নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানবিকতা যার মধ্যে আছে সেই আল্লাহকে পায়

আতা স্বপন

আমি একজন মুসলমান। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি আমার ধর্ম ও আমার দেশকে ভালবাসি। ভালবাসি ধর্মমত নির্বিশেষে আমার দেশের সকল মানুষকে।আমি সৎ মানুষ ভালবাসি। নিজে সৎ হতে চাই।

আতা স্বপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবা ও বেদনাময় ঈদ

২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৩২

বাবার থ্রোট ক্যান্সার। বাবা কিছুই খেতে পারেন না।ফলে স্যালাইন দিতে হচ্ছে। ক্যামিও থ্যারাপিও শেষে। চলছে রেডিও থেরাপি। আল্লাহর রহমতে কিছুটা ভালবোধ করছেন। এসময় রোজার ঈদ এল।সবাই খাওয়া দাওয়া করছে। আপাও এসেছে বাচ্চাদের নিয়ে। সবাই মিলে খুশির একটা ঈদ। কিন্তু কেউই জানতাম না যে এটাই বাবার সাথে আমাদের শেষ রোজার ঈদ।

বাবা ও আমি


বাবার গরু গোস খুব পছন্দের। বাবা কেন আমাদের পুরো পরিবারই পছন্দ করে। কেমন পছন্দ তার একটু বললেই বুঝা যাবে। বাজারে আমাদের পরিচিত কষাই ছিল গেলেই ৮/১০ কেজি হাতে ধরিয়ে দিত।
বাবা যদি বলত এখন সাথে এত টাকা নেই।
টাকা দেন না দেন পরের কথা গোস লইয়া যান।
বাধ্য হয়ে সেই ৮/১০ কেজি গোস নিয়ে বাড়ি ফিরতেন বাবা। মা এ নিয়ে আগে অনেক খ্যাচর ম্যাচর করতেন কিন্তু পরে ছেরে দিয়েছেন। কারণ গরু গোস তারও পছন্দের। সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনই বাড়িতে থাকতো গরু গোস। বাবা পছন্দ করেন বলেই কেনা কিন্তু খেতেন পরিমান মত। তার নামে আসলে খেতাম আমরা। আমার বাবার বেতনের বেশির ভাগই খরচ হয়েছে খেয়ে খেয়ে। আমাদের এই খাওয়ার জন্য বাবা কোন টাকা জমাতে পারেননি। যাওবা কিছু ছিল সব চলে গেছে ক্যান্সারের চিকিৎসায়। আর কিছু ছিল যুবকে। যুবকতো ফল্ট করেছে সে টাকা আদো পাওয়া যাবে কিনা আল্লাহ বলতে পারবে। এই টাকার টেনশও অসুস্থ বাবাকে আরো অসুস্থ করে দিয়েছিল মানসিকভাবে।

ঈদের দিন আমার সবাই বসে ডাইনিং টেবিলে পোলাও গরুর রেজালা এসব খাচ্ছিলাম।
আমাকে বাটিতে একটু দাও। খাব।
বাবা বিছানা ছেরে কখন উঠে এসেছেন আমরা লক্ষ্য করিনি। তার দুর্বল কন্ঠ শুনে সবাই ফিরে তাকলাম।
খেতে পারবেন? আপা বলল।
মাকে বললাম দেন একটু দেন ! চেষ্টা করুক পারে কিনা।
মা একটুকুরো গোস নরম করে বাবাকে দিলেন। বাবা একটু মুখে দিলেন। অনেক চেষ্টা করলেন খেতে কিন্তু ক্ষতবিক্ষত গলা সেটা গ্রহন করল না। দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিল। এখনো সেই দৃশ্যটি আমার সামনে ভাসে। গরুর গোস খাওয়ার সময় বাবার কথা মনে হয় না এমনটি কখনো হয় না।

এরপরও বাবা আল্লাহর কৃপায় প্রায় একবছর আমাদের মাঝে ছিলেন।পরের বছর ২০০৯ সালে ৪ আগষ্ট শাবান মাসে ওনি ইন্তেকাল করেন।বাবাকে আল্লাহ যেন জান্নাতে দাখিল করেন।আর দুনিয়ার চেয়েও উত্তম খাদ্য দান করেন। বাবার জন্য দোয়া করি- রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।

আজ বাবা দিবস । যদিও দিবসের ফ্রেমে বাবা মার প্রতি ভালবাসাকে আটকানো যায় না। তথাপি বাবাকে স্মরণ করাতো হচ্ছে। বিশ্বের সকল বাবার প্রতি অফুরান ভালবাসা প্রতিটি দিবা রাত্র। বৃদ্ধ আশ্রম নয় সকল বাবা মার ঠিকানা যেন হয় সন্তানের ছায়ায়। এই শুভকামনা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার বাবার জন্য শ্রদ্ধা।
আমাদের বাসারও সবার গরুর গোস খুব প্রিয়।

২| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:১৭

লাবনী আক্তার বলেছেন: দুয়া করি আপনার বাবাকে আল্লাহ জান্নাত দান করুন ।

সব বাবা মায়েরা ভালো থাকুক।

৩| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:২৬

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: বাবা দিবসে বাবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। আপনার বাবা ভালো থাকুন না ফেরার দেশে।

৪| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:২৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: বাবার জন্য শ্রদ্ধা।আল্লাহ জান্নাত দান করুন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.