নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

শানহুয়া মন্দির এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১৯ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৪৯


শানহুয়া মন্দির হচ্ছে একটি বৌদ্ধ মন্দির যা চীনের শানসি প্রদেশের তাথং এ অবস্থিত। তাং রাজবংশের ৮ম শতকের প্রথম দিকে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হলেও এটার প্রথম সময় নিরূপণ করা হয়েছিল ১১ শতকে। ওই বছরেই মন্দিরের ব্যাপকভাবে পুননির্মাণের কাজ হয়, এবং বর্তমানে তিনটা প্রধান হল ও সাম্প্রতিককালে পুনর্নির্মিত দুটি পূজামণ্ডপ অক্ষত অবস্থায় আছে। দাজিওংবাও হল হচ্ছে ১১ শতকে লিআও রাজবংশের সময় হতে প্রাপ্ত সর্বপ্রথম এবং সর্ববৃহৎ হল এমনকি এই ধরণের হলের মধ্যে এটা চীনেও বৃহত্তম হল। ১২ শতকে জিন রাজবংশের সময়কার প্রধান ফটক এবং সানশেং হল উভয়েই ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। শানহুয়া মন্দির তাং রাজবংশের সম্রাট জুয়াংজং তার পৃষ্ঠপোষকতায় কাইয়ুয়ানের সময়ে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে তৎকালীন সময়ে এটি কাইয়ুয়ান মন্দির নামে পরিচিত ছিল। তাং রাজবংশের পঞ্চম রাজার পতনের পর মন্দিরের নাম পরিবর্তিত হয়ে দা পু'এনজি নামে পরিচিত হয়।ওই বিশৃঙ্খলাপূর্ণ সময়ে মন্দিরের দশটি ভবনের মধ্যে মাত্র তিনটি কি চারটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়। লিআও রাজবংশের ক্ষমতা গ্রহণের পর মন্দির তার বর্তমান এই রূপ পায়।১১২০ সালে জীন রাজবংশের ক্ষমতা গ্রহণের সময় মন্দির আবার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ১১২৮ সালে মেরামতের কাজ শুরু হয় যা সম্পন্ন হতে পনের বছর লেগে যায়। ১৪২১ সালে দায়ং নামে একজন সন্ন্যাসী পুনরায় মেরামত করেন। ১৪৪৫ সালে তিনি সুত্রের রাজকীয় উপস্থাপনা গ্রহণ করেন এবং ওই সময় এ মন্দিরটি তার বর্তমান নাম শানহুয়া মন্দির দ্বারা প্রথমবারের মত উল্লেখিত হয়। ১৬শ শতাব্দীর শেষের দিকে দাজিওংবাও হলের উপর ভিত্তি করে একই প্রস্তরখণ্ডের উপর ড্রাম এবং বেল টাওয়ার নির্মিত হয়। পরবর্তী দুই শতাব্দী মন্দিরের অনেক মেরামত কাজ হলেও ১৮ শতাব্দীর শেষের দিকে মন্দিরের ক্ষতিসাধন হয় এবং একটি হল উট এর আস্তাবল হিসেবে ব্যবহারের জন্য একটি প্রাচীর ভেঙ্গে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পুজিয়ান পূজামণ্ডপ ধ্বংস হয়ে যায় এবং ১৯৫৩ সালে পুনর্নির্মিত হয়।
আজকের শানহুয়া মন্দির তিনটি প্রধান হলের দাজিওংবাও হল সানশেং হল এবং প্রধান ফটক সমন্বয়ে গঠিত যার একটি উত্তর-দক্ষিণ অক্ষের উপর সাজানো ও সানশেং হলের পূর্ব এবং পশ্চিমে অবস্থিত দুটি মণ্ডপ নিয়ে গঠিত। দাজিওংবাও হলের প্রতিটি পাশ দিয়ে আরও দুটি করে ছোট হল আছে। প্রধান হল সর্ব প্রথম লিয়াও বংশের সময় নির্মিত হলেও বর্তমানে শুধুমাত্র মহাবীর হলকে লিয়াও এর আমলের ভবন হিসেবে গণ্য করা হয়।‍ প্রধান ফটক এবং সানশেং হল জীন রাজবংশের সময় পুনঃ রূপ দেওয়া হয় এবং জীন ভবন হিসেবে পণ্ডিতদের দ্বারা শ্রেণীবিন্যাস করা হয়।দাজিওংবাও হল হচ্ছে সর্ব উত্তরের এবং বৃহত্তম হল যা ১১তম শতাব্দী থেকে বিদ্যমান। এটার পরিমাপ দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থে সাত বাই পাঁচ এবং হলের সামনে তিনটি দরজা আছে। হলটি একটি তিন মিটার সমুচ্চ প্ল্যাটফর্মের উপর নির্মিত করা হয় যার উভয় দিকে এক সময় একটি ড্রাম এবং বেল টাওয়ার ছিল যার অস্তিত্ব এখন আর বিদ্যমান নেই। ১১ শতাব্দীর চীনা স্থাপত্য গ্রন্থ ইয়াংজাও ফাঁসি এর আদর্শ মান অনুযায়ী হলটিকে আট সেট পদমর্যাদার মধ্যে পাঁচ সেট বন্ধনী পদমর্যাদায় ভূষিত করা হয়। হলের অভ্যন্তরে চারটি প্রধান দিক প্রতিনিধিত্বমূলক চারটি বৃহৎ বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে এবং সাকিয়ামুনি প্রতিনিধিত্বকারী একটি কেন্দ্রীয় মূর্তি রয়েছে। মূর্তিগুলো প্রায় অনুরূপ এবং বিভিন্ন মুদ্রা প্রতীকধর্মী অনুমান হতে বুদ্ধকে প্রতিনিধিত্ব করে । সাকিয়ামুনি মূর্তির উপরে একটি কাঠের ছাদ রঙ্গিন মূর্তি দ্বারা শোভিত এবং সজ্জিত অবস্থায় রয়েছে যেটাকে কাইসন বলা হয়।শিষ্য এবং অনুচারীদের দলবদ্ধ বড় বড় মূর্তি সহ পূর্ব এবং পশ্চিম দেয়ালের পাশে আরো ২৪টি দেব মূর্তি আছে। হলের দেওয়ালে ও ১৯০ বর্গ মিটার অঙ্কিত আছে। সেগুলো ১৭০৮ থেকে ১৭১৬ তার মধ্যে তারিখ উল্লেখ করা হলেও বছরের পর বছর ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সানশেং হল আক্ষরিক অর্থে তিন ঋষিদের হল যা হচ্ছে মাঝখানের হল যা জীন রাজবংশের সময় নির্মিত হয়েছিল। সেই হলে অভত্মস্ক কামসূত্রের তিন ঋষিদের মূর্তি ভাইরসানা একটি কেন্দ্র সাকিয়ামুনি সার্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি এবং দুই সহচর মূর্তি মঞ্জুশ্রী ও সামন্তভদ্রকে রাখা হয়েছে। হলকে টিকিয়ে রাখার জন্য খুব কম কেন্দ্রীয় স্তম্ভ আছে তবে ছাদকে টিকিয়ে রাখতে জটিল সব বরগার উপর নির্ভর করতে হয় । অন্যদিক থেকে হলকে ৬ষ্ঠ পদমর্যাদা বন্ধনীতে অভিহিত করা হয়।পুজিয়ান মণ্ডপ পিনয়িন প্রথমে লিয়াও রাজবংশের সময় নির্মিত হয় এবং ১৯৩০ সালে লিয়াং সিছেং এটার বিষয়ে প্রতিবেদন করেন এবং সেখানে তিনি বলেন এটার দুইতলা কাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।প্রথম তলায় একটি ক্ষুদ্র কক্ষ এবং কুলুঙ্গিসহ দুটি ছবি ছিল এবং উপরের তলায় বোধিসত্ত্ব সামন্তভদ্রের মূর্তি ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভবনটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর ১৯৫৩ সালে আবার পুনর্নির্মান করা হয়। মণ্ডপের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের পরিমাপ দুই ও তিন করে হলেও মণ্ডপটি প্রায় একটি পূর্ণবর্গ। ইউয়েতাই নামক এক ধরণের ছোট পাথরের উপর মণ্ডপটির প্ল্যাটফর্ম নির্মিত। যেটাতে প্রবেশ করতে কয়েক ধাপ সিঁড়ি পেরুতে হয়। দ্বিতীয় তলা বাইরের দিক থেকে আড়াল করা থাকে বলে মণ্ডপকে দুতলা বলে মনে হয় যদিও মণ্ডপটি তিন তলার। প্রত্যেকটি স্তম্ভ বাইরের দিক থেকে একটি ঘের দ্বারা বেষ্টিত।

এই মণ্ডপ বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ট্যানারিতে রূপান্তরিত হওয়ার পর একবার আগুন ধরে ধ্বংস হয়ে যায়। এটি আবার স্থানীয় সরকার দ্বারা ২০০৮ সালে পুনর্নির্মিত হয়।প্রধান ফটক হচ্ছে একটি বড় হল যা দ্বাদশ শতাব্দীতে জীন রাজবংশের সময় নির্মিত হয় এবং এই ভবনটি হচ্ছে মন্দিরে ঢুকবার প্রবেশদ্বার।এই হলের পূর্ব দিকে দুটি এবং পশ্চিম দিকে দুটি করে চারজন স্বর্গীয় রাজাদের মূর্তি রয়েছে।এটি পাঁচ ব্যাস দীর্ঘ দুই ব্যাস চওড়া এবং ২৭৮ বর্গমিটারের ক্ষেত্রফলের উপর প্রতিষ্ঠিত। হলটিকে পাঁচ পদমর্যাদার বন্ধনীতে বিচার করা হয়।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:০২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ঐতিহাসিক স্থাপনার সাথৈ পরিচয় করিয়ে দেয়ায় ধন্যবাদ।

২০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:২৯

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ বিদ্রোহী ভৃগু ভাই।

২| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৭:৫২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: সুন্দর অনেক কিছু জানা হল ।

২২ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৪৩

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ মফিজ ভাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.