নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বাংলাদেশি, এখানে সবার লেখনি পড়ে অবাক হই আর নিজে ও লিখার চেষ্টা করি

আতোয়ার রহমান বাংলা

আমি বাংলাদেশি, এখানে সবার লেখনি পড়ে অবাক হই আর নিজে ও লিখার চেষ্টা করি

আতোয়ার রহমান বাংলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেশে অভিনব রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে গেল

১০ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩২

বাংলাদেশে সম্প্রতি এক অভিনব রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটনা ঘটে গেল। এটা শতভাগ প্রতিয়মান যে, দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল হলো আওয়ামীলীগ ও বিএনপি। বাকী দলগুলির মধ্যে ইসলামপন্থী কিছু রাজনৈতিক দল বিএনপি ঘেষা আর বাম দলগুলোর মধ্যে অধিকাংশ আওয়ামীলীগ ঘেষা। ইতিমধ্যে ২৩ শে ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হয়েছে।

এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাথে সংলাপে বসে জোট সমৃদ্ধ প্রায় ৭০টি রাজনৈতিক দল। আমাদের রাজনীতিতে যে নাটকীয় পরিবর্তনটি ঘটে গেল তা হলো ঐক্যফ্রন্ট, ইসলামপন্থী ও বাম দলগুলো সহ মোট প্রায় ৭০টি রাজনৈতিক দল আগামী নির্বাচন নিয়ে নির্বাচনী পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবী-দাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সংলাপে বসে। এখানে আরও লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো বিএনপি, জাসদ (রব), গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, নাগরিক ঐক্য, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নিয়ে গঠিত ‘ঐক্যফ্রন্টের’ ব্যানারে সংলাপে অংশগ্রহন করে। আর এই ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা হিসাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. কামাল হোসেন, মাহমুদুর রহমান মান্না, বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী ও মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর এরা সকলেই এক সময়ের আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতা। আসলে দেশে নেতৃত্বের শুন্যতা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে না দীর্ঘদিন যাবৎ যে কারনে প্রজ্ঞা, সম্মোহনী ও দুরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব গড়ে উঠছে না। আর তাই এই বৃদ্ধ বয়সে এসেও ড. কামাল হোসেনের মত ব্যক্তিকে নেতৃত্বের দায়িত্ব নিতে হয়। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে গণতন্ত্রের চর্চার প্রয়োজন অতি জরুরী হয়ে পড়েছে। আজ দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এমনই পরিবর্তন ঘটেছে যে, আওয়ামী লীগের এক সময়ের এই প্রথম সারির নেতারাই বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর সহিত নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংলাপে বসে। এটা প্রকট ভাবে প্রমান হলো যে, বর্তমানে বিএনপিতে দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বের সংকট বিদ্যমান রয়েছে। আমি এই সংলাপকে অত্যন্ত ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে দেখি। আসলে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনার কোন বিকল্প নাই। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আপোষহীনতার কোন স্থান নেই। যেখানে আপোষহীনতা বিদ্যমান থাকে সেখানে সংঘর্ষ অনিবার্য। ১৯৫২ সালের আমাদের মহান ভাষা আন্দোলন হতে শুরু করে অদ্যাবধি দেশের মানুষ কেবলমাত্র রাজনৈতিক সংঘর্ষই প্রত্যক্ষ করে এসেছে। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফার স্বাধীকার আন্দোলন, ৬৯’র এর গণঅভুত্থান ও সর্বপরি ৭১’এর মুক্তির আন্দোলন এগুলি অনিবার্য ছিল। কিন্তু ৯০ এর পর হতে এই অতিমাত্রার অস্থির রাজনৈতিক সংস্কৃতি কেবলমাত্র দেশের মানুষের কাছে নয় বর্হি:বিশ্বেও দেশের ইমেজকে নষ্ট করছে। এখন সময় এসেছে এই গতানুগতিক রাজনীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন প্রজন্মের চাওয়া নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির চর্চা শুরু করা। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নতুন প্রজন্ম এই সাংঘর্ষিক রাজনীতি পছন্দ করে না। তারা রাজপথে রক্ত আর জীবনের বদলে মেধা দিতে চায়, শ্রম দিতে চায়। আর এই মেধা ও শ্রমের বিনিময়েই একটি গণতান্ত্রিক সুখীসমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মানের স্বপ্ন দেখে নতুন প্রজন্ম। সাম্প্রতিক সংলাপের মাধ্যমে দেশ ও দেশের মানুষের কি অর্জন হবে তা নির্ভর করছে সরকার ও বিরোধী দলগুলোর মধ্যে কতটা ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকে। আমি মনে করি উভয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে সংঘর্ষ এড়ানো প্রয়োজন আর এটাই নতুন প্রজন্মের চাওয়া। আওয়ামী লীগ একটি অতি প্রাচীন রাজনৈতিক দল। এদেশের বড় বড় যা কিছু অর্জন তার পুরোটাই মুলত: আওয়ামীলীগের হাত ধরেই এসেছে। তাই আমি আশা করবো এই আওয়ামী লীগের হাত ধরেই দেশের একটি সংঘর্ষমুক্ত, শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচনের মাধ্যমে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ভুমিকা রেখে তার অর্জনের পালকে আরো একটি মাইলফলক সৃষ্টি করবে। কথায় আছে দশটি ভাল কাজ নষ্ট হয়ে যায় একটি খারাপ কাজের কারনে। আবার এটাও স্বীকার করতেই হবে যে, তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ হিসাবে দেশের জনগণের অসীম চাহিদাকে সীমিত সম্পদ দিয়ে পূরণ করা কোন সরকারের পক্ষে শতভাগ সম্ভব হয় না। আর তাই তৃতীয় বিশ্বের রাজনীতির একটি অন্যতম বৈশিষ্ট হলো একটি সরকার যতটা জনপ্রিয়তা নিয়ে ক্ষমতায় আসীন হয় মেয়াদান্তে সেই জনপ্রিয়তা অনেকাংশে বজায় থাকে না। অর্থনৈতিক খাতে কিছু অনিয়ম ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জন কম নয়। পদ্মা সেতু নির্মান, সমূদ্র বিজয়, ছিটমহল বিনিময়, উপগ্রহ প্রেরণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, জঙ্গী দমন, ডিজিটাল বাংলাদেশ ও নারীর ক্ষমতায়নসহ অসংখ্য সাফল্য আছে বর্তমান সরকারের। শেষ কথা হলো তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসাবে বাংলাদেশে প্রাশ্চাত্যের মত বিশুদ্ধ গণতন্ত্র আশা করাটাও ভুল। তবে এটা স্বীকার করতে হবে দেশে ধীরে ধীরে রাজনৈতিক উন্নতি ঘটছে। গণতন্ত্র টেকসই ভাবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করবে বলে একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসাবে আমি মনে করি।

প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনার সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আজকের প্রসঙ্গে

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.