরের স্তরে এসেছে। বুদ্ধিমত্তা আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। তারা এখন এই লজিকের বিরুদ্ধে কাউন্টার লজিক দাঁড় করায়।
পৃথিবীতে হাজার হাজার (প্রায় ৪২০০) ধর্ম আছে। এর মধ্যে তোমার ধর্মই যে সঠিক তার সম্ভাব্যতাই বা কতোটুকু? হাজারে একভাগ। এই ক্ষুদ্র মান তো আমি ইগনোরই করতে পারি। আমাদের দিকে তাকাও! আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না, কোন ধর্মে বিশ্বাস করি না, আমাদের একটাই ভাগ। আবার তোমাদের ধর্মের নিজেদের মধ্যেই অসংখ্য ভাগ। সবাই দাবী করে তারাই সঠিক। মুসলিমদের মধ্যে শিয়া-সুন্নী রয়েছে। একদল আরেকদলকে কাফের বলে। খ্রিষ্টানদের ইতিহাস তো ক্যাথলিক-প্রটেস্ট্যান্ট রেষারেষিতে রক্তাক্ত। তোমাদের প্রবাবিলিটি কিন্তু আরো কমছে। আর আমাদের প্রবাবিলিটি? সেইম। ঈশ্বর নাই তো নাই। একদম ফুলস্টপ।”
লজিকটা চমৎকার। কিন্তু এখানে কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। এখানে ধরা হয়েছে সবগুলো ধর্ম একইরকম, তাদের সত্যি হবার প্রবাবিলিটিও সেইম। এখন একটা ধর্ম যতোই যৌক্তিক হোক না কেন আর অন্য ধর্ম যতোই অযৌক্তিক হোক না কেন। সব তাদের কাছে একই রকম।
ধরা যাক, আমি জিজ্ঞেস করলাম, দুইটি চিড়িয়াখানা আর দুইটা চায়ের কাপের মধ্যে একটি সিংহ পাবার সম্ভাব্যতা কতোটুকু? উপরের লজিক খাটালে উত্তর আসে ১/৪। কিন্তু কমন্সেন্সটাকে যদি একটু কাজে লাগাই তাহলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, চায়ের কাপের মধ্যে কখনোই সিংহ থাকবে না। তাই সঠিক উত্তর হওয়া উচিত ১/২।
এভাবেই স্রষ্টা ও ধর্মের প্রশ্নে আমাদের কমনসেন্সটাকে আরেকটু বাড়ালে দেখা যাবে স্রষ্টা আছেন। আর সেই স্রষ্টা একজনই। তারপর একেশ্বরবাদী রিলিজিওনগুলো এনালাইসিস করা যেতে পারে। একেবারে অন্ধ না হলে যে কারো কাছেই ইসলামের সৌন্দর্য ফুটে উঠতে বাধ্য।”
জনাব ধার্মিক (Shihab Ahmed Tuhin) উক্ত বক্তব্যে নিজের অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন।তিনি নিজে নাস্তিক্যতা সম্পর্কে খুব বেশি জানেন না।উনি নাস্তিক্যবাদীদের বই পড়ে থাকলে তার প্রথম লজিকের বিরুদ্ধে নাস্তিকরা কি যুক্তি দাঁড় করাতে পারে তা উল্লেখ পূর্বক নাস্তিকের যুক্তির কাউন্টার দিতেন!কিন্তু তা না করে তিনি নাস্তিকের উপর ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন ।তার পর নাস্তিক্যবাদীর লজিকের মনগড়া তরজমা করে বলেছেন-
“লজিকটা চমৎকার। কিন্তু এখানে কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। এখানে ধরা হয়েছে সবগুলো ধর্ম একইরকম, তাদের সত্যি হবার প্রবাবিলিটিও সেইম। এখন একটা ধর্ম যতোই যৌক্তিক হোক না কেন আর অন্য ধর্ম যতোই অযৌক্তিক হোক না কেন। সব তাদের কাছে একই রকম।”
আসলে ব্যাপারটা আমার কাছে এই রকম নয়।আমাদের পৃথিবীতে হাজার হাজার ধর্ম আছে।আপনি যদি সেই ধর্মগুলোর মধ্যে মেজর ধর্মগুলো অধ্যায়ন করেন তাহলে দেখবেন সকল ধর্ম নিজকে সত্য বলে দাবি করে আর সবধর্মের মধ্যে কিছু না কিছু গলদ আছে।অবশ্য ধর্মগুলো একটি বিষয়ে একই রকম তা হলো সন্ত্রাস ছড়ানো।অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি অবিচার করা।সর্বপরি ধর্মগুলো আন্তধর্ম ও অন্তধর্ম বিষয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাত সৃষ্টি করে রেখেছে সেই আদিকাল থেকে।পৃথিবীর অমীমাংসীত ও সংঘাতপূর্ণ ক্ষেত্রগুলো বেশির ভাগ ধর্ম কেন্দ্রীক।যেমন:ইহুদী,মুসলিম,হিন্দু ও খ্রিস্টান দ্বন্দ্বগুলোর পিছনে আছে শুধুমাত্র ধর্মীয় উম্মাদনা।এই যে ধার্মিকরা পরস্পরের সাথে জিহাদ করে জান্নাত আদায় করার জন্য ব্যস্ত আছে তারা আসলে ধর্মের পাথর্ক্য ছাড়া আর কোন কারণে একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে না।ধর্মের কারনে তারা কলুর বলদের মত নিজেরা যুদ্ধ করে পৃথিবীতে বড় ধরনের সমস্যার জন্ম দিয়ে যাচ্ছে।যদি কোন ঈশ্বর থাকত আর তিনি কোন আজব বিধান ধর্ম পাঠাতেন তাহলে তার সেই মতাদর্শের কারণে মানুষ আজ এত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়াতো না।যা মানুষের সৃজনশীলতা নষ্ট করে,মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটায় আর মানুষকে যুক্তিপ্রবণ হতে বাধা দেয়,যা মানব সভ্যতাকে হাজার বছর পিছিয়ে নিয়ে যায় সেই মতাদর্শ সত্য হতে পারে না।সত্য সব সময় অগ্রগামী আর সুন্দর হয় ।ধর্ম সত্য নয় বলেই এটা মানুষকে অগ্রগামী এবং জীবনকে সুন্দর করতে পারে না।আপনারা যারা মানব সভ্যতার ইতিহাস পাঠ করেছেন তারা জানেন গড এর ধারণা সমাজ বিবর্তনের এক পর্যায়ে উদ্ভব হয়।গডের ধারণা মাথায় গজানো নিয়ে সমাজ বিজ্ঞানীদের নানা মত বিদ্যমান।অনেকে মনে করেন টোটেম হচ্ছে আদি মানব সমাজের ধর্ম বিশ্বাসের ভিত্তি ছিল।ক্লানের সদস্যরা তাদের পূর্বপুরুষদের পূজা অর্চনার মাধ্যমে সম্মরণ করার সময় বিভিন্ন জন্তু জানোয়ারকে প্রতিক হিসাবে গ্রহণ করতো।এছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যের কারণে মানুষের মধ্যে অলৌকিক শক্তির প্রতি ধারণা জন্ম নেয়।তারা অলৌকিক শক্তির পূজা করা শুরু করে দেয়।সমাজবিজ্ঞানীদের মতে ধর্ম বিশ্বাস সম্পূর্ণ ভ্রান্ত।সমাজিক বিবর্তনের ফসল হচ্ছে আমাদের ধর্ম বিশ্বাস।তাই আমরা নাস্তিকরা ধর্ম ও গডে বিশ্বাস করি না।

তিনি আবার নাস্তিকের লজিকের একটি লাইন টেনে লিখেছেন-
“এখন তাদের লজিকের এই অংশটুকুতে আবার চোখ বুলানো যাকঃ “আমাদের দিকে তাকাও! আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না, আমাদের একটাই ভাগ। ঈশ্বর নাই তো নাই। একদম ফুলস্টপ।”
নাস্তিকের এই লজিকের বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যায় তিনি অনেক বড় পরিসংখ্যান তৈরী করেছেন।যেখানে নাস্তিক বা ধর্মহীনদের শ্রেণী বা প্রকারভেদের বিরাট তালিকা প্রস্তুত করেছেন।আবার তিনি মুমিনীয় কায়দায় নাস্তিকদের মধ্যে ভিন্নমতের বিষয়টি স্রেফ ফেরকা বলে চালিয়ে দিয়েছে যা বড় ধরনের ভুল।আমরা নিজেরা ভিন্নমতের অনুসারণ করি আর ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করি তাই নাস্তিকদের শ্রেণী বিভাজন তুলে ধরে মজা নেওয়ার কিছু নেই।

এবার লেখক অক্ষেপ নিয়ে লিখেছেন-
“আচ্ছা এই যে, প্রচলিত ধর্মের বাইরে যারা আছে, তাদের মধ্যে এতো ভাগের ভিত্তিতে কি আমি সব গ্রুপকে বাতিল করছি? না, মোটেও না। চাইলে ক্রিটিকালি এনালাইসিস করে এদের অসারতা প্রমাণ করা যায়। আর ভাগ তো আমাদের মুসলিমদের মধ্যেও আছে। যদি একশজন মা এক সন্তানের মাতৃত্ব দাবী করে তার মানে কিন্তু এই না যে, সন্তানের কোন মা নেই। অবশ্যই আছে! তবে সেটা বের করতে আমাদেরকে আমাদের বুদ্ধিমত্তা খাটাতে হবে।”
লেখক এখানে বলতে চেয়েছেন প্রচলিত ধর্মের বাইরে নাস্তিকদের বা ধর্মের প্রতি আস্থাহীনদের এত এত শ্রেণী বিভাজন থাকার পররেও তিনি তা বাতিল করতে পারেন নাই ।এক্ষেত্রে তার ক্রিটিক্যাল এনালাইসিস দরকার।আসলে উনি সত্য উপলদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন।নাস্তিকরা অনেকগুলো পথে চিন্তা করতে পারেন আর তারা কখনো নাস্তিকতা বিষয়ে নিজেদের মত ভেদের কারণের একজন নাস্তিক অন্য নাস্তিকের সাথে জিহাদে করে না।এক নাস্তিক অন্য নাস্তিককে সুইসাইড বোমা মেরে উড়িয়ে দেয় না।এখানেই নাস্তিকতার বড় সফলতা।এখানেই মুক্তচিন্তার বিজয়।অন্যদিকে আল্লাহর পাঠানো হাজার হাজার ধর্মের প্রত্যেকে নিজকে সত্য মনে করে।তারা পরস্পর জিহাদ করে।যা আমরা ধর্মযুদ্ধ নামে ডাকি।ধর্ম সত্য ও আল্লাহর অস্তিত্ব সত্য হলে তিনি অবশ্যই এমন মহামারী হতে ধার্মিকদের উদ্ধার করে নিজের কার্য সিদ্ধি করতেন।

উপসংহারে গিয়ে জনাব ধার্মিক (Shihab Ahmed Tuhin) লিখেছেন-
“মজার ব্যাপার, আমরা তো কোন নির্দিষ্ট মতবাদকে আঁকড়ে ধরতে পারি। নিশ্চিত হতে পারি। আমাদের সামনে গাইডলাইন থাকে। কিন্তু তাদের মধ্যে কোন নিশ্চয়তা থাকে না। কোন দিকনির্দেশনা থাকে না। আল্লাহ তায়ালা এদের সম্পর্কে বলেন।
“তারা পরষ্পরকে কী বিষয়ে জিজ্ঞেস করছে? মহাসংবাদ (কিয়ামত) সম্পর্কে। সে বিষয়ে তারা নিজেরাই মতবিরোধী।” [আল কুরআন, সূরা নাবা ৭৮: ১-৩]
অর্থাৎ, যারা পরকালকে অস্বীকার করে তারা নিজেরা যে নিজেদের মধ্যে একমত, ব্যাপারটা মোটেও তেমন না। যেমনঃ মক্কার কেউ কেউ বলতো আল্লাহ আছেন কিন্তু পরকাল নেই। আবার কেউ কেউ বলতো, আল্লাহও নেই। পরকালও নেই। তাদের চিন্তা-ভাবনা একেকসময় একেকরকম হয়ে যেতো। [তাফসীরে জালালাইন, তাফসীরে মাযহারী]
সামান্য কিছু দর্শনের জ্ঞান নিয়ে স্রষ্টার অস্তিত্ব অস্বীকার করা খুবই হাস্যকর। এ জ্ঞান তো সামান্য আলো দেয়ার বিনিময়ে অধিক অন্ধকারেই নিয়ে যায়।।”

সর্বশেষে আমি লেখকের দেওয়া লজিকগুলোর বিশ্লেষেণ করে আমার লেখা শেষ করব।উপরে তিনি বলেছেন মুমিনরা নির্দিষ্ট মতবাদকে আঁকড়ে ধরতে পারে। নিশ্চিত হতে পারে। তাদের সামনে গাইডলাইন থাকে। কিন্তু নাস্তিকদের মধ্যে কোন নিশ্চয়তা থাকে না। কোন দিকনির্দেশনা থাকে না।উনি যাই হোক এখানে সত্যকথা বলেছেন মুসলিম তথা সকল ধর্ম বিশ্বাসী গোঁড়াবাদী হয়ে একটি মতাদর্শের মধ্যে নিজকে বন্দী করেন।তারা কুয়ার ব্যাঙ হয়ে বাস করতে চায় আর নাস্তিকরা কুয়াতে বাস করে নিজের জীবনকে নষ্ট করে না যার জন্য তারা নিদ্রিষ্ট কোন কিতাবের গাইড মেনে চলে না।আমরা আপনার ধর্মগ্রন্থের মত গাইড লাইন মানি না যা মতাদর্শের ভিন্নতার কারণে অন্যদের হত্যা করে জান্নাত আদায় করতে বলে।আমরা সকলে ভিন্নমত পোষণ করি।মুক্তচিন্তা করি যার জন্য আমাদের মধ্যে চিন্তার ভিন্নতা আছে আর এই ভিন্নতার কারণে কোন নাস্তিক অন্য নাস্তিকের ঘাড়ে চাপাতি মারে না বা কেউ বোমা বাজি করে অন্যকে হত্যা করে না।স্রষ্টার অস্তিত্বহীনতার পক্ষে অনেক যুক্তি দেওয়া যায়।যা ধার্মিকের কাছে সামান্য মনে হতে পারে কিন্তু নাস্তিকরা দর্শনের জ্ঞান নিয়ে ধর্ম ও স্রষ্টার অস্তিত্বর স্বপক্ষের আজব যুক্তিগুলো খন্ডোন করে স্রষ্টার অস্তিত্ব অস্বীকার করার সৎ সাহস রাখে।আমরা নাস্তিকরাই একমাত্র সুখী,সমৃদ্ধ ও যুক্তিবাদী সমাজ এবং আলোকিত মানুষ গঠন করতে সক্ষম।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৬

নূর আলম হিরণ বলেছেন: পড়লাম।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৩৭

মোহাম্মাদ ফারহান খান বলেছেন: নূর আলম ভাই ধন্যবাদ।

২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৫৭

এ্যান্টনি ফিরিঙ্গী বলেছেন: ধর্ম বিশ্বাস না করাটাই কি মুক্তচিন্তা..???
আস্তিক হয়ে কি মুক্তচিন্তা করা যায় না.???

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২০

মোহাম্মাদ ফারহান খান বলেছেন: এ্যান্টনি ফিরিঙ্গী ভাই একজন ধর্মবিশ্বাস না করলেই তাকে মুক্তচিন্তার মানুষ বলা যাবে না।নাস্তিক হওয়ার চেয়ে মুক্তচিন্তক হওয় অনে কঠিন।আমাদের মধ্যে অনেক নাস্তিক আছে যারা মুক্তমনা হতে পারেনি।
আস্তিক হয়ে মুক্তচিন্তা করা অসম্ভব।আস্তিকরা নিদ্রিষ্ট মতাদর্শের অনুসারী।তারা গোষ্ঠীগত চিন্তায় বেশি নিমজ্জিত-ধন্যবা।

৩| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: আস্তিক নাস্তিক নিয়ে কোনো পোষ্ট আমার আর ভালো লাগে না।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ২:৫৫

মোহাম্মাদ ফারহান খান বলেছেন: যুক্তিবাদী সমাজ গড়তে হলে ধর্মের সমালোচনা করতে হবে।ধর্মের উপর বিশ্বাসীরা সচেতন না।তারা দেশ ও জাতিকে পিছিয়ে দেয়।তাই নাস্তিকতা প্রচার না করে উপায় নেই।আমি মনে করি,আস্তিকতা-নাস্তিকতা নিয়ে আলোচনা ভাল না লেগে আমার,আপনার উপায়।

৪| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:২৭

রোকসানা লেইস বলেছেন: মানুষের বিশ্বাস তার নিজের উপর ছেড়ে দিলে অনেক সমস্যার সমাধান হযে যায়

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ২:৫৭

মোহাম্মাদ ফারহান খান বলেছেন: আমি মনেকরি বিশ্বাস/অবিশ্বাস রাষ্ট্র ও সমাজ থেকে আলাদা করা দরকার।কে কি বিশ্বাস?তার একজনের ব্যক্তিগত অধিকার!আপনার কমেন্টের সাথে সহমত-ধন্যবাদ।

৫| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৬

মনজুর নোমানী বলেছেন: সভ্যযুগে নাস্তিকরা কেন অাজ পর্যন্ত সুখী,সমৃদ্ধ যুক্তিবাদী সমাজ গড়তে পারে নি ?

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৫

মোহাম্মাদ ফারহান খান বলেছেন: আপনার কমেন্টের সাথে একমত নয়।নাস্তিকরা যেসব দেশে নিজের মত দিতে পারে সেখানে সুখী,সমৃদ্ধ যুক্তিবাদী সমাজ গড়তে পারে।শুধু মাত্র কিছু মৌলবাদী,মোল্লা,হিন্দু রাষ্ট্র নাস্তিদের একত্রিত হতে দেয় না।তাই তারা সেখানে জনগণের মধ্যে চিন্তাশক্তি জাগাতে পারে না সহজে।

৬| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৪

ইনাম আহমদ বলেছেন: রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে ধর্মীয় প্রভাব পুরোপুরি বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রগুলোকে মানবকল্যাণমুখী করা দরকার। মৌলবাদীদের বিশ্ব থেকে বিলুপ্ত না করতে পারলে আধুনিক মানবসমাজ গঠন সম্ভব নয়।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:১৭

মোহাম্মাদ ফারহান খান বলেছেন: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।এক সময় রাষ্ট্র থেকে ধর্ম আলাদা হয়ে যাবে সময়ের প্রয়োজনে কিন্তু যারা আগেই ধর্মকে রাজনীতি ও রাষ্ট্র থেকে বহিস্কার করতে পারবে তারা অগ্রগামী থাকবে।

৭| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:৪৭

ইনাম আহমদ বলেছেন: এক সময় রাষ্ট্র থেকে ধর্ম আলাদা হয়ে যাবে সময়ের প্রয়োজনে কিন্তু যারা আগেই ধর্মকে রাজনীতি ও রাষ্ট্র থেকে বহিস্কার করতে পারবে তারা অগ্রগামী থাকবে।
ইতোমধ্যেই পশ্চিমে বেশীরভাগ দেশ, জাপান, চীন থাইল্যান্ড সবাই এটা করতে সমর্থ হয়েছে, তাই তারা এগিয়ে। আর মুসলিম বিশ্ব এই কারণেই সবচেয়ে বেশী পিছিয়ে। আর এদেশের বহু ছাগল গবেষণা করে কীভাবে ওরা এতো এগোলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.