![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা সাতজনই তার প্রেমে পড়ি।একসাথে নয়, আলাদা আলাদা ভাবে।আমরা সবাই সবাইকে চিনতামও না।দু একজনকে আগে কোথাও হয়ত দেখেছি বলে মনে হয়।শুধু এতটুকুই।রানা নামের ঐ ছেলেটা,যে রীতিমত চরম উত্তেজিত আপাদমস্তক তামাকের কাছে সমর্পন করেছে।বার বার বলছে "আমি ছেড়ে দেব ভাবছেন? মোটেই না।সবে খেলা শুরু।ঘুঘু দেখেছে,ফাঁদ দেখেনি।"
বুঝতে পারছি না সে কী করতে চায়।এক্ষেত্রে কী করার আছে তাও আমি জানি না।
আমাদের সবার বয়স চেহারা এবং পেশা একরকম নয়।আমি সর্বকনিষ্ঠ।পড়ি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে।বাবা মায়ের চোখের মনি।একটু আগে যার কথা বললাম,রানা, সে অষ্টম শ্রেণির পর লেখাপড়াকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বছর সাতেক যাবত গাঁজার নৌকায় পাহাড় পাড়ি দিচ্ছে।শান্ত নামের ছেলেটা অশান্ত মনে কফির মগ নাড়ছে।সে ডিগ্রী পাশ বেকার।চুপচাপ বসে আছে একজন।তার নাম টিপু।মনে হচ্ছে সে কিছুটা হতচকিত।সে আমার ক্লাসমেট ছিল একদা মাস দুয়েকের জন্য।আরেকজনের স্টুডিও ব্যবসা আছে।নাম রফিক।হোমরাচোমরা গোছের লোক।সে বেশ মজা করে চপ খাচ্ছে।আজকের আড্ডাতে সে বেশ আনন্দিত বলে মনে হচ্ছে।একজন আছেন ঘোর কৃষ্ণাঙ্গ।নাম তুতুল।এই নাম কে রেখেছে খুব জানতে ইচ্ছে করছে।আমার মনে হচ্ছে সে বক্তৃতা দেবার সুযোগ খুঁজছে।সর্বশেষ যার কথা বলছি সে মাহমুদ, আজকের এই আড্ডা কিংবা শোকসভার প্রধান উদ্যোক্তা।কেন এই আড্ডা, কী উদ্দেশ্য আমি জানিনা।তাও আবার বিশেষ এক মূহুর্তে।
আমি কফি হাউজের জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম।এই মধ্যরাতে, অন্ধকারে বেশ জমে উঠেছে প্রেমাদের বাড়ির আতশবাজির আলোগুলো।
প্রেমা, যার প্রেমে আমরা সাতজন, ভিন্ন ভিন্ন সময়,ভিন্ন ভিন্ন স্বপ্নের জালে আটকা পড়েছিলাম।আজ তার বিয়ে!
হঠাৎ চিৎকার করে কেঁদে উঠল টিপু।তার চিৎকারে কফি হাউজের সাতটা খালি পেয়ালা ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হল।রানা ওকে শান্তনা দিচ্ছে।আমার কেন জানি বিষয়টাকে অদ্ভূত এবং হাস্যকর ঠেকল।
আড্ডা ধীরে ধীরে নিরব হয়ে আসে।রানা সবাইকে সব ভুলে হট ড্রিংকস্ এর দাওয়াত দেয়।কেউ কেউ সঙ্গী হয় তার।আমি ধন্যবাদ জানিয়ে বেরিয়ে পড়ি রাস্তায়।
কৃষ্ণপক্ষ রাত।হাটছি একা।আকাশে জেগে আছে সাতটি তারার মেলা।একদিন ফুরিয়ে যাবে সব আয়োজন।খেলা শেষের বেলা এলে তারারাও একসময় কফি হাউজের আড্ডা শেষে হারিয়ে যাবে দূর অনন্তে!
©somewhere in net ltd.