নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান

ব্লগ সার্চম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বামী অ্যালবার্টের সাথে রানী ভিক্টোরিয়া জীবন কাহিনী

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ ভোর ৪:২০


১৮১৯ সালের ২৪শে মে লন্ডনের কেনসিংটন প্রাসাদে তার জন্ম হয়। পুরো নাম আলেকজান্দ্রিনা ভিক্টোরিয়া অবশ্য তার মা ডাকতেন দ্রিনা বলে। তিনি ছিলেন ডিউক অব কেন্ট এডওয়ার্ডের একমাত্র সন্তান। এই এডওয়ার্ড ছিলেন রাজা তৃতীয় জর্জের চতুর্থ পুত্র। ১৮২০ সালে ভিক্টোরিয়ার বয়স যখন একবছরও পূর্ণ হয়নি তখন বাবা এডওয়ার্ড মারা যান। তারপর মা একাই তাকে বড় করে তোলেন। ভিক্টোরিয়া কখনো স্কুলে যাননি। তার জন্য একজন জার্মান গৃহশিক্ষিকা রাখা হয়েছিল। ছোট থেকেই জার্মান এবং ইংরেজি দুই ভাষাতেই তিনি পারদর্শী হয়ে ওঠেন । ভিক্টোরিয়াকে কখনই একা থাকতে হয়নি। কিন্তু তবু তিনি ছিলেন একা কারন হিসেবে যতটুকো জানা যায় সমবয়সী কারো সাথে মেশার সুযোগ কখনো তার হয়ে উঠেনি। প্রাসাদে কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে বেড়ে ওঠা রানীর একান্ত সময় বলে কিছু ছিল না। রাজকর্মকর্তা জন কনরি ভিক্টোরিয়ার শৈশবকে দুর্বিষহ করে তুলেছিলেন। রানীর মুকুট মাথায় দেওয়ার পর ভিক্টোরিয়ার প্রথম নির্দেশ ছিল এক ঘণ্টা একা থাকতে দাও। মাকে দূরের একটি কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করেন ।

ভিক্টোরিয়ার ১৭ তম জন্মদিনে জার্মানি থেকে তার আত্মীয় যারা বেড়াতে আসেন তাদের মধ্যে ছিলেন তার খালাতো এবং মামাতো ভাই বোনেরা। তাদের মধ্যে অ্যালবার্টকে খুব পছন্দ করেছিলেন ভিক্টোরিয়া। এই অ্যালবার্টকে রানী হওয়ার পর ভিক্টোরিয়া বিয়ে করেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রথা ভেঙে রানীই তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কারণ কারো পক্ষে ব্রিটেনের রানীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া সম্ভব ছিল না। অ্যালবার্ট কখনোই ব্রিটেনের রাজা হননি। ভিক্টোরিয়া তাকে পছন্দ করলেও অ্যালবার্ট কখনো ব্রিটেনে জনপ্রিয় হতে পারেননি। তিনি মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। ১৮৬১ সালে ৪২ বছর বয়সে মারা যান। ভিক্টোরিয়া ভীষণ ভেঙে পড়েন। তিনি মানুষের সাথে সাক্ষাত বন্ধ করে দেন। সে সময় ব্রিটেনের লোকেরা শোকের প্রতীক হিসেবে কিছুদিন কালো পোশাক পরত। কিন্তু রানী ভিক্টোরিয়া বাকি জীবনের পুরো সময় কালো পোশাক পরে কাটিয়েছেন এবং অ্যালবার্টের কক্ষ তার জীবিতাবস্থায় যেভাবে ছিল সেভাবেই রেখে দিয়েছিলেন।

১৮৩৭সালের জুনে রাজা চতুর্থ উইলিয়াম মারা যাওয়ার পর খুব সকালে ভিক্টোরিয়াকে বলা হয় তিনি এখন থেকে ব্রিটেনের রানী। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ রানীর সাথে দেখা করেন। ২৮শে জুন ছিল রানীর সিংহাসনে বসার দিন। প্রথা অনুযায়ী ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে রানীর মাথায় মুকুট পরিয়ে দেয়া হয়। উপস্থিত জনতা রানী দীর্ঘজীবী হোক বলে স্লোগান দিতে থাকেন। পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলেছিল সেই অনুষ্ঠান।ভিক্টোরিয়ার শপথ গ্রহণের দুইবছর বছর পর ১৮৩৯ সালে মামাতো ভাই অ্যালবার্ট ব্রিটেনে যান। অ্যালবার্ট অবশ্য ভিক্টোরিয়াকে বিয়ে করতে মুখিয়ে ছিলেন। কিন্তু ভিক্টোরিয়া তখন ব্রিটেনের রানী তাকে তো আর বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া যায় না। ভিক্টোরিয়া নিজেই প্রস্তাব দেন আর পরের বছর অর্থাৎ ১৮৪০ সালে তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর প্রতিদিন একসাথে কাজ করতেন তারা। তাদের ডেস্কগুলো ছিল পাশাপাশি। প্রতিদিন ব্রিটিশ সরকারের প্রচুর কাগজপত্র দেখতে হত রানীকে। ১৮৪১ সালে রানীর প্রথম সন্তান ভিকির জন্ম হয়। মোট নয় ছেলেমেয়ের জন্ম হয়েছিল তাদের ঘরে।

তারা বড়দিনের অনুষ্ঠান বেশ ঘটা করে উদযাপন করতেন। খ্রিস্টমাস ট্রি এবং মোমবাতি ছিল অ্যালবার্টের খুব পছন্দ। তাদের দেখাদেখি ব্রিটেনের বহু বাড়িতে বড়দিনের অনুষ্ঠান খ্রিস্টমাস ট্রি দিয়ে সাজানো শুরু হয়ে যায়। বড়দিন উপলক্ষে শুভেচ্ছা কার্ড পাঠানো, প্রাসাদের ভৃত্যদের উপহার দেয়া এবং বিশেষ রান্নার চল শুরু হয়ে যায়।অ্যালবার্টের উৎসাহে ১৮৫১ সালে লন্ডনের হাইড পার্কে সে সময়কার সবচেয়ে বড় কাচের ভবন ক্রিস্টাল প্যালেসে বিশাল এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। কাচের এ ভবনের ভেতর গাছপালা জন্মানোর ব্যবস্থা করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা বিস্ময়কর উদ্ভাবনী যন্ত্রপাতি এখানে প্রদর্শিত হয়।ব্রিটেনের আইন প্রণীত হত ব্রিটিশ সংসদে। সরকার কি করতে চলেছে তা জানাতে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীরা রানীর সাথে দেখা করতেন। সব প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্য রানী পছন্দ করতেন না। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন ডিজরেইলিকে সবচেয়ে পছন্দ করতেন রানী ভিক্টোরিয়া। শুরুর দিকে জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের সাথে কাজ করতে হলেও রানী সবসময় চাইতেন তাকে যেন ছোট মেয়ে হিসেবে না দেখে রানী হিসেবেই দেখা হয়।

১৮৫৪সাল থেকে ১৮৫৬সালের ভিতরে রাশিয়া এবং তার তুর্কি মিত্রদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ব্রিটেন এবং ফ্রান্স প্রধানত রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়ায় সে যুদ্ধ হওয়ায় এটি ক্রিমিয়ার যুদ্ধ নামে পরিচিত। যুদ্ধে হতাহত হওয়া ছাড়াও প্রচণ্ড শীত সৈনিকদের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সে সময় সামরিক প্রসঙ্গে নাক গলানোর ক্ষমতা ব্রিটেনের রাজ পরিবারের ছিল না। তবু রানী ভিক্টোরিয়া সৈন্যদের শীত থেকে বাঁচাতে মোজাসহ নানা সাহায্য উপকরণ পাঠান। তিনি যুদ্ধে স্বামী হারানো নারীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েও চিঠি লেখেন। তাছাড়াও তিনি সৈন্যদের সম্মানিত করতে পদক চালু করেন।

ভারতে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহে বহু ইউরোপীয় মারা যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ সরকার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে সরাসরি ভারতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ১৮৭৭ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে রয়েল টাইটেল অ্যাক্ট পাশের মাধ্যমে ভারতের সম্রাজ্ঞী হন রানী ভিক্টোরিয়া। উপনিবেশ ভারতকে রানীর খুবই পছন্দ হয়েছিল। গর্বের সাথে ভারতকে মুকুটের মণি হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।১৮৪০ সালে এডওয়ার্ড অক্সফোর্ড নামে এক ১৮ বছর বয়সী তরুণ লন্ডনের রাস্তায় রানীর ঘোড়ার গাড়ি লক্ষ্য করে দুটি গুলি ছোঁড়ে। বিকৃত মস্তিষ্কের যুক্তিতে সে তরুণ ছাড়া পেয়ে যায়। ১৮৪২ সালে জন উইলিয়াম নামে আরেক তরুণ দুবার রানীকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। সে তরুণও আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায়। ১৮৪৯ সালে এক ক্ষুব্ধ আইরিশ নাগরিক রানীর ঘোড়ার গাড়ির ওপর হামলা চালায়। পরের বছর রবার্ট পেট নামে এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লাঠি নিয়ে রানীর ওপর হামলা চালান। ১৮৮২ সালে স্কটল্যান্ডের এক বিখ্যাত কবি রানীর ঘোড়ার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়েন। এটি ছিল রানীকে হত্যার লক্ষ্য তার তৃতীয় প্রচেষ্টা। তাকেও মস্তিষ্ক বিকৃতির অভিযোগে রেহাই দেয়া হয়। এসব হত্যা প্রচেষ্টা বরং রানীর জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছিল।স্বামী অ্যালবার্টের মৃত্যুর পর সরকারি দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন রানি। এমনকি সংসদ অধিবেশন ডাকতেও অস্বীকৃতি জানান। পত্রপত্রিকা রসিকতা করে লিখতে শুরু করে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে টু-লেট ঝুলছে। পরে অবশ্য রানী সরকারি দায়িত্ব পালন শুরুর মাধ্যমে আবার মানুষের আস্থা অর্জন করেন। ১৯০১ সালে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে রানী ভিক্টোরিয়া মারা যান

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:০৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা ।

২| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:৩৯

ব্লগ মাস্টার বলেছেন: জানা হল।

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:০৫

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৩| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: সুন্দর আরো সুন্দর লাগল। :)

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৮

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৪| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৫০

মানিজার বলেছেন: দারুণ তথ্যসমৃদ্ধ লিখা ।

২২ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৪৬

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ম্যানেজার সাহেব।

৫| ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:২৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: অনেক তথ্যসমৃদ্ধ লিখা ভালো লাগল।

২২ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৪৬

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মফিজ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.